অপেক্ষার প্রহর 5,6,7

৫.
পরন্ত বিকেল,পার্কের একটা বেঞ্চে বসে কারো জন্য অপেক্ষা করছে নিশি।আর বার বার হাত ঘড়ি দেখছে,এমন পরিস্থিতে কখনও ওকে পরতে হয়নি কিন্তু আজ ঠিক এটাই হয়েছে।
“গ্রাম থেকে আসার পরে সব কিছুই ঠিক ঠাক চলতে লাগলো কিন্তু রাতুল নিশি কে প্রতিনিয়ত কল করতে লাগলো।নিশি ও কথা বলতো।তবে রাতুল চাইলেও নিশি অতিরিক্ত বলতো না।কাল হঠাৎ বায়না করে বসলো দেখা করবে।নিশির সাহস হলো না,অনেক বার না করে দিয়েছে কিন্তু রাতুল নাছোড় বান্দা,শেষমেষ রাজি হতে বাধ্য হলো নিশি।যার ফলে আজ রাতুল এর জন্য নিশি অপেক্ষা করছে।“
প্রায় আধঘন্টা পর রাতুল এসে পৌছালো।
—সরি সরি লেট হয়ে গেলো
“কথা গুলো শুনে নিশি সামনের দিকে তাকালো।রাতুল কে দেখে নিশির এক অজানা ভয় হতে লাগলো।কাউকে না জানিয়ে এখানে এসেছে।আর সামনে কি হবে সেটা নিয়ে টেনশনে আছে।”
—ইটস ওকে
—কেমন আছো তুমি?
—জ্বী ভালো আছি আপনি?
—ভালো আছি আর তুমি করেই বললাম তোমাকে ,তুমি আমার থেকে ছোটো ই হবে।
—ইটস ওকে।
—তারপর কি অবস্থা?
—এইতো ভালো,আপনি কি জন্য দেখা করতে বলছেন ?বলুন আমি বাসায় যাবো।
—তোমাকে ভিষণ দেখতে ইচ্ছে হয়েছে তাই
—কিন্তু আমাকে কেনো দেখতে ইচ্ছে হয়েছে আপনার?
—তুমি দেখছি কিছুই বুঝো না,
—না মানে কি বুঝার কথা বলছেন?
—মানুষের মনের ভাষা”
—আসলে বুঝিয়ে না বললে কেমনে বুঝি বলেন
—ওকে বুঝিয়ে বলছি ,আমি আবার ঘুরিয়ে পেচিয়ে নয় সরাসরি বলতে চাই” আমি তোমাকে ভালোবাসি”নিশি
কথাটা শুনেই নিশির হার্টবিট দ্বীগুন হারে বেড়ে গেছে।উওরে কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।
—কি হলো কিছু বলো ?প্রথম দেখাতেই তোমাকে আমার ভালো লেগেছে আর সেটা এতোদিনে ভালোলাগাটা ভালোবাসাতে রূপ নিয়েছে।আমি তোমাকে চাই ।
—কি বলছেন এ সব ?ভেবে বলছেন তো?
—হা সবকিছু ভেবেই বলছি।এখন তোমার মতামত জানতে চাই।
—আমারে সময় দিতে হবে ,ভেবে জানাবো ।
—ওকে তবে বেশি সময় নিতে পারবে না কারন আমি বেশি অপেক্ষা করতে পারবো না।তোমাকে আমি চাই নিশি।
কথা গুলো শুনে নিশি কিছু বলতে পারেনি শুধু কথা গুলো শুনে ওর কেমন কেমন লাগতে শুরু করলো।সত্যি রাতুল আমায় ভালোবাসে?
রাতুলের সম্পর্কে ও কিছুটা হলেও এতোদিনে জানতে পেরেছে,বিরাট ধনী পরিবারের ছেলে,লেখাপড়া শেষ করে বাবার বিজনেস দেখাশুনা করছে।আর দেখতেও সুদর্শন পুরুষ।
সেদিনের মতো নিশি বাসায় চলে আসলো।কথা গুলো ওর বেস্টু ফারিয়াকে জানালো কিন্তু ফারিয়ার এতোটা ভালো লাগেনি।
—তুই কি করবি ভেবেছিস কিছু?
—আসলে অমি আর কি বলবো সবদিক দিয়েই তো ভালো ,তাই ভাবছি হা করে দিবো।আমাকে নাকি অনেক ভালোবাসে।
—কিন্তু নিশি আর কয়দিন সময় নিলে ভালো হতো না?
—আসলে রাতুল অতো সময় অপেক্ষা করতে পারবে না।
—ঠিক আছে যেটা ভালো মনে করিস ।
বলে ফারিয়া চলে গেলো।নিশি মনে মনে ভাবছে রাতুলকে হা করে দিবে।
“কাব্যের পরিক্ষা চলছে তাই আপাততো পড়ালেখা ছাড়া মাথায় কিছুই নেই ।নিশির কথা মনে পরলেও কল করে কথা বলে না,এমনিতেই তো দেখা হলে কথা হয়।তবে আজকাল মেয়েটাকে কেমন অন্যরকম মনে হয় কাব্যের কাছে নিশিকে ।কাব্য এ বিষয়ে বেশি কিছু ভাবে না।যা বলার পরিক্ষাটা শেষ হোক তখনই বলবে।আর লুকিয়ে রাখবে না মনের কথাটা বলেই দিবে।“
দিন গুলো এ ভাবেই অতিবাহিতো হতে লাগলো।এর মধ্যে নিশি রাতুল কে হা বলে দিছে কিন্তু নিশির এক কথা এ ভাবে লুকিয়ে দেখা সাক্ষাত করে প্রেম করবে না ,এক কথায় বলতে গেলে রিলেশন নামক জিনিসটাতে ও জড়াতে চায় না,ওর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে একবারে বিয়ে করে নিতে হবে।রাতুল প্রথমে অমত করলেও পরে ওর কথাই মেনে নিয়েছে।
দেখতে দেখতে কাব্যের পরিক্ষা শেষ হলো।পরিক্ষা শেষ করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে,
—কিরে বন্ধু কি খবর?
—হুম ভালো
—তো ভাবির কি খবর?
—জানিনা
—এ কেমন কথা বলছিস
—হুম ঠিক বলছি ,অনেক দিন ভালো ভাবে দেখা ও হয় না কথাও হয় না।
—কি করবি ভেবেছিস কিছু?
—হুম ভেবে রেখেছি,মনের কথা তো বুঝে না এবার সরাসরি প্রপোজ করে বলে ফেলবো।কিন্তু সমস্যা একটা হয়ে গেছে রে।
—কি সমস্যা ?
