অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 8,9,10

অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার
“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 8
অর্ণব :-আমি আজ আপনাকে দেখেই ছাড়ব?
এই বলে সামনে এগোচ্ছি!
অচেনা মেয়েটি:-আল্লাহর দোহাই আমার কাছে আসবেন না।
আমি থেমে গেলাম। এটা আমি কি করতে যাচ্ছি? “উনা”-র জন্য কি আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে? এভাবে একটা মেয়েকে আমি কোনভাবেই দেখতে পারি না! আর চেহারা দেখার পর যদি দেখি এটা উনি না তাহলে? সবচেয়ে বড় কথা ইনি নাজিমের ম্যাডাম। উনার একটা সম্মান আছে। যদি বাড়িতে জানা পায় ব্যাপারটা, তাহলে খুব খারাপ হবে। আল্লাহ! আমি অনেক বড় ভুল করতে যাচ্ছিলাম।
একসাথে এতোগুলো কথা আমার মাথায় বিদ্যুতের মতো খেলে গেলো!…..পিছন ঘুরে বললাম নাজিম চল বাসায় যাব.. একটু বাইরে দাঁড়িয়ে থাক।
নাজিম:- ওকে ভাইয়া চল।
(নাজিম বাইরে গেলো)
অর্ণব : আমাকে মাফ করে দিয়েন প্লিজ! আমি নিজেও বুঝতে পারি নি আমি কি করতে যাচ্ছিলাম। আসলে আমার বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু আমার উনি হারিয়ে গেছে! উনার অপেক্ষায় আমি দিন গুনতেছি। আর আপনার সব কিছু একদম উনার মতো! কন্ঠ,হাসি,কথা বলার ভঙ্গিমা সব কিছু। এজন্য আমি নিজেকে আটকাতে পারিনি। আমি মনে করছিলাম আপনিই উনি।
(আমি পিছনে ঘুরেই কথা গুলা বললাম। উনি উল্টা দিকে নিজের মুখ হাত দিয়ে ঢাকে রাখছিলেন)
অচেনা মেয়েটি : উনাকে কি খুব ভালোবাসেন?
অর্ণব : দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যানের জন্য তাকে প্রচুর ভালোবাসি। এজন্যই আমি এই ভুলটা করতে যাচ্ছিলাম! আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।
অচেনা মেয়ে : হুম বুঝছি! উনি সত্যিই অনেক ভাগ্যবতী যে আপনার মতো কাউকে পেয়েছে। এখন আপনি যান। বাইরে নাজিম দাঁড়ায় আছে।
অর্ণব : কোথায় ও কিভাবে হারিয়ে গেছে তা তো জিজ্ঞাসা করলেন না। আমার মনে হচ্ছে আপনিই “উনি”!
অচেনা মেয়ে : আমি আপনার “উনি” না। রাত হয়ে যাচ্ছে বলে জিজ্ঞাসা করিনি। কালকে আসলে জিজ্ঞাসা করতাম। এখন আপনি যান প্লিজ!
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম।
অচেনা মেয়ে : অলাইকুম আসসালাম।
তারপর আমি বাড়ি থেকে বেড় হয়ে নাজিমকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি আর বলছি,
অর্ণব : নাজিম তোর মেডামের নাম কি রে?
নাজিম:- নাম দিয়ে কি করবি?
অর্ণব :- এমনি মাথা গরম আছে, থাপ্পর খাসনা যা বলছি চুপচাপ উত্তর দে।
নাজিম:- মেডামের নাম তানহা!
মনে মনে,
অর্ণব :- তানহা?…….না এ নামে তো আমি কাউকে চিনিনা তাহলে কন্ঠ এত চেনা চেনা লাগল কেন? আরে ধুর আমি তো ভুলেই গেছিলাম যে আমি “উনা” -র নামটাও জানি না। হুম আমিই বোধহয় পৃথিবীর প্রথম স্বামী যে তার স্ত্রীর নামটাও জানে না। ধুর অন্ততপক্ষে নামটাতো শুনে নিতে হতো।
নাজিম:- ভাইয়া তুমি কি কিছু বলছো?
অর্ণব : নাহ কিছু না।
এই সময় মশিউর এর কল আসলো।
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম।
মশিউর : অলাইকুম আসসালাম।
অর্ণব : আমি চাচ্ছিলাম তোকে কল দিবো। তুই নিজে থেকে দিয়ে ভালো কাজ করছিস!
মশিউর : কেনো?
আমি নেগলার সাথে যা যা ঘটছে তা বললাম।
মশিউর : তাহলে এখন কি করবি।
অর্ণব : কালকে কলেজে যাই আগে। তবে শান্তভাবে বিষয়টাকে মিটমাট করতে হবে। তিতুমির অনেক খারাপ ছেলে। যেকোন কিছু করতে পারে, তাই নেগলা পরবর্তীতে বিপদে পড়তে পারে।
মশিউর : ঠিক বলছিস। কেননা
কুরআনে আছে,
কাফেররা সন্ধি বা চুক্তি বা শান্তি চাইলে মুসলমানদের ও একই পথে চলতে হবে।
-(সূরা আনফাল, আয়াত : ৬১,৬২)💕
এই আয়াত দ্বারা যুদ্ধ বা মারামারি না করে সন্ধির দিকে বেশি উৎসায়িত করা হয়েছে।
অর্ণব : তবে আমাদেরকে সব কিছুর জন্য তৈরী থাকতে হবে।
কুরআনে আছে,
যুদ্ধ করলে যুদ্ধ হবে,যুদ্ধ না করলে যুদ্ধ হবে না।
-(সূরা বাকারাহ, আয়াত ১৯১)💕
তাই সবাইকে কালকে তৈরী থাকতে বলিস। যদি পরিস্থিতি বেগতিক হয় তাহলে শক্তি দেখাতে হবে।
মশিউর : ঠিক আছে। আমি সবাইকে বলে দিবো। কিন্তু..
অর্ণব : কিন্তু?
মশিউর : কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ইংলিশ ম্যাডামকে নিয়ে। মনে নাই? ২ মাস আগে তিতুমিরদের সাথে মারামারির কথা, ইংলিশ ম্যডাম ঐ মারামারির জন্য কত বড় ঝামেলা করছিলো!
অর্ণব : মনে আছে।তাই বলে অন্যায় চুপচাপ সহ্য করবো না। যা হবে দেখা যাবে! আর আমরা মারামারি করতে যাচ্ছি না। শুধু বুঝাইতে যাবো। ওদের উপর ভরসা নাই। তাই তৈরী হয়ে যাবো।
মশিউর : ঠিক আছে। কিন্তু এবার আর তখনকার মতো কলেজে মারামারি করবো না। বাইরে করলে কেউ কিছু বলতে পারবে না। তবে ঐবার যে মারটা মারছিলাম ওদের, এখনো আমার স্পষ্ট মনে আছে। হাহাহা।
অর্ণব : ঝামেলাটার কারনে আমি রাজশাহীতে গেছিলাম। ঐ সফর আমি কোনদিনও ভুলতে পারবো না।
মশিউর:- হুম…মনে আছে তো। রাজশাহীতে যায়ে কি এমন দেখলি যে সারাজীবন মনে থাকবে,কখনো ভোলা যাবেনা?
অর্ণব : পরে বলবো।
(ওখানে না গেলে তো আমার “উনা”-র সাথে দেখাও হতো না,আর তার সাথে বিয়েও হতোনা। উনার সাথে পার করা প্রত্যেকটা মূহুর্ত আমার স্মৃতির পাতায় এখনো জ্বলজল করতেছে। সেগুলা কি আর আমি ভুলতে পারি!)
মশিউর:- ওকে বলতে হবেনা। বাই
অর্ণব : ইনশাল্লাহ একদিন বলবো।
আসসালাম অলাইকুম।
মশিউর : অলাইকুম আসসালাম।
আসলে ২ মাস আগে তিতুমিররা আমাদের ব্যাচের রোকন নামের একটা ছেলেকে র্যাগ দেয়। ছেলেটা ছিলো খুব ভদ্র আর খুব সহজ-সরল। তাই আমরা তিতুমিরদের কাছে যাই কথা বলতে। তারা উল্টা আমাদেরকে র্যাগ দেবার ভয় দেখায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওরা লাঠিসোটা বেড় করে। আমরাও বসে থাকে নি। লাঠি, হকি স্টিক যা পাইছি সব নিয়ে মারামারি শুরু হয়ে যায়। ওরা আমাদের সাথে পারেনি। যার ফলে ওদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছিলো। আর তাই আমরাও ফেঁসে যাই। পরের দিন ইংলিশ ম্যাডাম তিতুমিরদের আর আমাদের সবাইকে গভর্নিং কমিটির কাছে বিচারের জন্য নিয়ে যায়।
কলটা কেটে,
অর্ণব : নাজিম বাড়িতে এগুলা কথা একদম বলবি না। ঠিক আছে?
নাজিম : ঠিক আছে! কিন্তু তাহলে আমাকে কম্পিউটারে ভিডিও গেম খেলতে দিতে হবে।
অর্ণব : সকালে তুই যে কাজটা করছিস ঐটার জন্য আর কোনদিনও তোকে খেলতে দিতাম না। কিন্তু বাধ্য হয়ে দিতে হচ্ছে।
নাজিম : হি হি হি।
অর্ণব : একদম হাসবি না।
কথা বলতে বলতে আমরা বাড়িতে চলে আসলাম। ডাক দিলে আম্মু দরজা খুলে দিলো।
মিস রাদিয়া : আসসালাম অলাইকুম।
অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম। এই যে ধরো তোমার ছোট বিচ্ছুকে।
(মানে নাজিমকে)
নাজিম : আমি আম্মুর একমাত্র কলিজার টুকরা। বিচ্ছুনা বুঝলি।
অর্ণব : একমাত্র? বাব্বাহ!
মিস রাদিয়া : হইছে। আসেই দুই নবাবজাদার ঝগড়া শুরু। অর্ণব তুই উপরে যায়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় খাবার দিবো। আর নাজিম তোমার নতুন ম্যাডাম কেমন পড়াচ্ছে?
নাজিম : জি আম্মু খুব ভালো। আমার উনার কাছে বুঝতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। আর আপুটা অনেক ভালো!
মিস রাদিয়া : ঠিক আছে। তুমি যায়ে ব্যাগ রাখে হাত-মুখ ধুয়ে আসো।
নাজিম : ঠিক আছে আম্মু।
খাওয়া দাওয়া করে আর এশার নামাজ পড়ে রুমে গিয়ে একটু ফেসবুকে আসলাম!ফেসবুকে আমার একটা পেজ আছে যেখানে আমি গল্প লিখি।
পেজের ইনবক্সে দেখলাম “গুনাহগার বান্দী” নামে একটা আইডি থেকে, আমার ক্ষণিকের_মুসাফির পেজটিতে মেসেজ দিয়েছে। মেসেজটি এমন ছিল,
“আসসালাম অলাইকুম।এই যে শুনছেন আপনি অনেক ভালো গল্প লেখেন, আমি আপনার ভালো বন্ধু হতে চাই।”
(আমি আইডি টা চেক করলাম।মেয়েটার বাসা কোথায়,কিসে পড়ে তেমন কিছুই নাই। আর বন্ধুও দেখলাম মাত্র ১৩ জন। ভাবলাম আমার ফেসবুক আইডি থেকে মেসেজ দিব,পরে ভাবলাম না ফেক আইডি হতে পারে)
সব কিছু চেক করে আমার পেজ থেকেই রিপ্লাই দিলাম,
অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম হুম পারেন!
মেয়েটি :- তো আপনার ফেসবুক আইডির নাম জানা যাবে কি?
অর্ণব:-না, যা বলার এখানেই বলেন?
মেয়েটি :- ওকে লাগবে না,কি করেন আপনি?
অর্ণব : একটু আগে বোকা খাইলাম। তাই মাথা ঠান্ডা করার জন্য ফেসবুকে ঢুকলাম।
মেয়েটি :- কার কাছ থেকে বোকা খেলেন?
অর্ণব : আম্মুর কাছ থেকে।
মেয়েটি :- কেনো?
অর্ণব : সকালে উঠে নামাজ পড়ি না তাই!
(জি হ্যাঁ আবার খাবার সময় বোকা দিছে এ কারনে)
মেয়েটি :- একটা রিকোয়েস্ট করবো। প্লিজ সকালে উঠে ফযরের নামাজটা পড়িয়েন!
অর্ণব :- তার আগে বলেন তো আপনার নাম কি?
মেয়েটা :- আমার নাম তানহা…
“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 9
মেয়েটি :- আমার নাম তানহা,এবার কথা দেন ভোরে উঠে নামাজটা জামাতের সাথে পড়বেন!
(ইনি কি তাহলে নাজিমের ম্যাডাম? হতেও পারে। আর ইনি যদি নাজিমের ম্যাডাম হন তাহলে ইনি আমার বউও হতে পারে। ধুর আমিও বউ বউ করে পাগল হয়ে গেছি। এতো Co-incidence কিভাবে সম্ভব? আমার বউ আমার সাথে ফেক আইডি দিয়ে কথা বলতেছে আর আমরা দুইজনেই জানি না যে আসলে আমরা স্বামী-স্ত্রী কথা বলতেছি। হাহাহা এটা গল্পেই সম্ভব বাস্তবে না!)
অর্ণব : জি দেখা যাক।
তানহা :- কি দেখবেন?
অর্ণব : উঠতে পারি কিনা!…
তানহা :- Thanks আপনার নাম তো বললেন না?
অর্ণব :- নামটা অজানাই থাক না?
তানহা :-বলেন না প্লিজ?
অর্ণব : সময় হলে নিজে থেকেই বলবো।
তানহা :- মানে…….
অর্ণব : আমি অপরিচিত কাউকে নাম বলিনা।
তানহা : তাহলে আমার নাম শুনলেন যে?
অর্ণব : ঐটাতো আপনি নিজে থেকেই বললেন। আমি তো শুধু জিজ্ঞাসা করতেছিলাম।
তানহা : এটা ধোকা বুঝলেন।
অর্ণব : কিভাবে?
তানহা : ঐভাবে!
অর্ণব : ঐভাবে কিভাবে?
তানহা : বুঝেও না বুঝার ভান করিয়েন না।
অর্ণব : আমি আপনাকে ধোকা দেয় নি বুঝলেন। আপনি আপনা আপনিই বলছেন। এখানে কি আমার দোষ?
তানহা : হ্যাঁ আপনার দোষ।
অর্ণব : ওকে বাবা আমি দুঃখিত। আমাকে ক্ষমা করে দেন।
তানহা : ক্ষমা করবো এক শর্তে।
অর্ণব : জানি আমার নাম জিজ্ঞাসা করবেন!
তানহা : 😆😆😆.. নাহ বলতে হবে আপনার মাথায় মগজ আছে।
অর্ণব : সবার মাথায়ই মগজ থাকে!
তানহা : না আমি শুনছি ছেলেদের মগজ হাটুতে থাকে। হা হা হা।
অর্ণব : কই আমি তো কখনো শুনিনি।
তানহা : পৃথিবীতে এমন অনেক কথা আছে যা আপনি কোনদিনো শুনেন নি। তার মধ্যে এটা একটা। এতে অবাক হওয়ার কি আছে?
অর্ণব : আপনার সাথে কথায় পারা যাবে না।
তানহা : দেখতে হবে না মেয়েটা কে!😎
অর্ণব : আমার আপনাকে দেখার ইচ্ছাও নাই।
তানহা : আমি আপনাকে দেখাবোও না। তা আপনার নাম বলবেন না?
অর্ণব : জি সময় হলে আপনাকে আমি নিজে থেকে বলবো আমার নাম কি। এখন অনেক রাত হয়েছে। আমাকে আবার গল্প লিখতে হবে। শুভরাত্রী!
তানহা : জি আমারো ঘুম পাচ্ছে। আসসালাম অলাইকুম।
অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম।
তারপর ফেসবুক থেকে লগ আউট করলাম। শুয়ে শুয়ে ভাবতেছি,
অর্ণব : আজকে কি দিন গেলো? সকালে ভাইটার জন্য ফাঁসে গেলাম,কলেজে আসতে দেরী হলো,ক্লাসেও দেরী করে ঢুকলাম তাই ম্যাডামের কাছে বোকা খাইলাম, ক্লাসের মাঝেও ম্যাডামের কাছে ফাঁসে গেলাম, ভুল করে রিপনকে আমার “উনার” কথা বলে ফেললাম, তারপর নাজিমের ম্যাডামের বাসার ঘটনা, ফির শেষে এই “গুনাহগার বান্দী” -র মেসেজ মানে তানহার সাথে চেটিং। উফফফ! আজকের দিনটা নিয়ে পুরা একটা গল্প লেখা যাবে।
এসব চিন্তাভাবনা করতে করতে কখন যে ঘুমায় গেছি টের পাইনি।
ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম। আসলে একসাথে ১৫ টা এলার্ম দিয়ে রাখছিলাম মোবাইলে, প্রতি ৫ মিনিট পর পর। তাই আজকে টের পেলাম। ফযরের নামাজটা পড়লাম। আম্মু প্রচুর খুশি হইছে। নামাজ পড়ে আবার আসে ঘুমাইছি।
সকালে উঠলাম আম্মুর ডাকে। ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম।
মিস রাদিয়া : আসসালাম অলাইকুম নবাবজাদা!
অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম। নাজিম উঠছে?
মিস রাদিয়া : ও তোর মতো না। যে ৮ টা পর্যন্ত ঘুমাবে। সকালে উঠে আরবি পড়তে গেছে।
অর্ণব : এতক্ষণে তো চলে আসার কথা। আচ্ছা তুমি খাবার দেও।
মিস রাদিয়া : হুম বস।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আজকে মশিউর আর রিপনের জন্য অপেক্ষা করলাম না। কারন আমি আগে বিষয়টা একাই মিটমাট করার চেষ্টা করবো। যদি না হয় তখন ওদের সাহায্য নিবো। নেহা আর নেগলাকে বলা হয়েছে ওরা যেন কলেজে না আসে। ওরা প্রথমে না রাজি হলেও একসময় রাজি হলো। যদি আসলেই মারামারি লাগে তাহলে অনেক বড় ঝামেলা হতে পারে।
১০ মিনিটে কলেজে পৌছে গেলাম। দেখলাম তিতুমির আর তার দলবল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে।
আমি তিতুমিরকে একা ডাকলাম,
তিতুমির : কি হলো ডাকলি কেনো?
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম বড় ভাই।
তিতুমির : হ্যাঁ হ্যাঁ। ডাকলি কেন ঐটা বল।
অর্ণব : আপনাকে কিছু কথা বলবো। আমার কথাগুলো একটু শুনিয়েন।
তিতুমির : ঠিক আছে। কিন্তু তাড়াতাড়ি কর।
অর্ণব : ইসলাম নারীদেরকে সম্মানিত করেছে। তাদেরকে কষ্ট দেওয়া তো দূরে থেকে অন্য মেয়েদের প্রতি তাকানো পর্যন্ত হারাম করা হয়েছে। নারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কুরআনে সবার আগে ছেলেদের পর্দার কথা আছে।
মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,
“(হে নবী!)
আপনি ঈমানদার পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং গোপন অঙ্গের হেফাজত করে।
এতে তাদের জন্য উত্তম পবিত্রতা রয়েছে,
নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ এ ব্যাপারে জানেন।
-(সূরা নূর, আয়াত-৩০)💕
যারা এ আদেশ অমান্য করবে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। কেননা এ আদেশ অমান্য করার ফলে সমাজের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে।
হাদিসে এসেছে,
রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি কোনো
গায়রে মুহরেম বা বেগানা নারীর সৌন্দর্যের প্রতি
কামনার দৃষ্টিতে তাকাবে, কিয়ামতের দিন তার
চোখে সিসা ঢেলে দেওয়া হবে।’
-(ফাতহুল কাদির)💕
তাহলে আপনিই বলুন আমাদেরকে নারীদের সম্মান না করে তাদের দিকে কুনজরে তাকানো কি ঠিক?
তিতুমির : হুম বুঝছি। এগুলা আমাকে কেন বলতেছিস?
অর্ণব : আমি বলতেছি কারন আপনি এর চেয়েও খারাপ কাজ করছেন। যা কতটা ভয়াবহ হতে পারে আপনি বুঝতে পারেন নি।
যেখানে শুধু কারো চেহারা কামনার দৃষ্টিতে দেখার ফলে চোখে লোহার সীসা ঢেলে দেওয়ার মতো কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে সেখানে কাউকে উত্যক্ত করার শাস্তি আরো কতটা ভয়াবহ হতে পারে ভেবে দেখেন। এটা তো আরো বড় পাপকাজ। আবার যাকে উত্যক্ত করা হচ্ছে তার উপর জুলুম করা হচ্ছে। আর জুলুমের শাস্তি সম্পর্কে
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“অচিরেই জালিমরা জানতে পারবে, তাদের প্রত্যাবর্তনস্থল কোথায় হবে।”
-(সুরা : শুআরা, আয়াত : ২২৭)💕
অন্য হাদিসে এসেছে,
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“দুটি পাপের শাস্তি আল্লাহ তাআলা আখিরাতের পাশাপাশি দুনিয়ায়ও দিয়ে থাকেন। তা হলো, জুলুম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি।”
-(তিরমিজি, হাদিস : ২৫১১)💕
তিতুমির : আমি কি করছি?
অর্ণব : নেগলাকে ডিস্টার্ব করে আপনি অনেক বড় ভুল করেছেন। এটা আপনার উচিৎ হয় নি। দয়া করে আর এই কাজ করিয়েন না। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েন। কারন এর দ্বারা আপনার অনেক পাপ হয়েছে।
তিতুমির : ওহ।
এই সময় পিছন থেকে তিতুমিরের দলবল চলে আসলো।
সুজা : কিরে তিতুমির এত দেরি হচ্ছে কেন? তোর দেরী দেখে আমরাও আসলাম।
(তিতুমিরের বন্ধু)
রিফাত : এ কি বলতেছে?
(তিতুমিরে বন্ধু)
তিতুমির : বলতেছে নেগলাকে ডিস্টার্ব করে আমি খারাপ কাজ করছি।
সুজা : ওহ! এই ব্যাপার। কেন নেগলাকে ডিস্টার্ব করছিতে তোর কেন গায়ে লাগতেছে। তোর মাল নাকি? তোর মাল হইলে বল আর ডিস্টার্ব করবো না।
(সবাই হেসে উঠলো)
অর্ণব : দেখেন নেগলা আমার খুব ভালো বন্ধু। আর কাউকে উত্যক্ত করা খুব খারাপ কাজ। আর এটা হারামও। তাই আর করিয়েন না।
রিফাত : তোর এত বড় সাহস বড় ভাইদের জ্ঞান দিতে আসছিস?
সুজা : দুই মাস আগের ঘটনা এখনো আমরা ভুলিনি। এই তোরা লাঠি সোটা নিয়ে আয় তো। আজকে শোধ তুলবো।
রিফাত : আজকে সব হিসাব কিতাব হবে। ঐদিন তোর ভাগ্য ভালো ছিলো। আজকে বাবা তুমি কোথায় যাবা?
তিতুমির : আমি ভুলেই গেছিলাম ঘটনাটার কথা। শুধু লাঠি না হকি স্টিক নিয়ে আয়। আজকে একে র্যাগ দিবো।
রিফাত : এই তোরা আয় আমার সাথে। সুজা ওকে দেখিস যাতে পালাতে না পারে। আমি লাঠি – হকি স্টিক নিয়ে আসতেছি।
আমার কথায় তিতুমির একটু নরম হলেও, এরা আসায় পুরাটা ভেস্তে গেল। এখন মারামারি লাগবেই। ধুর একা আসা উচিৎ হয় নি। পালানোর কোন সুযোগ নেই। ওরা সংখ্যায় ৫-৬ জন। এখন বোধহয় মার খাবোই।
(চলবে…)
Islamic গল্প😊
“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 10
তিতুমির আর আরো একটা ছেলে আমাকে ধরে আছে। আমি কখনোই ৫-৬ জনের সাথে একা মারামারি করতে পারবো না।
সুজা : একটু পরেই বুঝবি আমরা তোর সাথে কি কি করি?
তিতুমির : শুন একে নিয়ে ঐ কোনটায় যাই। ওখান থেকে একে মারার সময় সহজে কেউ দেখতে পাবে না।
সুজা : কেউ দেখলে সমস্যা কি? সবাই আমাদের ভয় পায়। চিন্তা করিস না।
তিতুমির : ঠিক আছে।
ওনেকেই দেখতেছে যে আমাকে এরা ধরে রাখছে। কিন্তু কেউ কিছু বলতেছে না। কারন এরা আসলেই খুব খারাপ। তাই কারো সাহস নাই এদের বিরুদ্ধে কথা বলার।
কিছুক্ষণ পরেই রিফাত লাঠিসোটা নিয়ে আসলো। সবার হাতে একটা লাঠি দিলো।
অর্ণব : আমার সাথে ভেজাল করলে ভালো হবেনা বলে দিলাম। পরে কিন্তু সব সুদে আসলে তুলবো।
বলার সাথে সাথে সুজা আমার কলার ধরে বলল,
সুজা : তোকে আমরা ভয় করি নাকি, আর তোর কোন বাপ আছে এখানে ডাক।
বলেই দুই গালে দুইটা থাপ্পড় দিলো।
চুপচাপ সহ্য করে,
অর্ণব : তোরা আগুন নিয়ে খেলতেছিস বলে দিলাম।
রিফাত : কি বললি? তিতুমির ওকে ছাড় আর সর ওখান থেকে।
বলেই লাঠি নিয়ে মারতে আসলো।
এবার আর চুপ করে থাকা যায় না। যেভাবে হোক বাঁচতে হবে।
তিতুমির আমাকে ছাঁড়ার সাথে সাথে অন্য ছেলেটার হাত থেকে নিজেকে কোন মতে ছাড়িয়ে ছেলেটাকে দিলাম একটা থাপ্পর বসায়। রিফাত আমার খুব কাছে চলে আসছিলো।
কয়েক সেকেন্ডের জন্য ওরা হতভম্ব হয়ে গেলো। আমি পালাতে পারতাম কিন্তু আমি কাপুরুষ না। মার খাবো কিন্তু পালাবো না।
ওদের হতভম্বতার সুযোগ নিয়ে পাশের একটা ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে হাত থেকে হকি স্টিক কেড়ে নিয়ে সাথে সাথে রিফাতের পায়ে খুব জোড়ে একটা ঘা বসায় দিলাম। রিফাত আমাকে মারার চেষ্টা করছিলো কিন্তু পারেনি। ও আমাকে মারার জন্য লাঠি উঠাবে এমন সময় আমি ওকে মারছি।
কাজগুলা সব শক্তি দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি করলাম। কারন আমি জানি এদের সাথে আমি কখনো পারবো না। কিন্তু নিজের মান সম্মান বাঁচাতে হবে। আগে আমি কয়েকটা মেরে নেই তারপর ওরা মারবে মারুক। পরে কলেজের বাইরে দেখে নিবো।
হকি স্টিক দিয়ে মারছি তাই রিফাতের চিৎকারে তারা একটু দমে গেলো।
সাথে সাথে আমি তিতুমিরের কলার ধরে ওকে থাপ্পর মারতে যাবো এমন সময়,
ইংলিশ মেডাম:- কি করছো এসব, মেরে ফেলবে নাকি তিতুমিরকে?
(ধুর মানুষের টাইমিং এতো খারাপ হয়? আরেকটু আগে আসুক। না হলে আরেকটু পরে আসুক। এর পরে তো আমিই মার খেতাম। কারন আর কয়েক সেকেন্ড পর ওরাও লাঠিসোটা নিয়ে আমাকে বেধরক পিটাইতো আমি এইটা নিশ্চিত ছিলাম। আর আমি কিছুই করতে পারতাম না। কিন্তু আসলো কখন? ভাগ্যটাই খারাপ)
আমি মাথা নিচু করে দাঁড়ায় থাকলাম।
ইংলিশ ম্যাডাম : রিফাতকে এতো জোড়ে মারলা কেনো? তুমি তো একটা গুন্ডা। কলেজে আসো গুন্ডামি করতে?
মেডামের কাছে আমি আগে থেকেই খারাপ ছিলাম। তাই পুরা বিষয়টা উনি অন্য দিক দিয়ে দেখতেছেন। উনার মতে দুইয়ে দুইয়ে চার মিলায়ে আমিই এখানকার দোষী।
অর্ণব : Sorry Mam! এর পরে আর হবে না। এবারের মতো মাফ করে দেন।
ইংলিশ ম্যাডাম : তোমার মতো নির্লজ্জ আমি আরেকটা দেখিনি। দুই মাস আগে কলেজ মিটিংয়ে তোমার বন্ধুরা আর তিতুমিরের বন্ধুরা বললা যে আর কোনদিনো কলেজে মারামারি করবা না। আর এখন হকি স্টিক নিয়ে ওদের মারতেছো।
আসলে পুরা ঘটানায় ম্যাডামের চোখ আমার উপর ছিলো। তাই সুযোগ বুঝে তিতুমীরের দলবল লাঠি লুকায় নিছে। শুধু রিফাতের লাঠি নিচে পড়ে ছিলো।আর আমার হাতে হকি স্টিক।
অর্ণব : ভুল হয়ে গেছে। এরকম আর হবে না। শেষ বারের মতো মাফ করে দেন। প্লিজ!
ইংলিশ ম্যাডাম : কখনোই না। সেবার বলা হয়েছিলো যদি আরেকবার এরকম করো তাহলে কলেজ থেকে বেড় করে দেওয়া হবে। এবার হয় তুমি এ কলেজ থাকবা নাহলে আমি।
অর্ণব : মানে,
ইংলিশ ম্যাডাম : মানে কলেজে তুমি থাকলে আমি এ কলেজে আর ক্লাস নিবনা আর থাকবো না কথা দিলাম। আর আমি থাকলে তোমাকে এ কলেজ থাকতে দিবনা। এটাই আমার শেষ কথা।
(আমি মাথা নিচু করে থাকলাম)
ইংলিশ ম্যাডাম এই কথা বলে চলে গেল। রিফাতকে ঘাড়ে করে ওর দলবল নিয়ে গেল। তিতুমির আমার দিকে একটু মায়া ভরা মুখে তাকিয়ে চলে গেলো। বুঝলাম না এর মানে কি ছিলো। তবে ছেলেটা আসতে আসতে হাটতেছিলো।
পুরা কলেজ চত্বরে ভিড় লাগে গেছিলো। আমি ওদের দৃষ্টির প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। ভিড় ঠেলে এখলাস,মশিউর,রিপন,বেলাল এরা চার জন দৌড়ে আসলো।
মশিউর : কিভাবে ঘটলো এগুলা?
বেলাল : আমাদের জন্য অপেক্ষা করলি না কেন?
এখলাস : থাম তোরা। অর্ণব এখান থেকে চল। সবাই আমাদের দেখতেছে। আর অর্ণবের এখন একটু আরাম করতে হবে।
তারপর আমরা সেখান থেকে একটা ফাঁকা জায়গায় গেলাম।
এখলাস : এবার বলতো পুরা ঘটনাটা। বেলাল তুই একটু পানি নিয়ে আয়।
মশিউর : তোর গালে থাপ্পরের দাগ কেনো?
এখলাস : থাম এত উত্তেজিত হইস না। ওকে বলতে দে!
তারপর আমি পুরা ঘটনাটা ওদেরকে বললাম।
মশিউর : তুই আমাদের জন্য অপেক্ষা করিস নি কেন? এটা তুই একদম ভালো কাজ করিস নি।
অর্ণব : তাহলে আমার সাথে তোরাও ফাঁসে যাইতি। আর এটা আমি কখনো চাইনা!
মশিউর : ফাঁসে গেলে যাইতাম। এটা তোকে চিন্তা করতে হবে না বুঝলি।
এখলাস : তোকে সুজা থাপ্পর মারছে তাই না। লাঠি,রোড,হকি স্টিক সব বাইরেই আছে। একেকটাকে মেডিকেলে না পাঠাইলে আমার নাম পাল্টায় রাখিস।
রিপন : আমার তো রক্ত গরম হয়ে যাচ্ছে। বেলালকে আসতে দে। কাটায় কাটায় হিসাব তুলবো।
মশিউর : আর অর্ণব তুইও হইস। কালকে আমাদের মধ্যে কি কথা হইছিলো? মারামারির জন্য আমাদেরকে তৈরী হইতে বলে একাই গেলি মাইর খাইতে? তোর কি মাথা খারাপ?
এই সময় বেলাল পানি নিয়ে আসলো। পানি খেয়ে,
অর্ণব : তোরা মাথা ঠান্ডা কর। ক্রোধ বা রাগ ভালো না।
#হাদিসে এসেছে,
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সালালাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে বললেন, আমাকে কিছু উপদেশ দিন। রাসূল সালালাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, রাগান্বিত হয়ো না। সে ব্যক্তি বারবার উপদেশ চাইলে রাসূল (একই উত্তর দিয়ে) তাকে বললেন, রাগান্বিত হয়ো না’।
-[বুখারী : ৫৬৫১]💕
এখলাস : তাহলে এখন কি করবো? তুই বল।
অর্ণব : দেখলি তো কি হলো। অনেক বড় ঝামেলায় ফাঁসে গেলাম। তারপর এখন আবার মারামারি করতে যায় আরো একটা ঝামেলা করবি?
মশিউর : তুই বলতে চাচ্ছিস এখন আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবো?
অর্ণব : এটা বিষয় পরে দেখা যাবে। আর এখন ওদের মাফ করে দে। এটা বিষয় নিয়ে পরে ভাবা যাবে। কেননা
#কুরআনে আল্লাহ বলেন,
“যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।”
-{সূরা আলে ইমরান, আয়াত :- ১৩৪}💕
বেলাল : অর্ণব ঠিক বলছে। এখন এগুলা বাদ দে। মেডাম কি বলেছে মনে নাই? হয় আমরা থাকব নাহলে সে থাকবে? এটা ভাববার বিষয়!
রিপন : মনে হয় ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দিতে পারে।
মশিউর : অর্ণবের বাবাতো কলেজের গভর্নিং কমিটির সদস্য। কিছু হবে না।
অর্ণব : আব্বু দুই মাস আগে বলছিলো যে এবারই শেষ। এর পর থেকে তার আর কোন সুপারিশ কাজে দিবে না।
রিপন : এটা তো সত্যি চিন্তার বিষয়।
বেলাল : তাহলে তুই কলেজে কাহিনী করলি কেন। বাইরে হইলে কেলায় রাখে দিতাম। কেউ কিছু বলতেও পারতো না।
অর্ণব : বাদ দে। আমাকে বেড় করে দিলে আমার কোন ক্ষতি হবে না এটা তোরা ভালো করেই জানিস। এখন চল বাইরে যাই।
(এর পিছনে কারন আছে। কারনটা এখন রহস্যই থাক😁)
মশিউর : হুম। চল। আজকে ক্লাশ করার দরকার নাই।
বাইরে বেড় হয়ে আমাদের আড্ডা দেওয়ার জায়গায় গেলাম। দেখলাম লাঠি,হকি স্টিক যা লাগে মারামারির জন্য সব রেডি করে রাখছে।
অর্ণব : বাব্বাহ তৈরী হয়ে আসছিলি!
মশিউর : তো! আমরা কি কাঁচা খেলোয়াড়। শুধু পৌছানোর আগেই ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে। নইলে একেকটার স্ট্যাম্প মানে হাড্ডি আস্তো থাকতো না।
অর্ণব : কি রে তোরা চাইনিজ কুড়াল কেন আনছিস?
রিপন : যদি লাগে।
অর্ণব : জেলে পাঠানোর ধান্ধা? তোদের যে মাথা গরম। আল্লাহ বাঁচাইছে।
(সবাই হেসে উঠলো)
অর্ণব : ধন্যবাদ তোদের। এতোটা সাপোর্ট করার জন্য।
মশিউর : নেগলা আমাদেরও বোনের মতো। তাই ধন্যবাদ দিতে হবে না। এখন বাড়ি চল সবাই।
অর্ণব : ওকে কালকে দেখা হবে। আসসালাম অলাইকুম।
বেলাল : অলাইকুম আসসালাম।
তারপর আমি,রিপন আর মশিউর মিলে বাড়ির দিকে হাটা দিলাম।
হঠাৎ মোবাইলে কল আসলো। দেখলাম কলটা আব্বুর। এতো তাড়াতাড়ি হেড স্যার আব্বুকে জানায় দিলো? আমি শেষ আজকে।
ভয়ে ভয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম…..
(চলবে….)
💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *