অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 35,36,37
সম্পূর্ণ গল্প পড়তে চান?
Click here to read the full story.slamic গল্প😊
“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 35
তিন চার দিন হয়ে গেলো একই অবস্থা। না ঢুকতে দিচ্ছে বাসায় না দেখা করতেছে৷ তাই কথাও বলা হচ্ছে না আর জানানোও হচ্ছে না। আমি পড়ে গেলাম দারুণ ফ্যাসাদে।
পরের দিন,
সকালবেলা সায়মা রিকশায় কলেজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে।
তানহা : আচ্ছা অর্ণব আপনাকে কতো করে টাকা দেয় আমায় কলেজে নিয়ে আসার এবং যাবার জন্যে?
রিকশাচালক :- সেটা তো ঠিক হয় নি। আর আমি নিতেও চাই না।
তানহা : কি বলতেছেন? অর্ণব কাজটা একদম ঠিক করেনি। কেননা,
হাদিসে আছে,
নবী (সা) বলেনঃ
যখন’মজদুর নিয়োগ করবে, তার পারিশ্রমিক নির্ধারিত করে নিবে।
-(নাসাঈ, হা.৩৮৯০)💕
আর কেনো নিতে চান না?
রিকশাওয়ালা : অর্ণব বাবা আমাকে সাহায্য করেছিলো। যার জন্য আমি ঋণী। এর মাধ্যমে আমি সেই ঋণ শোধ করতে চাই।
তানহা : কি সাহায্য?
রিকশাওয়ালা : আমরা তো অনেক গরিব। অনেক কষ্ট করে আমি আমার সংসার চালাতাম। কিন্তু হঠাৎ একদিন আমার ছেলের বড় অসুখ হলো,আমি আর আমার স্ত্রী আমাদের ছেলেকে মেডিকেলে নিয়ে গেলাম সেখানে শুনলাম আমার ছেলের অপারেশ করতে হবে চল্লিশ হাজার টাকা লাগবে নাহলে আমাদের ছেলের বড় ধরনের সমস্যা হবে। আমরা অনেকের কাছে হাত পাতলাম কিন্তু কেউ কোন সাহায্য করলো না। তাই আমি আর আমার স্ত্রী রাস্তাঘাটে বসে টাকা যোগার করতে লাগলাম, ঠিক তখনি অর্ণব বাবার সাথে দেখা হয়, সে সব কথা শুনে অপারেশনের টাকা দিয়েছে এবং উনার বাবাকে বলে আমাকে এই রিকশাটা কিনে দিয়েছে। তাই আমি তার থেকে কোন টাকা নিতে চাইনি এবং নিবোও না।
(বাব্বাহ! আমার স্বামী তো দেখছি অনেক বড় মনের মানুষ। আল্লাহ্ তোমায় অনেক শুকরিয়া আমার জীবনে এমন কাউকে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য)
তানহা : অর্ণব কি বলছে?
রিকশাচালক :- অর্ণব বাবা বলছে এই মাসে উনার টাকার সমস্যা আছে তাই সামনে মাসে পুরা দিবে। কিন্তু আমি তো বললামই নিবো না।
তানহা : আপনাকে ঋণ শোধ করার কোন দরকার নেই। শুধু আমাদের জন্য দোয়া করিয়েন। আর পারিশ্রমিকটা আপনার প্রাপ্য। আপনার পরিবার আছে, যাদের ভরনপোষণের দায়িত্ব আপনার। তাদের হকটা আগে। আর আমাদের আল্লাহর রহমতে তেমন অভাব নেই। তাই আপনার প্রাপ্য ভাড়াটুকু সামনে মাসে বেতন পেলে আমিই দিয়ে দিবো।
রিকশাওয়ালা : ঠিক আছে মামুনি। অর্ণব বাবা সত্যিই অনেক ভালো একটা বউ পাইছে।
হঠাৎ…..
আমি সকালের নাস্তা করতেছিলাম। এমন সময় রিকশাওয়ালার ফোন আসলো। কলটা ধরে,
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম চাচা। কি জন্য কল দিলেন।
হাঁপাতে হাঁপাতে,
চাচা : বাবা তুমি একটু তারাতাড়ি বালুবাড়ি আসো।
আমি শুনে সাথে সাথে গেটের দিকে দৌড় দিলাম। দৌড়াতে দৌড়াতে,
অর্ণব : কি হয়েছে চাচা? কিছু তো বলেন?
সাথে সাথে ফোনটা কেটে গেলো। আমি তাড়াতাড়ি বাইক নিয়ে টান দিলাম। আমার মাথায় প্রচুর টেনশন। তানহার কিছু হয়ে গেলো নাতো। এই মেয়েটাকে কতবার বলছি বাসায় চলে আসতে। যদি আমার কথা শুনে?
বালুবাড়ি যায়ে দেখলাম তানহা একটা বসার জায়গায় বসে আছে। আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলাম। যাক মেয়েটার কিছু হয় নি। আমি কাছাকাছি যায়ে দেখলাম তানহা কাঁদতেছে। চাচা রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর পাশে তিতুমির। তিতুমিরকে দেখে আমি অবাক। আমি আগে ওদের কাছে গেলাম। যায়ে জিজ্ঞাসা করলাম,
: কি হয়েছে।
রিকশাওয়ালা : কিছু ছিনতাইকারী আমাদের উপর আক্রমণ করছিলো। মামুনির ব্যাগ আর মোবাইল নিয়ে চলে গেছে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে ঠিক সময় এই ভদ্র লোক এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলো। ভদ্রলোকটিকে দেখে তারা পালিয়ে গেছিলো। বেশি কিছু করার সুযোগ পায়নি।
আমি তিতুমিরের কাছে যেয়ে,
অর্ণব : আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো তার ভাষা নাই।
তিতুমির : আর একটা কথা বলিয়েন না। আমি আপনার জন্য যা করি তাই কম।
আমি তিতুমিরকে নিয়ে একটু সাইডে গেলাম। কারণ তানহার সামনে কি বলতে কি বলে দেয়।
তিতুমির : আমার ভাবিকে আক্রমণ করবে এতো বড় সাহস। পাইলে একেকটাকে হালের ঘানি টানিয়ে ছাড়বো। শুধু বেটারা মুখোশ পড়ে ছিলো বলে চিনতে পারিনি।
অর্ণব : ভাবী মানে?
তিতুমির : ভাই! আমার সাথে নাটক করে লাভ নাই। প্রধান শিক্ষক নিজে আমাকে ডেকে বলছে যে ইংলিশ শিক্ষিকা তানহা আপনার বউ। আর উনার সাথে যেন আমি কোন ধরনের ফাজলামো না করি। চিন্তা নাই এটা আমি গোপনই রাখবো। হাহাহা।
অর্ণব : ধন্যবাদ বিষয়টা বুঝার জন্য।
তিতুমির : কিন্তু ভাবী একা একা যাচ্ছে কেনো?
অর্ণব : আর বলিস না। তোর ভাবী তো আমাকে ভালোই বাসে না। এজন্য অন্য এক জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে আছে।
তিতুমির : ওহ এই কাহিনী। শুনেন নারীরা সাধারণত রোমান্টিকতা পছন্দ করে। খুনসুটি মানে রসিকতা পছন্দ করে। আবার নখরা মানে ন্যাকা তাদের স্বভাবগত। তারা ভালবাসার স্পষ্ট প্রকাশকে খুবই পছন্দ করে। আপনি একান্তে স্ত্রীর কাছে এসব কথা প্রকাশে কখনোই কার্পণ্য করবেননা। তাকে বেশি বেশি ভালোবাসার কথা বলবেন। যদি এসবে কার্পণ্য করেন, তাহলে দেখবেন কিছুদিন পরই আপনার আর তার মাঝে একটা অদৃশ্য পর্দা ঝুলে গেছে। এরপর দিনদিন পরস্পরের সম্পর্কে শুষ্কতা আসতে শুরু করবে। ভালবাসা জানলা দিয়ে পালাবার পথ খুঁজবে। বুঝলেন?
অর্ণব : হুম। এগুলা তো কখনো তেমনভাবে করা হয় নি।
তিতুমির : এখন থেকে করবেন। আর নারীরা কঠোর, কর্কশ, রূঢ়, বদমেজাজি, রুক্ষ স্বভাবের পুরুষকে একদম পছন্দ করেনা। আপনার মধ্যে এমন কিছু থাকলে এখুনি ঝেড়ে ফেলেন। কারণ তারা সুশীল, ভদ্র, উদার পুরুষ পছন্দ করে। আপনি তার ভালবাসা অর্জনের জন্য, তাকে আশ্বস্ত করার জন্য হলেও গুণগুলো অর্জন করেন।
অর্ণব : শেষ কয়েকদিন ওর উপর একটু রাগেই ছিলাম।
তিতুমির : এজন্য! ক্ষমা চেয়ে নিয়েন । আর এটা খুব ভালো করে মনে রাখবেন, আপনি আপনার স্ত্রীকে যেমন পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, পরিপাটি, গোছালো, সুরুচিপূর্ণ, সুগন্ধিময় দেখতে চান, আপনার স্ত্রীও কিন্তু আপনাকে ঠিক তেমনটাই চায়। তাই সাবধান থাকবেন, তার চাহিদা পূরণে যেন কোন অবস্থাতেই আপনার পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র অবহেলা না হয়।
অর্ণব : ওহ! ঠিক আছে। যথা সম্ভব চেষ্টা করবো।
তিতুমির : আর ঘর হল নারীদের রাজ্য। একজন নারী নিজেকে সবসময় সেই রাজ্যের সিংহাসনে আসীন দেখতে খুবই পছন্দ করে। সে কল্পনায়, স্বপ্নে, বাস্তবে এই রাজ্য নিয়ে ভাবে। সাজায়, রচনা করে।
খুবই সাবধান থাকবেন। কখনোই আপনার স্ত্রীর এই সুখময় রাজত্বকে ভেংগে দিতে যাইয়েন না। এমনকি তাকে সিংহাসন থেকে নামিয়ে দেয়ার প্রয়াশও চালাবেননা। আপনি তো জানেনই, আল্লাহ্ তা’আলার কাছে সবচেয়ে অপছন্দজনক বিষয় কী?
অর্ণব : তাঁর সাথে কোনকিছু শরীক করা।
তিতুমির : হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন। ঠিক তেমনি একজন রাজার কাছেও সবচেয়ে ঘৃণিত বিষয় কী?
অর্ণব : তার রাজ্যে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করা।
তিতুমির : ঠিক তাই। আর নারীরা তার স্বামীকে মনে প্রাণে, সর্বান্ত:করণে প্রবলভবে স্বামীকে পেতে চায়। তবে পাশাপাশি বাবার বাড়িকেও হারাতে চায় না। হুঁশিয়ার থাকিয়েন! আপনি ভুলেও নিজেকে আর স্ত্রীর পরিবারকে এক পাল্লায় তুলে মাপতে শুরু করে দিয়েননা। আপনি এ অন্যায় দাবী করে বসিয়েন না “হয় আমাকে বেছে নাও, নাহলে তোমার বাবা-মাকে’।” আপনি এই বিষয়টা চিন্তাতেও স্থান দিয়েন না। আপনি তাকে এমনটা করতে বাধ্য করলে সে হয়তো চাপে পড়ে মেনে নিবে। কিন্তু তার মনের গহীনে কোথাও একটা চাপা বোবা কান্না গুমরে মরতে থাকবে। আপনার প্রতি এক ধরনের সুপ্ত অশ্রদ্ধা তার কোমল মনে জেগে উঠবে।
অর্ণব : ঠিক। এইদিক থেকে চিন্তা নাই। উনি এতিম।
তিতুমির : তাহলে তো আপনার জন্য বিষয়টা সহজ। আর নারীদের শরীর মনের অবস্থা সবসময় একরকম থাকে না। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট একটা সময় তাদের শারীরিক দুর্বলতা থাকে। অনেকসময় মানসিক অস্থিরতাও বিরাজ করে। তাদের এই দুর্বলতা, অসহায় অবস্থার কথা বিবেচনা করে আল্লাহ্ তা’আলা তাদের নির্দিষ্ট সময়ের নামাজ মাফ করে দিয়েছেন। রোযাকে পিছিয়ে দিয়েছেন তার স্বাস্থ্য ও মেজাজ ঠিক হওয়া পর্যন্ত। আপনিও তোমার স্ত্রীর দুর্বল মুহুর্তগুলোতে তার প্রতি কোমল হবে।
অর্ণব : হুম বুঝছি তুমি কোন সময়ের কথা বলতেছো। তা একটা নারীর জন্য সত্যিই কষ্টদায়ক এক সময়।
তিতুমির : শেষে এতটুকুই বলতে চাই সবসময় মনে রাখবেন, আপনার স্ত্রী আপনার কাছে অনেকটা দায়বদ্ধ। বিভিন্নভাবে আপনার মুখাপেক্ষী। আপনার সুন্দর আচরণের কাঙাল। আপনি তার প্রতি যত্নবান হবেন। তার প্রতি অনেকবেশি মনোযোগ দিবেন। তাকে আপন করে নেবেন। তাহলে সে আপনার জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পদে পরিণত হবে। তাকে অনুপম সঙ্গী হিসেবে পাবেন। অার নিজের সাথে নিজের স্ত্রীকেও যদি দ্বীনদার হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন,তাহলে আপনার ঘরই তো আপনার জন্য দুনিয়ার একটা জান্নাত।
অর্ণব : ধন্যবাদ তোমাকে। একজন প্রাকটিসিং মুসলিমাহ হিসেবে খুব তাড়াতাড়ি এগোচ্ছো। আল্লাহ তোমার জ্ঞান আরো বৃদ্ধি করে দিক। আজকে যাও তাহলে। তোমার কলেজের দেরি হচ্ছে। আসসালাম অলাইকুম।
তিতুমির : আপনি ভাবীকে নিয়ে বাসায় যান। আমি হেড স্যারকে বলে দিবো ঘটনাটা। অলাইকুম আসসালাম।
অর্ণব : ধন্যবাদ।
তারপর চাচার সাথে কথা বলে চাচাকে বিদায় জানিয়ে তানহার কাছে গেলাম। তানহা কাঁদতেছে। আমি এতক্ষণ ওকে ধাতস্থ হওয়ার সময় দিছিলাম। তাই কথা বলিনি।
অর্ণব : এই তানহা কাঁদতেছো কেনো?
(তানহা কথা না বলে কাঁদেই যাচ্ছে)
অর্ণব : উফফ! মেয়েটা এতো কাঁদে।
এবার তানহা মুখ খুললো,
তানহা : আপনার সাথে যদি হইতো তাহলে বুঝতেন।
অর্ণব : ওহ তাই। তা শুনি কি হইলো তোমার সাথে?
তানহা : ওরা আসে জোর করে আমার ব্যাগ আর মোবাইল নিয়ে গেছে। আমি ভয়ে দিয়ে দিছি।
অর্ণব : আচ্ছা তিতুমির না আসলে তো বেশি কিছু হতে পারতো তাই না? আর মোবাইল তো আরেকটা কিনে নেওয়া যাবে। আল্লাহকে শুকরিয়া জানাও যে তিনি বিপদটা এতটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখছেন।
আল্লাহ বলেন,
“আর তাঁর নির্দেশনসমূহের মধ্যে রয়েছে, তিনি [বৃষ্টির] সুসংবাদ বহনকারী হিসেবে বাতাস প্রেরণ করেন এবং যাতে তিনি তোমাদেরকে তাঁর রহমত আস্বাদন করাতে পারেন এবং যাতে তাঁর নির্দেশে নৌযানগুলো চলাচল করে, আর যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ থেকে কিছু সন্ধান করতে পারো। আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।”
-[সূরা রুম; ৩০ : ৪৬]💕
তানহা : হুম।
অর্ণব : এবার কাঁদা বন্ধ করে একটু হাসো।
তানহা : আমি এখন আর কাঁদতেছিনা। নিকাবের জন্য দেখতে পাচ্ছেন না। বুঝলেন?
অর্ণব : হুম বাবা এখন চলো।
তারপর তানহাকে বাইকে নিয়ে ওর বাসার দিকে রওনা হলাম।
মনে মনে,
তানহা : এই প্রথম কারো বাইকে উঠলাম। তাও আবার আমার স্বামীর। সত্যি অনেক ভালো লাগতেছে।
তানহার বাড়িতে এসে,
অর্ণব : চাবি দেও আমি রুমের দরজা খুলি।
তানহা :- ফুলের গাছের টপের ভিতর দেখেন। ওই খানেই অাছে।
অর্ণব :-এইখানে কেউ চাবি রাখে? যে কেউ নিয়ে রুমের সব জিনিস চুরি করে নিয়ে যাবে।
তানহা :- আপনার মতো চোরেরাই আসবে।
অর্ণব :-মানে😡
তানহা :- মানে কিছুনা, আমার রুম থেকে কিছু চুরি হলে আপনাকেই ধরবো কারণ আপনি শুধু জানেন আমি এখানে চাবি রাখি।
(হাহা আজ থেকে তুৃমি এখানে থাকতেই পারবা না মিসেস তানহা)
তানহা : কি ভাবতেছেন? আর হাসতেছেন কেনো?
অর্ণব :- না কিছুনা,ভিতরে চলো।
তানহা :- ভিতরে চলো মানে কি? আপনি বাসায় যান😒
অর্ণব :-আরে যাব তো পরে, একটু রেস্ট নিই। তুমি ফ্রেস হয়ে আসো। আমি শুয়ে আছি।
তানহা :- ওকে, যাচ্ছি।
আমি তানহার বিছানায় শুয়ে আছি। বিশ মিনিট পরে তানহা গোসল শেষ করে বেড় হলো। তানহার মাথায় টাওয়েল পেঁচানো। গোসলের পর মেয়েদেরকে এতটা সুন্দর লাগে জানতাম না। আমি এক দৃষ্টিতে তানহার দিকে তাকিয়ে আছি। আমার তাকিয়ে থাকা দেখে তানহা মুচকি হেসে মাথা থেকে টাওয়েলটা খুলে নিলো। আমি তো অবাক। চুলগুলো ছেড়ে দেওয়ায় কালো ঘন চুলগুলো কমড়ের নিচ অব্দি চলে গেলো। তানহা টাওয়েল দিয়ে চুল মুঁছছে আর আর চুলের কিছু পানি ছিটে নিচে পড়ছে। আমি তানহার এই রূপ দেখে ঘোরের মধ্যে চলে গেলাম। আমি নিজেকে সংযত রেখে বললাম,
: তানহা তাড়াতাড়ি করো। আমার দেরী হচ্ছে।
তানহা : আপনি তাহলে চলে যান। আমি দরজা লাগিয়ে দিয়ে ঘুৃমাবো।
অর্ণব : সব কাপড় গুছিয়ে নেও। তুমি আমার বাসায় যাবা।
তানহা : আমি আপনার সাথে যাবোনা। আর আপনি না আসার সময় বললেন যে আমায় পৌঁছে দিয়ে আপনি বাসায় যাবেন?
অর্ণব : আমি আমার বউকে নিয়ে আর ঝুঁকি নিতে পারবো না। তাড়াতাড়ি করো।
তানহা : যাবনা আমি।
ওর কথা শুনে আমি নিজেই ড্রয়ার থেকে ওর কাপড়চোপড় সব একটা ব্যাগে ঢুকানো শুরু করলাম।
তানহা : এই কি করতেছেন। একটা মেয়ের ড্রয়ারে হাত দিতে লজ্জা লাগেলো না?
অর্ণব : আমার বউয়ের ড্রয়ার। আপনি চুপ থাকেন।
গুছানো শেষ করে,
: চলো এখন
তানহা :- বললাম না যাবোনা।
অর্ণব :-যাবানা মানে কি হুম?
বলেই তানহাকে ধরে কোলে তুলে নিলাম। ওর ভিজা চুল গুলা আমার বাহু ভিজায় দিলো।
তানহা :- এই কি করছেন পড়ে যাব তো।
অর্ণব :-এই রকম করেই তোমায় নিয়ে যাব আজকে।
তানহা :- এই ছাড়ুন। আমি এমনিতেই যেতে পারবো। আল্লাহ আমাকে দুইটা পা দিয়েছে। আর আমাকে বোরখা,হিজাব আর নিকাব পড়তে হবে। এভাবে খোলা চুলে যাবো? আমার মাথা খারাপ হইছে?
নামিয়ে দিয়ে,
অর্ণব :-লজ্জা পাইছো নাকি?
তানহা :- কিসের লজ্জা ফাজিল একটা।
বলে রুমে যায়ে তৈরী হয়ে বেড় হলাম।
অর্ণব : ছোট মোবাইলটা থাকলে ঐটা নিয়ে নেও। সামনে মাসের আগে নতুন মোবাইল কিনে দিতে পারবো না।
মোবাইলটা ড্রয়ার থেকে নিলাম।
অর্ণব : চলো তাড়াতাড়ি।
তানহা :- হুম….
বলা শেষ নাই হইতেই হাত ধরে টানাটানি শুরু করে দিলো।আমি যাবোই না, জোর করে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। আমি তো উনাদের সামনে কি হবে এটা ভাবে অস্থির। অর্ণব তো এই ঘটনার পর আমাকে আর এখানে রাখবে না। আর আমার যাওয়ার মন নাই তবুও যাচ্ছি। ইয়া আল্লাহ! উনারা যেনো ভালো মানুষ হয়। যদিও আন্টিকে আমি আগে থেকেই চিনি। আমি যায়ে বাইকে অর্ণবের পিছনে বসে ওর ঘাড়ে হাত রাখলাম।
অর্ণব : ঠিকভাবে বসছো?
তানহা : হুম।
অর্ণব বাইক স্টার্ট করলো। দেখতে দেখতে অর্ণবের বাসার সামনে চলে আসলাম। আগেও আসসিলাম নাজিমের প্রাইভেট ঠিক করতে।
আমরা যায়ে গেটের সামনে দাঁড়াইলাম। বললাম,
তানহা : আমার না গেলে হয় না?
অর্ণব : এক থাপ্পর দিয়া সবগুলা দাঁত ফেলায় দিবো।
বলেই অর্ণব কলিং বেল চাপলো।

🛍️ Improve Your Sexual Health
Ensure your sexual well-being with smart, safe practices.
www.luminacart.in
Islamic গল্প😊
“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 36
আমি আর তানহা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আম্মু গেট খুলে দিলো।
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম।
মিস রাদিয়া : অলাইকুম আসসালাম। আরে তানহা মা তুমি এখানে কেনো? আসো আসো ভিতরে আসো।
অর্ণব : ইনিই তোমার ছেলের বউ। এতোদিন বউ বউ করে পাগল হচ্ছিলা। নেও আজকে নিয়েই আসলাম। আমি ভিতরে গেলাম।
বলে আমি রুমের দিকে গেলাম। আমাকে তানহার সাথে থাকা উচিৎ ছিলো। কিন্তু আমি চাচ্ছি তানহা নিজে পরিস্থিতি সামাল দিক। তাহলে তানহার মনের মধ্যে ভয়টা আর থাকবে না। পরিস্থিতি একা মোকাবেলা করার ফলে ওর মনের মধ্যে একটা সাহস তৈরী হবে। আর আব্বু- আম্মু অনেক ভালো। তাই চলে আসলাম।
আম্মু তো শুনে অবাক।
মনে মনে,
তানহা : এইদেখ! ফাযিলটা আমাকে একা ফেলে চলে গেলো। আজকে আমার বউ হিসেবে প্রথম দিন। একটু দায়িত্ব জ্ঞান যদি থাকে! আমার এমনিতেই খুব লজ্জা লাগতেছে। বললাম,
: আসসালাম অলাইকুম আন্টি।
মিস রাদিয়া : অলাইকুম আসসালাম। এই যে দেখো মেয়ে কি বলে। তুমি আমাকে অর্ণবের মতো আম্মু ডাকবা। তোমাকে আমি আমার ছেলের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিবো দিবো ভাবতেছিলাম। যাক শয়তানটা একটা ভালো কাজ করছে।
বলে দরজা লাগায় আমাকে নিয়ে ভিতরে গেলো।
রফিক সাহেব : কি ব্যাপার কে আসছে।
মিস রাদিয়া : তোমার ছোট ছেলের ম্যাডাম আর বড় ছেলের বউ।
আমি আংকেলকে দেখে সালাম দিলাম।
রফিক সাহেব : অলাইকুম আসসালাম। যাক এতোদিনে তাহলে কথা রাখছে। আলহামদুলিল্লাহ! মা তুমি সোফাতে বসো।
মিস রাদিয়া : এজন্যই প্রতিদিন নাজিমকে আনাতে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে থাকে। এমনকি ছুটির দিনেও ভুল করে যাওয়ার জন্য বেড় হয়ে যায়।
রফিক সাহেব হাসতেছে।
নিকাবটা খুলে রাখে আমি লজ্জায় মুচকি হাসি দিলাম। তারপর উনাদের সাথে পরিচিত হলাম। আমি পিচ্চি শয়তানটাকে মানে নাজিমকে খুঁজতেছিলাম। ওর কথা মনে হলেই কেমন জানি লজ্জা লাগতাছে আমাকে দেখলে কি যে বলবে!
মিস রাদিয়া : আচ্ছা মা সেদিন তাড়া থাকায় বেশি কিছু জিজ্ঞাসা করতে পারিনি। তা তোমার বাবা-মা কি রাজশাহীতেই থাকে?
মাথাটা নিচু করে,
তানহা : আসলে আমার মা -বাবা অনেক ছোটবেলায় মারা গিয়েছে। একটা এতিম খানায় থেকে পড়াশুনা করেছি।
সহানুভূতির সুরে,
রফিক সাহেব : কে বললো তোমার মা-বাবা নেই? আমরা তো আছি। পাগলি মেয়ে একটা। এভাবে কেউ মন খারাপ করে?
মিস রাদিয়া : এখন থেকে আমরাই তোমার বাবা -মা। আমার কোন মেয়ে নেই। অনেক আশা ছিলো একটা মেয়ের। এজন্যই অর্ণবকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলাম। আজকে থেকে তুমি আমার মেয়ে ঠিক আছে?
একটু হাসি দিয়ে,
তানহা : হুম😊
(আল্লাহ তুমি মহান। আমি নামাজ পড়ে যা যা আশা করেছি আর তোমার নিকট ফরিয়াদ করেছি সে সব কিছু তুমি পূরণ করে দিয়েছো। এজন্যই
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ এবং কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করো, মাথা মাসেহ করো এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত করো)। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাকো, তবে ভালোভাবে পবিত্র হও। আর যদি অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাকো অথবা যদি তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে অথবা তোমরা যদি স্ত্রী সহবাস করো অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করো। সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত তা দ্বারা মাসেহ করো। আল্লাহ্ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না। বরং তিনি তোমাদের পবিত্র করতে চান এবং তোমাদের উপর তাঁর নেয়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।”
-[সূরা মায়েদা; ৫ : ৬]💕
আল্লাহকে হাজার হাজার শুকরিয়া।)
অর্ণব উপর থেকে আসলো এবং উনাদেরকে আমাদের বিয়ের ঘটনাটা বললো।
রাদিয়া বেগম : তে তুই বউকে এতোদিন আনিস নি কেনো? টাকা নেওয়ার সময়ও বললি না যে তানহার চাকরির জন্য নিছিস। বললে কি হইতো?
অর্ণব : আমি তানহার চাকরির জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম আর তোমাদেরকেও সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম। তাই বলিনি।
মনে মনে,
তানহা : যাক বাবা বাঁচা গেলো। আমি তো চিন্তায় ছিলাম যে অর্ণব সত্যিটা আবার বলে দেয় নাকি। বলে দিলে কি জবাব দিতাম উনাদের? আল্লাহ তোমাকে শুকরিয়া এমন একজনকে আমার জীবনে পাঠানোর জন্য যে আমাকে সবচেয়ে ভালো বুঝে।
রফিক সাহেব : তাহলে সেদিন রাতে বিয়ের খরচের জন্য টাকা গুলা নিলি আর আসার পর অনুষ্ঠানটা ছিলো বউভাত?
অর্ণব : হুম😷
রফিক সাহেব : হাহা। এগুলা বাটপারি কাজকর্ম তোর দাঁড়াই সম্ভব। যাক মা তুমি আসছো অনেক খুশি হইছি। আর শুনো আমার ছেলে কিন্তু অনেক ভালো শুধু একটু দুষ্টামি করে।
মনে মনে,
অর্ণব : এটা শুনে তো আমার ছাতি তিন ফুট চওড়া হয়ে গেলো😎
মনে মনে,
তানহা : জি আমি জানি। উনি অনেক ভালো। যার জন্যই তো এখনো আমি প্রতিদিন তার প্রেমে নতুন করে পড়তেছি।
মিস রাদিয়া : ইস! বাপের কাছে প্রশংসা শুনে বান্দরের মতো খুশি হচ্ছে।
বউয়ের সামনে এগুলা বললে ভালো লাগে? তাই মুখটা পেচার মতো করে বসে থাকলাম।
রফিক সাহেব : আমি কয়েকদিনের মধ্যে তাহলে অনুষ্ঠান করে দাওয়াত খাইয়ে দিবো। বিয়ে হয়েছে কিন্তু দাওয়াত দেই নি এইটা শুনলেই তো সবাই রাগে যাবে। ঠিক আছে তোরা যায়ে ফ্রেশ হয়ে নে।
ঠিক তখনি নাজিম আসলো,
নাজিম : আরে ম্যাডাম আপনি এখানে? কালকে আমি পড়তে যাইনি দেখে বাড়িতে চলে আসছেন? সরি মেডাম আর মিস করবো না।
আমি হাসলাম। বললাম,
তানহা : জি না পিচ্চি।
মিস রাদিয়া : তানহা তোমার ম্যাডাম না এখন থেকে ভাবী। বুঝলা বাবা?
নাজিম : আমি তো আগে থেকেই জানতাম। ভাইয়া বলতে মানা করছে বলে বলিনি।
মনে মনে,
তানহা : ফাজিলটা তাহলে একে আগে থেকেই বলে দিছে।
রফিক সাহেব : ওহ। শুধু আমরাই জানতাম না।
মিস রাদিয়া : হাহা। হুম।
নাজিম : যাক আজকে থেকে আর ওতো দূর হাটে যাইতে হবে না। বাড়িতেই ভাবীর কাছে পড়বো।
(সবাই হেসে উঠলাম)
আমি ফ্রেশ হওয়ার জন্য অর্ণবের সাথে অর্ণবের রুমে গেলাম।
আল্লাহ! এটা মানুষের রুম? টেবিলের উপর বই খাতার স্তুপ। সব বই খাতা এলোমেলো। বিছানা গোছানো নাই। মশারিটাও শুধু একদিকে লাগায় রাখছে। কাপড়চোপড় তো পুরা ঘরে ছড়ায় ছিটায় আছে৷ রুমটা ডাস্টবিন বানায় রাখছে। আরেকটু হলে আমি দম বন্ধ হয়ে অজ্ঞান হয়ে যাবো।
তানহা : এই আপনি এই রুমে কিভাবে থাকেন? এতো আলসিয়া কেনো আপনি?
অর্ণব : আজ পর্যন্ত যেই আমার ঘরে আসছে সেই কিছু না কিছু বলছে। তুমিও এর ব্যতিক্রম না😒
[হুম😡। ভাই প্রসংসা করবি নাতে চুপ করে থাক। বলতেই হবে😑]
তানহা : রুমের এরকম মর্মান্তিক অবস্থা করে রাখলে তো হবেই। আমার কাজ আরো বাড়ায় দিলো।
এই বলে মুখে কাপড় দিয়ে রুম গুছাইতে শুরু করলাম। অর্ণবও আমাকে সাহায্য করা শুরু করলো। বুঝলাম আমার বরটা খুব সাংসারিক। আলসিয়া হলেও রুচি আছে, খুব সুন্দরভাবে সব কিছু গুছাচ্ছে।
রুমটাকে গুছাইতে গুছাইতে রাত হয়ে গেলো। অর্ণব আমার বাকি কাপড় আর জিনিসপত্রগুলাও এনে দিলো।
মনে মনে,
অর্ণব : আমার বউটা সত্যি অনেক সংসারী। সব কাজগুলা খুব সুন্দরভাবে সারলো। রুমটা দেখতে যা লাগতেছে না। তানহার রুচি আছে বলতে হবে।
রাতে খাবার খাওয়ার পর,
তানহা : আন্টি আমি কোন রুমে ঘুমাবো?
অর্ণব : আন্টি মানে কি? আম্মু বলবা। আর বিয়ের পড়ে স্ত্রীরা স্বামীর সাথে থাকে। এই সাধারণ বুদ্ধিটুকু নেই? মাস্টারের চাকরিটা যে তোমাকে কে দিলো?
তানহা : আমি তো….
কথা না বলতে দিয়ে আমার হাত ধরে টেনে ওর রুমে নিয়ে গেলো।
রুমে যায়ে আয়নার সামনে হিজাবটা খুলে রাখে চুল গুলা ছেড়ে দিলাম। পিছনে ঘুরে দেখি অর্ণব কাপড় চেঞ্জ করে একটা ফোর কোয়ার্টার প্যান্ট আর একটা গেঞ্জি পড়েছে। এরকম অবস্থায় ওকে দেখবো ভাবি নি। বললাম,
তানহা : কি ব্যাপার এটা পড়লেন যে।
অর্ণব : ঘুমানোর সময় আমি এটাই পড়ি। আমি ফুল প্যান্ট পড়ে ঘুমাবো নাকি? আর আমি লুঙ্গি পড়তে পারি না।
তানহা : এতো বড় ছেলে আর লুঙ্গি পড়তে পারেনা😁
অর্ণব : আরে বলিও না। প্রথম যেদিন লুঙ্গি পড়ে ঘুমনোর চেষ্টা করেছিলাম, সকালে উঠে দেখি লুঙ্গি গায়েব। বিছানার উপর খুঁজে দেখলাম কিন্তু লুঙ্গি পাই না।
তানহা :- সেকি তাহলে লুঙ্গি কোথায় গেলো?
অর্ণব :-অনেক খোঁজার পরে দেখি লুঙ্গি খাটের নিচে। তাও ভালো নিরাপত্তার জন্য ফোর কোয়ার্টার প্যান্ট নিচে পড়েছিলাম।
তানহা :- কি কান্ড😁
অর্ণব : -শুধু তাই নয় দ্বিতীয় দিনও তার ব্যাতিক্রম হয়নি।
তানহা : কেনো? আবার লুঙ্গি খাটের নিচে গেয়েছিল নাকি?
অর্ণব :- আরে না সকালে উঠে দেখি আমি চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
অবাক হয়ে,
তানহা :- কেনো?
অর্ণব :- ঘুম থেকে উঠে, মাথা একটু ঠিক হওয়ার পড়ে দেখি লুঙ্গি আমার চোখের উপরে থাকায় আমি চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছি না। তারপরে আর ভুলেই চেষ্টা করিনি।
তানহা :- থামেন থামেন আর বলতে হবেনা বুঝতে পারছি সব😁😁
অর্ণব : তোমার হাসিটা কিন্তু অনেক সুন্দর।
এই বলে আমার কাছে আসলো। আমি পালাতে যেয়েও ব্যর্থ হলাম।
…….
তানহা : আচ্ছা আপনি পাগল নাকি। এসব করতে লজ্জা করে না?
অর্ণব : না করেনা আমি তো আমার বৌয়ের সাথেই করছি লজ্জা কিসের। আর আপনার অবগতির জন্য বলতেছি একটা করে বরাদ্দ ছিলো প্রতিদিন।
তানহা : ইস! শখ কতো।আমাকেও ঘুমানোর ড্রেস পড়তে হবে। যেতে দেন।
অর্ণব : যাও। কিন্তু তাড়াতাড়ি এসো।
তানহা : আপনি সরুন আপনি না সরলে উঠবো কিভাবে?
তানহা চলে গেলো। আমি বিছানাটা ঠিক করলাম। একটা কোলবালিশ আছে, আরো একটা কোলবালিশ সাথে আরো তিনটা বালিশ আনলাম।
মনে মনে,
তানহা : আমি ঘুমানোর ড্রেস পড়ে যাচ্ছি আর ভাবতেছি, ফাযিলটা কি যে করবে। কিন্তু যায়ে যখন দেখলাম দুইটা বালিশ আর একটা কোলবালিশ দিয়ে খুব সুন্দরভাবে মাঝখানে একটা ব্যারিকেড তৈরী করছে, আমি তো অবাক। যাক অর্ণব তাহলে আমাকে সময় দিয়েছে। বললাম,
তানহা : ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
অর্ণব : যেহেতু আমি কথা দিয়েছি তাই আপনি যতদিন না নিজে থেকে অনুমতি দেন ততদিন আপনাকে সময় দিবো। এখন ঘুমান। সকালের ঘটনা, পুরা ঘর গুছানো, আবার যেগুলা ঘটে গেলো সব মিলায় আপনি ক্লান্ত। তাই কথা বাড়াইয়েন না।
তানহা : হুম। আপনিও ঘুমান।
এই বলে আমি আমার জায়গায় ঘুমাইলাম। একজন পুরুষ এতোটা সংযত কিভাবে হতে পারে। আমি তার স্ত্রী কিন্তু সে তার প্রাপ্য অধিকার খাটাইতে একবারের জন্য চেষ্টাও করেন নি। নিজের বিছানা কিন্তু কষ্ট করে আঁটোসাটো হয়ে শুয়ে আছে। খুব বলতে ইচ্ছা করতেছে যে আমিও আপনাকে অনেক ভালোবাসি কিন্তু তা বলা যাবে না। কারণ তার পড়াশুনা এখনো শেষ হয়নি।
আমি সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস একবার করে পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে সমস্ত শরীরে একবার বুলিয়ে নিলাম। উনাকেও বললাম করতে। কেননা,
হাদিসে আছে,
নবী (স:) রাতে ঘুমানোর পূর্বে সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস একবার করে পড়ে হাতে ফুকে সমস্ত শরীরে একবার বুলিয়ে দিতেন। এভাবে তিনি ৩ বার করতেন।
-(বুখারী তাও: হা:৫০৭০)💕
তারপর ঘুমানোর দোয়া পড়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
ভোরে ফযরের নামাজের জন্য উঠলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি কোথায় বালিশ আর কোথায় কোলবালিশ, সব গায়েব। মানে কোনোটা পায়ের নিচে আর কোনোটা বিছানা থেকে পড়ে গেছে।
কোন ভাবে নিজেকে ছাড়াতে পারিছি না,অনেক কষ্টে আস্তে আস্তে অর্ণবের হাতটা সরায়ে উঠে পড়লাম। আগে আমি নামাজটা পড়ে নিই তারপর উনাকে ডাকবো।
ফযরের নামাজ পড়ে সূরা ইখলাস ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা একবার করে পাঠ করলাম। কেননা,
হাদিসে এসেছে,
প্রতি ফরজ সালাতের পর সূরা ইখলাস ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা একবার করে পাঠ করতে হবে ।
-(আবু দাউদ হা:১৩৬৩)💕

🛍️ Improve Your Sexual Health
Ensure your sexual well-being with smart, safe practices.
www.luminacart.in
Islamic গল্প😊
“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 37
ফযরের নামাজ পড়া শেষ করে অর্ণবকে ডাকতে গেলাম। তারপর ঘরটা গুছিয়ে ডাইনিং রুমে গেলাম। যায়ে দেখি নাজিম বসে আছে।
তানহা : বাব্বাহ এতো সকালে উঠো তুমি?
নাজিম : হুম ভাবী। আমাকে কোরআন মাজীদ পড়তে যাইতে হয় তাই ভোরেই উঠতে হয়।
তানহা : খুব ভালো। শুনো তুমি যেহেতু অর্ণবকে ভাইয়া ডাকো তাই আমাকে আপু ডাকবা ঠিক আছে?
নাজিম : ঠিক আছে আপু। ভাইয়া উঠছে?
তানহা : হুম উঠছে।
নাজিম : আজকে আবার এতো তাড়াতাড়ি উঠলো। অন্যদিন তো আমাকে পুরা বাসা দৌড়ায় নিয়ে বেড়ায়।
তানহা : মানে?
নাজিম : মানে হলো যে আমি ভাইয়াকে রোজ গিয়ে জোরে জোরে চিৎকার করে ডাকি, তাই রাগ হয়ে আমার মারার জন্য পিছনে একটা দৌড়ানি দেয়। আমি আম্মুর পিছনে যায়ে লুকায় যাই আর ও আবার রুমে যায়ে ঘুমায়।
তানহা : হাহাহা। আচ্ছা তুমি রান্নাঘরটা একটু দেখায় দেও।
নাজিমের সাথে রান্নাঘরে যায়ে দেখি আম্মু আগে থাকেই রান্নাঘরে আছেন। যায়ে উনাকে রান্নাতে সাহায্য করলাম।
রান্না শেষ হলে,
মিস রাদিয়া:- তানহা মা একটা কাজ করো নবাবজাদা কে গিয়ে টেনে তুলো।
তানহা :- এইটা আবার কে আম্মু?
মিস রাদিয়া :- তোমার আলসিয়া স্বামী।
তানহা :- ও আচ্ছা যাচ্ছি।
রুমের ভিতর গিয়েই দেখি নবাবজাদা ঘুমাচ্ছে। কিন্তু নামাজ পড়ে যে ঘুমটা দিছে, বার বার ডাকেও উঠাইতে পারিনি। তাই চলে আসলাম।
মিস রাদিয়া : কি ব্যাপার আসলো না?
তানহা : নাহ! গরুর মতো ঘুমাচ্ছে।
নাজিম:- আপু তুমি আমার কাছে বসো আর আমাকে খাওয়ায় দেও।
মিস রাদিয়া :-নিজের খাবার নিজে খেয়ে নেও,তুমি ছোট বাচ্চা নাকি?
তানহা :- আম্মু আমি ওকে খাইয়ে দিচ্ছি সমস্যা নাই। নাজিম তুমি আমার পাশে বসো। তার আগে দুই হাত ধুয়ে আসো। খাবার পূর্বে আমরা শুধু ডান হাত ধুয়েই খেতে বসি। কিন্তু
হাদিসে আছে,
“উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোতে হবে।”
-(আবু দাউদ -৩৭৬১)💕
বুঝলা?
নাজিম : হুম।
নাজিম হাত ধুয়ে আসলো।
তানহা : খাবার শুরু করার আগে উঁচু স্বরে বিসমিল্লাহ বলো।
হাদিসে এসেছে,
“খাবার আগে উঁচু স্বরে বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।”
-(বুখারী-৫৩৭৬)💕
নাজিম বলার পর ওকে খাওয়ায় দিলাম।
নাজিম:- আপুর হাতে খেতে অনেক মজা😋
তানহা :- তাই নাকি?
নাজিম :- হুম। আচ্ছা আপু একটা প্রশ্ন করি?
তানহা : ঠিক আছে করো।
নাজিম :- প্রশ্নটা হলো তুমি তো কলেজে পড়াও আর ভাইয়াও তোমার ক্লাস করে। তো ক্লাস করার সময় ভাইয়াকে কেমন করে ডাকো? মানে আমি বলতে চাচ্ছি বাসায় যেমন আপনি করে বলো ওই খানেও কি আপনি করে বলো নাকি?
বাপরে বাপ! পিচ্চি একটা ছেলে অথচ কতো বড় একটা প্রশ্ন করে বসেছে।
আম্মু হাসতেছে।
মিস রাদিয়া : আমার বউ মা কতো শিক্ষিত। আর আমার বড় ছেলে আস্ত একটা গাধা।
তানহা : হাহা।
নাজিম:- আপু আমার উত্তরটা পেলাম না।
তানহা :- তোমার উত্তরটা হলো তোমার ভাইয়া আমাকে ক্লাসে আপনি করে বলে আর আমি তুমি করে বলি। বুঝলা?
নাজিম:- ও তাই।
তানহা : হুম।
কিছুক্ষণ পর অর্ণব আর আব্বু নিচে আসলো। খাওয়া দাওয়া শেষ করে,
অর্ণব : আব্বু তাহলে আমি অফিস গেলাম।
তানহা : আজকে কলেজে যাবেন না আপনি?
রফিক সাহেব : তুই তানহাকে কলেজ দিয়ে আয়। আর কয়েকটা ক্লাশ করে তারপর অফিস যাবি। আর তানহাকে নিয়েও আসতে যাবি।
মনে মনে,
অর্ণব : তানহাকে বাড়িতে আনে মহা ঝামেলায় পড়লাম। ওহ হো। রিকশাওয়ালাকে আবার বলতে হবে তানহাকে এখান থেকে নিয়ে যাইতে। বললাম,
: রিকশাকে ডাকে দিচ্ছি। তানহা রিকশায় চলে যাবে।
মিস রাদিয়া : দিন দিন বেয়াদব হচ্ছিস তাই না? বাবা-মায়ের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় জানিস না?
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো। যদি তোমাদের কাছে তাদের কোন একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদেরকে “উহ্” পর্যন্তও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো। আর দয়া ও কোমলতা সহকারে তাদের সামনে বিনম্র থাকো এবং দোয়া করতে থাকো এই বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।”
-(সুরা বনী ইসরাইল ২৩-২৪)💕
বুঝলি?
অর্ণব : হুম বুঝছি।
তারপর বাইক বেড় করে তানহাকে কলেজে দিয়ে আসে অফিসে গেলাম।
অফিসে কাজ করতেছিলাম এমন সময় দেখি তানহার কল আসলো। তানহার উপর একটু রাগ ছিলো তাই কলটা কেটে দিলাম। তানহা আবার কল দিলো, এবার মোবাইলটা বন্ধই করে দিলাম।
মনে মনে,
তানহা : এতো রাগ? আমার কলটা ধরলোও না আবার মোবাইলটা বন্ধও করে দিলো। রাতে আসুক মজা দেখাবো।
ব্যবসার কাজ শেষ করে বিকালে বাড়িতে গেলাম। বাসার গেটের কাছে এসে নক করতেই তানহা এসে গেট খুললো।
অর্ণব : তা ম্যাম আপনি কি আমারই অপেক্ষা করতেছিলেন?
(তানহা চুপ করে আছে)
আমিও কোন কথা না বলে দরজা লাগিয়ে তানহার সাথে রুমে গেলাম।
ফ্রেশ হয়ে দেখি তানহা বিছানায় বসে জানালা দিয়ে আকাশ দেখতেছে। আমার পড়ার টেবিলে বিকালের নাস্তা রাখা। সত্যি এমন বউ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। বললাম,
: কাজের চাপে তোমাকে দুপুরে আনতে যায় নি। দুঃখিত।
(তানহা কথার উত্তর না দিয়ে জানালার দিকেই তাকিয়ে আছে)
মেয়েটা খুব রাগী। বললাম,
অর্ণব : আসো একসাথে নাস্তা করি।
(তানহা তাও চুপ করে আছে।)
কাছে যেয়ে,
অর্ণব : কি হলো কোন কথা বলতেছো না কেনো?
(তাও কথা বলতেছে না)
তানহার মুখের উপর কিছু চুল আসে পড়ছিলো, সেগুলো সরায় দিতে দিতে,
অর্ণব : তুমি কি চাচ্ছো আমি না খেয়ে থাকি?
(তানহা তাও অন্যদিকে তাকিয়ে চুপ করে আছে)
অর্ণব : ধুর খাবোই না,
বলে রুম থেকে বেড় হতে ধরলাম। আসলে আমারো খুব খিদা লাগছে। কিন্তু তানহার রাগ ভাঙ্গাইতে না খেয়ে থাকতেই হবে।
দরজার কাছে যেতেই,
তানহা : আমার কল ধরেন নি কেনো? আর মোবাইলটা বন্ধ করে ফেলছিলেন কেনো?
অর্ণব : তোমার উপর একটু রাগ ছিলো। তাই এরকম করছি। তাই বলে তুমিও?
তানহা : হ্যাঁ আমিও। আমার সাথে আরেকবার এরকম করলে ভালো হবে না বলে রাখলাম। আমারও কম রাগ না হুম।
অর্ণব : জি তাতো বুঝায় যাচ্ছে।
তানহা : আসুন খেয়ে নিন।
তারপর দুজনে নাস্তা করলাম।
যদিও তানহাকে পেয়েছি। কিন্তু পেয়েও পাইনি। এবার অপেক্ষাটা তানহাকে কাছে পাওয়ার।
রাতে খাওয়ার সময়,
রফিক সাহেব : আমার বন্ধুর ছেলের বিয়ে৷ তাদের বিয়েতে দাওয়াত দিছে। আমরাতো যাবো না। তাই অর্ণব তুই আর বউমা যাবি।
অর্ণব : ঠিক আছে।
তানহা : আর আমাদের সাথে নাজিমও যাবে।
খুশি হয়ে,
নাজিম : ধন্যবাদ আপু। তুমি দুনিয়ার বেস্ট আপু।
আমার তো মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো। কোথায় আমি খুশি হচ্ছিলাম যে তানহার সাথে একা যাবো। আর এটা নিয়ে কত কিছু ভাবতেছিলাম যে যাওয়ার পথে কি কি করবো।কিন্তু তানহা সব কিছু মাটি করে দিলো। স্বাভাবিক হয়ে বললাম,
: কবে বিয়ে?
মিস রাদিয়া : কালকে।
খাবার খেয়ে আমি আর তানহা রুমে আসবো এমন সময়,
নাজিম:- আপু তুমি কিন্তু বলছো আজ আমার সাথে থাকবা!
তানহা : জি পিচ্চি মনে আছে।
অর্ণব : মানে কি?😡
তানহা : আমি নাজিমকে কথা দিছি যে আজ আমি ওর সাথে থাকবো। আপনি যায়ে ঘুমায় যান। ঘুম না আসলে পড়তে বসুন কালকে পরিক্ষা আছে আপনাদের।
অর্ণব :- মানে কিসের পরিক্ষা?
তানহা :- আমার ক্লাসে পরিক্ষা নিবো। ইংরেজি তো কিছুই পারেন না। যায়ে পড়তে বসুন।
অর্ণব :- তো মেডাম আপনি পরিক্ষাতে কি কি দিবেন?
তানহা : ইস! মামা বাড়ির আবদার। নাজিম তুমি চলো!
রুমে যায়ে,
নাজিম : আপু গল্প শুনাও না?
তানহা : না তুমি চোখ বন্ধ করে ঘুমাও। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
কিছুক্ষণের ভিতর নাজিম ঘুমায় গেলো। আমি বিছানা থেকে নেমে দরজাটা ভালোমতো আগায় দিয়ে আমার রুমে গেলাম।
রুমে ঢুকে দেখলাম অর্ণবও ঘুমায় গেছে। অর্ণবের কাছে গিয়ে উনার ঘুমন্ত চেহারাটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে খুব নরমভাবে কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালাম। হঠাৎ অর্ণব আমার হাত ধরে ফেললো। আমি লজ্জায় পিছনে ঘুরে পালাতে চাইলাম কিন্তু সে আরো শক্ত করে ধরলো হাতটা।
অর্ণব : কি ব্যাপার কোথায় যাচ্ছো?
তানহা : আপনি ঘুমাননি।
অর্ণব : ঘুমাচ্ছিলাম। কিন্তু কপালে কিসের যেন স্পর্শ পেলাম তাই ঘুম ভাঙ্গল আর দেখলাম..
কথা শেষ করতে না দিয়ে,
তানহা : হাত ছাড়ুন শুয়ে পড়বো।
বলতেই আমাকে টানে ওর কাছে নিলো। আমি ছাড়ানোর অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম।
………
অর্ণব উঠে বালিশ ও কোলবালিশ নিয়ে এসে কালকের মতো ব্যারিকেড দিলো। সবকিছুর একটা মাত্রা থাকে। যা অর্ণব খুব ভালো করেই জানে। সে এই মাত্রাটা পার করে না বা পার করার চেষ্টাও করে না। অর্ণবের এই গুণটা আমাকে অবাক করে দেয়। কতটা সংযত ও নিজের প্রতি কন্ট্রোল থাকলে কেউ তা পারে!
বললাম,
তানহা : সকালবেলা কিন্তু এই ব্যারিকেডের মাথা-মুন্ডু কিছুই থাকে না!
অর্ণব : হাহা। এটা কি পারমিশন নাকি?
তানহা : একদম না। শুধু বলে রাখলাম আরকি। ঘুমান এখন।
অর্ণব : আচ্ছা তুমি কি সেই মেয়েটা যে মেয়েটা বাসে আমাকে লুচ্চা, ছেসড়া আরো কত কি বলতেছিলো?
তানহা : হুম সেই মেয়েটাই, যার সাথে একটু আগে আপনি… ইয়ুউ!
অর্ণব : ঐটা বরাদ্দ ছিলো। এখন ঘুমান।
তানহা : হুম।
(ধন্যবাদ মিস্টার অর্ণব! আপনি আমাকে আমার বাবা-মা, একটা ছোট ভাই আর পৃথিবীর বেস্ট স্বামী উপহার দিয়েছেন। মুখে যাই বলিনা কেন বিশ্বাস করো আমি সারাজীবন তোমার পাশে হাতে হাত রেখে পায়ে পা মিলিয়ে হাটতে চাই। প্রচুর ভালোবাসি তোমাকে।)
হঠাৎ মধ্যরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দেখলাম তানহা জায়নামাজে মুনাজাত করতেছে। এই মুহুর্তে তানহাকে দেখে আমার মধ্যে অন্যরকম এক শিহরণ খেলে গেলো। আমি তানহাকে এই প্রথম এই রূপে দেখলাম। মাথায় সুন্দরভাবে ওরনা দিয়ে ঢাকা। বুঝলাম তানহা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেছে।
আমি উঠে ওযু করে আসলাম। আমাকে দেখে,
তানহা : কি ব্যাপার ঘুম থেকে উঠে পড়লেন যে?
অর্ণব : কারণ,
মহান আল্লাহ বলেন,
“হে নবী! আপনি রাত্রের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করুন। এটা আপনার জন্য নফল (অতিরিক্ত)। হয়ত আপনার প্রভূ এ কারণে আপনাকে মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দিবেন।”
-(সূরা বনী ইসরাঈল-৭৯)💕
বুঝলেন?
তানহা : আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো তার ভাষা আমার কাছে নেই। জানেন আমি আজকে অনেক অনেক খুশি। আমার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা ছিলো স্বামীর সাথে একসাথে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া।
অর্ণব : হুম চলেন। কত রাকাত পড়লেন?
তানহা : দুই রাকাত পড়লাম।
অর্ণব : ওহ। সমস্যা নেই।
হাদিসে এসেছে,
“তাহাজ্জুদের নামাজ ২ থেকে ১২ রাকাআত (এর চেয়ে বেশী পড়া যাবে) তবে রাসূল (স.) অধিকাংশ সময় ৮ রাকাআত আদায় করতেন।”
-(সহীহ বুখারী- ১০৭৩)💕
তারপর আমরা দুজনে তাহাজ্জুদের নামাজ একসাথে পড়লাম।
নামাজ শেষ করে,
তানহা : এখন কি ঘুমাবেন?
অর্ণব : কেনো?
তানহা : না এখন ওতো সহজে ঘুম আসবে না। তাই চলেন ছাদে যায়ে গল্প করি।
অর্ণব : আর উনার সাথে মধ্যরাতে ছাঁদে যায়ে গল্প করা ছিলো আমার স্বপ্ন।
তারপর দুজনে মিলে ছাঁদে গেলাম। আর বাকি রাতটা আমরা গল্প করেই কাটায় দিলাম।
ভোরে ফযরের নামাজ পড়ে…
(চলবে…)