—ঐ যে শুনছে আমার গালফ্রেন্ড আছে সেই থেকে ভালো করে কথা বলে না।
—এ ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা আছেনি খোঁজ লাগা
—নাহ আর কি সমস্যা থাকবে,আর ও কোনো ছেলের সাথে রিলেশনে যাবে এটা তো আমি ভাবতেই পারিনা তা ছাড়া এটা ওর দ্বারা সম্ভব ও না।
—না হলেই ভালো আর আমরা চাই শিগ্রই তোরা দুজন এক হয়ে যা।আর কতো অপেক্ষা করবি,মনের কথা আর লুকিয়ে রাখিস না দোস এতে তোরই কষ্ট হচ্ছে।
—হুম ঠিক বলছিস যে কোনো একদিন বলে বসবো।তো বাসায় যেতে হবে তোরাও চলে যা।
বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কাব্য বাসায় আসলো।বাসায় এসেই সোফার বসে পরলো।
—কিরে বাবা পরিক্ষা কেমন হলো?
—আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো মা।
—ভাইয়া এই নাও পানি
—বাপরে আজ সূর্য্য কোন দিক দিয়ে উঠছে মা।তোমার মেয়ে না চাইতেই পানি দিলো
—ভাইয়া এ সব কি বলছো,আমি কি তোমায় না চাইতে কিছু দেই না বলো?
—হা দিস তো ,তা কিছু লাগবে নাকি বল?
—নাহ কিছু লাগবে না।নিশ্চিন্তে থাকো আমি বোন হিসেবে নিঃস্বার্থ ভাবে তোমাকে পানি খাওয়ালাম।
—আল্লাহ ..আমাদের ছুটকি তো দেখছি বেশ বড়ো হয়ে গেছে ,ভালোই কথা শিখেছে।
—হুম দেখতে হবে না কার বোন
—হুম কাব্য চৌধুরির অন এন্ড অনলি বোন বলে কথা
বলে দু ভাই বোন হাসতে লাগলো।মা এসে বললো
—অনেক হয়েছে এবার গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে আয় ।
—ঠিক আছে মা।
কাব্য ওর রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে নিশিকে কল করলো।কিন্তু ফোন বিজি আবার ওয়েটিং পায়।রাগ হতে লাগলো মনে মনে কিন্তু আবার ভাবছে রাগ দেখাবো না মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।খেয়ে দেয়ে কাব্য নিশিদের বাসায় চলে যায়।খালামনির কাছ থেকে জানতে পারে নিশি রুমে আছে।কাব্য সোজা ওর রুমে চলে যায় গিয়ে দেখে নিশি রুমে নেই ওয়াশ রুমে।কাব্য বেডে ওপর চিত হয়ে শুয়ে পরলো।নিশি ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে প্রথমে কাব্য কে খেয়াল করতে পারেনি পরে দেখে হঠাৎ করে চমকে ওঠে।
—ভাইয়া তুমি?
—হা আমি কোনো ভূত নই যে ভাবে চিল্লানি দিলি
—কিন্তু তুমি আমার রুমে কি করো হা? আর এ ভাবে আসাটা কি ঠিক বলো?
—কেনো এটা নতুন কি আর এখন কি কোর পারমিশন নিয়ে আসবো ?
—না ঠিক আছে আর লাগবে না চলেই তো এসেছো।এর পর থেকে আসবে।
—হয়েছে আর জ্ঞান দিতে হবে না।শোন যে জন্য এসেছি তোর সাথে আমার জরুরী কথা আছে কাল বাইরে দেখা করে বলবো।
—কি এমন জরুরী কথা ?
—সেটা কালই শুনবি
—নাহ আজই বলো
—এতো জেদ ধরছিস কেনো?
তা হলে শোন গার্লফ্রেন্ড কে প্রপোজ করবো
—তা হলে আমাকে কি দরকার নিজে গিয়েই করে দিও
—তোকে সাক্ষি হিসেবে রাখবো বুঝতে পারছিস ?
—ঠিক আছে তবে আমিও তোমাকে কাল কিছু বলতে চাই কাব্য ভাইয়া
কাব্য তে মনে মনে খুশি নিশি কিছু বলবে তার মানে ও কি আমার মনের কথা বুঝতে পারছে?
—ঠিক আছে কাল দেখা হবে।
—আচ্ছা
কথা বলে কাব্য খুশি মনে চলে গেলো।নিশি মনে মনে ভাবতে লাগলো কাব্যকে রাতুলের কথা সব বলবে।তা হলে বাবা মা ওর বিষয়ে অমত করতে চাইলেও কাব্য ওদের বুঝাতে পারবে।
পরদিন বিকেলে কাব্যের বলা ঠিকানা অনুযায়ী নিশি চলে যায় একটা রেস্টুরেন্ট এর রুফ টপ এ ।জায়গা টা বেশ সাজানো আর টেবিল গুলো সব ফাকা ,মনে হচ্ছে কাব্য পুরোটাই একাই বুকিং দিছে।পাঁচ মিনিট বসে থাকার পরই কাব্য আসছে।আজ কাব্যে কে অন্যরকম লাগছে।ক্লিন সেভ ফরমাল ড্রেস কালো চশমা সব মিলিয়ে বেশ হ্যান্ডসাম লাগছে।নিশি এভাবে কোনো দিনও কাব্য কে মনোযোগ দিয়ে দেখেনি।
—কিরে কি দেখছিস এ ভাবে?
—না মানে কিছু দেখছি না।
—তা হলে আয় বস এখানে
—হুম তা বলো কি বলবে
—উহুম তার আগে আমি তোর কথা শুনতে চাই ,
—নাহ তোমারটা বলো তারপরে আমি বলবো
—কথা না বাড়িয়ে বলে ফেল তারপরে আমি বলবো ।
—আসলে ভাইয়া আই এম ইন লাভ
কথাটা শুনে কাব্য খুশি হলো,যাক তা হলে এর মনে প্রেম নামক জিনিস টা জেগেছে ।
—তা কে সে বলে ফেল
—তুমি চিনবে না,
—চিনবো নাহ কে সে নাম বল?
—ওর নাম রাতুল ওকে আমি পছন্দ করি কাব্য ভাইয়া
কথাটা শুনেই বসা থেকে কাব্য দাড়িয়ে পরলো।ভুল শুনলো নাকি সত্যি ,নাকি নিশি মজা করছে ওর সাথে।
—কিহ রাতুল নাম তার?
—হুম ও খুব ভালো ভাইয়া ,বাবা মা যদি মেনে না নেয় তুমি তাদের বুঝাবে ঠিক আছে।
—কি সব বলছিস ?তুই ঠিক আছিস নিশি?আর ওকে কি ভাবে চিনিস কতো দিন ধরে জানিস বল ।
নিশি সবটাই বললো কাব্যকে।কাব্যের আর কিছু বলার নেই ।নিশি বললো
—ভাইয়া তুমি কি বলবে বলো
কাব্য আর কি বলবে ওর তো কিছু বলার নেই যেটা ভাবেনি সেটাই হয়েছে ওর সাথে।ও অনুভূতি শূণ্য হয়ে গেছে।
—কি হলো বলো
—নাহ কিছু না তুই চলে যা আমার ভালো লাগছে না।
—কিন্তু না শুনেই চলে যাবো?আর তুমি না বললে তোমার গার্লফ্রেন্ড কে প্রপোজ করবে।কোথায় সে?
—হুম আমার কিছু বলার নেই,সব কথা আমি হারিয়ে ফেলেছি রে।মনের সব কথা গুলো উধাও হয়ে গেছে।কথা গুলো বলার জন্য জমানো কথা গুলে কে এতো দিন ধরে মনের মাধুরী মিশিয়ে রেখেছিলাম সে গুলো সব শেষ হয়ে গেছে।আর গার্লফ্রেন্ড সে আসবে না।
নিশি কিছু বুঝতে পারে না ।বুঝতে পারছে ওর মনে কিছু একটা হয়েছে কিন্তু কি সেটা।আর এখন শতো বার জিজ্ঞেস করলেও কাব্য কিছু বলবে না তাই নিশি চলে গেলো।
কাব্য কতোক্ষণ মূর্তির ন্যায় বসে থেকে পকেট থেকে একটা বক্স বের করে খুললো ।একটা হিরের আংটি।যেটা ও নিশির জন্য এনেছিলো প্রপোজ করার জন্য।কতোক্ষণ দেখে বক্স টা ফেলে দিতে গিয়েও কি একটা ভেবে পকেটে রেখে দিলো।
কাব্য মোবাইল বের করে কাউকে কল দিয়ে অনেকক্ষণ কথা বললো।এরপরে বের হয়ে গেলো ।
রাত হয়ে গেছে কাব্য বাসায় ফেরেনি।বাসা থেকে অনেকবার কল দিলেও কল ধরেনি কাব্য।অনেক দুচিন্তা করতে লাগলো।মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো
—রিয়া কাব্য কিছু বলে গেছে তোকে ,কোথায় গেলো ছেলেটা ফোনও ধরছে না।রাত হলো অনেক
—চিন্তা করো না মা চলে আসবে,শুভ কাজ করতে গেছে
—শুভ কাজ কি সেটা
—সেটা তোমার ছেলে আসলেই জানতে পারবে
—তুই বলবি আর এখনই
—আসলে মা তোমার ছেলে আজ নিশি আপুকে প্রপোজ করবে তাই গেছে
—বলিসকি সত্যি
—হা মা সত্যি
—কিন্তু ছেলেটা কই আছে ফোনটা তো ধরবে
—চিন্তা করো না তোমার বউমা তো সাথে আছে নাকি।
—কিন্তু আমার মনে হয় না এতো রাত অব্দি নিশি ওর সাথে আছে।
—তা হনে মা আমি যেয়ে দেখে আসি আর আপু বাসায় থাকলে তো শুনতে পারবো ভাইয়া কই
—ঠিক আছে গিয়ে খোঁজ নিয়ে আয়
রিয়া নিশিদের বাসায় গিয়ে দেখলো নিশি বাসায় আর কাব্যের কথা জিজ্ঞেস করলে বলে ওতো অনেক আগেই চলে আসছে আর কাব্যের কথা ও কিছুই জানে না আর ওর কথায় রিয়া এতোটুকু বুঝতে পারছে কাব্য ওর মনের কথা গুলো নিশিকে বলতে পারেনি।রিয়া আর কিছু জিজ্ঞেস করেনি বাসায় চলে আসলো।
—কিরে কি হলো
—মা নিশি আপু বাসায় আর ভাইয়া কই সে জানে না
—মানে কি বলছিস তা তুই কিছু জিজ্ঞেস করিসনি কি কথা হলো ওদের মাঝে?
—না মা তোমার ছেলের কাছ থেকেই সবটা জেনে নিও বলে রিয়া নিজের রুমে চলে গেলো।
অনেকক্ষণ পর কাব্যের মায়ের ফোনে একটা কল আসলে।রিসিভ করে ওপর পাশের কথা গুলো শুনে আন্জুমান বেগম চিৎকার করে দাঁড়ানো থেকে বসে পরলো।হাত থেকে মোবাইলটা ফ্লোরে পরে গেলো।রিয়া আর ওর বাবা চিৎকার শুনে ড্রইংরুমে এসে দেখে আন্জুমান বেগম হাউমাউ করে বাচ্চাদের মতো করে কাঁদছে।
অপেক্ষার_প্রহর
লেখনিতেঃ Borno
৬.
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে কাব্য।পাশেই মা বাবা বোন বসে আছে।কাব্যের বন্ধুরাও পাশে দাড়িয়ে আছে।কারোর মুখে কোনো কথা নেই শুধু কাব্যের মা ছেলের হাত ধরে কান্না করছে।
—আন্টি আপনি কাঁদবেন না ওর কিছু হয়নি ।
—কি থেকে কি হয়ে গেলো ছেলেটার।
—আহা কাব্যের মা তুমি অস্থির হইয়ো না ডক্টর তো বললো ও সম্পূর্ন ঠিক আছে ।শুধু জ্ঞান ফিরতে দেরি হবে।
—মায়ের মন কি বুঝবে তুমি।
বলেই আবার কাঁদতে লাগলো।
“নিশি চলে যাবার পর কাব্য আর নিজের ভিতর ছিলো না।কি থেকে কি হয়ে গেলো ,ভেবে পাচ্ছিলো না কি করবে।যাকে জ্ঞান হওয়ার পর থেকে ভালোবেসেছে সে কিনা এ ভাবে আরেকজন কে পছন্দ করে সেটা বলে গেলো?একটা বার ওর মনের কথাটা বুঝলো না?এ সব ভেবে নিজের প্রতি রাগ হতে লাগলো।আগে কেনো মনের কথাটা বললো না।তা হলে তো ভালোবাসার মানুষটিকে হারাতে হতো না।কাব্য আর কিছু ভাবতে পারলো না সেখান থেকে সোজা চলে গেলো একটা বারে।সেখানে গিয়ে দেখলো সবাই যে যার মতো নে/শা করছে,কাব্য ওয়েটার কে দিয়ে ম/দ আনিয়ে নে/শা করতে লাগলো।যে ছেলে কিনা সামান্য সিগা/রেট খায় না আজ সে এই নে/শায় ডুব দিয়েছে শুধু মাএ ঐ চেহারাটা ভোলার জন্য,ওর অস্তিত্বকে মুছে দেবার জন্য।কতো খেয়েছে কাব্যের কোনো হুস নেই,রাত অনেক হয়েছে কিন্তু ওর বাড়ি যাবার নাম নেই বলতে গেলে ওর কোনো হুস নেই।একসময় টেবিলে মাথা নিচু করে বসে থাকতে দেখে ওয়েটার কাছে গেয়ে ডাকতে লাগলো কিন্তু কোনো সারা পেলো না,পাশে থাকা ফোনটা নিয়ে লাস্ট কল চেক করে ওয়েটার ছেলেটা যে নম্বর টা পেলো ওটাতেই কল করলো।আর নম্বর টা ছিলো কাব্যের বন্ধু ফাহিম এর।ফাহিম সবটা শুনে ওর বাকি বন্ধুদের নিয়ে ওখানে গিয়ে কাব্যের অবস্থা দেখে সাথে সাথে পাশের একটা হাসপাতালে নিয়ে যায় আর ওরাই কাব্যের মাকে ফোন করে আসতে বলে।”
রাতে কাব্যের কাছে ওর মা আর বন্ধুরা ছিলো,বোন কে নিয়ে বাবা বাসায় চলে গিয়েছে।রাতে আর কাব্যের জ্ঞান ফেরেনি,সকাল বেলায় কাব্যের জ্ঞান ফিরলে সবাই কে দেখে অবাক হয়ে যায়।মাথায় হাত দিয়ে আহ বলে শব্দ করে উঠলো।
—কি হয়েছে আমার? আমি এখানে কেনো? আর তোমরা সবাই এখানে কেনো?
তখন ফাহিম বলে উঠল
—কিছু হয়নি তোর ঘুমাচ্ছিলি তো ঘুম ভাঙাতে পারিনি তাই ঘুম ভাঙানোর জন্য নিয়ে এসেছি।
কথাটা শুনে কাব্য বুঝলো এটা ইয়ার্কি মূলক কথা নয় রেগে আছে আর রেগেই কথা গুলো বলেছে।একটু চুপ থেকে গতো রাতের কথা চিন্তা করে সবটা মনে করতে লাগলো।কিন্তু কিছু বললো না।
পাশ থেকে মা বললো
—কি এমন হইছে বল বাবা যে এমন একটা কাজ করলি?
কাব্য কোনো কথা বলছে না,ওই মুহূর্তে নিশিদের বাসার সবাই কাব্যের কেবিনে ডুকছে।কাব্য নিশিকে দেখে অন্যদিকে চেয়ে পরল।আর বললো
—মা আমার এখানে ভালো লাগছে না বাসায় নিয়ে চলো।
নিশির মা পাশে এসে বললো
—কিরে কাব্য কি হয়েছে তোর বল?এমন একটা কাজ কেনো করলি ?খালামনিকে বলবি না?
—তেমন কিছু না খালামনি ঠিক আছি আমি।
প্রথমে কাব্যের বিষয়ে নিশিদের বাসায় কিছু জানানো হয়নি সকালে কাব্যের বাবা ওদের বাসায় গিয়ে বলতেই সবাই হাসপাতাল চলে আসছে।”
নিশি কিছু বলছে না শুধু ভাবছে কি হলো কাল তো ভালোই ছিলো তা হলে কি কারনে এমন একটা কাজ করলো।কাব্যকে নিয়ে সবাই বাসায় আসলো।কাব্য বাসায় আসার পর একটু সুস্থ্য হবার পর মা পাশে গিয়ে কাব্যকে জিজ্ঞেস করে
—কাব্য সত্যি করে বল তো তোর কি হয়েছে? আর রিয়ার কাছ থেকে শুনছি তুই নাকি নিশি কে সবটা বলার জন্য গিয়েছিলি তা হলে কি এমন হইছে যে এমনটা করলি।
কাব্য প্রথমে কিছু না বললেও পরে সবটা মাকে বলে দেয় ।সব কথা শুনে কাব্যের মার বিশ্বাস হচ্ছিলো না কিন্তু ছেলের এই অবস্থা দেখে বিশ্বাস না করে উপায় নেই।কি বলে সান্তনা দিবে তার ভাষা নেই।
—এ জন্যই তোর বাবা সব সময় চাইতো ওদের জানিয়ে কিছু একটা করে রাখি ,কিন্তু নাহ তোর জন্য সেটা পারিনি।এখন দেখ কি হয়ে গেলো।
—মা এসব কথা তুমি নিশিকে জিজ্ঞেস করবে না।ও যেমন আর যা চায় সেটাই যেনো পায় ।জোর করে কিছু না করাই ভালো।আর ওর মনে তো আমার জন্য কোনো ফিলিংস নেই শুধু কাজিনই ভেবে গেলো,ও শুধু আমার ওকে জ্বালানোটাই দেখলো কিন্তু ওকে যে এই মন কতো ভালোবাসে সেটা ও বুঝতে পারলো না।
—ঠিক আছে তুই যেমনটা চাস কিন্তু আর কোনো পাগলামি করতে পারবি না আমি চাই না আমার ছেলের সুন্দর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাক।
—হুম ঠিক আছে।
সে দিনের পর থেকে কাব্য কেমন চুপচাপ হয়ে গেছে ।বন্ধুদের সাথেও আড্ডা দেয় না।বাইরে ও তেমন যায় না,সারাক্ষণ রুমেই শুয়ে বসে কাটায় আর ছেলের এমন অবস্থা দেখে মা বাবার মন ও খারাপ থাকে কিন্তু কিছু বলে না।তবে তারা ছেলের সাথে স্বাভাবিক আচরন করে যাতে করে কাব্যও স্বাভাবিক থাকতে পারে।
এদিকে নিশি বেশ আছে কাব্যের কথা তেমন একটা ভাবে না।কাব্যের সামনে পরলে নিশি কথা বলতে চাইলেও কাব্য বলে না। তাই নিশি ও এ সব নিয়ে বেশি কিছু ভাবে না।নিশি ভার্সিটি শেষ করে প্রায়ই রাতুল এর সাথে দেখা করে।নিশি রাতুল কে বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দিতে বলে কিন্তু রাতুল শুধু সময় চায়,মাঝে মাঝে নিশি রাতুলের কথা শুনে মন খারাপ করে আর ভাবে কেনো এমন করে সত্যিই কি রাতুল আমায় ভালোবাসে নাকি ভালোবাসেনা?
দেখতে দেখতে কেটে গেলো কয়েক টা দিন কাব্যে অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।তবে চাইলেও মন থেকে নিশি নামক কথা টা মুছতে পারছে না।এটা মাঝে মাঝে কাব্যের কাছে বিষাক্ত মনে হয় ।সত্যি ভালোবাসা মানুষকে সুখের চাইতে কষ্ট টাই বেশি দেয়।আর এক পাক্ষিক ভালেবাসাটা যন্তনাদায়ক বেশি।
এরই মধ্যে কাব্যের রেজাল্ট দিয়েছে,ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হয়েছে কাব্য,সবাই খুব খুশি শুনে।তবে রেজাল্ট পাওয়ার পরই কাব্য মনে মনে কিছু একটা ভেবে রেখেছে আর বাবা মাকে সেটা জানাতে হবে।
রাতে সবাই একসাথে খাবার খেতে বসেছে।খাওয়ার এক মুহূর্তে কাব্য বললো
—বাবা মা আমি কিছু বলতে চাই
—বলে ফেলো এতে জিজ্ঞেস করার কি আছে
—আমি এমবিএ করতে বিদেশ যেতে চাই
কথাটা শুনে কাব্যের বাবা খাওয়া বাদ দিয়ে ছেলের দিকে চেয়ে রইলো
—কি হলো বাবা কিছু বলছো না যে?
ছেলের কথা শুনে হুসে এলো বাবা
—বুঝে শুনে বলছো তো
—হা বাবা এটাই শেষ সিদ্বান্ত আর তোমার ও তো অনেক ইচ্ছা ছিলো
—হা তা ছিলো কিন্তু তোমার কথার বিপরীতে কিন্তু আমি না বলে সায় দিয়েছিলাম।
—হুম বাবা সেটা ও আমি জানি
—ঠিক আছে এখন যেহেতু যেতে চাও এবার ও আমার দ্বিমত নেই।আমি জানি যা করবে ভেবে চিন্তে আর তোমার ওপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে।
—আমি জানতাম বাবা তুমি অমত করবে না।
আন্জুমান বেগম পাশে বসে বাবা ছেলের কথা শুনছে আর চোখের পানি ফেলছে ,সে ভালো করেই জানে ছেলে কেনো দেশ ছেরে বিদেশ পাড়ি দিতে চাচ্ছে।কিন্তু কিছু বলছে না,ছেলেটার মনে এমনিতেই কাল বৈশাখীর তান্ডব চলছে,ওর যেটা মন চাইছে করুক সময়ের সাথে ঠিক একদিন এই ঝড় থামবেই এটা মায়ের বিশ্বাস ।
আজ অনেক দিন পর কাব্য বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।সবাই একসাথে হয়েছে।তবে আজ বন্ধুদের জোড়াজুড়িতে নয় নিজ থেকেই কাব্য সবাই কে ফোন করে একসাথে হয়েছে।তখন রিয়াদ বললো
—কাব্য এখন কেমন আছিস দোস?
—এইতো ভালো রে
—হুম ভালো কিনা সেটা তো চেহারা দেখেই বুঝতে পারছি
ফাহিম পাশ থেকে বলে উঠল
—আহ রিয়াদ এ সব কথা রাখ আড্ডা দিতে আসছি এমন কিছু বলিস না যে ওর মন খারাপ হয়ে যায়।
তখন কাব্য বলে উঠলো
—যার মন বলে কিছু নেই তার আবার মন খারাপ হবে কেনো রে
আরেক বন্ধু সাফিন বলে উঠলো
—বন্ধু হতাশ হবি না তোর সবই ঠিক আছে কিন্তু সঠিক মানুষটিকে যে চিনতে পারেনি তারই মন বলে কিছু নেই ।
এমন সময় একটা ছেলে এসে ফাহিম কে ডাক দিলো
—কিরে কি খবর
—ভাই সব খবর পাইছি
—কি খবর বল?
—ভাই এই ছেলেটা আর কেউ নয় এই সেই যাকে কাব্য ভাই আর আপনারা মিলে সায়েস্তা করেছিলেন।
—কি বলছিস?
—হা ভাই ঠিক বলছি এক বর্ণ ও মিথ্যা নয়
—তা হলে তো এটা পুরোটাই প্লান করে করা,ঠিক আছে তুই যা।
—আচ্ছা ভাই দরকার পরলে আবার ডাক দিয়েন ।বলে চলে গেলো।
কাব্য ফাহিমের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো
—কিরে ও কি বললো?
—কাব্য নিশি ভাবি যার কথা বলছে সে আর কেউ না সে ঐ রাতুল যাকে নিশি ভাবির হাত স্পর্শ করাতে শায়েস্তা করেছিলাম।
—ওহ
—শুধু ওহ বলে থেমে গেলি কিছু করবি না?
—নাহ আর তোরাও কিছু করবি না।এটা আমার রিকুয়েস্ট।ওর লাইফের ডিসিশান ও যখন নিয়েছে ওর সব কিছু ওই সামলাবে আমি কেনো ওর জীবনে ইন্টারফেয়ার করবো।
—তাই বলে ও রকম একটা খারাপ মানুষের পাল্লায় পরেছে ভাবি আর তুই জেনে শুনে ছেরে দিবি?
—কে খারাপ কে ভালো আমার জেনে লাভ নেই।যার যার জীবন নিয়ে সে সে ভালো থাক।আর আমি কিছু দিন আছি তাই কোনো ঝামেলায় পরতে চাই না।
—ঠিক আছে যা ভালো মনে করিস।
সবাই অনেকক্ষণ আড্ডা দিয়ে যে যার বাসায় চলে গেলো।
নিশি এই নিশি ,মায়ের ডাকে সারা দিলো নিশি
—জ্বী মা ডাকছো?
—হুম শুনছিস কিছু?
—কি মা ?
—কাব্য তো বিদেশ চলে যাচ্ছে
—কিহ বিদেশ
—হা পড়ালেখা করতে কিন্তু ছেলেটার হয়েছে কি বুঝলাম না যে কিনা বিদেশের কথা ঘুনাক্ষরে শুনতে পারতো না সে কিনা চলে যাচ্ছে বিদেশ।
—মা উচ্চশিক্ষার জন্য যাচ্ছে এটা কো ভালো কথা মন খারাপ করছো কেনো?
—আসলে ও তো আমার বেনের ছেলেই না নিজের ছেলের মতো ভালোবাসি তাই মন খারাপ হচ্ছে॥
—হুম আমি তো সেটা ভুলেই গেছিলাম কাব্য ভাই তো তোমার জানের জান কলিজা
—হুম ঠিক বলছিস,
—মা সে যদি সবটা হয় ভেবে দেখো আমার জন্য তোমার মনে জায়গা কি আছে বলো?
—এ ভাবে বলছিস কেনো ? তুই তো আমার আরেকটা কলিজা।
—মা কলিজা একটাই থাকে
—হইছে বাদ দে তো এই খো/চা মা/রা কথা তোর জীবনেও যাবে না
—হুম সত্যি বললেই খারাপ লাগে।যাই হোক আমি একটু কাব্য ভাইয়াদের বাসায় গিয়ে শুনে আসি।
—ঠিক আছে যা।
কাব্যদের বাসার কলিং বেল চাপতেই রিয়া দরজা খুলে নিশি কে দেখে তেমন একটা খুশি হয়নি।তবুও মুখে জোড় পূর্বক হাসি দিয়ে কথা বললো
—আরে আপু তুমি আসো ভিতরে আসো
—হুম খালামনি কই রে?
—আছে ভেতরে বলে নিজের রুমে চলে গেলো।
নিশির কাছে রিয়ার আচরন টা আজ অন্য দিনের চাইতে অন্যরকম লাগলো কিন্তু কিছু বললো না।খালামনি বলে ডাকতে ডাকতে কাব্যের মায়ের কাছে গেলো।কাব্যের মা রান্নাঘরে রান্না করছিলো।
—কিরে কেমন আছিস?
—এইতো ভালো আছি
—আজকাল তো তোর দেখাই পাই না খালামনির বাসায় আসাতো ভুলেই গেছিস
—আসলে সে রকম কিছু না একটু পড়ালেখা নিয়ে ব্যাস্ত আছি তো।
—হুম বুঝতে পারছি এখন অনেক ব্যাস্ত তুই
—খালামনি শুনলাম ভাইয়া বিদেশ চলে যাচ্ছে?
—হা
—ভাইয়া কই আছে?
—ও বাসায় নেই বাইরে গেছে একটু দরকারী কাজে।
—ওর খালামনি আমি একটু রিয়ার কাছে যাচ্ছি
—আচ্ছা যা
নিশি রিয়ার রুমে যেতে চেয়েও কি একটা মনে করে কাব্যের রুমে ডুকলো।কাব্যের রুমটা বেশ সুন্দর করে সাজানো,অনেক দিন আসা হয়না নিশির,অবশ্য আগে আসলেও কাব্যের কোনো জিনিসের ওপর হাত দিকে দিতো না নিশিকে।এটা নিশির আত্মসম্মানে লাগতো,কেনো ধরতে দেয় না,আজ পুরো রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখছে,হঠাৎ টেবিলের এক কর্নারে একটা ডায়েরি দেখে চোখ থেমে গেলো।মনে হচ্ছে বেশ পুরোনো এটা ।নিশির কৌতুহল হলো এটার প্রতি তাই নিশি যখন ওটা ধরতে যাবে ঠিক তখনই কেউ পাশ থেকে বলে উঠলো
—স্টপ,ডোন্ট টাচ মাই থিংস,
নিশি থমকে গেলো ,পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে কাব্য আর রাগে ওর চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।
নিশি ভাবছে সামান্য পুরান ডায়েরি আর সেটার জন্য এমন রিয়েক্ট করছে?
নিশি ওখান থেকে সরে আসলো
—আসলে আমি একটু দেখতে চেয়েছিলাম
—থাম প্লিজ আমার কোনো জিনিসে আমি কাউকে হাত দিতে দেই না সেটা তুই ভালো করেই জানিস।
নিশি কিছু বলছে না শুধু কাব্যের রাগটাই বোঝার চেষ্টা করছে।
—আর কারো রুমে এ ভাবে আসা ঠিক না পারমিশন নিয়ে আসতে হয় জানিস না?
—সরি মনে ছিলো না
বলে রুম থেকে নিশি চলে গেলো।
কাব্য সাথে সাথে বেডে বসে পরলো,নিজের চুল গুলো দু হাত দিয়ে উল্টাতে লাগলো আর বলতে লাগলো
—কেনো বার বার না চাইতেও সামনে আসিস বল? তোর জন্যই আমি দূরে যাচ্ছি,তবে কেনো সামনে এসে মনের জ্বালা বাড়াস,জানিস নাহ তোকে দেখলে আমি দূর্বল হয়ে যাই।কিন্তু নাহ আর নাহ তোকে আমার ভুলতেই হবে।বলে চোখ বন্ধ করে নিলো,আর অপর দিকে চোখের অবাধ্য নোনা জল গুলো টপ টপ করে পরতে থাকলো।”
carnation academy
carnation academy
অপেক্ষার_প্রহর
লেখনিতেঃ Borno
৭.
সময় নদীর স্রোতের মতো বহমান,কারো জন্যই অপেক্ষা করে না।কাব্য লন্ডনে চলে এসেছে প্রায় এক মাস হয়ে গেলো।এখানের নাম করা ভার্সিটিতে এডমিট হয়েছে।প্রথমে বেশ মন খারাপ লাগতো বিশেষ করে বাসার সবার জন্য ভেবে।
মা বাবা সবসময়ই ওকে বুঝিয়েছে যাতে মন খারাপ না হয়।বোনটাও ছোটো হলে কি হবে সে ভাইকে সে বড় বোনের মতো বুঝিয়েছে ,ওর এ বুঝানো টা কাব্যের বেশ লাগতো।
সেদিনের পুঁচকে ছুটকিটা বেশ বড়ো হয়ে গেছে।এই বয়সে কেমন একটা মেচুরিটি ভাব এসেছে ওর মধ্যে।আর ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসাটা থাকবেই বা না কেনো একটা ভাই বলে কথা আর ভাই যে মনে মনে অনেক কষ্ট পেয়েছে আর সেটার শোক যে এখন ও কাটাতে পারেনি বোন সেটা খুব ভালো করেই জানে তাই তো ভাই কে সব সময় হাসি খুশির রাখতে চেষ্টা করে।
লন্ডনে এসে হাজারো অপরিচিতো মানুষের ভিড়ে পেয়েছে ভাইয়ের মতো একজন কে।ওরই ইয়ারমেট,তবে এখন ওর সাথে বন্ধুত্বটা বেশ জমে উঠেছে।বিদেশের বাড়ি দেশি কাউকে পেলে মনের মাঝে একটা অন্যরকম শক্তি কাজ করে।আর কাব্যের এই বন্ধুর নাম হলো রনি।তবে ও পাঁচ বছর ধরে আছে তাই এখানকার অনেক কিছুই রনির চেনাজানা।কাব্য কে রনি অনেক কাজে সাহায্য করেছে আর এখন তো নিজের রুমে ওকে রেখেছে, ওরা দুজন এক সাথেই থাকে।আর একই ভার্সিটির হওয়ায় বেশ সুবিধাও হয়েছে, এক সাথে যায় আসে।
রনির ফ্যামিলির সবাই বাংলাদেশ থাকে,কাব্যের সাথে ভিডিও কলে সবাই পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।কাব্য ও প্রথমে রনি কে মা বাবা আর রিয়ার ছবি দেখিয়েছে পরে এখন প্রায়ই ভিডিও কলে ও কথা বলিয়ে দেয়।রনি বেশ মিশে গেছে সবার সাথে শুধু তাই না রনি তো রিয়ার ছবি দেখেই ক্রাশ খেয়েছে যদিও মেয়েটা এখন ও ছোটো তবে তাতে ওর কোনো সমস্যা নেই এস এস সি দিবে সামনে কলেজে উঠলে তো আরো বড়ো হয়ে যাবে।কিন্তু রনির এই পছন্দের ব্যাপারটা কাব্য এখন ও জানে না।রনির যখন মন চায় মাঝে মাঝেই নিজ থেকে কল করে কথা বলে কাব্যের মা বাবার সাথে আর সে সুবাদে রিয়াকেও এক নজর দেখে নেয় তবে সব সময় রিয়ার দেখা পায় না তখন ওর মন খারাপ থাকে।
কাব্যের মা এখন অনেকটাই চিন্তা মুক্ত ছেলেকে নিয়ে।ছেলের মতো আরেক ছেলেকে পেয়ে।
আজ অফ ডে কাব্য আর রনি অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়েছে।আরো ঘুমাতো কিন্তু ফোনের রিং টোনে ঘুম টা ভেঙে গেলো।মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে মায়ের কল রিসিভ করলো
—হ্যালো মা
—মা নয় ভাইয়া আমি এখন ও ওঠোনি?
—নাহ ঘুমাচ্ছি অফ ডে তো
—ওহ ভাইয়া সরি সরি ঘুমটা ভেঙে দিলাম
—না ঠিক আছে বল ,বাবা মা কি করে?
—এই তো রুমেই আছে
—রনি ভাইয়া কেমন আছে ?
—হুম ভালো
বলেই ব্যাক ক্যামেরা দিয়ে রনিকে দেখাচ্ছিলো কিন্তু রনি খালি গায় আর হাফপ্যান্ট পরা ছিলো ,ওকে দেখাচ্ছে টের পেতেই পাশে রাখা কম্বলে নিজেকে ঢেকে দিলো।এসব দেখে অপর পাশ থেকে রিয়াও লজ্জা পেলো।আসলে রিয়াও রনিকে কয়েক বার দেখেছে আর দু এক বার ভাইয়ের রিকুয়েস্ট এ কথা বলে মনের অজান্তে রিয়ার রনিকে ভালো লেগেছে ।ভাই বোন কথা বলে ফোন রাখতেই রনি কাব্যের পাশে এসে বললো
—শা/লা সরি সরি শা/লা বলছি কেনো সমন্ধি হবি তো ,তা এমনি কেনো দেখালি ?দেখাবিই যখন আগে থেকে বলতি সেজে গুঁজে দেখাতাম তোর বোনকে।
—ইশ শখ কতো আমার বোন কে বিয়ে দিবো না ও এখন ও ছোটো।
—তো কি হইছে বড়ো হওয়া পর্যন্ত ইন্তেজার করবো
—তখন দেখা যাবে এখন উঠে পর বাইরে যেতে হবে বাজার করতে
—ওকে মাই ডিয়ার সমন্ধি
রনির কথা গুলো কাব্য ইয়ার্কি হিসেবেই নেয় তাই তেমন কোনো রিয়েক্ট করে না।দুজনে উঠে ফ্রেশ হতে গেলো
~~~~~~
নিশির ফাস্ট ইয়ার শেষ হয়ে সেকেন্ড ইয়ার এর ক্লাস চলছে,নিশির মনে এখন আর আগের মতো আনন্দ উল্লাস নেই সবসময় রাতুলের চিন্তায় বিভোর থাকে।রিলেশন কি এমনই হয়,ওর বেস্টুরা যেমন আছে তাদের বয় ফ্রেন্ডদের নিয়ে বিশেষ করে তাদের রিলেশন এর বন্ডিং টা ,তেমনি ভাবে ওর আর রাতুলের সম্পর্কটা অতোটা ভালো নেই।রাতুল শুধু চায় ওকে নিয়ে এখানে সেখানে বিশেষ করে দূরে যেতে কিন্তু নিশি না করে দিলে রাতুল অনেক কথা শুনায় যা নিশির ভালো লাগে না।
নিশি রাতুল কে নিশিদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দিতে বলছে,যদিও রাতুল শিওর ভাবে কিছু বলেনি কিন্তু নিশির বিশ্বাস আজ না হোক কাল তো দিবেই,তবে সেটা দেওয়ার আগে নিশি ওর সম্পর্কে বাসায় জানাবে না হলে পরে এ নিয়ে বাবা মা কষ্ট পেতে পারে।আর বিয়েটা হয়ে গেলে রাতুল এমনটা আর করবে না এটাও ওর বিশ্বাস।ভার্সিটি শেষ করে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে মা বাবার রুমে গেলো ।মেয়েকে দেখে মা বললো
—আয় মা কাছে আয়
নিশি পাশে গিয়ে বসলো কিন্তু কেমন একটা জড়তা কাজ করছে কিভাবে বলবে কি ভাবে শুরু করবে
—কিছু বলবি মা?
—মা বাবা আমি কিছু বলতে চাই
নিশির মা বললো
—বল কি বলবি?
—মা আমি একজন কে পছন্দ করি
কথাটা শুনে নিশির মা খুশি হলো
—আমি তো জানি
—মা তুমি জানো ?
—হা
—কিন্তু কে সে সেটা জানো?
—না জানার কি আছে
নিশি মায়ের মুখে এমন কথা শুনে অবাক ভাবছে মা জানলো কিভাবে?
পাশ থেকে বাবা বলে উঠলো কে সে মা বল আর ওরা কি বড়োলোক অনেক টাকা আছে ওদের?
—বাবা ওর নাম রাতুল অনেক ধনি পরিবারের আর শিক্ষিত।
মেয়ের মুখে এমন কথাটা শুনেই নিশির মা বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো।তার মানে সে যা ভাবছে সবটাই ভুল অন্য কাউকে পছন্দ করে?
চিৎকার করে বলে উঠল
—অসম্ভব এ সম্পর্ক আমি মানবো না।
—কিন্তু কেনো মা?
—তুমি কি ঐ ছেলের সব কিছু জেনেছো?সে কেমন তার চরিএ কেমন ?
—হুম জানি মা ও খুব ভালো ছেলে ।
—তবুও আমি সব জেনে খোঁজ নিয়ে তার পর কিছু একটা ভাববো ।
নিশির বাবা পাশ থেকে বললো
—তুমি মানো আর না মানো আমি মানবো ছেলের অনেক টাকা আছে ধনির ছেলে।মারে তুই ওদের আসতে বলবি।
—ছি ছি তোমার লজ্জা নেই নিশির বাবা এই বয়সের লোভ টাকে সামলাতে পারলে না।
—আরে লোভ বলছো কেনো টাকা পাতলা ছাড়া মূল্য আছে নাকি বলো?
—যাই বলো না কেনো আর শুনে রাখো টাকা পয়সা থাকলেই হয়না মানুষটা কেমন সেটা আগে দেখতে হবে ।
এই বলে আইরিন বেগম মুখ ঘুরিয়ে বসে রইলেন।নিশি বুঝতে পারছে মা এস শুনে খুশি না।বাবা বেশ খুশি এটা বুঝতে পারলো।দির্ঘশ্বাস ছেরে উঠে মায়ের রুম থেকে নিজের রুমে চলে আসলো।
নিশির মনটা ভালো নেই,ভেবেছিল মা খুশি হবে সেটা হলো কিন্তু মা প্রথমে কার কথা ভাবছিলো যে আমি তাকে পছন্দ করি কে সে?সব কিছু কেমন ঘোলাটে লাগছে ,নিশি রিলেশনে জড়াতে চায় নি ওর জীবনে একমাএ কাব্যই ছিলো যার সাথে সবসময় খুনসুটি হলেও আবার পরক্ষণে ভালো সম্পর্ক হয়ে যেতো।নিশির ছেলে বন্ধু ছিলো না শুধুমাত্র কাব্যই ছিলো যার সাথে কথা বলতো মন খুলে,তবে কাব্যের একপাক্ষিক ভালোবাসাটা নিশি কখনও বুঝতে পারেনি।আজ নিশির কাব্যের কথা খুব করে মনে পরলো।দুজনের মধ্যে বেশ ঝগড়া হতো আবার কাব্যই সব মিটমাট করে ফেলতো শুধু তাই না কাব্যের নিশির প্রতি ছিলো অনেক কেয়ার সেটাও নিশি বুঝতে পারেনি।এখন হঠাৎ করে পেছনের কথা গুলো মনে পরে ওর চারদিক টা খুব করে বিষন্ন লাগছে।জীবনে কি থেকে কি হয়ে গেলো।আর সামনেই বা কি হবে সেটা ভেবে চোখের পানি ছলছল করতে লাগলো।
“আজ রিয়ার স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠান ,তাই ওরা সব মেয়েরা ঠিক করেছে সবাই একই রংয়ের শাড়ি পরবে।রিয়া আগে থেকেই শাড়ি কিনে রেখেছে , সকাল থেকেই সাজগোজ এর প্রস্তুতি নিচ্ছে কিন্তু শাড়ি পরতে পারে না।তাই মাকে বলে রেখেছে ।সময়মতো সাজ শেষ করে মাকে দিয়ে শাড়িটা পরে নিয়েছে ,আজ একা স্কুলে যাবে না তাই ওর বান্ধবী পিয়াকে বলছে আসতে আর পিয়া বাসা থেকেই সেজে ওদের বাসায় এসেছে।শাড়ি পরানোর সময় রিয়াদের ফোনে কয়েক বার কল আসছে কিন্তু রিসিভ করতে পারেনি তাই সাজ শেষ করে রিয়ার মা রিয়াকে বললো
—দেখতো মা কে কল করলো
ফোন চেক করে দেখে কাব্যের কল
—মা ভাইয়ার কল
—ব্যাক কর তো
—ঠিক আছে
রিয়া কাব্যকে কল করলো কিন্তু একবার রিং হয়ে কেটে গেলে আবার কল করলো,অপর দিকে কাব্য ফোন রেখে ওয়াশ রুমে ছিলো তাই রনি ওর ফোনে দ্বিতীয় বার রিং আসায় নিজেই রিসিভ করলো।কিন্তু রিয়ার তো সেটা অজানা ছিলো,রনি কল রিসিভ করেই রিয়াকে দেখে টাস্কি খেলো,রিয়াও এমনটা হবে ভাবতে পারেনি ,সালাম দিয়ে কথা বলতে লাগলো।
—ভালো আছেন ভাইয়া
—জ্বী খুব ভালো আছি,তোমাকে দারুন লাগছে শাড়িতে রিয়া
কথাটা মুখ ফসকে বের হয়ে গেলে রনি পরক্ষনে ভাবলো কি বললো তখনই কাব্য আসলে সাথে সাথে কাব্য কে ফোনটা দিয়ে রনি বেলকনিতে চলে গেলো।
—কিরে ছুটকি কেমন আছিস ?
—এইতো ভাইয়া ভালো আছি
—তা এতো আটা ময়দা মেয়ে কই যাচ্ছিস,আবার শাড়ির পরছিস ব্যাপার কি?
—ভাইয়া এগুলো আটা ময়দা না এগুলো মেকাপ কেনো শুধু শুধু মেকাপের অপমান করো বুঝিনা
—ঠিক আছে বুঝলাম আর বলবো না
—আজ আমাদের ফেয়ার ওয়েল তাই সাজুগুজু করেছি
—ওহ তাই,তবে তোকে কিন্তু বড়ো বোন বোন লাগছে,আমার ছোটো পুচকি টা বড়ো হয়ে গেছে
—ভাইয়া কি যে বলো না,এই নাও মায়ের সাথে কথা বলো আমি গেলাম
বলে মায়ের কাছে ফোন দিয়ে ওরা দু জন স্কুলের উদ্দেশ্যে চলে গেলো।
—কেমন আছিস বাবা
—এই তো মা ভালো
—রনি কেমন আছে?
—ওতো সব সময় ভালো থাকে।বাবার শরির কেমন আছে
—ভালোই কিন্তু তোর চিন্তা করে সারাক্ষণ
—চিন্তা করতে না করো আর এখন রাখছি আমার ক্লাস আছে বের হবো এখন
—আচ্ছা ঠিক আছে।
“আজ কো রনি শেষ,এ কাকে দেখলো কেমন যেনো ছোট্ট পরি একটা ,দেখার পর থেকেই বুকের বা পাশে কেমন করতে লাগলো হাত দিয়ে চেপে রাখলো।তা ও কমছে না হার্টে যেনো হাতুরি পেটার মতো শব্দ হচ্ছে।এতো বছরেও একটা প্রেম জীবনে করেনি,আর শেষে কিনা ছোটো একটা মেয়ের প্রেমে পরে গেলো?
রিক্সা করে রিয়া আর পিয়া যাচ্ছে
—কিরে রিয়া কে ছিলো লোকটা
—কোন লোক?
—ফোনের
—আর বলিস না ওটাই তো আমার সেই ক্রাশ
—মাই গড আগে বলিস নি কেনো একটু ভালো করে দেখতাম কে সেই ভাগ্যবান যার জন্য আমার বেস্টু ক্রাশে ক্রাশিতো।
—দেখবি দেখবি সময় হলেই কিন্তু কে জানে আমি তো তাকে পছন্দ করি কিন্তু সে কি আমায় পছন্দ করে?সে তো আমার কতো সিনিয়র তার ওপর ভাইয়ের বন্ধু এ সব সে জানতে পারলে কি হবে ভেবে দেখেছিস?
—আরে চিন্তা করিস না ভালো কিছু হবে
—সত্যি বলছিস তো
—হুম দেখিস
—তাই যেনো হয় আর তোর মুখে ফুল চন্দন পরুক দোস্ত ।
—হইছে হইছে এবার থাম।
~~
কাব্য ক্লাস শেষ করে ভার্সিটির পাশে একটা ছোটো লেক আছে ওখানে প্রায়ই মন মরা হয়ে বসে থাকে।এসব রনি অনেকদিন থেকেই লক্ষ্য করছে।তবে আজ রনি মন মনে ঠিক করছে কাব্যকে জিজ্ঞেস করবে।
—কিরে এখানে বসে আছিস আর আমি ভেতরে খুজতেছিলাম তোকে
—কি হলো কিছু বলছিস না যে
—এইতো ভালো লাগছিলো মা তাই বসে আছি
—শুধু কি তাই নাকি এর অন্য কারন আছে বল
—নারে কিছু না
—কাব্য আমরা কিন্তু অনেকটাই বড়ো হয়ে গেছি আর আমরা একে অপরের মনের ভাষা বোঝার মতো অনেক টা না হলেও কিছুটা তো আছে নাকি।তাই বল কি হয়েছে ।
রনির জোড়াজুড়িতে কাব্য ওর মন খারাপের সব কারন খুলে বললো।শুনে রনি অনেক আপসেট।এতো বড়ো মানসিক আঘাত পেয়েছে আর এই কষ্ট নিয়ে ও হাসিমুখে দিন রাত পার করছে কিন্তু সব ভুলতে এতোদূরে এসেও সেই সবটা মনে করে ঠিক কষ্টটা পাচ্ছে।ওকে সান্তনা দেবার মতো ভাষা রনির জানা নেই কিন্তু আফসোস হচ্ছে নিশির জন্য যে কিনা এতো কাছে থেকেও ভালোবাসাটা বুঝতে পারেনি।
—তোকে সান্তনা দেওয়ার মতো ভাষা আমার নেই দোস কিন্তু আমার বিশ্বাস তোর ভালোবাসার জোড় থাকলে ঠিক তুই তোর মানুষটিকে পেয়ে যাবি।
কাব্য কিছু বললো না শুধু হাসলো তবে এটা কষ্টের আর না পাওয়ার হাসি।
“তবে আর যাই হোক রনি কাব্যের মতো বোকামি করবে না ভেবে রেখেছে শিগ্রই রনি রিয়াকে পছন্দ করে সেটা ফ্যামিলিকে দিয়ে ওদের বাসায় প্রস্তাব পাঠাবে না হলে ওর মতো রিয়াকে ও হারাবে।”
carnation e book

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *