অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 2,3,4

অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার

অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার সকল পর্ব👈 

Islamic গল্প😊”অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 2

নাস্তা করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হবো..এমন সময় রান্না ঘর থেকে কি যেন পোড়ার গন্ধ আসলো…আম্মু তারাতারি রান্না ঘরে গেল..গিয়ে দেখল তরকারির ১২ টা বেজে গেছে,তারপর সেই আগের ডায়ালগ গুলা বলা শুরু করলো।আপনারা হয়ত ডায়ালগগুলা জানেন না, তাহলে শুনুন,পড়া শুনা তো নাই খালি বান্দরামো,আমি বুঝিনা কেনো যে ঐ কলেজে ভর্তি হতে গেলো শয়তানটা,তাও ভালো ভাবে পড়া-শুনা করে কোথায় সংসার হাতে নিয়ে একটা বিয়ে করবে তা না*একা কত কাজ করি,আমার বুঝি কষ্ট হয়না!( এসব কথা আম্মাজান এক বারে বলল)[ঐ কলেজে ভর্তি হওয়ার একটা কারণ আছে সেটা আপাতত রহস্যই থাক😁]

অর্ণব:- হি হি হি (মুখ চেপে ধরছি তাও বের হচ্ছে)

মিস রাদিয়া:- কি হলো, খেক খেক করে হাসতেছিস কেন?

অর্ণব:- আম্মু কি বললা তুমি, আমি খেক খেক করে হাসি?

রফিক সাহেব :- তুমি কিন্তু এটা ঠিক বললে না।(আমার বাবা)

মিস রাদিয়া:- তাহলে সঠিকটা কোনটা? তুমিই বলো?

রফিক সাহেব :- আমার ছেলের হাসি দেখলে আমার ভবিষ্যত বউমা পাগল হয়ে যাবে দেখে নিও

নাহাজুল :- একটা মুচকি হাসি দিলাম😊😁

মিস রাদিয়া:- আসলেই পাগল হয়ে যাবে। ওর হাসি দেখে না কাজকর্ম দেখে। আমাকে তো অর্ধেক পাগল করেই দিছে বান্দরটা!

অর্ণব :- কি বললা আম্মু আমি বা….ন্দর!

মিস রাদিয়া:- তা নয়তো কি। আপনি সাদু বাবা হলে তো একটা বিচার ও আসতো না বাসায়!

অর্ণব:- চুপ করে থাকলাম, কারণ সত্যি টাই বলছে সামনে অন্যায় দেখলে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারিনা।#কেননা এ সম্পর্কে হযরত হুযাইফা (রা) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, “যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম করে বলছি, তোমরা অবশ্যই সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজে বাধা দিবে। তা না হলে অচিরেই আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের ওপর কঠিন শাস্তি নেমে আসবে। তখন তোমরা (সে শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য) দোয়া করবে, কিন্তু আল্লাহ তোমাদের দোয়া কবুল করবেন না।-(তিরমিযী)💕এমন সময় বাইরে থেকে কারা জানি বলে উঠল, : চল চল.. দেরী হয়ে গেলতো..পিছন ফিরে দেখি আমার জানের জিগার দোস্তরা মশিউর আর রিপন.. তারা আমাকে আর আম্মু – আব্বুকে সালাম দিলো।

অর্ণব :- ওয়ালাইকুম আসসালাম… ওকে চল তারাতারি… আম্মু আমি গেলাম!

মিস রাদিয়া :- আর যেন কোন বিচার না আসে বাড়িতে, আর একটা কথা ভালো করে মনে রাখ কলেজে আর একবার বান্দরামি করলে বের করে দিবে তোমাদের!

মশিউর:- আন্টি আমাদেরকে কেউ বেড় করতে পারবেনা ইনশাল্লাহ!

মিস রাদিয়া :- সব বাদরগুলা একখানে জড়ো হয়েছে!

রিপন:- আন্টি তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন আমরা বাদর..

মিস রাদিয়া :- বলতে চাচ্ছি মানে কি ১০০ বার বলেছি এখনো বলছি তোমরা বাদর আর হা তোমাদের বান্ধবিরা কি যেন নাম নেহা আর নেগলা ওরা বাদে। মেয়ে দুইটা অনেক ভালো! তোমরা বন্ধু হও কিন্তু তোমাদের সামনেও কি সুন্দর পর্দা করে থাকে। দেখতে কি সুন্দর লাগে! কি করে যে তোমাদের মতো বাদরদের সাথে ওদের বন্ধুত্ব হলো আল্লাহ জানে।

অর্ণব :- হি হি হিমিস

রাদিয়া :- দাঁত মাজেনি আজ আর খি খি করে হাসতাছেসঙ্গে সঙ্গে আমার হাসি বন্ধ, আম্মু হাসতাছে এখন সাথে আব্বুও শুরু করে দিলো..

অর্ণব : আমি দাঁত মাজছি বুঝলা।

রফিক সাহেব :- তোমরা মা-ছেলে পারও বটে!

নাজিম:- আব্বু টাকা দেও, স্কুলে বাদাম খাব..( নাজিম ইসলাম আমার নিজের ছোট ভাই)

অর্ণব :- বাইরের জিনিস খাইতে হয় না জানিস না তুই?

নাজিম :- আমি তো ছোট তাই জানিনা আর নিজে যে বড় হয়ে ঐদিন…

অর্ণব :- কি?

নাজিম:- আ…পুটার( ইসারা দিয়ে বুঝায়া দিলাম ভাই বলিস না🙏)

নাজিম :- তাহলে রাতে কম্পিউটারে গেম খেলতে দিবি?

অর্ণব :- ওকে ভাই দেব..চুপ থাক।

নাজিম :- ওকে

রফিক সাহেব :- নাজিম কি বলতে ধরছিলে বল??

নাজিম :- আমার সামনে খেয়েছে সেদিন, ওটাই বলতে ধরছিলাম..

রফিক সাহেব :- কি খেয়েছে বল, নাহলে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিব তোমার।(আমি ভয়ের ভিতর আছি আল্লাহ আমার ছোট ভাইটা যেন না বলে যে ও আমাকে নেগলার সাথে বাইরে খেতে দেখছে)

নাজিম:- বাবা আমি ভাইয়া কে একটা পার্কে দেখেছি, একটা মেয়ের সাথে বাদাম খাচ্ছে(যাহ বাবা! ফাঁসে গেলাম। এই খচ্চরটাও না। আরেকদিন শুধু আসিস ভালো করে গেম খেলতে দিবো তোকে😑)রফিক সাহেব + মিস রাদিয়া দুজনেই আবাক!আব্বু একটু রেগে বলল মেয়েটা কে ছিল

অর্ণব :- কোথায় মেয়ে? কোন মেয়ে?

মিস রাদিয়া : নাজিম তাহলে মিথ্যা বলল?? নাজিম তুমি সত্যি বলছ তো?

অর্ণব :- আম্মু ওয় মিথ্যা বলছে??

নাজিম:- না আম্মু আনি মিথ্যা বলিনা। আমি জানি মিথ্যা বলা মহাপাপ। আমার নতুন ম্যাডাম বলেছেন,#রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন, “তোমরা মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক। কারণ মিথ্যা মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যায়। আর পাপ মানুষকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।” [বুখারী ও মুসলিম]💕(আমি ফাটা বাশের চিপায় পরছি)

রফিক সাহেব:- মেয়েটা কে ছিল?(চুপ করে আছি মুখে কথা নাই)

মিস রাদিয়া :- কি হলো বোবা হলি নাকি?আমি আমতা আমতা… করে বললাম..

(চলবে…)মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ🍁গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💕

Carnation Academy Online Course
Carnation Academy Online Course

“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 3

আমি আমতা আমতা… করে বললাম,
অর্ণব : ওটা নেগলা ছিলো।

মিস রাদিয়া : তোর যদি ওকে পছন্দ হয় তাহলে বল আমরা ওদের বাড়িতে যায়ে কথাবার্তা বলবো।

অর্ণব : না আম্মু! ওইদিন ভালো লাগতেছিলো না তাই আমরা গেছিলাম। অন্য কোন ব্যাপার না।

মিস রাদিয়া : আর যেনো না শুনি তুই কখনো কোন মেয়ের সাথে একা ঘুরতে গেছিস বুঝলি! কেননা বেগানা নারী-পুরুষের নির্জনে অবস্থানকে ইসলাম হারাম করেছে।

হাদিসে এসেছে-

“কোন পুরুষ যদি কোন নারীর সাথে নির্জনে একত্রিত হয় সেখানে শয়তান থাকে তৃতীয় ব্যক্তি”।
[সুনানে তিরমিজি (২১৬৫); আলবানী হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]💕

অর্ণব : ঠিক আছে আম্মু আর কখনো যাব না।

শফিক সাহেব : আর একটা কথা মনে রাখ তোর ব্যাপারে যেন কোন ধরনের মেয়েলি বিষয় না শুনি। প্রেমের মতো হারাম বিষয় আমি কখনোই মেনে নিবো না। যদি করিস তাহলে তোর কপালে দুঃখ আছে। তোকে প্রথম ও শেষবারের মতো সতর্ক করলাম।

কেননা এই সম্পর্কে কুরআনে আছে,

“স্বাধীনভাবে লালসা পূরণ কিংবা গোপনে লুকিয়ে প্রেমলীলা করবে না”
-(সূরা আল মায়িদা: ৫)💕

অর্ণব : আমি বুঝতে পারছি আব্বু। আর আমি হারাম কাজ কখনো করবো না। আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারো।

মিস রাদিয়া : তোর উপর আমাদের বিশ্বাস আছে। এখন তুই কলেজ যা। যাওয়ার সময় বাড়ি থেকে বের হওয়ার দোয়াটা পড়ে নিস।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এ দোয়া পড়তে বলেছেন-

بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ وَ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি, তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি, ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহি।’

অর্থ : আল্লাহর নামে (বের হচ্ছি); আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো উপায় নেই; আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো শক্তিও নেই।’
-(তিরমিজি, আবু দাউদ)💕

অর্ণব : ঠিক আছে আম্মু আমি গেলাম। আসসালাম অলাইকুম!

তারপর আমি মশিউর আর রিপন কলেজের উদ্দেশ্যে বেড় হলাম।

আসলে সেদিন আমি নেগলার সাথে একটা জরুরি বিষয়ে কথা বলতেছিলাম। নেগলা পর্দা করে ঠিকই কিন্তু সে মন থেকে করে না। ওর পরিবার অত্যন্ত ধার্মিক তাই বাধ্য হয়ে করে।

সেদিন,
নেগলা : আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আমি ভাবছিলাম বিয়ের পর স্বামীর সাথে অন্তত এই বস্তা পড়তে হবে না। কিন্তু ভাগ্য খারাপ! আমার স্বামী একজন দ্বীনদার ব্যক্তি। এখন কি করবো তুই বল?

অর্ণব : তুই কি পাগল হইছিস? এগুলা তুই কি বলতেছিস তুই জানিস?

নেগলা : আমার ভালো লাগে না। আর গরমের দিনে তো…. উফফফ!

অর্ণব : শুধু এই সামান্য উত্তাপ তুই সহ্য করতে পারতেছিস না। জাহান্নাম এই দুনিয়ার আগুন থেকে ৭০ গুন বেশি ভয়ানক সেটা তুই কেমন করে সহ্য করবি?

(নেগলা চুপ করে থাকলো)

অর্ণব : আর এ সম্পর্কে

কুরআনে আছে,

এই বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।
(সূরা আহযাব ৩৩ : ৫৩)💕

নেগলা : এর মধ্যে পবিত্রতা ব্যাপারটা আসলো কেনো?

অর্ণব : কেন আসবে না।

তুই বেপর্দায় রাস্তা দিয়ে হাঁটলে অনেক যুবক তোর কোমরের দিকে আর তোর বুকের দিকে তাকিয়ে চোখের স্বাদ নিবে, তাতে তোর ভালো লাগবে? তোর গালে টোল পড়া গর্তে অনেক ছেলে নিজেকে কল্পনায় ভাসিয়ে নিবে, তাতে তুই আনন্দ পাবি? এগুলা কি পবিত্রতা?

বুকের উড়না সরিয়ে রাস্তায় হেঁটে বহু যুবকের দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারিস মুর্হূতে, এটা কি পবিত্রতা?

তুই রাস্তায় হাঁটার সময় শত যুবক আড়-চোখে তোর দিকে তাকাবে! ওরা তোকে কিছু সময়ের জন্য কাছে পেতে চাবে, সারাজীবনের জন্য নয়। এটা কি পবিত্রতা?

তুই কি জানিস?– কোন সভ্য মা বেপর্দা নারীকে তার পুত্রবধু হিসেবে চাইবেনা ? বরং কিছু সময়ের জন্য কোন ছেলে তোর মোহে হারিয়ে যাবে। যেমনটা রাস্তার পাশে হকারে কোন শার্ট ভালো লাগলে আমরা তাকিয়ে দেখি। এটা কি পবিত্রতা?

তুই কি জানিস?– আমরা ঢেকে রাখা দ্রব্য নিরাপদ মনে করি। কারণ তার ভিতরটা জীবাণু মুক্ত থাকে। খোলা জিনিসে মাছি এসে ভীড় করে।

তুই কি জানিস?– তোর বুক ফুলিয়ে হাঁটা দেখে কিছু মানুষ দূর থেকে চোখের ইশারায় তোর স্ত*র সাইজ আর কোমর মাপতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। প্রতিদিন অজস্র পুরুষের চোখে তুই ধর্ষিতা হবি। এটা কি পবিত্রতা?

তোর টাইট–পিট জামা আমাকে তোর প্রতি আকৃষ্ট করবে ঠিকই, কিন্তু ঘরের বউ হিসেবে আমি কখনোই তোর মতো কাউকে চাইবোনা। কারণ তুই নিজেকে বাজারে সস্তা করবি। এটা কি পবিত্রতা?

তোর পোশাক দামী হতে পারে, কিন্তু শরীরটা আর দামী থাকবে না! সেটা রাস্তার যুবক কল্পনায় ঘ্রাণ শুকে নিবে। চোখ দিয়ে মেপে নিবে। “ভাবছিস—এটাই তো তোর সৌন্দর্য হবে তাইনা? হ্যাঁ রাস্তায় পড়ে থাকা ভাঙ্গা গ্লাসের টুকরায় রোদ পড়লে চক-চক করে,কিন্তু তাই বলে সেটা হিরে হয়ে যায়না সেটা মনে রাখবি।

বুঝলি?

(দেখলাম নেগলা কাঁদতেছে)

নেগলা : জানিস আমি এতো কিছু কখোনই ভাবি নি। পর্দা করলে নিজেকে দাদিমা দাদিমা মনে হয়। তাই আমার পর্দা করতে ভালো লাগতো না। আমি আমার ভুল বুঝতে পারছি! আল্লাহ যেন তোর মতো বন্ধু সবাইকে দেয়।

অর্ণব : হা হা হা! এটা আমার দায়িত্ব ছিলো। চল বাদাম খাই।

নেগলা : আরে না সময় নাই। অন্যদিন খাবো।

জোর করে সেদিন বাদাম খাওয়াইছিলাম। আর এটাই আমার খচ্চর ভাইটা দেখতে পাইছিলো।

রিপনের ডাকে আমার হুশ ফিরলো।

রিপন : কি রে কি ভাবতেছিলি?

অর্ণব : আরে না। সেদিনের ঘটনাটার কথা।

মশিউর : তুই আংকেল-আন্টিকে বলতে পারতি ঘটনাটা। খারাপ কিছু তো করিস নি।

অর্ণব : দেখ নেগলা আমাদের বন্ধু। আমরা ওকে ভালো মতো চিনি। কিন্তু আব্বু-আম্মুকে ঐ দিনের ঘটনাটা বললে তাদের মনে একটু হলেও নেগলার ব্যাপারে নেগেটিভ ধারনা জন্ম নিতো! যা আমি চাই না।

রিপন : ঠিক বলছিস। আচ্ছা তাড়াতাড়ি চল দেরী হয়ে যাচ্ছে।

অর্ণব : মারছে রে। একলাস আর বেলাল তখন থেকে দাঁড়ায় আছে। মনে হয় এতক্ষণে রাগে ভূত হয়ে গেছে। দৌড় দে!

১০ মিনিটেরর ভিতর কলেজ মোর পৌছে গেলাম,গিয়ে দেখি একলাস আর রিপন দাঁড়িয়ে আছে…

আমাদের ভিতর থেকে মশিউর বলল চল চল দেরি হয়ে গেছে এমনিতেই!

তখনই কলেজের গেটের দিকে চোখ গেল,অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, একটা বোরখা পরিহিতা মেয়ে রিকশা থেকে নামল। নিকাব পড়ে আছে বলে মুখটা দেখা যাচ্ছে না…

অর্ণব :- এতদিনে বুঝি আমার মায়ের স্বপ্ন পূরণ হবে!

একলাস:- মানে কি বড় ভাই??

অর্ণব :- মানে ভাগ্য ভালো হলে এই মেয়েকেই বিয়া করবো।
(আমি মনে মনে দোয়া করতেছি আল্লাহ এই মেয়েটাই যেন সেই মেয়েটা হয়)

[কোন মেয়ে? এটা এখন রহস্যই থাক😁]

মেয়েটা একটু একটু করে সামনে এগিয়ে আসছে আর আমরা সবাই এক নয়নে তাকিয়ে আছি!

carnation academy
carnation academy

মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ🍁

গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💕

Islamic গল্প😊”অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 4

মেয়েটা একটু একটু করে সামনে এগিয়ে আসছে আর আমরা সবাই এক নয়নে তাকিয়ে আছি..

মশিউর:- অর্ণব মেয়েটাকে দেখে তোর হৃদস্পন্দন ঠিক আছে তো?

অর্ণব :- বাড়ে গেছে একটু। আর মেয়ে কি? ভাবী বল!(দোয়া করতেছি আমার অপেক্ষাটা যেন এবার শেষ হয়ে যায়!)

মশিউর :- 😆😆😆

অর্ণব :- না ভাই এটা মোর বউ নয়, এটা তো নেহা, আল্লাহ মাপ করো। কি কি ভাবতেছিলাম নেহাকে নিয়ে!(ধুর মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। যার জন্য আমি অপেক্ষা করতেছি তার দেখা কি আমি আর পাবো না!)একটু পরেই নেহা সামনে আসল, তারপর

নেহা:- আসসালাম অলাইকুম।কি খবর সবার?..

মশিউর:- অলাইকুম আসসালাম! এইতো ভাবী ভালো আছি,তোমার কি খরব?

অর্ণব :- মশিউর এটা কিন্তু বেশী হয়ে যাচ্ছে!

নেহা:- ভাবী মানে কি বুঝলাম না?

মশিউর:- মানে হলো অর্ণব…( একটু আগে যা কিছু হয়েছে সব খুলে বলল)

নেহা:- মাশআল্লাহ্, আমার কপালটা খুলে গেছে! চলনা গো আজকেই বিয়েটা সেরে আসি?

অর্ণব :- কাকে এমন করে বলছিস??

নেহা :- তোমায় ছাড়া আর কাকে বলবো বলো গো। এখানে তো তোমার মত কিউট, স্মার্ট আর দ্বীনদার ছেলে আর কেউ নাই।রিপনের শরীর জ্বলে যাচ্ছে,কারণ রিপন মন থেকে নেহা কে ভালোবাসে….

রিপন :- তোরা থাক আমি ক্লাসে গেলাম।

একলাস:- আরে ভাই দাড়া একসাথেই যাব??

রিপন:- প্রেম পিরিতি দেখলে গাটা জ্বলে যায়,আমার সামনে সব কিছু করতে হবে? বলে হন হন করে চলে গেল।

অর্ণব : এটা তুই ঠিক করলি না নেহা…

নেহা:- একটু বাজিয়ে দেখতে হবেনা।

বেলাল:- তুই ভালো করেই জানিস ওয় তোকে খুব ভালোবাসে, তাও অর্ণবের সাথে এসব করতে হবে?

নেহা:- আমিও ওকে প্রচুর ভালোবাসি বুঝছিস! আর এটা রিপনও জানে! কিন্তু আমি প্রেমের মতো হারাম কাজে নিজেকে কখনো জড়াবো না।#কেননা কোরআনে রয়েছে,”আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।”-(সূরা বনী ইসরাইল 32)💕

একলাস : তোর চিন্তাভাবনা খুব সুন্দর। বিয়ের আগে প্রেম হারাম। ধৈর্য্য ধরে বিয়ে পর্যন্ত অপেক্ষা কর।#আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,”নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যধারণকারীদের সঙ্গে আছেন।”(সুরা : বাকারা, আয়াত : ৫৩)💕

নেহা : তোরা দোয়া করিস আমাদের জন্য।

অর্ণব : ইনশাল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা তো তোদের অন্তরের সব কিছু জানেন ও দেখতেছেন।#কোরআনে আছে,”নিশ্চিত জেনে রেখ, আসমান ও জমীনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর। তোমরা যে অবস্থায় আছ তা তিনি জানেন। অতঃপর যেদিন তারা তাঁর কাছে ফিরে যাবে সেদিন তিনি তাদেরকে জানিয়ে দেবেন তারা যা করত, আল্লাহ সকল বিষয়ে সবচেয়ে বেশি অবগত।”-(সুরাঃ আন্‌-নূর, আয়াতঃ ৬৪)💕

মশিউর : আচ্ছা এই বিষয়টা বাদ দে।

নেহা : আরে বেলাল তোকে বেলে কে থাপ্পর মারছে?এটা শুনে একলাস উচ্চ স্বরে হেসে উঠল!

আমি, মশিউর আর নেহা অবাক হলাম( এমন করে হাসতাছে কেন পাগল হলো নাকি)

অর্ণব : বেলালকে থাপ্পর মারছে আর তুই হাসতেছিস! কার এত বড় সাহস যে বেলাল কে চড় মারে?

মশিউর : এত বড় কান্ড হয়েছে, তুই আমাদের ফোন না করে হাসতাছিস?একলাস আবার হেসে উঠল

একলাস:- কি হয়েছে বলতে পারুম না,বলার আগেই হাসি বের হচ্ছে।(অন্যদিকে বেলাল চুপ করে দাঁড়ায় আছে)

মশিউর :- বেলাল তুই বল! কি হয়েছিলো?(বেলাল চুপ)

একলাস: দারা আমিই বলতেছি,”বাসের ভিতর বসে বসে বেলাল গান গাচ্ছিলো,

বেলাল :- মাইয়া ও মাইয়ারে তুই অপরাধীরে, আমার যত্নে গড়া ভালোবাসা……হঠাৎ একটা মেয়ে ঠাস্……স করে একটা থাপ্পর বসায় দিলো।গালে এক হাত দিয়ে,

বেলাল:- কোন শয়তান মারল রে….

অচেনা মেয়ে:- তোর খালা মারছে!বেলালের চেহারাটা দেখার মতো ছিলো। মেয়েকে দেখে ভেজা বিড়ালের মতো চুপসে গেলো।

বেলাল:- কেন মারলেন…

অচেনা মেয়ে:- মেয়েদের দেখলেই গান গাইতে ইচ্ছে হয় তাইনা..!”

অর্ণব :- বেলাল তারপর কি করলি..

বেলাল :- কিছু নাই বলতে চলে গেল।

নাহাজুল:- তুই আসলেই একটা অন্য লেভেলের গাধা।

নেহা : হি হি হি। নেগলা আসলে অনেক খুশি হত এটা শুনে।

নাহাজুল:- ভুলেই গেছিলাম ওর কথা। ও আসলো না কেন জানিস কি?

নেহা:- জানিনা, তবে বলল “আমি অসুস্থ”।

অর্ণব :- তাহলে চল বিকেলে ওকে দেখতে যাব।

নেহা:- লাভ নেই??

একলাস:- কেন লাভ নেই??

নেহা:- আমি যেতে চাইলাম বলে “তেমন কিছু না”, এমনিতেই নাকি ২-৪ দিন আসবে না?

অর্ণব :- নেগলা তো অনেক ভাল ছাত্রী। একদিন ও বন্ধ দিতে চায়না, ও ২-৪ দিন আসবে না এটা বিশ্বাস হচ্ছেনা।আর ওর বিয়ের তো এখনো দেরী আছে। বেপার টায় গোলমাল আছে।

বেলাল :-একদম ঠিক বলেছিস? বেপার টা ভালো করে দেখতে হবে।

মশিউর : তোরা কি শুরু করলি? আজকে কি ক্লাস করবি না? কত দেরি হয়ে গেছে দেখছিস? এমনিতে আমরা দেরী করে আসছিলাম।আমরা সবাই অবাক! সত্যিই অনেক দেরী হয়ে গেছে। আমরা গল্প করতে করতে এতোটাই মগ্ন হয়ে গেছিলাম যে এত সময় পার হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি।

নেহা : পরে কথা বলছি নেগলার বিষয় নিয়ে এখন ক্লাসে চল সবাই।

একলাস : চল না দৌড়া!ক্লাসে গিয়ে দেখি ইংলিশ মেডাম ক্লাস নিচ্ছে।

নেহা:- May we come in mam?মেডাম আমাদের দেখে খুশি হন নি এটা বুঝা যাচ্ছে… ক্লাশ শেষের দিকে আর আমরা এখন আসতেছি। রাগান্বিত হওয়ার বিষয়ও বটে!(মনে মনে দোয়া করতেছি যেনো সবার সামনে আমাদের অপমান না করে)পড়ানো বন্ধ করে আমাদের সাথে কথা বলার জন্য এদিকে আসতেছেন….মেডাম অনেক রাগী! কি যে হয়….

Passive Income Newsletter
Passive Income Newsletter

“মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ❣গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💝

অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার সকল পর্ব👈 

carnation e book

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *