বন্য প্রণয় 20,21,22

বন্য প্রণয় 21
( প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
সন্ধা হয়ে গেছে। বাইরে অন্ধকার নেমেছে। পাখিরা যে যার নীড়ে ফিরেছে ইতিমধ্যে। ড্রইং রুমে বসে আছে তিন ভাইবোন। তাহমি বিকেলে চলে এসেছে বাবার বাড়ি। কথামতো সহনের অফিস থেকে রাতে আসার কথা এ বাড়িতে। তাহমিকে পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছে সবাই। আমেনা বেগমের তো খুশি ধরে না! আয়ান আর তৃষা তাহমিকে নিয়ে ছোটখাটো ঝগড়াও শুরু করে ফেলেছিলনএরমধ্যেই। আয়ান বলছিল তাহমি ওকে বেশি ভালোবাসে তো তৃষাও বলছিল আপাই তাকে বেশি ভালোবাসে। শেষমেশ আমেনা এসে ছেলেমেয়েদের থামিয়েছেন।
” আপাই আজ মা এলো বলে আমি চুপ করলাম। তুমি কিন্তু বললে না কাকে বেশি ভালোবাসো।”
তৃষা মুখটা হুতুমপেঁচার মতো করে বসে আছে। আয়ান তাহমিকে ফের বললো কথাটা। আমেনা ইসলাম রান্নাঘরে চা তৈরি করতে গিয়েছিলেন। চা নিয়ে এদিকে এলেন।
” এই আয়ান! তোদের না চুপ করতে বললাম? এক একটা বুড়ো হলো তবুও ছেলেমানুষী গেলোনা তোদের। তাহমি চা নে, তৃষা তুইও।”
দুবোন মায়ের থেকে চা নিয়ে চুমুক দিলো তাতে। আয়ান বসে রইলো। আমেনা ইসলাম বিরক্তি নিয়ে বললেন, ” তোকে কি দাওয়াত করে চা নিতে বলবো বাবা? “
” আমাকে তো নিতে বললেও না। তাই নেইনি এতক্ষণ। এবার নিচ্ছি! “
আয়ান চায়ের কাপটা নিজের হাতে তুলে নিলো। তৃষা আড়ালে ভেংচি কাটলো ভাইয়ের কথায়। তবে আয়ান সেসব দেখেনি। তাহমি দেখেছে ঠিকই। এখন ট্রে-তে বাকি আছে একটা চায়ের কাপ শুধু। ওটা তাহমির বাবার জন্য নিয়ে গেলেন আমেনা। তাহমির বাবা এ সময় টিভিতে খবর দেখেন। আজও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। রাতের খাওয়াদাওয়া শেষে বিছানায় শুয়ে অনিকের নম্বরে কল দিলো তৃষা। অনিক কল কেটে দিয়ে ব্যাক করলো। তৃষা এক সেকেন্ড বিলম্ব করলোনা কল রিসিভ করতে।
” হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম। “
” ওয়া আলাইকুম আসসালাম। কী খবর আমার হবু বউয়ের? “
” আপনি জানেন না? আপনি না বলেছিলেন আমরা এক মন, এক প্রাণ? তাহলে আপনি জানেন না কেনো?”
” মনের খবর তো জানি! বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছো কিন্তু শরীরের খবর তো জানি না। কারণ এখনও তো এক মন,এক প্রাণ হলেও এক দেহ হয়নি।”
তৃষা লজ্জায় থতমত খেলো। লোকটা তো ভালোই বেকায়দায় ফেলতে পারে!
” কাল কয়টার দিকে আসবেন? “
” পারলে তো সূর্য উঠলেই চলে যেতাম। কিন্তু সেটা বড্ড বেমানান না? এজন্য ভাবছি সকাল দশটার দিকে আসবো।”
” বেশ। আমি তাহলে আম্মুকে সেটাই বলছি।”
” তৃষা!”
” জি বলুন। “
” আমাকে তোমার পরিবারের সবার পছন্দ হবে? “
” অবশ্যই হবে। আচ্ছা ডাক্তার সাহেব, আপনি কিন্তু বেশি ভালোমানুষি করে অতীতের কথা বর্তমানে টানবেন না। অতীত বর্তমানকে নষ্ট করে, ঝামেলা সৃষ্টি করে। “
” না আনবো না। যার সাথে সংসার করবো সে জানলেই হবে। আমি তো আমার দিক থেকে পরিষ্কার। “
” হুম হুম বুঝলাম। রাখছি এখন।”
” ঠিক আছে। কাল দেখা হচ্ছে তাহলে? “
” ইনশাআল্লাহ! “
” ইনশাআল্লাহ। শুভ রাত্রি। “
” শুভ রাত্রি “
তৃষা কল কেটে ফোনটা বুকে চেপে ধরে বিড়বিড় করে বললো,
” রাতটা আর শুভ হবে না আজ। সারা রাত অপেক্ষা করতে করতে ছটফট করবো,কখন সকাল হবে সেই আশায়!”
ঘরের এদিক থেকে ওদিকে পায়চারি করে যাচ্ছে তাহমি। এই নিয়ে পাঁচ বার কল দিলো সহনকে। কিন্তু রিসিভ করলোনা আর না তো কেটে দিলো। চিন্তা হয় না বুঝি? তাহমি ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে সময় দেখে নিলো আরেকবার। এগারোটা ছুঁইছুঁই! অফিস থেকে তো সাড়ে আটটার মধ্যে ফিরে সহন। তাহমিট সাতপাঁচ ভাবনার ছেদ করে ফোনের নোটিফিকেশন টোন বেজে উঠলো। মেসেজ এসেছে সহনের নম্বর থেকে,
❝ কালকে সকাল সকাল যাবো বাসায়, এখন ঘুমালাম। শুভ রাত্রি। ❞
তাহমির মেজাজ খারাপ লাগছে। ইচ্ছে করে এমন করলো মিচকে শয়তানটা। কী করবে এখন? পারলে এখুনি সহনের কাছে গিয়ে তুমুল ঝগড়াঝাটি করতো। ইশ ঝগড়া করার এই সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে ভাবতেই ডিপ্রেসড লাগছে তাহমির। অগত্যা সারা রাত বিছানায় এদিক-সেদিক করতে করতে শেষ রাতের দিকে ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো।
সকালের মৃদু রোদের আলোর সাথে হাত বাড়িয়ে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলছে কিশোরী অনিমা। স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে আছে সে। একা একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অর্না এগিয়ে গেলো ওর দিকে।
” কী রে অনিমা, এখানে একা একা দাঁড়িয়ে কী করছিস?”
পেছন থেকে অর্নার কন্ঠ শুনে ফিরে তাকাল অনিমা। ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটিয়ে হেসে বললো, ” কিছু না রে। “
” ইদানীং কেমন লাগছে তোকে। কেমন চুপচাপ হয়ে যাচ্ছিস!”
” কই? আমি তো ঠিকই আছি।”
” বুঝি না যেনো আমি। আচ্ছা তোর টিউটর কি ভেগেছে? “
আয়ানের কথা উঠতেই অনিমার হৃৎস্পন্দনের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ নিয়ে অবশ্য কিশোরী মন আপাতত ভাবছে না।
” না। লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। তাই আর চাইছি না আয়ান স্যার ভেগে যাক।”
অনিমার কথা শুনে অর্না চমকাল,থমকাল। বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে রইলো বান্ধবীর পানে। এ যেনো ভুতের মুখে রামনাম!
” অনিমা তুই কি কোনোভাবে তোর টিউটরকে ভালোটালো-বেসে ফেলেছিস?”
” ধ্যাৎ! কীসের ভালোবাসা? বাবার মুখের দিকে চেয়েই এই সিন্ধান্ত নিলাম। জীবনে ভালো কিছু করতে হবে। এভাবে লেখাপড়া করলে তো কিচ্ছু হবে না। “
” বেশ। তাহলে ঠিক আছে। “
দু’জনের কথোপকথনের মধ্যে ক্লাসের ঘন্টা বেজে উঠলো। অনিমা ব্যস্তসমস্ত ভঙ্গিতে বললো,
” চল চল ক্লাস শুরু হয়ে যাবে এখুনি। “
” ওহ হ্যাঁ চল।”
রান্নাঘরে কাজে ব্যস্ত আমেনা,তাহমি। তৃষা সাথে টুকটাক সাহায্য করছে অবশ্য। বিভিন্ন ধরনের নাস্তা তৈরি করছে। নুডলস, ডিম, মিষ্টি, শরবত, পাঁচ রকমের ফলমূল, সেমাই, ফালুদা, আরও কয়েকপ্রকার আইটেম থাকছে। হবু জামাইকে আপ্যায়নে কোনো ক্রটি রাখতে চাননা আমেনা ইসলাম।
” তৃষা তুই এখন ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে। দশটা প্রায় বেজে গেছে। আমাদেরও তো কাজ শেষ প্রায়।”
তাহমি বোনকে বললো। তৃষা মায়ের দিকে দৃষ্টিপাত করে দেখলো একবার। আমেনা ইসলামও মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো।
” ঠিক আছে আপাই।”
তৃষা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে বেডরুমে গেলো নিজেকে পরিপাটি করতে। এদিকে তাহমি আর তাহমির মা সব খাবারগুলো গুছিয়ে রেখে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলো বসার ঘরে। তাহমির মেজাজ খারাপ। এখনো সহনের আসার কোনো নামগন্ধ নেই! আয়ান সোফায় বসে ফোন ঘাঁটতে ব্যস্ত। এরমধ্যেই কলিংবেলের আওয়াজ ভেসে এলো। ন’টা পয়তাল্লিশ বেজেছে। অনিক নিশ্চয়ই আগে আগে আসবে না? তাহলে সহন এসেছে। তাহমি গিয়ে দরজা খুলে দিলো। সহন দাঁড়িয়ে আছে দরজার বাইরে।
” দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে ভেতরে ঢুকবো কীভাবে? “
” তাহমি জামাইকে ঢুকতে দে।”
মায়ের কথায় ভেতরে সরে দাঁড়াল তাহমি। সহন বাসার ভেতরে ঢুকে আয়ানের পাশের সোফায় বসলো। দরজা আঁটকে এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে তাহমি।
” কেমন আছেন মা?”
” এই তো আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো? বেয়াই আর বেয়ান কেমন আছেন? “
টি-টেবিলের ওপর শরবত,ফলমূল রেখে জিজ্ঞেস করলেন আমেনা ইসলাম। সহন হাসিমুখে উত্তর দিলো,
” সবাই আলহামদুলিল্লাহ। এগুলো লাগবে না এখন মা। আমার ভায়রাভাই আসুক দু’জন একসাথেই খাবো।”
” তাহলে শরবতটুকু অন্তত পান করো। গরম থেকে আসলে!”
” ঠিক আছে মা।”
সহন শরবতের গ্লাসটা হাতে নিয়ে তাতে চুমুক দিলো। আমেনা ইসলাম ফলমূলের বাটি নিয়ে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে রাখলেন। তাহমির বাবা নিজের ঘরের বারান্দায় বসে পত্রিকা পড়ছেন। গ্রিলের ফাঁক দিয়ে মাঝে মধ্যে ব্যস্ত সড়কে যানবাহনের চলাচলের দিকেও দৃষ্টিপাত করছেন। হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখে নিলেন একবার। ছেলেটার আসার সময় হয়ে এসেছে। বসা থেকে উঠলেন তিনি। হাতের পত্রিকা ঠিক জায়গায় রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে বসার ঘরের উদ্দেশ্যে বেরুলেন তিনি। মেয়ের পছন্দের উপর যথেষ্ট ভরসা আছে উনার। ছেলেমেয়েদের সব সময় ভালো কিছু শেখানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন বাবা-মা। তাহমির বাবা-মাও তার ব্যতিক্রম নয়।
চলবে,
( কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত। নিজ দায়িত্বে পড়বেন! )
ছেলেমেয়েদের সব সময় ভালো কিছু শেখানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন বাবা-মা। তাহমির বাবা-মাও তার ব্যতিক্রম নয়।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বসার ঘরে বসে আড্ডা দিচ্ছে আয়ান,সহন ও তৃষা। তাহমি পেয়াজু ভাজি করছে রান্নাঘরে। গরম গরম পেয়াজুর সাথে আড্ডা ভালো জমবে। অনিকের সাথে কথাবার্তা বলে পরিবারের সবারই বেশ ভালো লাগে। তাই আগামী শুক্রবার অনিকের বোন ও বোনের স্বামীকে নিয়ে বিয়ের কথাবার্তা বলতে আসতে বলেছেন তাহমির বাবা।
” আহা শালিকার মনে এখন কতো আনন্দ! সামনেই তার বিয়ে। আমাকে দেখো! আমার আর কখনো সামনে তো দূর পেছনেও বিয়ে আসবে না।”
সহন আফসোসের সুরে কথাটা বলতেই বসার ঘরে হাসির রোল উঠলো। তৃষার অবস্থা হাসতে হাসতে শেষ। আয়ান কোনোরকমে হাসি থামাল। তাহমি তো রান্নাঘরে কাজ করতে করতে সবকিছুই শুনছে আর লুচির মতো রাগে ফুলছে! আজকে রাতে খবর আছে বেটা সহনশীলের।
” দুলাভাই আপনি পারেনও বটে। আপু কিন্তু খেয়ে ফেলবে আমাকে হাহাহা। “
” তা কী আমি জানি না শালাবাবু! আমি তো চাই তোমার বোন আমাকে ইয়াম্মি ইয়াম্মি করে লুটেপুটে খেয়ে ফেলুক। “
শেষের কথাগুলো সহন একেবারে আস্তে করে বলার জন্য কেউ শুনতে পেলো না। আয়ান ভ্রু নাচিয়ে বললো,
” ফিসফিস করে কিছু বললেন মনে হয়? “
” আরে না শালাবাবু কিচ্ছু বলিনি। তা পেঁয়াজু কি আজ পাবো? না-কি একজন রান্নাঘরে বসেই সেগুলো সাবাড় করে ফেলবে?”
” আমি ছোঁচা না তোর মতো।”
হাতে খাবারের বাটি নিয়ে বসার ঘরে প্রবেশ করলো তাহমি। টেবিলের উপর রেখে দিয়ে এক পাশে দাঁড়াল সে। সবাই হাতে হাতে পেঁয়াজু নিয়ে খেতে শুরু করেছে এরমধ্যেই।
” এহহ আমি নাকি ছোঁচা! “
” আপু তুমি কিন্তু দুলাভাইকে ভুলভাল কথা বলতেছো।”
তৃষা দুলাভাইয়ের কথায় সমর্থন করে বললো। তাহমি ভেংচি কেটে বলে, ” বিয়ে তো হচ্ছে, বুঝবি বর-গুলো কতবড় বদের হাড্ডি হয়।”
” তারমানে বিয়ের নেগেটিভ রিভিউ দিচ্ছ আপাই? বিয়ে তাহলে করবো না?”
তৃষা জোরে হেসে উঠলো কথা শেষে। তাহমি বোনের কথায় কী বলবে ভাবনায় পড়ে গেল।
” শালিকা তুমি নিশ্চিতে বিয়ে করো। বিরোধী দলের কোনো কথা শুনবে না। অনিক সাহেব ভীষণ ভালো লোক,একদম আমার মতোই! “
” তুই ভালো? তুই ভালো এই কথা যদি ‘ভালো ’ নামক শব্দটা শোনে তাহলে সে নিজেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে।”
সহন কিছু বলতেই যাবে এমন সময় আমেনা ইসলাম এসে সবাইকে রাতের খাওয়াদাওয়া করে নিতে বললেন। আবহাওয়া ভালো না। মেঘ জমেছে আকাশে। যখন তখন কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। তাই বিদ্যুৎ যাওয়ার আগেই খাওয়াদাওয়ার পাট চুকিয়ে ফেলাই উত্তম।
ডাইনিং টেবিলে বসে ডিনার করছে বাবা ও মেয়ে। গত কয়েকদিন ধরেই মেয়ের পরিবর্তন লক্ষ্য করছেন অনিমার বাবা।
” অনিমা!”
” হ্যাঁ বাবা বলো।”
” কিছুদিন ধরে দেখছি তুমি কেমন আলাদা আচরণ করছো! আগের মতো নেই তুমি। তোমার কি কিছু হয়েছে? কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলো মা। আমি তোমার মায়ের মতো তোমার বন্ধু হয়ে উঠতে না পারলেও এতটুকু তো জানতে পারি!”
অনিমা খাবারের শেষ লোকমা মুখে দিয়ে পানি পান করলো।
” আমার কিছু হয়নি বাবা। তোমরা সবাই কেনো যে বলছো আমি আগের মতো নেই বুঝি না। শুধু লেখাপড়ার দিকে একটু মনোযোগ দিয়েছি।”
মেয়ের কথায় মৃদু হাসলেন তিনি। অনিমা হাত ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো ।
” আচ্ছা তাহলে ঘরে যাও। শুভ রাত্রি। “
” ঠিক আছে বাবা। সেইম টু ইউ। “
সঠিক সময় এলে অনিমা নিজে থেকেই তার মনের কথা বলবে বাবাকে। মেয়েটা এখন এমন পর্যায়ে আছে নিজের মনের কথা নিজেও বুঝতে পারছে না। এজন্যই বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকে তার মন মানসিকতা।
আকাশে মেঘগুলো এদিকে ওদিকে ছোটাছুটি করতে ব্যস্ত। সাথে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। থেকে থেকে বাতাসের গতিবিধিও ভালোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারেন্ট তো কখন চলে গেছে তার খেয়ালও নেই সহন ও তাহমির। মোমবাতি জ্বেলে যে যার মতো বিছানার দুই দিকে শুয়ে আছে। সহন যে ইচ্ছে করে এরকম এড়িয়ে যাচ্ছে তাহমিকে সেটা সে ভালোই বুঝতে পারছে। তোর একার ইগো আছে? আমার নেই? এসব ভেবে তাহমি নিজেও স্বইচ্ছায় সহনের কাছাকাছি যাচ্ছে না। বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে ঝড়ো হাওয়া। সহন হঠাৎ শোয়া থেকে উঠে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। সবকিছুই তাহমি খেয়াল করছে। জানাল দিয়ে বাইরে তাকিয়েছে সহন৷ আকাশের দিকে তাকিয়ে গুনগুন করে গান ধরলো সে..
উমম উমম উমম…
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি ,
এ কোন অপরূপ সৃষ্টি।
এত মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি,
আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি।
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি,
এ কোন অপরূপ সৃষ্টি।
এত মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি,
আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি।
এত মেঘের কোণে কোণে
এল বাতাস হুহুশনে।
এত মেঘের কোণে কোণে
এল বাতাস হুহুশনে।
রিমঝিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি
এ কি দুষ্ট অনাসৃষ্টি।
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি
ওগো বৃষ্টি তুমি মিষ্টি।
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি,
এ কোন অপরূপ সৃষ্টি।
এত মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি,
আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি।
গান শেষে পেছন ফিরে তাকালো সহন। তাহমি আগের মতো শুয়ে আছে। যা ভেবেছিল তা হচ্ছে না! অগত্যা সহনও গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। কিন্তু পরক্ষণেই চমকাল সে। তাহমি হঠাৎ করে সহনের পেটের উপর উঠে বসেছে। সহনের তো চক্ষু কপালে উঠার জোগাড় হয়েছে।
” এই তাহমি পেত্নীতে ভড় করলো নাকি তোকে?”
” না! তোকে জ্বালিয়ে মারবো বলে নিজেই পেত্নী হয়ে গেছি। “
তাহমি সময় দিলো না সহনকে। দু’জনের বক্ষ যেখানে একত্র হয় সেখানে ঝুঁকে একহাতে সহনের চুলগুলো আঁকড়ে ধরে অন্য হাতে কাঁধ চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। সহসাই দু’জনের শরীরে শিহরণ বয়ে গেলো। সহন এটাই চাচ্ছিল এতদিন। তাহমি যেনো নিজে থেকেই তাকে আদর করে কিংবা কাছে পাওয়ার জন্য আকুল হয়ে যায়। সহন নিজের হাত তাহমির পিঠে রেখে জোরে জোরে স্লাইড করছে। তাহমিও চুলগুলো আঁকড়ে ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মতো ওষ্ঠদ্বয়ে তার থাবা বসিয়ে যাচ্ছে। ক্ষণকাল বাদে থামলো তাহমি। বিছানায় বসে প্রলম্বিত নিঃশ্বাস ফেলতে ব্যস্ত হয়ে গেছে সে। সহন শুয়ে আছে। তাহমি ওর দিকে তাকাতেই উঠে বসলো। খোলাচুল খোঁপা করে দিলো তাহমির। তাহমির অবাক করা দৃষ্টি দেখে মৃদু হাসলো সহন।
” ভাবছিস চুল বাঁধলাম কেনো?”
” হ্যাঁ। এমনিতে তো চুল খুলে দিস মাঝে মধ্যে। “
” এখন কাজের সময়। এতক্ষণ এই চুলগুলো আমার চোখেমুখে পড়ে ভীষণ বিরক্ত করছিল রে। এখন আর পারবে না।”
” বুঝলাম এবার।”
সহন তাহমিকে কোলে তুলে বসালো। দু’হাতে গলা আঁকড়ে ধরে বসলো তাহমি। এক হাত দিয়ে পেটে স্লাইড করতে করতে অন্য হাতে কামিজের পেছন দিক থেকে চেইন খুলে দিলো সহন। কেঁপে উঠল তাহমি। একটু লজ্জা লজ্জা লাগছে এখন৷ এভাবে চোখ চোখ রেখে থাকা যায়? সহন তাহমির ভাবগতিক বুঝতে পেরে অন্য দিকে দৃষ্টিপাত করলো। কাঁধ পর্যন্ত নামিয়ে ফেললো কামিজ। গলা থেকে ঘাড় এবং সর্বশেষ ঘাড় থেকে ঠোঁট ছোঁয়াতে ছোঁয়াতে কাঁধে এসে থামলো সহন। তাহমি চোখ বন্ধ করে ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলছে। মনে হচ্ছে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে সে। সুখ সুখ যন্ত্রণায় আবিষ্ট হচ্ছে সমস্ত শরীর ও মন।
চলবে,

Carnation Academy

( প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
নির্দিষ্ট স্থানে বসে মনোযোগ সহকারে পড়ছে অনিমা। আয়ান সামনে বসে খুব সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তাকে। ইদানীং আয়ানের কেমন অদ্ভুত অনুভব হয়। হুটহাট অনিমার কথা ভাবতে ভালো লাগে তার। মেয়েটার বকবক, হঠাৎ করে কাছে আসা,নির্লজ্জতা সবকিছুই মিস করে ভীষণভাবে। নিজের মনকে শান্ত করার বহু চেষ্টা করছে সে। অনিমা নেহাৎ পিচ্চি মেয়ে। সবে এসএসসি দিবে। এই মেয়েকে নিয়ে এরকম অনুভূতি সৃষ্টি হওয়া ঠিক নয়। তার কেথায় অনিমার বাবার অগাধ সম্পত্তির প্রভাব-প্রতিপত্তি আর কোথায় মধ্যবিত্ত আয়ান!
” আয়ান স্যার একটু দেখুন তো পড়াটা। “
অনিমার ডাকে ভাবনার সুতা ছিড়ে বাস্তবে ফিরল আয়ান। নড়েচড়ে উঠলো সে।
” কই দেখি।”
” জি স্যার। “
বই এগিয়ে দিলো অনিমা। আয়ান যথাসাধ্য সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলো পড়া। অনিমার ভীষণ ইচ্ছে করে আয়ান স্যারকে একবার জড়িয়ে ধরতে। এতদিন পর্যন্ত সমবয়সী ছেলেদের প্রতি একটা আলাদা ঝোঁক থাকলেও গত দুই মাসে নিজের থেকে প্রায় নয় বছর বয়সী স্যারের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে কিশোরী মন। সামনেই পরীক্ষা! হাতেগোনা একমাস সময় আছে। তাই যথাসম্ভব নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখে এসমস্ত অবাধ্য ইচ্ছেকে মাটি চাপা দিয়ে রাখছে অনিমা। তাছাড়া আয়ান স্যারের যে কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই তার কি গ্যারান্টি আছে?
” আচ্ছা অনিমা সামনেই আমার ছোটো বোনের বিয়ে। তুমি চাইলে আমি তোমার বাবাকে বলবো তোমাকে যেতে দেওয়ার জন্য। মানে দাওয়াত করলাম। যদিও তোমার তো তেমন বাধ্যবাধকতা নেই বাসা থেকে। “
পড়ানো শেষে অপ্রয়োজনীয় আলাপ জুড়ে বসলো আয়ান। কী নিয়ে কথা বলবে ভাবতে ভাবতে তৃষার বিয়ের কথা মনে পড়লো আয়ানের। অনিমা ক্ষণকাল চুপ থেকে ভেবে নিলো কিছু একটা। তারপর বললো,
” হ্যাঁ আমি যাবো। আপনি বাবাকে বলবেন। “
” ঠিক আছে। বিয়ের যেহেতু দশ দিন বাকি,আমি তিন কিংবা চারদিন আগে আঙ্কেলকে বলবো।”
” ঠিক আছে আয়ান স্যার। “
আয়ান জবাবে মুচকি হেসে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। অনিমা তো সেখানেই থমকে গেছে। লোকটার মুচকি হাসিতে কী ছিলো? মায়া নাকি জাদু!
বই পড়ছিল তাহমি। বিকেলের এই সময়টাতে তাহমি বই পরে কাটায়। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ফ্যান্টাসি গল্পের প্রতি আলাদা এক আকর্ষণ কাজ করে তার। বহুদিন ধরে তাই ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা বইটা পড়ার জন্য হাসফাস করছিল। তবে কিছুতেই কেনা হচ্ছিল না। এইতো গতকাল সহন রাতে বইটা কুরিয়ার থেকে নিয়ে এলো। অনলাইন বুকশপ থেকে অর্ডার করেছিল তাহমিকে না জানিয়ে। হুট করে বইটা হাতে পেয়ে যে কী ভীষণ খুশি হয়েছিল মেয়েটা, সেই খুশিটুকুর সাক্ষী হবে বলেই সারপ্রাইজ দিয়েছে সহন। ড্রাকুলা নামটাই একটা আস্ত ভয় ধরিয়ে দেওয়ার মতো জিনিস। তাহমিও বইয়ের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। এমন সময় কল এলো সহনের। বিরক্ত লাগলো তাহমির। আপাতত বইয়ের দিক থেকে মনোযোগ সরাতে চাচ্ছে না সে। কিন্তু সহনও যে নাছোড়বান্দা! ননস্টপ কল করে যাচ্ছে সে। অগত্যা বাধ্য হয়ে কল রিসিভ করলো তাহমি।
” কখন থেকে কল করছি? কানে কি কম শুনিস ইদানীং? “
” এতো কল দিচ্ছিস কেন তাই বল। “
” ওরে ব্যস্ততা! “
” সহন ঢঙ করিস না। “
” খবিশের মতো করিস না। “
” উফ!”
” কী হলো? আদর লাগবে? ডু ইউ ওয়ান্ট? “
” আই ওয়ান্ট তোর কল্লা। বদের হাড্ডি একটা। বই পড়ছি আমি। “
তাহমির ঝাঁঝাল কথায় ফিক করে হেসে দিলো সহন। তবে নিঃশব্দে! মহারাণী শুনলে দক্ষযজ্ঞ বাঁধিয়ে ফেলবে।
” আচ্ছা পড় তাহলে। কিন্তু শোন…”
” হু বল।”
” রাতে শাড়ি পরবি? বেবি পিংক কালারের শাড়িতে তোকে দেখতে ইচ্ছে করছে খুব। “
সহনের ভালোবাসাময় আবদারে তাহমির মনটা কেমন চঞ্চল হয়ে উঠলো। মুচকি হেসে বললো,
” বেলীফুলের গাঝড়া এনো, খোঁপায় দিবো।”
” বেশ আনবো। রাখছি। পড়ো এখন।”
ফোন কেটে দিলো সহন। তাহমির ঠোঁটের কোণে সুখময় হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। ইশ মানুষটা কত্ত ভালোবেসে ফেলেছে তাকে!
আজ শুক্রবার,বেলা তিনটে বেজেছে। সম্পর্কের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সেরকমভাবে ঘুরতে যাওয়া হয়নি অনিক ও তৃষার। শাড়ি পরে কখনো প্রিয়তমর সামনেও আসা হয়নি। তাই আজকে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হতেই শাড়ি পরে যাওয়ার সিন্ধান্ত নিয়েছে তৃষা। সাদা-কালো মিশেলের একটা সিল্কের শাড়ি পরেছে তৃষা সাথে কালো হিজাব। ঠোঁটে লাইট লিপস্টিক, চোখে কাজল এতটুকু সাজগোছ যথেষ্ট। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চোখে আইলাইনারের লাস্ট ফিনিশিং দেখে নিলো সে। এরমধ্যেই মেসেজ এলো অনিকের।
” শাড়ি পরে আসবে আজ?”
তৃষার মাথায় হঠাৎ দুষ্ট বুদ্ধি এলো। ঠোঁট কামড়ে হেসে মেসেজের রিপ্লাই দিল, ” চেয়েছিলাম।”
” তাহলে? “
” মা বললো শাড়িতে ভালো লাগে না। “
” ওওও। “
” হু।”
” বেশ এসো তাড়াতাড়ি। আমি আছি তোমাদের বাড়ির সামনের মাঠে। “
” তবুও বলতে পারলেন না,শাড়ি পরে আসো!”
অনিক তৃষার মেসেজ দেখে হাসলো। মেয়েটা তাহলে তার না বলা কথা বুঝে ফেলতে সক্ষম হলো।
” হাহা! এসো তাড়াতাড়ি। “
” আসছি,দাঁড়ান একটু।”
ফোনের কনভারসেশন থামিয়ে হ্যান্ডব্যাগ নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে মা’কে বলে বাসা থেকে বেরুলো তৃষা। বাসা থেকে ঠিক পাঁচ মিনিট হাঁটলে ছোটো একটা মাঠ পড়ে। ওখানেও ক’দিন পর দালানকোঠা উঠবে। দূর থেকে তৃষাকে দেখেই কেমন শীতলতা বয়ে গেলো হৃদয়ে। আনমনে তাকিয়ে সামনে এগোতে লাগলো অনিক।
” মুখে মাস্ক পরে নিতে। “
” মাস্ক পরলে নিঃশ্বাস নিতে অস্বস্তি লাগে আমার। “
তৃষার হাত আলগোছে নিজের হাতে নিয়ে নিলো অনিক। অনিক যখন তৃষার হাত এভাবে ধরে রাখে তৃষার তখন মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বিশ্বস্ত হাতে হাত রেখেছে সে।
” আমার কেমন জেলাস ফিল হচ্ছে তৃষা। অন্য কেউ তোমার সৌন্দর্য দেখবে বলে।”
অনিকের বাচ্চামিতে তৃষা অধর এলিয়ে দিলো।
” তাহলে এরপর থেকে বোরকা পরবো বরং। “
” সত্যি? ইশ এতদিন এই লক্ষ্মী মেয়েটা কোথায় ছিলো! “
” ওই যে সামনের বাড়িটা দেখছেন ওখান থেকে সোজা গিয়ে বামদিকের জলপাই রঙের বিল্ডিংয়ের মধ্যে একটা রুমে ছিলাম আমি। “
দু’জনেই হাসতে হাসতে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। আজ ঠিকানা বিহীন গন্তব্যে ছুটবে গাড়ি। কোথাও যাওয়ার তাড়া নেই ওদের।
” মামা একটা বেলীফুলের গাজরা দিন আর সাথে দু’টো গোলাপ।”
ফুলের দোকানীকে বললো সহন। দোকানী হেসে সেগুলো এগিয়ে দিলো সহনের দিকে।
” এই লন মামা। ষাট টাকা দেন।”
” সত্তর টাকা হয়েছে না?”
” দশ টেহা লাগবো না আমার। “
লোকটার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলো সহন। খুশি হয়ে একশো টাকার একটা নোট জোর করে হাতে গুঁজে দিয়ে বাড়ির দিকে এগোলো। সামনের গলি পেরোলেই সহনের বাসা। গলির মোড়ে ঢুকতেই মায়ের নম্বর থেকে কল এলো। থমকে দাঁড়াল সহন। মা তো দরকার ছাড়া এখন কল দিবে না! দ্রুত কল রিসিভ করলো সহন।
” সহন সহন তুই তাড়াতাড়ি আ্যম্বুলেন্স নিয়ে বাসায় আয়। তাহমির অবস্থা ভালো না! আগুন আগুন লেগেছিল রান্নাঘরে…. “
সহন আরকিছুই শুনতে পারলো না। ফোন পকেটে রেখে ছুটলো বাড়ির দিকে। হাত থেকে পড়ে গেলো ফুলগুলো!
হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে তাহমিকে। করিডরে বসে আছে ফরিদা খান, তাহমির বাবা ও সহনের বাবা। আয়ান,সহন পায়চারি করছে অবিরত। তাহমির মা খবরটা সহ্য করতে না পেরে সেন্সলেস হয়ে গেছেন। বাসায় উনাকে দেখছে তৃষা। সহন বারবার গিয়ে দরজার বাইরে থেকে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করেছে তাহমিকে কিন্তু পারেনি। ডাক্তার এখনো কিছু জানাননি বলে চিন্তিত সকলে। কাঁধ, চেহারার একপাশ পুড়ে গেছে, ভেতরে হয়তো আরও ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান করছে সহন। বাকিটা ডাক্তার জানাবে বলে অপেক্ষা করে আছে সবাই।
চলবে,
Carnation e book

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *