একই বন্ধনে বাঁধা দুজনে 12(B,C)

একই বন্ধনে বাঁধা দুজনে

পর্বঃ-১২ (দ্বিতীয় খন্ড)
রোহান কুহুকে এক প্রকার টেনে-হিঁচড়ে সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যেতে শুরু করেছিল, কিন্তু তখনই হাসপাতালের করিডোরে এক অপ্রত্যাশিত গুলির আওয়াজ শোনা গেল। আওয়াজটা এতই তীব্র ছিল যে, পুরো হাসপাতাল যেন কাঁপছিল। রোহান তৎক্ষণাৎ কুহুকে পিছনে টেনে নিল এবং তার দিকে একটি সুরক্ষিত কোণায় ঢুকিয়ে দিল।
“কুহু, কিছু হবে না। তুমি এখানেই থাকো, আমি যাচ্ছি পরিস্থিতি দেখতে,” রোহান দ্রুত বলল।
কুহু কাঁপতে কাঁপতে বলল, “কী হচ্ছে? শত্রুরা এত কাছাকাছি চলে এসেছে?”
রোহান তার চোখে চোখ রেখে বলল, “বাঁধা দেবার সময় এখন নেই, তুমি এখানেই থাকো। আমি নিশ্চিত করবো যে সবাই নিরাপদ থাকবে।”
রোহান ছুটে গেল হাসপাতালের প্রধান কক্ষের দিকে, যেখানে সিকিউরিটি গার্ডরা ইতিমধ্যেই সতর্ক হয়ে কিছু পরিকল্পনা করছিল। পুরো হাসপাতাল জুড়ে একটি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। কিভাবে শত্রু এত অল্প সময়ে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতে সক্ষম হলো, তা ছিল এক রহস্য।
রোহান সিকিউরিটি প্রধানের কাছে গিয়ে বলল, “শত্রু এখানেই, এটা একটা বড় পরিকল্পনা হতে পারে। আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, এবং কুহু—আমি তাকে কিছু হতে দেব না!”
সিকিউরিটি প্রধান দ্রুত তৎপর হয়ে বলল, “আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি, কিন্তু তারা অনেক সজাগ। এই মুহূর্তে আমাদের পুরো হাসপাতাল সুরক্ষিত করতে হবে।”
ঠিক সেই সময়, একাধিক সিকিউরিটি গার্ড হাসপাতালের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে শত্রুদের খোঁজে। কিন্তু শত্রু অত্যন্ত কৌশলে মুভ করছিল। একাধিক মুখোশধারী লোক হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে নিরাপত্তার বেষ্টনী ভেঙে ফেলেছিল। গুলি চালানোর পরও, তারা দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছিল।
রোহান একদম স্থির হয়ে তার পরিকল্পনা তৈরি করতে শুরু করল। এই সময়, হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, সিসিটিভি, এবং সিকিউরিটি গার্ডদের মধ্যে যে যোগাযোগ ছিল তা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কুহু তখনো সুরক্ষিত কোণায় বসে রোহানের ফিরে আসার অপেক্ষা করছিল। তার চোখে ভয়, কিন্তু তার ভিতরে রোহানকে হারানোর চিন্তা ছিল সবচেয়ে বড় আতঙ্ক।
ঠিক সে মুহূর্তে, রোহান আবার কুহুর কাছে ফিরে আসে। তার চোখে কিছুটা উদ্বেগ ছিল, কিন্তু মুখে ছিল দৃঢ়তা।
“কুহু, আমরা নিরাপদে আছি, কিন্তু শত্রু খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। এখন তুমি আমার সঙ্গে চলে আসো, আমি তোমাকে সুরক্ষিত স্থানটায় নিয়ে যাব,” রোহান বলল।
কুহু অল্প সময়ের জন্য নিশ্চুপ হয়ে রোহানের দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনি… আপনি তো আমাকে কখনো ছেড়ে যাবেন না, রোহান?”
রোহান তার হাত শক্ত করে ধরে বলল, “এখনো কিছু হয়নি, কুহু। কিছু হবে না। আমি তোমাকে কখনো ছেড়ে যাব না।”
তবে, এর পরের মুহূর্তে, বাহিরে থেকে একটি গুলি আর এক তীব্র আওয়াজ শোনা গেল, হাসপাতালটা যেন আবার এক ঝড়ের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
হাসপাতালের করিডোরে তীব্র গুলির শব্দ আরও উচ্চারিত হয়ে উঠছিল। পুরো হাসপাতাল যেন এক ভয়াবহ অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছিল। রোহান কুহুকে নিয়ে দ্রুত একটি নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে চাইল, কিন্তু সেখানেও শত্রুর উপস্থিতি ছিল। সিকিউরিটি গার্ডরা যেভাবে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছিল, তাও ব্যর্থ হচ্ছিল।
রোহান কুহুকে সুরক্ষিত একটি রুমে নিয়ে ঢুকিয়ে, দরজা আটকে দিল। তারপর নিজেও বাইরে গিয়ে সিকিউরিটি গার্ডদের সাথে মিলিত হতে চলল। তার চোখে ছিল এক অদ্ভুত উদ্বেগ এবং প্রতিশ্রুতি—কুহুকে রক্ষা করতে হবে, সে কিছুতেই তাকে হারাতে চায় না।
কুহু এক মুহূর্তের জন্য চুপ ছিল, তারপর তার চোখে কিছুটা হতাশা ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ল। সে জানত, রোহান তার জন্য সবকিছু করবে, কিন্তু এই বিপদ থেকে বের হওয়া খুবই কঠিন।
বাহিরে, শত্রুরা আক্রমণ অব্যাহত রাখছিল। তাদের মধ্যে একজন তীব্রভাবে সিকিউরিটি গার্ডদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছিল, অন্যরা হাসপাতালের বিভিন্ন স্থান ধরে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল। এটি ছিল তাদের পরিকল্পনার এক বড় অংশ—শত্রুরা জানত, কুহু এখানে আছেন, এবং তারা তাকে যে কোনো মূল্যে খুঁজে বের করতে চায়।
রোহান তৎক্ষণাৎ সিকিউরিটি গার্ডদের কাছে গিয়ে বলল, “আমাদের একটি প্ল্যান চাই—তাদের আটকাতে হবে। আমরা যদি দ্রুত কিছু না করি, কুহুকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারি।”
একজন গার্ড দ্রুত বলল, “তারা পেশাদার, রোহান। আমরা তাদের দ্রুত চিহ্নিত করতে পারছি না। তবে আমাদের হাসপাতালে সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা কাজ করছে—এটা খুব বড় বিপদ হতে পারে।”
এই সময় রোহান একটি চিন্তা মাথায় পেল—হাসপাতালের ভিতরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে কিছু ধোঁয়াশা থাকতে পারে। সে দ্রুত সিসিটিভি রুমে পৌঁছাল। তবে তার চোখে এক অদ্ভুত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল যখন সে দেখতে পেল যে অনেক ক্যামেরার ফুটেজ নেই—সবগুলো বিকল হয়ে গেছে। তখনই বুঝতে পারল, শত্রু খুবই পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছে, এবং তাদের লক্ষ্য কুহু।
সে অবিলম্বে সিকিউরিটি প্রধানকে জানাল, “তাদের আমাদের সিস্টেমে হ্যাক করার চেষ্টা করেছে, এই মুহূর্তে সব কিছু বন্ধ করে দিন, যেন তারা কোন তথ্য বের করতে না পারে।”
এরপর, রোহান কুহুকে জানাল যে তাদের এখান থেকে বের হয়ে যেতে হবে। “কুহু, কিছুতেই একা থাকবে না। আমাদের এখনই এই হাসপাতাল থেকে চলে যেতে হবে, তাদের আমাদের অনুসরণ করতে সময় লাগবে না।”
কুহু তার হাত শক্ত করে ধরল, চোখে কিছুটা ভয় আর সঙ্কট—”আমরা কোথায় যাবো রোহান?”
রোহান তাকে অদৃশ্য এক স্থির দৃষ্টিতে দেখে বলল, “যতদূর সম্ভব সুরক্ষিত জায়গায়, এবং আমাদের যতটুকু সময় আছে, ততটুকু সময় তোমাকে নিরাপদ রাখতে হবে।”
তবে, তখনই হাসপাতালের ভেতর থেকে এক তীব্র আওয়াজ শোনা গেল, যেন ভয়াবহ বিপদ এখন খুবই কাছাকাছি চলে এসেছে।
গভীর রাতের মধ্যে সেই তীব্র আওয়াজের পর, হাসপাতালের ভেতরে সবার মনে ভয় ও শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছিল। শত্রুর আক্রমণ আরও তীব্র হতে শুরু করেছিল এবং কুহু ও রোহানের জন্য পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে যাচ্ছিল। হাসপাতালটি যেন একটি যুদ্ধক্ষেত্রের মতো হয়ে গিয়েছিল, যেখানে প্রতিটি মুহূর্ত ছিল ভয় ও অনিশ্চয়তায় পূর্ণ।
রোহান দ্রুত কুহুকে নিয়ে সুরক্ষিত স্থান থেকে বের হয়ে আসতে চাইল। “আমরা যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে হবে, তারা আমাদের পিছু নিতে পারে,” রোহান বলল, তার কণ্ঠে তীব্র উদ্বেগ।
কুহু, যদিও কিছুটা শঙ্কিত ছিল, তবে রোহানের দৃঢ়তায় সাহস পেল। “তুমি কি মনে কর, আমরা বের হয়ে যেতে পারব?” কুহু প্রশ্ন করল, তার চোখে আতঙ্ক স্পষ্ট ছিল।
“হ্যাঁ, তবে আমাদের প্ল্যানটা ভালোভাবে করতে হবে,” রোহান তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিল। “একটা নিরাপদ রাস্তা আছে, যেখান দিয়ে আমরা বের হতে পারব।”
তারা করিডোর দিয়ে ছুটে চলল, কিন্তু ঠিক তখনই করিডোরের শেষ প্রান্তে কিছু অন্ধকার মুখ সেলফে দেখা দিল। তারা প্রায় একদম কাছাকাছি চলে এসেছিল। এক মুহূর্তের জন্য, পুরো করিডোর স্তব্ধ হয়ে গেল। রোহান দ্রুত কুহুকে এক পাশে টেনে নিয়ে দিল, তার শরীর একেবারে কাঁপছিল।
ঠিক তখনই, এক ব্যক্তি কালো মুখোশ পরে এগিয়ে এল। তার হাতে ছিল একটি বড় বন্দুক, এবং সে রোহান ও কুহুকে লক্ষ্য করে হেসে বলল, “তোমরা কোথায় পালাবে, রোহান? আমার হাতে তোমরা এখন নিরাপদ নয়।”
রোহান তার চোখে সাহস এবং রাগ নিয়ে বলল, “তোমরা আমাকে কিছু করতে পারবে না। আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি, কুহুকে কোনো harm করতে দিবো না।”
কুহু রোহানের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল, তার চোখে আতঙ্ক ছিল, তবে রোহানের পাশে থাকতে তাকে একটু শান্তি পেয়েছিল। সে মনে মনে প্রার্থনা করতে লাগল, “আল্লাহ্, তুমি আমাদের রক্ষা করো।”
মুখোশধারী ব্যক্তি এক পা এগিয়ে এসে বলল, “তুমি কিছুই করতে পারবে না, রোহান। আমি জানি, তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কে? “
তবে রোহান তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া জানাল, “তুমি যা ভাবছ, তা কিছুই না। তোর বিরুদ্ধে আমার অনেক কিছু আছে, যা জানলে তুই আরও ভয় পাবি।
তারপর, এক প্রকার তীব্র লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কিন্তু ঠিক তখনই সিকিউরিটি গার্ডদের মধ্যে থেকে এক বীর সেনা আসলো এবং মুখোশধারী ব্যক্তির দিকে ব”ন্দু”ক তাক করল। “হাতে হাত রেখে, কিছু করার সুযোগ আর নেই।”
এই মুহূর্তে, কিছু সেকেন্ডের মধ্যে পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে শুরু করলো। শত্রুর গোষ্ঠী ধীরে ধীরে পিছু হটতে থাকল, এবং রোহান ও কুহু একেবারে ঝুঁকি মুক্ত হয়ে গেছিল। তবে তাদের সামনে আরও অনেক ঝুঁকি ছিল—শত্রুদের পরিকল্পনা সহজ ছিল না, তারা আবার ফিরবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রোহান কুহুকে দেখে বলল, “কুহু, আমাদের এখনও পুরোপুরি নিরাপদ হতে হবে। আমরা এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর একেবারে সুরক্ষিত স্থান খুঁজে বের করতে হবে।”
কুহু রোহানের হাত শক্ত করে ধরে বলল, “আপনি কি মনে করেন, আমরা নিরাপদ হয়ে উঠতে পারব?”
রোহান এক পলক চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, “আমরা একসাথে আছি, কুহু। যত দিন আমি বেঁচে আছি, তুই নিরাপদ থাকবি।”
তাদের যাত্রা তখনও শেষ হয়নি, নতুন বিপদের মুখোমুখি হতে হতে, তারা একে অপরকে আগলে রাখলো।
কুহু ভয়ে ভরসার চোখে রোহানের দিকে তাকিয়ে বলল, “ওরা কারা? আর আপনার হাতে রিভলভার কেন? আপনাকে তো আগে কখনো এভাবে দেখাইনি?প্লিজ, আমাকে বলেন। আমার খুব ভয় করছে।”
রোহান কুহুর হাত শক্ত করে ধরে বলল, “কুহু, আমি তোকে সব বলব, কিন্তু এখন নয়। এখন আমাদের এখান থেকে বের হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তুই শুধু বিশ্বাস কর, আমি আছি তোর পাশে।”
কুহু কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু রোহানের মুখে দৃঢ়তা দেখে চুপ হয়ে গেল। তার ভিতরে এক অজানা আতঙ্ক এবং বিশাল প্রশ্নভরা ছিল। রোহানের রি”ভ”ল”ভা”র ধরে রাখার দৃঢ় ভঙ্গি দেখে তার মনে সন্দেহ দানা বাঁধছিল। তবে, তার চোখে রোহানের প্রতি ভরসাও ছিল।
রোহান বলল, “এখন কিছু জানতে চেয়ো না, কুহু। শত্রুরা আমাদের জীবনের পিছু নিয়েছে। আমি যে রি”ভ”ল”ভা”র”টা বহন করছি, সেটা তোমাকে রক্ষা করার জন্য। কারণ আমি জানি, তারা কতটা ভয়ংকর।”
কুহু ধীরে ধীরে মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল, যদিও তার মনে প্রশ্নের পাহাড় তৈরি হচ্ছিল। “আপনি আমাকে কখনো মিথ্যা বলবে না, তাই তো?” কুহু ধীরে ধীরে বলল।
রোহান তার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে বলল, “তুই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কুহু। আমি মিথ্যা বলব না। তবে এখন সময়টা কথা বলার নয়, বরং তোকে রক্ষা করার।”
বহিরাগত দরজা দিয়ে কুহুকে নিয়ে পাকিং এরিয়াতে পৌঁছাল রোহান। সেখানে তাদের ড্রাইভার ছিলো। ড্রাইভার টা তাদের ডির্পামেন্টের একজন ছিলো এবং হাতে অ”স্ত্র ও ছিলো ড্রাইভারটি বললো স্যার দ্রুত উঠুন আমি আপনাদের নিয়ে যাচ্ছি।
রোহান বললো আমি তোমাকে যেই লোকেশন বলবো সেই লোকেশনে যাবা।
কুহু ভয় রোহান কে জাপ্টে ধরে আছে।
রোহান ও তাকে আগলে নিয়ে বললো ভয় পেয়ো না প্রিয়তমা আমি আছি তোমার পাশে তাহলে ভয় কিসের। নিজের বাহু ডোরে নিবো আগলে।
কুহু রোহানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল, তার মনে একাধিক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। “কোথায় যাচ্ছি আমরা?” কুহু অবশেষে জিজ্ঞেস করল। তার কণ্ঠে এক ধরনের উদ্বেগ ছিল, কিন্তু রোহান তার মুখে একটি সান্ত্বনার হাসি ফুটিয়ে বলল, “আমাদের আরেকটি বাড়ি আছে, সেখানেই যাচ্ছি। সেখানে মা, ভাই, বোন, ভাবীমা—সবাই আছেন। সেখানেই নিরাপদ।”
কুহু কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে, তবে পুরোপুরি শান্ত হতে পারল না। সে জানত, কোথাও না কোথাও শত্রুর হাত এখনও পেছনে থাকতে পারে। “কিন্তু রোহান, এই বাড়ি কোথায়?” সে আবার প্রশ্ন করল, এবার একটু বেশি জানতে চাওয়া ছিল তার কণ্ঠে।
“এটা এক নিরাপদ স্থান,” রোহান কিছুটা রহস্যময়ভাবে বলল, “যেখানে শত্রু আমাদের ধরতে পারবে না। আমরা এখন একটু নিরাপদ জায়গায় পৌঁছাতে যাচ্ছি, তারপর বাকিটা আমি দেখব।”
গাড়ি চলতে থাকল, এবং কুহু ভাবতে লাগল, এই নতুন জায়গায় কি তাদের জীবনের অজানা রহস্যগুলো খোলাসা হবে? তবে, রোহান তার পাশে ছিল, এবং সে জানত, যতদিন রোহান তার পাশে থাকবে, ততদিন কিছুই তাদের ক্ষতি করতে পারবে না।
একের এক রাস্তা পেরিয়ে বিপদ মাথা নিয়ে অবশেষে পৌঁছালো তারা বাড়ি।
গাড়ি অবশেষে একটি শান্ত, নিঃসঙ্গ জায়গায় এসে থামল—একটি বড়, আধুনিক বাড়ির সামনে। বাড়িটি একদম নিরাপদ এবং দূরবর্তী মনে হচ্ছিল, যেন পুরো পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন। “এটাই আমাদের গন্তব্য,” রোহান বলল, তার চোখে একটি গভীর বিশ্বাস ছিল।
কুহু গাড়ি থেকে নামল এবং চারপাশে তাকাল। বাড়ির সন্নিকটে এক বিশাল বাগান ছিল, যে বাগানে সবকিছু শান্ত, নিরিবিলি, আর সবুজে মোড়া ছিল। বাড়ির দরজা খুলে গেল, এবং রোহান এক হাতে কুহুর হাত ধরে তাকে ভিতরে নিয়ে গেল।
তারা প্রবেশ করতেই, বাড়ির ভেতর থেকে একদম পরিচিত মুখ বেরিয়ে এল—রোহানের মা, ভাই, বোন, এবং ভাবীমা। তাদের চোখে অসীম ভালোবাসা এবং উদ্বেগ ছিল, যেন তারা দীর্ঘদিন পর পরস্পরকে দেখছে। কুহুর চোখেও পানি চলে এল, কারণ সে এতদিন যে নিরাপত্তার অভাব অনুভব করছিল, আজ সেটি এখানে এসে পূর্ণতা পেল।
“কুহু, তোমার জন্য অনেক চিন্তা ছিল,” রোহানের মা কুহুকে উষ্ণভাবে আলিঙ্গন করলেন। রোহান তার দিকে তাকিয়ে বলল, “এখন আমরা নিরাপদ। কিন্তু শত্রু এখনও আমাদের পিছু ছাড়বে না। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”
রোহানরা বাড়ির ভিতরে গিয়ে বসতে সবাই রোহান কে ঘিরে ধরলো কারন রোহান কে এইটা জানার জন্য?
রোহান এক মুহূর্ত চুপ থেকে গভীরভাবে সবার দিকে তাকাল, তারপর এক অদ্ভুত হাসি দিয়ে বলল, “আমি CID।”
সবার মুখে বিস্ময়ের ছাপ পড়ল। কুহু, স্মৃতি, ভাবীমা, রোহানের মা, সবাই একে অপরকে অবাক চোখে দেখল। সবাই অবাক হলেও একমাত্র রওনক হয়নি কারন সে আগের থেকে জানতো। তাদের মনে একটাই প্রশ্ন—রোহান এতদিন যা কিছু করেছে, তার পিছনে কি সত্যিই কোনো গোপন পরিকল্পনা ছিল?
রোহান আরো কিছুটা এগিয়ে এসে বলল, “আমি আসলে একজন সিআইডি কর্মকর্তা। তবে, আমাকে কখনোই প্রকাশ্যে আসতে হয়নি, কারণ আমি তোমাদের মধ্যে একজনের মতোই ছিলাম। আমিশত্রুদের ওপর নজর রেখেছিলাম, কিন্তু এখন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গেছে।”
রোহানের মা তার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললেন, “তুমি… তুমি কেন আমাদের কিছু জানালে না?
শত্রুদের ওপর নজর রেখেছিলাম, কিন্তু এখন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গেছে।”
রোহানের মা তার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললেন, “তুমি… তুমি কেন আমাদের কিছু জানালে না? আমাদের এতদিন অজানা রেখে দিলে?”
রোহান মাথা নিচু করে বলল, “আমার কাজ ছিল তোমাদের নিরাপদ রাখা, তাই আমি কিছু জানাতে পারিনি। তবে এখন, পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, তোমরা সবাই জানো, আমরা যদি একসাথে না থাকি, তবে বিপদ আসতে পারে।”
কুহু রোহানের দিকে কিছুটা শঙ্কিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “তাহলে, আপনার কাজ কি ছিল এতদিন? আমাদের এত কাছাকাছি থাকতেন, আমাদের বিপদের থেকে দূরে রেখেছিলেন?”
রোহান ধীরে ধীরে কুহুর দিকে ফিরে বলল, “এটা খুব কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল, কুহু। আমি জানতাম, তুই বা মা বা স্মৃতি যদি জানত, তাহলে তোমরা কখনোই শান্তি পেতে না। আরো একটা কারনে বলেনি পরে জানতে পারবে। কিন্তু এখন, আমাদের সবাইকে একসাথে থাকতে হবে। আমি তোমাদের একা কিছু করতে দেবো না।”
স্মৃতি একটু মুচকি হেসে বলল, “তাহলে, তুমি এতদিন কি করছিলে ভাইয়া? আমাদের অজান্তে শত্রুদের নজরদারি করছিলে?”
রোহান মাথা হেলিয়ে বলল, “হ্যাঁ, কিন্তু এই কাজটা শুধু একা করা সম্ভব নয়। আমরা সবাই একসাথে থাকলে, শত্রুরা আমাদের কিছুই করতে পারবে না।”
ভাবীমা তার চিন্তাভাবনায় প্রবাহিত হয়ে বললেন, “তাহলে আমাদের এখন কী করতে হবে?”
রোহান দৃঢ়ভাবে বলল, “আমরা তাদের প্রতিরোধ করতে পারব, তবে আমাদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। এখন থেকে কোনো ভুল আমরা নিতে পারি না।”
রোহান গভীর চিন্তায় কিছু সময় স্থির থাকল, তারপর দৃঢ় কণ্ঠে বলল, “আমাকে হাসপাতালে যেতে হবে। পরিবেশটা কেমন, সোহেল, অগ্নিপূজা, ওরা কেমন আছে, কি করছে, কতটা সামলাচ্ছে—সব কিছু জানতে হবে।”
কুহু তার দিকে চিন্তিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “আপনি তো জানেন, শত্রুরা এখনো আমাদের পিছু ছাড়েনি। যদি আবার বিপদে পড়েন?”
রোহান কুহুকে একনিষ্ঠভাবে দেখিয়ে বলল, “কুহু, আমি জানি তুই উদ্বিগ্ন, কিন্তু এই মুহূর্তে হাসপাতালে আমাকে থাকতে হবে। সোহেল, অগ্নি,পূজা, সবাই সেখানে রয়েছে। তাদের অবস্থা জানতে পারলেই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারব।”
রোহানের মা কিছুটা চিন্তা করে বললেন, “তোমার নিরাপত্তা নিয়ে আমি চিন্তিত, রোহান। কিন্তু তোমার কাজটা গুরুত্বপূর্ণ। যত দ্রুত সম্ভব ফিরে আসো।”
রোহান মায়ের দিকে তাকিয়ে নীরবে মাথা নাড়ে। “বিশ্বস্ত হতে হবে, মা। আমি নিরাপদেই ফিরে আসব।”
তারপর, রোহান কুহুকে একটি দীর্ঘ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “তুই এখানে থাক, এবং নিরাপদ থাক। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, আমি ফিরে আসব।”
রোহান দ্রুত বেরিয়ে আসার প্রস্তুতি নিল। পরিবারের সবার মুখে উদ্বেগ ছিল, কিন্তু তার তো থেমে থাকলে চলবে না সে একজন CID অফিসার তার অনেক দায়িত্ব।
রোহান দ্রুত হাসপাতালের দিকে রওনা হলো।
রোহান একে একে হাসপাতালের ভিতরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি যাচাই করতে শুরু করল। সোহেল এবং অগ্নি,,পূজা তাদের প্রাথমিক কাজ করেছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও শঙ্কাস্পদ ছিল। গুলির শব্দ, হামলার আশঙ্কা, এবং শত্রুদের উপস্থিতি—সব কিছুই তাকে ভাবাচ্ছিল।
——-
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর, রোহান সোজা সোহেলের কাছে গেল। সোহেল তার মুখে অস্থিরতা এবং ক্লান্তির ছাপ নিয়ে রোহানকে দেখে বলল, “সব কিছুই এত দ্রুত ঘটছে, রোহান। শত্রুরা অদ্ভুতভাবে মুভ করছে। আমরা যা ভাবছিলাম, তা থেকে অনেক বেশি জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।”
রোহান মাথা নাড়িয়ে বলল, “তুই কী জানিস? তাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু জানতে পারেছো?”
সোহেল একটু থেমে গিয়ে বলল, “তারা হাসপাতালটাকে পুরোপুরি লক্ষ্য করেছে। তারা জানে যে কুহু এখানে আছে, এবং তাদের লক্ষ্য তাকে যেকোনো মূল্যে খুঁজে বের করা। তবে, এখন পর্যন্ত আমরা তাদের মুখোশধারী গোষ্ঠীকে থামাতে পারিনি।”
রোহান এক মুহূর্ত চুপ থেকে বলল, “তবে, কিছু সময়ের মধ্যে, আমরা তাদের আটকাতে পারব। তুই ঠিক মতো নজর রাখো।”
রোহান দ্রুত হাসপাতালের অন্য প্রান্তে চলে গেল, যেখানে অগ্নি,,পূজা এবং সিকিউরিটি গার্ডরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করছিল। পুরো হাসপাতাল একটি অস্থির পরিবেশে ডুবে ছিল।
রোহান জানতো, এই মুহূর্তে তাকে কেবল সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, এবং তার পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে কুহু এবং তার পরিবার নিরাপদ
“সোহেল, আমি চাই সবাইকে বিভক্ত না করে একত্রে রাখো। শত্রু যখনই আসবে, তারা আমাদের একত্রিত দেখতে চায়,” রোহান বলল। “হাসপাতালের বাইরে পুরো এলাকা চেক করো, যেন কোনো সন্দেহজনক আচরণ না থাকে।”
সোহেল মাথা নেড়ে বলল, “বুঝেছি, রোহান। আমরা সাবধানে কাজ করবো।”
এই মুহূর্তে, রোহান দ্রুত কুহুকে ফোন করল। কুহু তার ভয়ে কাঁপছিল, কিন্তু রোহানের গলায় দৃঢ়তা শুনে তার মন কিছুটা শান্ত হলো।
“কুহু, সবাই নিরাপদ তো? আমরা শীঘ্রই চলে আসবো। ভয় পেয়ো না।” রোহান বলল।
“হ্যাঁ, রোহান, আমরা সুরক্ষিত আছি। কিন্তু আপনার জন্য ভয় পাচ্ছি,” কুহু উত্তর দিল।
রোহান হাসি দিয়ে বলল, “কিছু হবে না, কুহু। তুমি আমার সাথে আছো, আর আমি তোমাকে কোনো বিপদে পড়তে দেবো না।”
তারপর, রোহান সোহেল ও অন্যান্য গার্ডদের নির্দেশনা দিয়ে, কুহু এবং তার পরিবারকে একত্রিত করার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করল। তাদের পুরো গ্রুপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, তারা দ্রুত চলে যেতে শুরুর আগেই, পুরো এলাকা খতিয়ে দেখতে রোহান হাসপাতালের বাইরে বের হয়ে গেল।
রোহান তার টিমের সঙ্গে হসপিটালের বাইরে বের হয়ে মুখোশধারীদের সঙ্গে গুলি বিনিময় করছিল। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। একের পর এক গুলি চলে যাচ্ছিল, কিন্তু রোহান ও তার টিম খুবই দক্ষতার সঙ্গে প্রতিরোধ করছিল। অবশেষে, কিছু সময় পর, রোহান এবং তার টিম সদস্যরা মুখোশধারীদের আটক করতে সক্ষম হলো।
একজন মুখোশধারী, যিনি একটি সুরক্ষিত স্থানে লুকানো ছিলেন, রোহানকে দেখে বলল, “তুমি আমাকে আটকাতে পারবে না, রোহান। তুমি জানো না আমি কে!”
রোহান চেপে ধরে বলল, “বা”ই”ন”চো”দে”র বাচ্চা তোরা শুধু ভয় সৃষ্টি করতে এসেছিস, কিন্তু তোরা জানিস না আমি কেমন আর কতটাই আমার তেজ।”
তারপর, টিমের সদস্যরা মুখোশধারীদের ঘিরে ফেলল এবং তাদের অ”স্ত্র”গু”লো বাজেয়াপ্ত করল। পুলিশও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাল, পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছিল।
রোহান তার টিমকে নির্দেশ দিয়ে বলল, “এখন যেভাবে হাসপাতালের পরিবেশ দেখে এসেছি, এখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব বের হয়ে যাওয়া উচিত।
এভাবেই রোহান তার টিমের সাথে পরিস্থিতি সামাল দিল এবং হাসপাতালের আশেপাশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করল।
রোহান এবং তার টিম অবশেষে মুখোশধারীদের আটক করে, তাদের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পুলিশকে সোপর্দ করে দিলো। পুলিশ দ্রুত তাদের হেফাজতে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনল। রোহান এক নজর পুলিশ অফিসারের দিকে তাকিয়ে বলল, “এদের থেকে যতো দ্রুত সম্ভব তথ্য বের করতে হবে।”
পুলিশ অফিসার মাথা নেড়ে বললেন, “চিন্তা করবেন না, রোহান। আমরা এই বিষয়টি হাতে নিচ্ছি।”
এরপর, রোহান তার টিমকে নির্দেশ দিলো, “সবকিছু যেন শান্ত থাকে, আমরা এখন বাড়িতে ফিরে যাবো।
রোহান তার টিমের দিকে তাকিয়ে দৃঢ় কণ্ঠে বললো, “যুদ্ধ শেষ হয়নি। আজ রাতে আমাদের আরও বড় একটি যুদ্ধ অপেক্ষা করছে। চারজন বড় অপরাধীর মাথা ধরতে হবে। তাই তোমরা সবাই বাড়ি ফিরে গিয়ে রেস্ট করো, কাল আবার প্রস্তুত থাকতে হবে।”
টিমের সদস্যরা মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো। তারা সবাই জানতো, রোহান কখনও হালকা কথা বলে না। তার প্রতিটি নির্দেশ বাস্তবতার সাথে সম্পৃক্ত। তাই সবাই দ্রুত তাদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আলাদা হয়ে গেল।
এরপর, রোহান টিমের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের প্রস্তুতির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করলো। তাদের লক্ষ্য ছিল নির্দিষ্টভাবে চারজন অপরাধী নেতাকে ধরতে হবে, যারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপের সাথে যুক্ত। রোহান জানতো, এই লড়াই আরও কঠিন হতে চলেছে, কিন্তু তার দৃঢ় সংকল্প ছিল—কুহু এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, এবং এই অপরাধীদের পরাজিত করতেই হবে।
এভাবে, তারা প্রস্তুত হতে শুরু করল, তাদের কঠিন যাত্রা এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে চলেছিল।
গাড়িতে উঠেই রোহান সোজা বাড়ির দিকে রওনা দিল। পথের মধ্যে তার চোখে ছিল অদ্ভুত দৃঢ়তা, যেন সে জানতো—এখন এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো কুহুকে নিরাপদে রাখা, তার পরিবারকে রক্ষা করা। আর তারপরেই শুরু হবে আসল লড়াই।
বাড়িতে পৌঁছানোর পর, রোহান দ্রুত দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো। বাড়ির সবার মুখে চিন্তা আর উদ্বেগের ছাপ ছিল। তবে তাদের সাথে দেখা হওয়ার পর, রোহান জানালো, “সবাই সুরক্ষিত আছে, তবে পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি শান্ত হয়নি।”
রোহান কুহুর দিকে তাকিয়ে বললো, “তুই ঠিক আছিস, কুহু? কিছু হবে না। আমি তোর পাশে আছি, এবং আমরা এই ঝুঁকি কাটিয়ে উঠব।”
কুহু তার দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ চুপ থাকলো, তারপর বললো আমি জানি আপনি আছেন আর আপনি আমার জন্য সবকিছু করতে পারেন।
“তুই আমার অর্ধাঙ্গীনি অর্থা আমার শরীরের একটা অংশ তোর জন্য করবো না তো কার জন্য করবো “
রোহান কুহুর দিকে তাকিয়ে নরম কণ্ঠে বললো, “কুহু, তোর রেস্টের দরকার।
কুহু রোহানের দিকে তাকিয়ে বললো, “আপনি আমার জন্য সবকিছু করেছেন, রোহান। আমি জানি, আপনি আমাকে কখনো একা হতে দিবে না।”
রোহান কুহুকে শক্ত করে ধরে বললো, ” তুই আমার খু্ব শখের নীল প্রজাপতি। যেভাবে আমার পাশে ছিলি, তাতে আমি কৃতজ্ঞ। এখন তুই বিশ্রাম নে, আমি সবকিছু সামলাবো।”
“সবসময়ই তো আপনি আমাকে শক্তি দেন রোহান আজ আপনি নিজেই ক্লান্ত “।
রোহান একটু হেসে কুহুর মিষ্টি মধুর অধর জোড়া নিজে অধর দিয়ে চেপে ধরে গভী চুম্বন করলো। তারপর কুহু ছেড়ে দিয়ে বললো আমি আমার এর্নাজি টুকু নিয়ে নিয়েছি আয় বুকে আয়। কুহুকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে ধরে বললো,, “যদি দেখি তোর মুখ, দূর হয়ে যায় সব ক্লান্তি, তবে এই পৃথিবীও যেন এক মায়ায় ভরে যায়, তোর পাশে থাকলে, সব কিছুই হয়ে যায় সহজ।”
কুহু তার চোখে রোহানের সঙ্গীতের মতো অনুভূতি দেখতে পেল, যেন তার হৃদয়ে অমোঘ শক্তি ছড়িয়ে পড়ল। পুরো সময়টা যেন এক মনোমুগ্ধকর মুহূর্ত হয়ে উঠল, যার প্রতিটি শব্দ কুহুর মনের গভীরে গেঁথে গিয়েছিল।
রোহান কুহুর হাতটি শক্ত করে ধরে, কুহুকে আরও কাছে টেনে নিয়ে এক গাঢ় নিঃশ্বাস ফেলল। কুহুর শরীর যেন একে অপরের মধ্যে এক নিবিড় সংযুক্তিতে মিশে গেল, আর তাদের মনও এক হয়ে গেল। রোহানের গা থেকে নির্ভার এক শান্তির অনুভূতি যেন কুহুর মধ্যে প্রবাহিত হতে শুরু করল।
“আমরা একসাথে আছি, কুহু। এখন তোর সব ভয় চলে যাবে,” রোহান বলল, তার গলার স্বরে এক ধরনের নিশ্চিততা ছিল।
কুহু একটু শান্ত হল, তার হৃদয়ে রোহানের কথাগুলি গুনগুন করে বাজতে লাগল। তাকে একমাত্র রোহানই এমন অনুভূতি দিতে পারে, যে পৃথিবীটা শুধুই তাদের জন্য নিরাপদ। তার চোখে আর কোনো ভয় নেই, বরং এক নতুন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পেল।
রোহান তার মাথায় এক শেষ চুমু দিলো এবং মৃদু করে বলল, “জাস্ট স্লিপ কোইটলি, কুহু। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।”
কুহু রোহানের কাঁধে মাথা রেখে, এক গভীর ঘুমে ডুবে গেল, আর রোহান তার পাশে পড়ে রইল, যেন সমস্ত দুনিয়া তার কাছে নিরাপদ ছিল।
কুহু রোহানের বুকে মাথা রেখে, এক গভীর ঘুমে ডুবে গেল। রোহান তার পাশে পড়ে রইল, যেন সমস্ত দুনিয়া তার কাছে নিরাপদ ছিল। কুহুর নিঃশ্বাসের মৃদু শব্দ ও তার কোমল শরীরের স্পর্শ রোহানকে এক অদ্ভুত শান্তি দিচ্ছিল।
রোহান আর কুহু ঘুমাচ্ছে নিজেদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে।
—-
রাতে আন্ধকার কেটে গিয়ে আলো ফুটতে শুরু করলো রোহান সকাল ৫ টায় এসেছিলো।
সকাল বেলার সূর্যের আলো আর সাথে কুয়াশার হিম শীতল বাতাস আসতে শুরু করল, ধীরে ধীরে । রোহান ও কুহু একে অপরের পাশেই ঘুমিয়ে ছিল, তাদের মুখে এক অদ্ভুত শান্তির ছাপ। রাতে তারা যতটা ক্লান্ত ছিল, এখন ততটাই প্রশান্তি এবং বিশ্রাম পেয়েছে।
কুহু প্রথমে একটু চোখ খুলল, রোহানের কাঁধে মাথা রেখে, সে তার চোখে এক মিষ্টি হাসি নিয়ে রোহানকে দেখল। রোহানও চোখ মেলে তাকাল, কুহুকে তার বুকে আরও শক্ত করে টেনে নিল। “ভালো লাগছে?” রোহান কোমল স্বরে জিজ্ঞেস করল।
কুহু তার চোখ বন্ধ করে নরমভাবে বলল, “আপনি ছাড়া কোথাও নিরাপদ হতে পারব না, রোহান।”
রোহান তার মুখে একটি মৃদু হাসি ফেলে বলল, “আমি তোমাকে কখনো হারাতে দেবো না, কুহু।”
একই_বন্ধনে_বাঁধা_দুজনে
পর্বঃ-১২ (তৃতীয় খন্ড)
রাতে আন্ধকার কেটে গিয়ে আলো ফুটতে শুরু করলো রোহান সকাল ৫ টায় এসেছিলো।
সকাল বেলার সূর্যের আলো আর সাথে কুয়াশার হিম শীতল বাতাস আসতে শুরু করল, ধীরে ধীরে । রোহান ও কুহু একে অপরের পাশেই ঘুমিয়ে ছিল, তাদের মুখে এক অদ্ভুত শান্তির ছাপ। রাতে তারা যতটা ক্লান্ত ছিল, এখন ততটাই প্রশান্তি এবং বিশ্রাম পেয়েছে।
কুহু প্রথমে একটু চোখ খুলল, রোহানের কাঁধে মাথা রেখে, সে তার চোখে এক মিষ্টি হাসি নিয়ে রোহানকে দেখল। রোহানও চোখ মেলে তাকাল, কুহুকে তার বুকে আরও শক্ত করে টেনে নিল। “ভালো লাগছে?” রোহান কোমল স্বরে জিজ্ঞেস করল।
কুহু তার চোখ বন্ধ করে নরমভাবে বলল, “আপনি ছাড়া কোথাও নিরাপদ হতে পারব না, রোহান।”
রোহান তার মুখে একটি মৃদু হাসি ফেলে বলল, “আমি তোমাকে কখনো হারাতে দেবো না, কুহু।
কুহু তার হাতটি রোহানের হাতে রাখল, আর দুজনেই সেই মুহূর্তে আবার একটু শান্তিতে ডুবে গেল, যেন পৃথিবী থেমে গেছে।
জানিস কুহু তোকে ছুঁয়ে দেখার কত তীব্র ইচ্ছে নিয়ে রাতের পর রাত কাটিয়েছি। তোর ভেজা চুলের নে”শা”ক্ত ঘ্রাণ নেওয়ার জন্য ছটফট করেছি। কিন্তু আমার হাত পা বাঁধা ছিলো আমি আসতে পারিনি। তুই শুধু আমার প্রেম আমা ভালোবাসা না কুহু তুই আমার ভালোবাসার পবিত্র এক অনুভূতি যা আমার শরীরে রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে আছে।
কুহু তুই যখন রক্তাত অবস্থায় রাস্তায় পরেছিলি সেই মুহুর্তে আমার নিঃশ্বাস টা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো মনে হচ্ছিল পৃথিবীতে অক্সিজেনের অভাব হচ্ছে মনে হচ্ছিল আমার সামনে কেয়ামত এসে গেছে। তোকে বুঝাতে পারবো না কুহু।
“কুহু ব্যাথা তুই পাস
কিন্তু সেই ব্যাথার অনুভূতি টা আমি পাই।
এই পৃথিবীতে আমার মতো করে কেউ তোকে ভালোবাসবে না।
এখনো জন্মায়নি যে রোহানের মতো করে তোকে কেউ ভালোবাসবে।
কুহু শুধু রোহানের
আর রোহান শুধু কুহুর “
অনেক মানুষের ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। কিন্তু আমি পেয়েছি তোকে আমার কৈশর থেকে যৌবন,, যৌবন থেকে বৃদ্ধা বয়স পর্যন্ত আমার তোকে চাই। আমি যতদিন বাঁচবো এই দুনিয়াতে তত তোকে শুনতে হবে ভালোবাসি সহস্র কোটিবার তোকে শুনতে হবে “ভালোবাসি” শব্দটা আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয় অর্ধাঙ্গীনি।
**একই বন্ধনে বাঁধা দুজনে,
ভালোবাসা বয়ে চলে প্রাণের স্রোতে
যত ঝড়-ঝাপটা আসুক জীবনে,
আমরা থাকবো একসঙ্গে, সুখের কোলে
তোর হাত ধরেই আমার পথচলা,
তুই-ই আমার সকাল, তুই-ই সন্ধ্যাবেলা
একই আকাশে মেলে দু’জনার ডানা,
ভালোবাসার গল্প হবে শুধু তোর-আমার জানা**
কুহু রোহানের বুক থেকে মাথাটা তুলে বললো এতো সুখ,, এতো ভালোবাসা কি আমার?
জ্বী বিবিজান আপনার। শুধু তাই নয় গোটা আমিটাও আপনার বুঝলেন।
কুহু সুন্দর করে মিষ্টি করে হাসি দিয়ে রোহানের কপালে ভালোবাসার পরশ দিলো।
রোহান ঘড়ি টা দেখে নিয়ে বলে ১১ টা বাজে রে নাস্তা করার দরকার আবার বের হতে হবে।
এখনি বের হবে আরেকটু ঘুমান।
সমস্যা নেই CID মানুষ আমরা এর থেকে ভালো রেস্ট নিতে পারি না এইযে আপনি ভালোবেসে আমার কপালে অধর ছুঁয়ে দিলেন এইতে আমার সব এর্নাজি ফিরে পেয়েছি।
রোহান কুহুর কপালে গভীর ভাবে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ে ফ্রেশ হতে গেলো।
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো কুহু বিছানায় মুখ ভার করে বসে আছে। রোহান কুহুর কাছে এসে বললো,, কি হয়েছে এমন ভাবে বসে আছিস কেনো?
আপনি তো এখন নাস্তা করবেন কিন্তু কাল তো সবাই দেরিতে ঘুমাতে গেছে এখনো কেউ উঠেনি আমার হাতে তো ব্যাথা রান্নাতো করতে পারবো না।
নো ম্যাটার মেরি বিবিজান,, আমি রান্না করছি। কুহু বড় বড় চোখ করে তাকালো রোহানের পানে অবিশ্বাস্য কথা শুনলো,, আপনি করবেন রান্না?
CID সাহেবের ব্রেন তো সব জানি। রোহান মুচকি হেসে উঠে দাঁড়িয়ে বললো, তুই বসে থাক, আজ আমি রান্না করব। তোর জন্য স্পেশাল ব্রেকফাস্ট তৈরি করব।”
“CID লোক শুধু ক্রিমিনাল ধরতে জানে না, তারা মন জয় করতেও জানে। তাই আজ তুই শুধু বসে দেখ, তোর জন্য কী বানাই।”
রোহান রান্নাঘরে ঢুকল, আর কুহু কিছুটা অবিশ্বাস আর কৌতূহল নিয়ে তাকে দেখতে লাগলো। রোহান বেশ গুরুত্ব নিয়ে ফ্রিজ খুলে কিছু ডিম আর সবজি বের করলো।
কিছুক্ষণ পর, রোহান একটি প্লেটে এক ধরনের “অ্যামেচার” অমলেট এবং টোস্ট নিয়ে এসে কুহুর সামনে রাখলো। হাসতে হাসতে বললো, “এই যে, মিস কুহুর জন্য রোহানের হাতের বিশেষ ব্রেকফাস্ট।”
কুহু প্লেটের দিকে তাকিয়ে বললো, “অ্যামেচার হলেও এটা তোমার হাতের তৈরি। আমি এটা খেয়ে দেখব।”
কুহু প্রথম কামড় দিতেই চোখ বড় করে বললো, “উফ! এটা তো দারুণ হয়েছে, রোহান!”
রোহান হেসে বললো, “এইবার বুঝলি তো, CID শুধু শত্রুদের হারাতে পারে না, বরং তোর মনও জয় করতে পারে।”
কুহু মুচকি হেসে বললো, “আপনি এমন করছেন বলেই আমি সব ভুলে যাই।”
রোহান কুহুর চোখে তাকিয়ে বললো, “তুইই আমার পৃথিবী, কুহু। সব ভুলে যাওয়া তো তোর অধিকার।”
খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ করে রোহান কুহুর কপালে ঠোঁটে আলতো করে ছুঁয়ে দিয়ে বললো সাবধানে থাকিস আর ঘুমিয়ে পড় আমি টাইম মতো আসবো বলে চলে গেলো।
—-
রোহান ও তার টিম সবার সঙ্গে গোপনে মিটিং শুরু করল CID ডিপার্টমেন্টে। মিটিংয়ের মধ্যে, তাদের মধ্যে কোনোরকম বহিরাগত ছিল না, কারণ এই মিশনটি ছিল অত্যন্ত গোপনীয় এবং তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
রোহান ম্যাপটি টেবিলে রেখে সবার দিকে তাকাল এবং বলল, “এই হচ্ছে আমাদের টার্গেট—ফ্যাক্টরির লোকেশন। এখানেই আমাদের শত্রুরা লুকিয়ে আছে, এবং আজ রাতে এখান থেকে তাদের বের করে আনতেই হবে।”
সঙ্গে থাকা এক সদস্য তার পকেট থেকে একটি ছোট স্ক্রিন বের করে, যেখানে ফ্যাক্টরির বিস্তারিত তথ্য এবং ভবনের মধ্যে স্যাটেলাইট ইমেজগুলি দেখানো হল। রোহান সবার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমাদের সবার সঠিকভাবে কাজ করতে হবে, অন্যথায় এই অভিযান ব্যর্থ হতে পারে।”
রোহান টিমের সদস্যদের প্রত্যেকের দায়িত্ব ভাগ করে দিল, “অগ্নি, পূজা এবং সোহেল এখানে প্রবেশ করবে গেট থেকে, তবে অত্যন্ত সাবধানে। আমি আর সানি ফ্যাক্টরির পিছন দিক দিয়ে প্রবেশ করব। রিমন, তুমি সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে, আর সরাসরি পুলিশকে প্রস্তুত রাখবে।”
সবাই তাদের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে প্রস্তুত হতে লাগল। রোহান আবার সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলল, “আজকের মিশনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানে কিছু বড় খেলা হচ্ছে। কারও ভুল সিদ্ধান্তে আমরা কিছু হারাতে পারি।”
মিটিং শেষ হওয়ার পর, রোহান তার টিমের সবাইকে শেষ নির্দেশনা দিলো। তারা সবাই প্রস্তুত, কিন্তু আজ রাতে কাজের জন্য কিছু সময় বাকি ছিল। তাই রোহান বাসায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।
তিনি সবার দিকে তাকিয়ে বললেন, “সবকিছু পরিকল্পনা মতো থাকলে, রাত তিনটায় আমরা ফ্যাক্টরিতে যাব। এখন সবাই নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে। তবে, আজ রাতে আমাদের শান্ত থাকতে হবে।”
বাসায় পৌঁছার পর, রোহান দ্রুত ভিতরে চলে আসলো, যেন কুহু জানতেও না পারে যে আজ রাতেই তাকে একটি বড় অভিযানে যেতে হবে।
কুহু তখন ঘুমাচ্ছিল, আর রোহান নিজের চিন্তা আর পরিকল্পনার মধ্যে ডুবে গিয়ে বসে পড়ল। তবে, সে জানতো যে আজ রাতে তাকে আর তার টিমকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
সোফা থেকে উঠে কুহুর কাছে গিয়ে কুহুকে জড়িয়ে ধরে বললো,,
“যদি দেখি তোর মুখ,
ভুলে যাই সব দুঃখ,
আন্ধার রাতে,
তুই যে আমার পূর্ণিমার চাঁদ।”
কথাটা বলে কুহুর গলাতে অধর ছুঁয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
দুপুর দুপুর দুটো, কুহু, রোহান, স্মৃতি, রওনক, শ্রাবনী এবং তাদের মা একসাথে বসে লাঞ্চ করতে শুরু করলো। পরিবেশে এক ধরনের আরামদায়ক এবং শান্ত ভাব ছিল। কুহু হাসতে হাসতে বলল, “আজকে অনেকদিন পর পুরো পরিবার একসাথে বসে খাচ্ছি, অনেক ভালো লাগছে।”
রোহান মুচকি হেসে বলল, “তবে তো আজকের দিনটা স্মরণীয় হতে হবে।”
মা তাদের দিকে মিষ্টি হাসি দিয়ে বললেন, “তোমরা সবাই ভালো থাকলে আমার জীবনও সুখী।”
শ্রাবনী রুচি করে খাবারের প্লেট নিয়ে বলল, “এটা ঠিকই, মা। এই মুহূর্তগুলো সবচেয়ে মূল্যবান।”
রওনক খাবারের মধ্যে মুখ গুঁজে বলল, “তবে তোমরা সবাই জানো, আমাদের দায়িত্ব অনেক বড়। এই শান্তি কেবল আমাদের স্বপ্ন, আমাদের একে অপরের পাশে থাকতে হবে সবসময়।”
স্মৃতি একটু সিরিয়াস হয়ে বলল, “তবে রোহান, তুমি বলেছিলে আজ রাতে বড় মিশন আছে।”
রোহান মুচকি হেসে বলল, “হ্যাঁ, কিন্তু এখন কিছু চিন্তা করব না, আজকের দিনটা পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করব।”
এভাবে একে অপরের সাথে সময় কাটাতে কাটাতে, তাদের মাঝে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক এবং বন্ধন আরও দৃঢ় হচ্ছিল।
লাঞ্চ শেষে সবাই একসাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে যে যে যার যার রুমে চলে গেলো রোহানরা ও আর কি করবে রুমে চলে এলো দরজাটা লক করে চেয়ার টেনে বসে কুহুকে টেনে বসিয়ে দিলো ওর উপর রোহানের হাত টা কুহুর পিঠে। রোহানে স্পর্শ পেতেই কুহু থরথর করে কাঁপতো লাগলো। রোহান নাকের সাথে নাক ঘষে তার নেশালো ঘোর লাগানোর কন্ঠে বললো কি হচ্ছে এমন করছিস কেনো?
আপনার স্পর্শ টা ভিতর থেকে নাড়িয়ে তুলছে। কুহুকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজেও কুহুর উপর শুয়ে ঠোঁট দুটো মিলিয়ে দিলো। ঠোঁট ছেড়ে সারা মুখে চুমুতে ভরে দিচ্ছে। কামিজ টা তুলে পেটে ডিপলি কিস করছে। রোহানের বেসামাল স্পর্শে কুহু ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে। রোহান কে মিশিয়ে নিলো নিজের মাঝে। হারিয়ে গেলো প্রেমের খেয়া স্রোতে।

একই বন্ধনে বাঁধা দুজনে

Carnation e book

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *