ঘাস ফড়িং 8,9,10

roses, flower, blossom

ঘাস ফড়িং সকল পর্ব👈 

ঘাস ফড়িং -8

~~~~~~~~
তাকিয়া কাল রাতে প্রচুর কেঁদেছে।ভোরের আলো ফুটতেই মনে হলো চোখের পানি গায়েব।তাকিয়ার একটি গুন আছে সে কখনো কাওকে মনের কষ্ট গুলো বুঝায় না।সব সময় ঠোঁটের কোণে এক রাশ হাসির রেখা টেনে রাখবে,দেখে মনে হবে সেই হয়তো পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ।সে জানে ঊষা রবি যেহেতু পৃথিবীতে আলোকোজ্জ্বল করতে প্রস্তুত, তার মানে এখন এক এক করে সকলের ঘুমন্ত অক্ষি জাগ্রত হতে থাকবে।সকলে প্রস্তুত হতে থাকবে দৈনন্দিন কর্ম ব্যস্ততার দিকে এগিয়ে যেতে। সে বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই নয়ননীরকে বিদায় জানালো।এখন নামাজ পড়তে হবে, ব্যাগ গোছাতে হবে, অনেক কাজ। তাকিয়া গাত্রে থেকে কাথা সরিয়ে সময়নিরুপক যন্ত্রটির দিকে তাকালো।সে সময় দেখার বৃথা চেষ্টা করছে।কিন্তু ব্যর্থ হলো।কারন পুরো ঘর তমসায় আবৃত। এ অবস্থায় ঠিক ঠিক আওয়াজ কর্ণকুহরে ভেসে আসলেও সময় দেখা যাবেনা নিশ্চিত। তাকিয়া ক্রমাগত দু হাত দিয়ে চোখ রগড়াচ্ছে।কিছুটা হাই ভাবও আসছে।খুব অদ্ভুত কাণ্ড।শুধু অদ্ভুত? এত অতিশয় মুশকিল ব্যাপার! সারারাত কান্না করে করে পার করেছে আর ভোর হতেই তার ঝিমুনি পাচ্ছে।তাকিয়া চটজলদি খাট থেকে নামলো।লাইট জালালো, হ্যা এবার ঘড়ির সময় দেখা যাচ্ছে।সেকেণ্ডের কাটাটি অনবরত ঘুরছে।তাকিয়া সেথায় দৃষ্টি নিবদ্ধ করেই আলহামদুলিল্লাহ বললো। সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলো।কারন নামাজের ওয়াক্ত এখনো শেষ হয়নি।রেবেকাকেও ডাকলো,নিজেও দ্রুত অজু সেরে নামাজ পড়ে নিলো। নামাজ শেষে গবাক্ষ ( জানালা) দিয়ে পাশের বাসার আন্টিকে বললো আনিকাকে একটু ডেকে আনতে।আন্টি ছাই দিয়ে দাত মাজায় ব্যস্ত। তবুও তিনি মাথা ঝাকালেন। মানে ডেকে আনছি।তাকিয়া স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।প্রিয় বান্ধবীকে অন্ততপক্ষে বিদায় বলতে পারবে।
ব্যাগ গুছাচ্ছে সে। রেবেকার কড়া আদেশ শুধু কয়েকটি প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া আর কিছুই যেন ব্যাগে না ভরা হয়।কারন সে এই বাড়ি থেকে তেমন কিছুই নিবেনা।ঢাকা যেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কিনে নিবে।রেবেকা চাচ্ছে সকালের খাবার খেয়েই বের হয়ে যাবে তারা।এই ফাঁকে আনিকাও চলে এসেছে।সে এই দুঃখজনক বার্তা টি শুনে খুব যুদ্ধ করছে নিজের সাথে।মনে হচ্ছে এই বুঝি অক্ষিরা তাদের কাজ সেরে ফেলবে।কিন্তু যত যাই হোক তাকিয়ার সামনে কাঁদা যাবেনা, বেচারি কষ্ট পাবে।আনিকা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখছে।কিন্তু মন খারাপ কি আর লুকানো যায়? সেটাতো আমাদের মুখচ্ছবি প্রকাশ করে দেয়।তবুও সে নিজেকে সংবরণ করে তাকিয়াকে বললো।আমি আন্টির সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি?
“না, আমি চাইনা কোন জামেলা হোক।
” আনিক নিশ্চুপ হয়ে গেলো।দুজনের মধ্যে বিরাজ করছে এক কঠিন নিরবতা।যেন কারো গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছেনা।তবুও তাকিয়া তার কাজ গুলো করে নিচ্ছে।সে ব্যাগে তার প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রগুলো গুছিয়ে রাখছে।তাকিয়া আনিকাকে নিশ্চুপ থাকতে দেখে কথার মোড় ঘুরিয়ে দিলো। সে বললো।
“শোন দাদিমার খেয়াল রাখিস।তাকে একদম বিরক্ত করবিনা।
” এমন ভাবে বলছিস যেন আর জীবনেও দেখা হবে না?এইভাবে বলিস না প্লিজ।
“কে বললো দেখা হবে না। আল্লাহ চাইলে অচিরেই আমাদের দেখা হবে।
” জানিস তাকিয়া আজকে তোর মা কে বলতে ইচ্ছে করছে। উনি অন্যের জিনিস নিয়ে এতো বাহাদুরি করেন কেন?
“বলতে ইচ্ছে করলেও মন থেকে মুছে ফেল।উনি এটা শুনলে বড্ড রেগে যাবেন।
” তুই না কেমন জানি, সবসময় অন্যকে নিয়ে ভাবিস, একবার হলেও তো নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারিস, নাকি?
“কে বললো আমি নিজেকে নিয়ে ভাবিনা? অবশ্যই ভাবি। আমি আল্লাহর সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছি।
আল্লাহ তায়ালা কি বলেছেন ভুলে গেছিস।
তিনি বলেছেন।তুমি ধৈর্য ধারন করো।আল্লাহ তায়ালা কখনো নেককারদের পাওনা বিনষ্ট করবেননা।
সুরা হুদ।
দেখবি একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।ধৈর্যএর মানে এটা না যে আমি কষ্ট পেলাম আর চুপ থাকলাম.আমি যে আল্লাহর সিদ্ধান্ত কে হাসি মুখে মেনে নিচ্ছি এটাই হলো উত্তম ধৈর্য। সত্যি বলতে আমারো এই বাড়ি থেকে যেতে ইচ্ছে করছেনা।কিন্তু আমার মন বলছে আল্লাহ আমার জন্য ঢাকাতে যাওয়াটাই কল্যান মনে করছেন তাই আমি ঢাকা যাচ্ছি।আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ আমাকে ভিষণ ভালোবাসেন।আর এটাই আমাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। এমন একদিন আসবে সেদিন আমি নিজেই বলবো তুমি আমাকে অনেক বেশি নেয়ামত দিয়েছো অথচ আমি এসবের যোগ্যই না।আল্লাহর সিদ্ধান্তই অবশ্যম্ভাবী।
” ইন শা আল্লাহ এমনি যেন হয়।আনিকা ভ্রুঁ কুঁচকে তাকিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।এর পিছনে অসম্ভব একটি কারন রয়েছে।আনিকা তাকিয়াকে উদ্দেশ্য করে আবারো বললো।আচ্ছা তুই কি লিখছিস বলতো।কিছু ক্ষন ব্যাগ গুছাচ্ছিস।আবার কিছু ক্ষন লিখছিস।
“একটি চিরকুট ।কিছুটা ফিনিসিং বাকী আছে সেটাই ঠিক করছি।
” ও কার জন্য লিখছিস।
” চিরকুট টি আমি তোর মাধ্যমেই তার কাছে পৌছাবো। তখন দেখে নিস।নে এখন এটা তোর কাছে রাখ এবংলুকিয়ে ফেল।
” লুকাবো তো কিন্তু এটা কার জন্য সেটা তো বলবি।
“বলছি।এখন চুপ থাক দেখছিস না আম্মু এদিকে আসছে।
রেবেকা তাকিয়ার কাছে আসলো। এবং বললো
গাড়ি দ্রুত চলে আসবে, এখনি বের হয়ে যেতে হবে।তুমি বোরকা পড়ে তৈরি থাকো,আজ আর রেবেকা আনিকার উপর রাগ দেখালোনা।এর পিছনে অবশ্য যথেষ্ট কারন রয়েছে।কারন সে আজ খুবই ব্যস্ত। ঘর, বিজনেস এসবের জন্য সে তার বিশ্বস্ত মানুষদের তলব করেছে।তাদেরকে এক এক দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছে।এতকিছুর মধ্যে রাগ দেখানোর কোনো মুড তার নেই। অবশ্য আনিকাও আজ কিছুর তোয়াক্কা করেনা।তার প্রিয় বান্ধবী চলে যাচ্ছে, এর চেয়ে বড় আঘাত আর কিছুই না।রেবেকা চলে যাওয়ার পর তাকিয়া আনিকার উদ্দেশ্যে বললো।শোন এই চিঠিটি মাফির জন্য।
মাফি যদি আসে তাহলে এটা তাকে দিবি।
” আনিকা তাচ্ছিল্যের সুরে বললো।
তোর মনে হয় সে আসবে?
“আমার মন বলছে সে আসবে।সে আমাকে নিতে আসবে।
” যে মানুষটি যাওয়ার পর থেকে একবারো উঁকি দেয়নি।তার ব্যাপারে তুই এতটা আস্থা রাখছিস কিভাবে?
তাকিয়া আলমারি থেকে বোরকা নামাতে নামতে বললো।আমার বিশ্বাস সে আসবে।আমি জানি সে আমাকে খুব মনে করে।
তাই হয়তো আমিও তাকে মনে করি।
সব কথা বাদ, সে আসলে তুই এটা তাকে দিবি।
” আচ্ছা বাবা দিবো, জানিনা তোর কথা কতটুকু সত্য।তবে আল্লাহ তোর আশা পূর্ণ করুক।
“আমীন।
দেখতে দেখতে সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে।গাড়ি এখন তাদের বাড়ির আঙিনায় অবস্থান করছে।আনিকা আর নিজেকে সংবরণ করতে পারলোনা।অক্ষিদের তাদের কাজ করার অনুমতি দিয়ে দিলো।তাকিয়ারও একি অবস্থা।দাদি দুজন কে বুঝালেন।কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরলেন। কিন্তু দুই সইয়ের কোনো পরিবর্তন দেখা গেলোনা।এদিকে গাড়িতে মাল জিনিস উঠানো হচ্ছে।
গ্রামের ছোট ছোট মেয়েরা তাকিয়াকে বিদায় জানাতে চলে এসেছে।সবার মন খারাপ। তাকিয়ার চলে যাওয়াটা কেউ মেনে নিতে পারছে না। লক্ষিপুরের প্রতিটি অলিতে গলিতে যেন এক ধরনের গভীর হাহাকার মিশে যাচ্ছে।সবাই যেন এটাই বলতে চাচ্ছে তাকিয়া যেওনা, তাকিয়া যেওনা।তাকিয়ার নেকাব কান্নার নীরে ভরে উঠেছে।সে আকাশ পানে চেয়ে একটি দ্বীর্ঘশ্বাস টেনে বললো আমি জানি আল্লাহ, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।সেদিন হয়তো আমি সুখের কান্না কাদঁবো।আমি বিশ্বাস করি তোমাকে,ভালোবাসি তোমাকে।সবার থেকে বিদায় নেওয়া হয়ে গেলে গাড়ি ছুটে চললো তার গন্তব্যে।
আনিকা বাড়িতে এসে দরজা জানালা বন্ধ করে দিলো।সে কিছুতেই কান্না থামাতে পারছেনা।দাদি তাকে আটকালেননা।কখনো কখনো কাঁদতে দিতে হয়।
______
কিরে সাদাত আর কতখানি। তুই সেই কখন থেকে বলছিস পৌঁছে যাবো,পৌঁছে যাবো।কই এখনও তো কোনো কুল কিনারা দেখছি না।
সাদাতের বন্ধু আকাশ এক শ্বাসে কথাটুকু বললো।
“সাদাত তার প্রতিউত্তর করলো।আরে আরেকটু অপেক্ষা কর, এইতো চলে এসেছি।
সাদাত তার ৪ বন্ধু কে সাথে করে নিয়ে এসেছে।
তন্মধ্যে ইয়াসিন তার খুব ভালো বন্ধু।
সাদাত এখানে কেন এসেছে, কেউ না জানলেও ইয়াসিন সব টা জানে। এখন দুপুর আড়াইটা।মাথার উপর খাঁ খাঁ রোদ্দুর। তাদের গাড়ি স্বীয় গন্তব্যে পৌঁছে গেছে।সাদাত গাড়ি থেকে নেমে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো,সাথে রয়েছে চাপা উদ্বেগ।সে সেখানেই ঠাই দাঁড়িয়ে থাকলো। ইয়াসিন বাড়ির ভিতর প্রবেশ করলো।আকাশ, নিখিল বাড়ির দিকে হা করে চেয়ে আছে। কারন তাকিয়াদের বাড়িটি পুরোনো দিনের।তার দাদার দাদা নাকি জমিদার ছিলেন।তিনিই বাড়িটি নির্মান করেছিলেন। ইয়াসিন গেইটে তালা লাগানো দেখে অবাক হলো।সাদাতের মন খারাপ হলো।ইয়াসিন স্কন্ধে হাত বুলাতে বুলাতে বললো।
“মন খারাপ করিস না, মনে হয় বাহিরে গেছে।আমরা এখানে কিছু ক্ষন অপেক্ষা করি।
সাদাত তার বন্ধুদের নিয়ে উঠোনে বসলো।
তাকিয়াদের উঠোন কিছু টা পার্কের মত।বিভিন্ন ধরনের গাছ পালা দিয়ে ভরপুর। উঠোনের মাঝখান বরাবর কয়েকটা কুরসি একটি টেবিলকে ঘিরে দাড়িয়ে আছে। টেবিল আর চেয়ার গুলো বড় ছাতা দিয়ে আবদ্ধ।নিখিল, আকাশ চেয়ারে যেয়ে বসলো।সাদাত মাথা নত করে বসে আছে। সে খুব নার্ভাস ফীল করছে। তাকিয়া যদি তাকে দেখে তাহলে সে কেমন আচরণ করবে,তাকিয়াকি তাকে চিনতে পারবে?তার মাথায় এসব চিন্তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন সময় একটি মেয়েলি কন্ঠ স্বর শুনে সাদাত ঘুরে তাকালো।বোরকা পরিহিত মেয়েটি সাদাত কে উদ্দেশ্য করে বললো।
” আপনি মাফি ভাইয়া না?
“জি, কিন্তু আপনি কে?
” ভাইয়া আমি আনিকা। তাকয়ারা আজ সকালে ঢাকায় চলে গেছে।ও চলে যাওয়ার পর থেকে মন শরীর দুটোই যেন নিস্তেজ হয়ে গেছে আমার।ঘরে ভালো লাগছিলোনা।তাই এই কাঠফাটা রোদ্দুরেও ওদের বাড়িতে চলে আসলাম
“সাদাত বসা থেকে দাড়ালো।চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ক্ষীণ আবাস।সে বললো ঢাকা কেন গিয়েছে?ওর কি বিয়ে হয়ে যাচ্ছে?
” ভাইয়া আমাকেওতো আপনি চিনেন।কিন্তু তাকিয়ার সম্পর্কেই কেন জানতে হবে শুনি।আমাকেতো একবার জিজ্ঞাসা করলেননা আমি কেমন আছি?
“সাদাত লজ্জিত হলো যেন।শাহাদাত আঙুল দিয়ে মাথা চুলকাচ্ছে।তবুও সে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো।আমি তোমার কথাই জিজ্ঞাসা করতাম।কিন্তু তুমি যে বললে তাকিয়া চলে গেছে তাই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম আরকি
” আচ্ছা সমস্যা নেই।আপনার তাকিয়া আপনারই আছে।আমাদের বাসায় আসুন, আপনারা অনেক দুর থেকে এসেছেন।আগে কিছুক্ষন বিশ্রাম করুন তারপর সব বলছি।আপনাকে সব জানতেই হবে।
বন্ধুরা সাদাতের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে?তাদের মাথায় দুষ্টুমি ভর করেছে। কিছু বলতে চাচ্ছে।অমনি ইয়াসিন ইশারা দিলো।চুপ কর। হয়তো সে এটাই বুঝাতে চাচ্ছে এখানে আনিকা রয়েছে।তারা সন্ধা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করলো। মাগরিবের নামায পড়ে এরপর রওনা হলো।
সাদাত আনিকার থেকে তাকিয়ার সম্পর্কে যা কিছু শুনেছে সেটা তার মন খারাপ হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
যে করেই হোক সে তাকিয়াকে এসবের থেকে মুক্তি দিতে চায়।কিন্তু কি করবে সে? সে নিরাশ হলোনা।মায়ের কথা মনে পড়তেই নিজেকে অভয় দিলো।মায়ের সাথে তাকিয়ার বিষয়টি আলোচনা করবো।একটা ব্যবস্থা অবশ্যই করা যাবে। গাড়ি কালো পিচের রাস্তা ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। আকাশে তারকারাজিরা বিদ্ধমান।মধুচন্দ্রিমা তাদের সাথেই যেন পথ চলছে।সাদাত পাঞ্জাবীর পকেট থেকে তাকিয়ার দেয়া চিরকুটটি বের করলো।এখনো খুলে দেখা হয়নি।অনেকবার খুলতে চেয়েছিলো সে।কিন্তু ইয়াসিন বারবারই নিষেধ করেছে।
ইয়াসিনের যুক্তি হলো। বাসায় যেয়ে ঠান্ডা মাথায় চিরকুট টি পড়বি।কারন এই চিরকুটটি তোর কাছে হিরা জহরত থেকেও মুল্যবান।
সাদাত অনেক ভেবে দেখলো।ইয়াসিনের কথাটি একদম ফেলে দেওয়ার মতও নয়।তবুও মন কি মানতে চায়? তাই সে কিছুক্ষণ বাদে বাদেই চিরকুটটি পকেট থেকে বের করে এবং হাতের মধ্যে ঘুরিয়ে আবার রেখে দেয়।অস্থিরতা যেন শেষই হচ্ছেনা। কখন বাড়ি ফিরবে আর কখন সে চিরকুটটি পড়বে। এসব চিন্তায় সে মশগুল।
আসছে।
ঘাসফড়িং -৯
~~~~~~~~
তাকিয়া বাসায় পৌঁছেই লম্বা এক ঘুম দিলো।সারা রাত নির্ঘুম তাই ঘুমটাও যেন সুন্দর মত হচ্ছে।রাফিয়ার খালামনিরা এখনো যাননি, যার দরুন বাসায় কাজের চাপ কম। রাফিয়ার খালামনির একটি মহৎ গুন রয়েছে।তিনি কাজের ক্ষেত্রে খুব পটু।এক হাত দিয়ে মূহুর্তের মধ্যেই সব কাজ সেরে ফেলেন।তার প্রতিটি কাজই প্রশংসাযোগ্য। রেবেকা গ্রাম থেকে নিজেদের পুকুরের মাছ, বিভিন্ন প্রকারের শাকসবজি, ফলমূল, বোনের জন্য নিয়ে এসেছে।তিনি কাজের চাপ হালকা করার জন্য মাছ গুলো নিয়ে কাটতে বসে গেছে।কই মাছটি কাটার সময় বড্ড বিরক্ত পোহাতে হয়েছে। যখনি সেটাকে ধরতে যায় সেটি লাফ দিয়ে উঠে, দুটো কাটা তার হাতে বিধেও গিয়েছে।সেও নাছোরবান্দী,হাতের সব কাজ শেষ না করা অবধি তার ক্ষান্ত নেই।কই মাছা কাটা শেষ, এখন বড় রুই মাছ টির পালা।রেবেকা বোনের সামনে বসে বসে নির্দেশ দিচ্ছে।এভাবে কাট ওভাবে কাট ইত্যাদি। রুই মাছটি দেখতে বেশ বড়সড়। মনে হচ্ছে ডিমের দেখা মিলবে।মাছটির পেটের দিক টাতে কাটা হচ্ছে।সকলের দৃষ্টি সেদিকেই নিবদ্ধ।সবাই উৎসুক হয়ে আছে।আসলেই তাই! মাছের পেট থেকে আস্ত একটি ডিম বের হয়েছে।রেবেকা ক্ষীন হেসে বললো।মাছটাকে দেখেই আমি ধারণা করেছিলাম ডিম হবে। আজকে ডিম ভাজি করিস।অনেক দিন মাছের ডিম খাওয়া হয়না।রেবেকার বোন মাথা নাড়ালো।মাছের ডিম সচরাচর বেশিরভাগ মানুষই পছন্দ করে।বিশেষ করে রাফিয়ার খুব পছন্দ। কাটাকুটির ঝামেলা শেষ।এখন রান্না টা সেরে ফেললেই ঝামেলা মুক্ত।তারা রান্না শুরু করে দিলো।রান্নার কাজ প্রায়ই শেষের দিকে।রেবেকা রান্না করছে।পাশে তার বোন দাঁড়িয়ে গল্প করছে।অনেকদিন পর দু বোনের দেখা হয়েছে।গল্প কি আর ফুরাবে?তাদের গল্পের ধরন কিছুটা এমন।
এই যেমন। কিছু দিন আগে তার বরের অনেক গুলো টাকা কর্জ হয়ে ছিলো। সে গুলো দিতে যেয়ে তাদের প্রচুর ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।তারপর আবার, কদিন আগে একটা সোনার হার বানিয়েছিলো কিন্তু সেটাতে স্বর্নের বদলে দোকানদার খাত বেশি দিয়েছে।আরো কত কি?
বোন যদি একটু বিরতি নিচ্ছে তবে আবার রেবেকা শুরু করছে। যেমন,তার ব্যবসায় এইবার লাভের বদলে লোকসান টাই বেশি হয়েছে।তবে লেবু বাগানের লেবু গুলো বিক্রি করে খুব লাভ হয়েছে।ইত্যাদি ইত্যাদি অর্থাৎ দু বোনের কথা যেন শেষই হচ্ছে না।
রান্না শেষ হলে সবাইকে খাবার খেতে ডাকা হলো।রাফিয়া আসলোনা। সে জানালো তার ক্ষিদে নেই।রেবেকার সন্দেহ হলো।সন্দেহ হওয়ারও কারন আছে।কারন এখানে আসার পর থেকেই রাফিয়ার মধ্যে হর্ষের ( উল্লাস) ছিটে ফোটাও দেখা যায়নি। সে খুব অন্যমনস্ক এবং দুর্ভাবনায় আবিষ্ট হয়ে আছে। তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে তার মনের কোণে মেঘ জমেছে।কিছুক্ষন পর পরই বেলকনিতে চলে যাচ্ছে।কিছুক্ষন বাদেই মন কালো করে আবার ফিরে আসছে।বিষয়টি রেবেকার দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর থেকেই তার অন্তরিন্দ্রিয় প্রত্যক্ষ করছে যে হয়তো রাফিয়ার মনে কাওকে সে জায়গা করে দিচ্ছে। কিন্তু মানুষটি কে? এটা জানতেই হবে। রেবেকা বিষয় গুলো আঁচ করার পরও নিজেকে নৈসর্গিক রাখলো।সে তাকিয়াকে তার মনোভাব বুঝানোর জন্য দর্শনেন্দ্রিয়ের মাধ্যমে ইশারা করলো।তাকিয়া পুরোটাই বুঝতে পারলো।সে চলে গেলো রাফিয়ার কক্ষে।রাফিয়া উপাধানে ( বালিশ) মুখ চেপে শুয়ে আছে।তাকিয়া পালঙ্কের পাশে দাঁড়িয়ে কয়েকবার ডাক দিলো।
“আপু তোমাকে খেতে যেতে বলছে।
”রাফিয়ার পক্ষ থেকে কোনো বাকস্ফূর্তি পাওয়া গেলোনা।
” তাকিয়া আবারো ডাকলো।
“৩য় বারের মাথায় রাফিয়া উঠে বসলো।তার চোখেমুখে ক্রোধের পূর্বাভাস। এখনি মনে হচ্ছে তাকিয়াকে চপেটাঘাত করে বসবে।সে কিছু বলার পূর্বেই তাকিয়া বলে উঠলো।
” মা ডাকতে বলেছে তোমাকে তাই এসেছি।
“আমি একবার বলেছি খাবোনা শুনিসনি।যা এখান থেকে।
” তাকিয়া কথা বাড়ালোনা।ফিরে আসলো।সে তার বিমাতার কন্যা সম্পর্কে জ্ঞাত রয়েছে।সে যেটা বলে সেটাই।তার উপরে কথা বলার অধিকার কারো নেই। তাছাড়া তাকিয়ার তো একদমই না।কারন রাফিয়া তাকে পছন্দ করেনা।তাই তাকিয়াও কখনো প্রয়োজনের থেকে বেশি কথা বলেনা।অথচ এখন তাদের একি সাথে একি বাড়িতে থাকতে হবে?বিষয়টি মোটেও সুখকর নয়।
তাকিয়া রেবেকার সামনে দাড়াতেই রেবেকা কুরসি থেকে উঠে দাড়ালো।এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বললো।জানতাম তুমি পারবেনা।খেতে বসো।আমি ডেকে আনছি।তাকিয়া ছলছল নয়নে তাকিয়ে আছে।এর চেয়ে বেশি আর কিই বা করার আছে।রেবেকা মেয়ের কক্ষের অভ্যন্তরে প্রবিষ্ট হতেই রাফিয়া উঠে বসলো।জোরপূর্বক হেসে বললো।আমি মাত্রই যেতাম আর তুমি আসলে?
“তাড়াতাড়ি আসো সবাই অপেক্ষমাণ আছে।তুমি গেলেই খাওয়ার পর্ব শুরু করা হবে।
” হু চলো।
“তোমার খালামনি মাছের ডিম রান্না করেছে আজ।
” আগে বলবেনা।আমিতো জানিইনা।
আমি এখনি আসছি।
রাফিয়া যেয়ে পাশের টেবিলে বসে পড়লো।রেবেকা তাকিয়ার দিকে দৃষ্টিপাত করলো।কিছুক্ষণ থেমে থেকে বললো।আমিতো ঠিকই ডেকে আনলাম।তোমার দ্বারা যদিএকটা কাজ যদি ভালো মত হয়?এবারো তাকিয়া নিশ্চুপ থাকলো।কি বলবে? কাকে বলবে? এখানে তার কোনোই মূল্যবোধ নেই।তাই সে সবসময় নিরব থাকাটাই শ্রেয় মনে করে।
_____
সাদাতের ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়েছে।এতক্ষনে সবাই ঘুমিয়ে গেছে। তার মা এখনো ডাইনিং রুমে বসে বসে ছেলের জন্য অপেক্ষা করছে।কলিংবেলের শব্দ হতেই হেনা দরজা খুলে দিলো।মাকে প্রথম দেখেই সাদাত এক গাল হেসে ভিতরে ঢুকলো।
হেনা উৎকন্ঠিত স্বরে জিজ্ঞাসা করলো।
“এতো দেরি হলো কেন?রাস্তায় কি গাড়ি ঘোড়ার সমাগম বেশি ছিলো?
” সাদাত পা থেকে জুতা খুলতে খুলতে বললো।
না বিষয়টি তেমন নয়। আমাদের গাড়ির ড্রাইভারকে আজ একটি ট্রাক রাস্তায় খুব বিরক্ত করছিলো।বড় ট্রাক টির উদ্দেশ্য কি ছিলো আমি জানিনা।তবে ড্রাইভার তো প্রচণ্ড ক্ষেপেছিলেন লোকটির উপর।সে বারবারই আমাদের যাত্রা পথ আটকাচ্ছিলো।বিষয়টি আমাদেকে বিরক্তের চরম সীমানায় পৌঁছে দিয়েছিলো,এরপর আমরা সেখানে কিছু ক্ষন যাত্রা বিরতি করলাম।এ জন্যই দেরি হয়ে গেছে।
“আচ্ছা বুঝলাম আল্লাহ যে সুস্থ ভাবে তোমাকে ফিরিয়ে এনেছে। এতেই আলহামদুলিল্লাহ। যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।
কিছু খেয়ে তারপর ঘুমাবে।
” খেতেই হবে?
“হুঁ আবশ্যক। তারাতারি আসো আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে অপেক্ষা করছি।
সাদাত বাধ্য ছেলের মত ফ্রেশ হতে চলে গেলো।প্রথমে অজু করলো।এটা গোসলের অন্যতম একটি সুন্নত। সাদাত সব সময় নবী করীম সাঃ এর সুন্নত গুলো পালন করতে চেষ্টা করে।আজও তাই করলো।অজু শেষ হলে সে ঝর্ণা ছেড়ে দিলো।অক্ষি গুলো দুপাশের পাপড়ি মিশিয়ে রেখেছে।
সারাদিনের ক্লান্তি অবসাদ ঝর্ণার পানির সাথে নিচে পড়ে যাচ্ছে। গোসল শেষ করে খেতে চলে গেলো।নামাজ পড়লোনা কারণ সে নামাজ পড়ে এসেছে। দ্রুত কিছুটা খাবার মুখে তুলেই খাওয়া শেষ করলো। এখনও তার মাথা থেকে চিঠির ভুত নামেনি।মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে তার কক্ষে চলে আসলো। কপাট শক্ত করে লাগালো।নিশ্চিত হওয়ার জন্য আবারো চেক করলো।হ্যা ঠিক আছে এবার। বিছানায় মাথা রেখেই কাংখিত চিঠি খানা বের করলো।
অস্থিরতা কাজ করছে তাই উঠে বসলো।সে সিদ্ধান্তে উপনীত হলো।বসেই চিরকুটটি পড়া শেষ করবে।তাই করলো।
” আসসালামু আলাইকুম।
প্রথমেই বলবো এখন যদি রাত না হয় তবে চিঠি পড়বেননা।রাতেই পড়বেন।
সাদাত ভ্রু কুচকালো।কিছুক্ষণ ভাবলো।এখন রাতই তার মানে পড়তে পারি।সে আবারো পড়তে থাকলো।
“কেমন আছেন, আশা করি খুব ভালো আছেন।
জানালা খুলুন।
সাদাত উঠে গিয়ে জানালা খুলে দিলো।
“চাঁদের দিকে দৃষ্টি রাখুন। রেখেছেন আশা করছি।
সাদাত মুচকি হাসলো।সে কিছুক্ষণ চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকলো।আবারো চিঠিতে মনোনিবেশ করলো।
” আমি প্রায়ই চাঁদ দেখি। আমার ভালো লাগে কারন আমি মনে করি আপনিও তাঁকে দেখেন।যদি কখনো এমন হয়, আমরা দুজনই একই সময় চাঁদ দেখছি!বিষয়টি কিন্তু খুবই সুন্দর হবে তাইনা?আচ্ছা যাই হোক এবার অন্য কথায় যাওয়া যাক।আমি অনেক ভেবেছি আপনাকে তুমি সম্বোধন করবো। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি।কেন, তা জানিনা। অথচ এক সময় আমি আপনাকে মজার ছলে তুই বলে ডাকতাম।আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন। আমার ললাটে ঘামের সরু রেখা ফুটে উঠেছে। আমার হাত কাঁপছে। বারবার লজ্জায় মাথানত হয়ে যাচ্ছে।আমি জানি এখন আপনি এসবের কারন জানতে চাইবেন?কিন্তু এর উত্তরও আমি জানিনা, হয়তো জানি। কিন্তু ব্যখ্যা করতে চাচ্ছিনা।আপনি হয়তো ভাবছেন আমি এতো বেশি কথা লিখছি কেন? এর উত্তর ও আমার কাছে নেই। তবে এতটুকু বলি আমার লিখতে ভালো লাগছে।মনে হচ্ছে এই লিখা যেন শেষ না হয়।
আরেকটি কথা শুনলে আরো বিষ্মিত হবেন।এখন আমার ঘরে জানালা দিয়ে মিষ্টি রোদ প্রবেশ করছে।সাথে রয়েছে উষ্ণ বাতাস। আমি এ অবস্থায়ই লিখছি।কিছু ক্ষন পর উপলব্ধি করলাম।রোদটি আমাকে বড্ড জ্বালাতন করছে, সে ধীরেস্থিরে আমার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে।এবং আমার রুমে ঘুমপরিদের যাত্রা সরণি সহজ করে দিচ্ছে।আমিও বুদ্ধিমত্তার সাথে তাদের কে বলে ফেললাম।এই চিঠিটি আমি যাকে লিখছি সে আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ , তোমরা অনুগ্রহ করে চলে যাও।কিন্তু তারা আমার কথা শুনলো না।আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার অক্ষিতে প্রবেশ করলো।ইশ আর লিখতে পারছিনা। খুব ঘুম পাচ্ছে ঘুম থেকে উঠে লিখবো।
,
,
সত্যিই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।অবিরাম পরিবেশে ঘুম না হয়ে উপায় আছে? তা যাই হোক এখন
আমার ঘুম কিন্তু শেষ। এখন আসি কাজের কথায়। আমি জানি আনিকা হয়তো আমার দুঃখের কথা বলতে বলতে আপনার কান ঝালাপালা করে ফেলেছে। কিন্তু আপনি মোটেও তার কথা বিশ্বাস করবেন না। আমি ভালো আছি, খুব ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আমার মা, বোন তারা আমাকে খুব ভালোবাসে।আমি তো নিজেকে দুঃখি তখনি মনে করবো।যখন আমি জানবো আপনার বিপরীতে আমি ব্যতিত অন্য কেউ দাড়িয়ে আছে।একটা কথা জানেন,সবাই বলতো আপনি আমায় ভুলে গেছেন।কিন্তু আমার মন বলতো আপনি আমাকে ভুলেননি।আমিই ঠিক ছিলাম।দেখুন আপনি আমার চিঠি পড়ছেন।এটাই তার শক্ত প্রমান।ছোট বেলায় যখন আমি কানামাছি খেলতে যেয়ে বারবার চোর হতাম আপনি আমাকে বাচিয়ে দিতেন।মাঝে মাঝে তো নিজেও চোর হয়ে যেতেন।মনে পড়ে আপনার এসব? আমি কিছুই ভুলিনি।ও আমি কিসে পড়ি সেটাই বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। আমি কিন্তু এ বছর মেশকাত জামাতে উঠবো।আপনার হয়তো পড়াশোনা শেষ।আন্দাজ করছি।আচ্ছা যাই হোক।মনে হচ্ছে চিঠিটা বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে। থাক এখানেই শেষ করি।তবে আপনার কাছে একটা জিনিস চাই।আশা করছি ফিরিয়ে দিবেননা।আমি আপনার কাছে আপনাকে চাই।সারা জীবনের জন্য, জান্নাতের জন্য।খুব দ্রুত আসবেন।আর আমাকে নিয়ে যাবেন।আন্টি আংকেলকে আমার সালাম জানাবেন।আমি তাদের এখনো ভুলিনি।আপনি ভালো থাকবেন। আল্লাহর জন্য বাচবেন।
সমাপ্তি — তাকিয়া।
চিরকুট পড়া শেষ।সাদাত এখনো চাঁদ দেখছে।আগে এত একটা মনোযোগ দিয়ে সে চাঁদ দেখেনি।কিন্তু আজ দেখছে।সত্যিই চাঁদ খুব সুন্দর। অনেকটা সময় সে এভাবেই কাটিয়ে দিলো।সে একটি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।চিঠির কথা গুলো এত টাই সুন্দর যেন মনে হচ্ছে এই মোহিতে কেউ এত সুন্দর করে চিঠি লিখতে পারেনা।প্রতিটি কথাই জীবন্ত ।সাদাত কিছুক্ষন চিঠির দিকে তাকিয়ে থাকলো।লেখা গুলোর মধ্যে একপ্রকার নেশা মিশে আছে।অনেক রাত হয়েছে, ঘুমানো দরকার।সাদাত চিরকুটটি কে ভাজ করে ডাইরি তে রেখে দিলো।ঘুমাতে যেয়েও সে আবার সিদ্ধান্ত বদলালো। অজু করে এসে নামাযে দাড়ালো।আল্লাহর কাছে অনেক কিছু চাইতে হবে। আল্লাহর কাছে আবদার করার সুন্দর একটি সময় হচ্ছে তাহাজ্জুদের সময়।সুতরাং এই মাহেন্দ্রক্ষণ মিস করা যাবেনা।
ইশ যদি সাদাত একটি বারের জন্যও জানতে পারতো! তাকিয়া তার আশে পাশেই আছে।হয়তো অনেকটা সহজে তাকিয়াকে আপন করে নিতে পারতো।বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে পারতো।দেখা যাক কি হয়।
আসছে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আর আপনাদের থেকে গঠন মূলক মন্তব্যের আশাপোষণ করছি।আপনাদের একটি সুন্দর মন্তব্য আমাকে লিখতে দ্বিগুণ সাহায্য করে।🙂
MAke Your dream website
MAke Your dream website
ঘাসফড়িং -১০
~~~~~~~~~
তাকিয়া ঢাকা এসেছে প্রায় পনেরো দিন হয়ে গেছে।এই পনেরো দিনে অনেক কিছুরই পরিবর্তন পরিবর্ধন ঘটেছে।তাকিয়া তাদের বাসার কাছেই এক মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে। রেবেকা চাচ্ছিলো না সে পড়ালিখা করুক, কিন্তু সে তাকে কথা দিয়েছিলো, তাই সে নিরুপায় ।তাকিয়া সকালে যায় দুপুরে চলে আসে।এসেই বাসার কাজ গুলো করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।অন্য দিকে রাফিয়া সকালে বের হয়, আর ফিরে আসে গোধূলি যাওয়ার কিছুক্ষন পুর্বে। সে কলেজের অবসর সময়টুকু তার বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিয়ে শেষ করে দেয়। অন্যদিনের মত আজও ভোরে উঠে গেছে তাকিয়া। হালকা পাতলা কিছু নাস্তা তৈরি করেছে।রেবেকা আর রাফিয়া এখনো উঠেনি। নাস্তা তৈরি শেষ হলে তাকিয়া তাদের ডাক দিলো।তাকে মাদ্রাসায় যেতে হবে।তাই সে তৈরি হতে থাকলো।তাকিয়ার মাদ্রাসা বাসার কাছেই,একটা গলির পর, তাই সে একাই চলে যায়।আজও তাই হলো।তবে আজ একটু দেরি হয়ে গেছে।তাই সিড়ির সম্মুখে এসে গতিবেগ না বাড়িয়ে সে থামলো।আপাতত সে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলো। সিড়ি দিয়েনা! লিফট দিয়ে যাওয়া উচিত। কারণ এমনিতেই দেরি হয়ে যাচ্ছে।তাকিয়া অবশ্য সিড়ি দিয়ে নামতেই বেশি পছন্দ করে।খুব অদ্ভুত তার পছন্দ গুলো।লিফট উপরের দিকে উঠে আসছে।তাকিয়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নাম্বার গুনছে।১ তলা ২ তলা এভাবে করতে করতে লিফটের কপাট এসে তাকিয়ার সম্মুখে উন্মুক্ত হলো।তাকিয়া চটজলদি লিফটে উঠে পড়লো। সুবহানাল্লাহ বললো।যেহেতু লিফট এখন নিচের দিকে নামছে।সব তলা ডিঙিয়ে লিফট এখন নিচ তলায় অবস্থান করছে।কপাট ধীরে ধীরে খুলে যাচ্ছে।সম্মুখে কে দাঁড়ানো তাও প্রত্যক্ষ করার সময় নেই তার।দ্রুত যেয়ে তাকে ক্লাস ধরতে হবে।সে অতিসত্বর লিফট থেকে বের হলো।দু হাত আগানোর পর সে আবারো থামলো।মনে হলো সে অতিশয় পরিচিত কোনো মানুষকে পাশ কাটিয়ে এসেছে।যে তার সমক্ষেই ছিলো।তাকিয়া পিছনে ঘুরে তাকালো।কিন্ত অসিদ্ধ হলো।পিছনে থাকা লোকটি লিফটের ভিতরে অবস্থান করছেন।তাকিয়ার মনস্কাম সিদ্ধান্ত নিলো কিছুক্ষণ এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে।পরক্ষণেই সে হাতা থাকা ঘড়ির দিকে দৃষ্টি দিলো।এবং ভ্রুঁ জোঁড়া কপালে তুললো।তার হাতে খুব সীমিত সময় আছে এখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা বোকামি বৈ কিছু না।তাকিয়া পথের কিনারা ঘেঁষে হেটে চলেছে।তার অন্তরিন্দ্রিয় বারাবার একই প্রশ্ন করছে।এটাকি আসলেই সাদাত ছিলো? তাছাড়া সাদাত এখানে কি করে আসবে? হতে পারে এটা তার মানসিক চাঞ্চল্য বা বিভ্রম।তাকিয়া মাথা থেকে সব দুর্ভাবনা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে মাদ্রাসায় প্রবেশ করলো।এসব পরে ভাবলেও চলবে।
আজ সাদাত মাদ্রাসায় যায়নি।শরীর টা ভালোনা।
তাছাড়া আরেকটি কারণও আছে ।আজ ইয়াসিন আসবে। দুপুর হতেই কলিংবেল বেজে উঠলো। সাদাত দরজা খুলে দিলো।তার ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি।ইয়াসিন এসেছে।গরমে ঘেমে একাকার হয়ে গেছে। ইয়াসিন ঘর্মাক্ত দেহ নিয়ে সোফার রুমে বসলো।সাদাত ফ্রীজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে দিলো।হেনা বেগম পর্দার পাশে থেকে ছেলেকে খাবারের আঞ্জাম গুলো এগিয়ে দিচ্ছেন।ইয়াসিন ঠান্ডা পানি দেখেই ডগডগ করে এক গ্লাস পানি খেলো।তার তেষ্টা মিটলোনা।
আরেকগ্লাস খেতে হবে।হ্যাঁ দু গ্লাস খেয়ে এখন কিছুটা হালকা লাগছে।সাদাত খাবার গুলো টিটেবিলে গুছিয়ে রাখছে।ইয়াসিন বারণ করলো।
সে অপ্রকৃতস্থ হাসি হেসে বললো।
মাত্রই তো আসলাম এখন কেন খাবার দিচ্ছিস।
“গুছিয়ে রাখছি।
” আচ্ছা তা কর।কিন্তু এখন খাবোনা।
“হ্যাঁ আগে ক্লান্তির রেশ কাটুক, এরপর খাওয়া যাবে।এসিটা ছেড়ে দেই?
” গরমে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি আর তুই জিজ্ঞাসা করছিস?
“কিছুক্ষণ আগেই বন্ধ করেছি তাই জিজ্ঞাসা করলাম।
দু বন্ধু কিছুক্ষণ গল্প করলো।এরপর খেয়ে নিলো।খেয়েই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।দুপুরে খাওয়ার পর হালকা পাতলা ঘুম না দিলে হয় নাকি?সাদাতের এটা রোজকার অভ্যাস। তবে কাজ না থাকলে। আসরের আজানের সময় দু বন্ধুর ঘুম ভাঙলো।সাদাত অজু করে এসে ইয়াসিন কে ডাকলো।গামছা দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বললো।
তাকিয়ার বিষয়টি নিয়ে কি করা যায় বলতো?
“আগে নামাজ পড়ে আসি এরপর এ নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
দু বন্ধু নামাজ শেষ করে বেলকোনিতে যেয়ে বসলো। মাঝখানে ছোট টেবিল, সাথে দুটো প্লাস্টিকের চেয়ার। দুজনে দু চেয়ারে দখলদারত্ব করছে।টেবিলের উপর দুটো চায়ের কাপ।সেথা থেকে গরম ধোঁয়া উড়ছে। পাশে একটি পত্রিকা রাখা।জাফর সাহেব পত্রিকা পড়তে পছন্দ করেন।সকাল হলেই তিনি বেলকনিতে চলে আসেন। পায়ের উপর পা রেখে পত্রিকা পড়েন।আর মগ ভরে চা খান।সাদাত অবশ্য তার বাবার মত মগ ভরে চা খায়না।সে ছোট কাপেই সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু সে রং চা টা কম পছন্দ করে।ইয়াসিন আবার অন্যরকম, সে রং চা পছন্দ করে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সে চায়ে চিনি খায়না।ইয়াসিনের জন্য সাদাতকেও আজ রঙ চা খেতে হচ্ছে।
সাদাত চায়ে এক চুমুক দিয়ে বললো
চিনি ছাড়া চা খেতে মজা লাগে বুঝি?
“হুঁ মজা লাগে।আর তাছাড়া আমি ঝামেলা হীন মানুষ তুইতো জানিসই।
” হা হা হা এর জন্য তুই চায়ে চিনি খাসনা?
“আরে না না ব্যাপার টা তেমন না।চিনি ছাড়াই কেন জানি ভালো লাগে।
” জানিনা বাবা। তুই কিভাবে ওটা মুখে দিস, আমিতো এক চুমুকও খেতে পারবো না মনে হচ্ছে।
“আচ্ছা ঠিকাছে বাদ দে এসব, এখন বল তাকিয়ার ব্যপারে কি সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছিস?
” সাদাত অনেকটা ভ্রু কুচকে বললো।এই তুই নাম ধরে ঢাকছিস কেন? তোর ভাবি হয়না?
“ওহরে,,,,দুঃখিত। নে ভাবিই বললাম।
” হুঁ এবার হয়েছে।সাদাত আরেক দফা হেসে বললো।শোন না আমি আনিকাকে ফোন দিয়েছিলাম। আনিকা বললো তাকিয়ারা ধানমণ্ডি তে উঠেছে।
“সত্যি! তাহলে তো এই এলাকায়। মনে হয় খুজতে আর কষ্ট হবেনা।
” কিন্তু কিভাবে খুজে পাবো।
“আরে এত ভাবিসনা দোয়া কর ভাবিই যেন তোর সামনে পড়ে যায়।আর দৌড়ে এসে বলে এই আপনি সাদাত না?
” মজা নিচ্ছিস।
“স্বাভাবিক নিতেই পারি।আচ্ছা যাই হোক আমাকে এটা বল তাঁকে খুঁজে পেলে কি করবি?
” আমি নিজেও জানিনা।
“ইফতা শেষ হওয়ার আগে তো বিয়েও করতে পারবিনা।
” আব্বু বলেছে ইফতা শেষ করার দু তিন বছর পর বিয়ের নাম নিতে।কিন্তু মাকে যদি বলি তাহলে মা হয়তোবা রাজি হতে পারে।
“তুই যত জলদি তাকে বিয়ে করবি তত জলদি সে এই নরক থেকে উদ্ধার পাবে।আর তাছাড়া একটা জিনিস ভেবে দেখেছিস! তোর যখন মন খারাপ হয়, তুই একটু শান্তি খুঁজার জন্য আন্টি অথবা আংকেল কে ঠিকিই পেয়ে যাস।কিন্তু তাকিয়াকে ইয়ে মানে ভাবিকে দেখ, তিনি তার কষ্ট গুলো কাওকে বলতে পারেনা।আমি নিশ্চিত তিনি এতোদিনে জীবন্ত লাশে পরিনত হয়েছে।
” এভাবে বলিসনা।
“উনি এতীম। তাকে বিয়ে করলে অনেক বেশি সওয়াবের ভাগীদার হবি।
” কষ্টের কথা গুলো বলিসনারে ভাই।কিভাবে ওকে খুঁজে পাওয়া যায় সেটা বল।
“তার নাম্বার আছে তোর কাছে?
” আনিকা একটা নাম্বার দিয়েছিলো।ওইটা ওর সৎ মায়ের।তাই ফোন দেইনি কখনো।
“দেখি দেতো নাম্বার টা।
” সাদাত চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে ফোন ইয়াসিনের দিকে এগিয়ে দিলো।ইয়াসিন নাম্বার টি ভালো করে দেখলো।সে সাদাতের দিকে আড় চোখে তাকালো।সাদাত অসহায় ভঙ্গিতে বললো।
“ফোন দিলে যদি ওর মা ধরে?
” তোর চাচাতো বোনকে দিয়ে করালে কেমন হয়?
“আগে ভালোমত ভেবে নেই।
ইয়াসিনের চা খাওয়া এখনো শেষ হয়নি।সে একটু একটু করে খাচ্ছে।সময় নিয়ে নিয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে।সাদাত এখন পত্রিকার পৃষ্ঠায় অন্যমনস্ক হয়ে তাকিয়ে আছে।অন্যমনস্ক এ জন্য কারন সে সেখান থেকে এক লাইনও পড়েনি।তার মস্তিষ্কে অন্য চিন্তা বহমান।দুজনের মধ্যে সীমিত সময়ের নিরবতা বিরাজ করছে।কিছুক্ষণ পরেই সাদাতের ফোন বেজে উঠলো।
ইয়াসিন নাম্বারটি একবার পরখ করে নিলো।স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই সাদাতের দিকে এগিয়ে দিলো।সাদাত নাম্বার টি দেখলো।মনে হচ্ছে অপরিচিত নাম্বার তাই সে তেমন আগ্রহ দেখালোনা। ২য় বার আবারো ফোন বাজলো।
এবার ইয়াসিন বললো।ভালোমত দেখ নাম্বার টি চিনিস কিনা?
সাদাত ফোনের স্ক্রিনে তাকালো।সে বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলো।চোখ মুখে আনন্দের আবাস।ইয়াসিন উৎসুক হয়ে সেদিকেই তাকিয়ে আছে।
” কি হয়েছে উঠে দাড়ালি কেন?
“আরে এটাতো সেভ করা নাম্বার টি।তাকিয়ার মায়ের নাম্বার।
” বিষয়টি কাকতালীয় যাই হোক ফোন ধর।মনে হয় ভাবিই ফোন দিয়েছে।
” কিন্তু আমি আনিকাকে আমার কথা বলতে নিষেধ করেছিলাম।
“আরে সে তার বান্ধবীর কাছে বলবেনা!এটা তুই বিশ্বাস করিস?
” এতক্ষণে ফোনের রিংটোন বাজা শেষ হয়ে গেছে।এখন আর কল আসছেনা।সাদাত কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো।কিন্তু নিরাশ হলো।অপেক্ষা করতেও মন সায় দিচ্ছেনা তার।তাই সে নিজেই ফোন দিলো।কল রিসিভ হয়েছে।সে কিছু বলার পূর্বেই অপর পাশ থেকে রাফিয়া বলে উঠলো। ভাইয়া আমি রাফিয়া, কেমন আছেন?
“সাদাত ফোন কর্নলতিকা থেকে নামালো।স্পিকার অন করলো।এখন আওয়াজ জোরে শুনা যাচ্ছে।ইয়াসিন নিচু গলায় বললো।
” কথা বল দেখ কি বলে।
সাদাত ফোন কানে নিয়ে বললো।
জী রাফিয়া কেমন আছেন?
” এইতো ভালো আপনি?
“জী খুব ভালো আছি।
” তো আমার নাম্বার কোথায় পেলেন?
“আনিধার কাছ থেকে নিয়েছি।
” অনুমতি ব্যতিরেকে কারো নাম্বার নেওয়া এটা অন্যায়, জানেন আপনি? আচ্ছা যাই হোক আপনি কার ফোন দিয়ে ফোন দিয়েছেন?
“আমার ফোন দিয়েই দিয়েছি।
” সীম টাও কি আপনার?
“না আমার আম্মুর।আমার আম্মু ঢাকা চলে এসেছে।
“ওহ! আর কে কে এসেছে?
আমার আম্মুই শুধু, আর কেউ না।কেন বলুন তো?
“না মাঝে মাঝে আপনাদের ফ্ল্যাট থেকে একটা বোরকা পড়া মেয়ে কে বের হতে দেখি।
” ও বুঝেছি তাকিয়ার কথা বলেছেন হয়তো।সে ছোট বেলা থেকেই আমাদের বাসায় থাকে,কাজ করে।
“সাদাত রেগে গেলো।ইয়াসিন ফোন কেড়ে নিলো। ইশারা দিয়ে সাদাতকে বুঝালো, এখন কিছু বলিসনা, ঠান্ডা মাথায় কিছু করতে হবে।সাদাত ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত হলো।সে নিজেকে ঠান্ডা করে বললো।তো কেন ফোন দিয়েছেন?
“এমনি।একটা কথা বলি।
” বলেন।
“আমি ভেবেছিলাম আপনি আমার সাথে কথা বলবেন না।কিন্তু আপনি কথা বলেছেন, বিষয়টি সত্যিই খুব অবাক করেছে আমায়।
” জী আপনি ঠিকই ধরেছিলেন, আচ্ছা রাখি।
সাদাত ফোন রেখে দিলো।সে মাথায় হাত দিয়ে লম্বালম্বি ভাবে হাটছে। তার রাগ চরম পর্যায়ে চলে গেছে।ইয়াসিন কাধে হাত দিয়ে বললো।নিজেকে ঠান্ডা কর।ভাবিকেতো খুজে পেয়েছি এটাই অনেক শুকরিয়া আলহামদুলিল্লাহ।
“তুই দেখেছিস তাকিয়াকে তারা কত টা কষ্ট দিচ্ছে.অথচ তার বাবার টাকাই তারা এতো দুর এগিয়েছে।
” আচ্ছা বাদ দে এখন রাগ করিস না। এখন শুধু এটা চিন্তা কর, আমরা ভাবি অবধি কিভাবে পৌঁছাবো।
“ও সকালে মাদ্রাসায় যায়, দুপুর দেড়টায় বাসায় পৌঁছে। আন্দাজ করছি বোরকা পড়া মেয়েটিই তাকিয়া।
” তাহলে চিন্তা করিস না।কাল তাকে সব বুঝায় বললেই হবে।আর তোর মাকেও বিষয়টি জানিয়ে দিস।এখন আন্টির সাহায্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
আসছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *