বন্য প্রণয় 8,9,10

বন্য প্রণয়
( কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
সহনের দুই হাত তাহমির পিঠে,কখনো- সখনো আবার কোমরে। মোটকথা কিছুতেই আজ তাহমিকে ছাড়বে না সহন। পানিতে ভিজিয়ে একেবারে জ্বর উঠিয়ে দিবে। কিন্তু বোকা সহন এটা ভাবছে না তাহমিকে ধরে রাখতে গেলে তো তার নিজেরও ঠান্ডা লাগবে!
” তাহলে ধরে থাক। দেখি কতক্ষণ থাকতে পারিস এভাবে। “
হঠাৎ তাহমির এতটা আত্মবিশ্বাসী মনোভাব দেখে চমকাল সহন।
” দেখতেই থাক শয়তানী। “
সহন আর কিছু বললো না। শুধু তাকিয়ে রইলো লেডি মাফিয়ার দিকে। তাহমির ঠোঁটের কোণে দুষ্ট হাসি। তাহমি একহাতে সহনের ঘাড় চেপে ধরে আর অন্য হাত কপালে ছুঁইয়ে স্থির করে রেখেছে। তারপর ধীরে ধীরে সেই আঙুলের স্পর্শ কপাল থেকে নাকের ডগায়, সেখান থেকে সোজা ঠোঁটের ওপর এসে থামলো। সহন ততক্ষণে একটু লাগামছাড়া হয়ে গেছে। ভিজে একাকার অবস্থা দু’জনেরই। কালো শাড়ি ভিজে ফর্সা চামড়ার সাথে লেপ্টে আছে। সহন আঁড়চোখে তাহমির বক্ষ বিভাজনের খাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাহমি বিষয়টা বুঝতে পেরে শাড়ি দিয়ে আরেকটু আড়াল করলো নিজের শরীর। সেটা দেখে সহন থতমত খেয়ে গেছে। এরমধ্যে হাতের রাশ আলগা গেছে তার। তাহমি চোখ টিপ্পনী দিয়ে সহনের পায়ের উপর পা রাখে। সহন ততক্ষণে তাহমিকে ছেড়ে দিয়েছে পুরোপুরি। তাহমি একহাতে সহনের ঘাড় চেপে ধরে অন্য হাত কাঁধে রেখেছে। সহনের নিঃশ্বাসের গতি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুন্দরী বউ আশকারা দিলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখা দুষ্কর মনে হচ্ছে। তাহমি ধীরে ধীরে সহনের অধরে নিজের ওষ্ঠ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আবেশে সহনের চাহনিতে মাদকতা প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু শেষ মুহুর্তে এসে তাহমি ঠোঁটের সাথে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেওয়ার বদলে সহনের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
” দেখেছিস ধরে রাখতে পারলি না? এতো নিয়ন্ত্রণহীন হলে তো যে কেউ… “
তাহমি ঝটকায় সহনকে ছেড়ে দিয়ে হাসতে হাসতে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। সহন তখনও সবকিছু সামলে উঠতে পারেনি। কয়েক মিনিট ওভাবেই ওয়াশরুমে ঝরনার নিচে দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর এতক্ষণের ঘটনা দ্বিতীয় বার স্মরণ করতেই হকচকিয়ে উঠলো সহন। ছিঃ কী লজ্জা! কী লজ্জা! শত্রুর সাথে রোমান্স করতে যাচ্ছিল সে? উফ! তাহমি ঘাড়ে, কাঁধে ছুঁয়ে দিয়েছে ভাবতেই আশেপাশে তাকিয়ে সাবান হাতে নিলো সহন। তারপর আচ্ছামত ঘষতে শুরু করলো নিজের শরীর। নিজেকে শত্রুর স্পর্শ মুক্ত করা চাই!
আজ তিন দিন পর তৃষা এলো ওহিকে পড়াতে। দিনা ও ওহি দু’জনেই তৃষাকে দেখে ভীষণ খুশি হয়েছে। ওহির রুমে এসে সবে বসলো তৃষা। এরমধ্যেই ওহি নিজে থেকেই পড়তে বসেছে। অবাক করা বিষয় হলো কোনো প্রকার প্রশ্ন করেনি ওহি। এমনিতে মেয়েটার প্রচুর খেয়াল। কিন্তু আজকে কেনো প্রাইভেটে না আসার কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন করলো না সে বিষয় ভাবুক হয়ে গেছে তৃষা।
” আজকে সন্ধ্যায় তোমার আমাদের বাসায় ইফতারি করতে আসতে হবে। কোনো না শুনবো না কিন্তু তৃষা।”
তৃষার ভাবনার বারোটা বাজিয়ে ঘরে ওহির মা দিনার প্রবেশ ঘটলো। চমকাল তৃষা কিছুটা। আজ হঠাৎ সন্ধ্যায় কেনো দাওয়াত? এমনিতেও দিনা ভালো মনের মানুষ কিন্তু রাত-বিরেতে কখনো দাওয়াত করেনি। অবশ্য গত রমজানে তো এ বাড়িতে পড়াতে আসতো না তৃষা।
” আপু রাতে তো বাসা থেকে বেরোনোর অনুমতি নেই। সন্ধ্যায় আসলে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যাবে তো!”
তৃষাদের বাসা থেকে ওহিদের বাসায় আসতে পঁচিশ থেকে ত্রিশ মিনিট লাগে বাসে। যদিও বাসা থেকে তেমন জোরাজোরি করবে না কিন্তু তৃষা নিজেই চাইছে না রাতে চলাচল করতে। তৃষার কথায় দিনা তেমন একটা পাত্তা দিলো না। ভাইয়ের কথামতো কাজ করছে সে।
” সেসব আমি বুঝবো। তুমি বরং তোমার মা কিংবা ভাইয়ের সাথে আমাকে কথা বলিয়ে দিও বাড়ি গিয়ে। যাওয়ার সময় আমাদের বাড়ির গাড়ি তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসবে।”
তৃষা জানে ওহিদের নিজস্ব গাড়ি নেই। তবে ওর মামার আছে। কিন্তু আসার সময় তো বাড়ির মধ্যে সেই গাড়ি ছিল না। আর থাকার কথাও নয়। অনিক চৌধুরীর তো এখানে থাকার কথা নয়। সে যাইহোক গাড়ি নেই কথাটা বলে দিনাকে বিব্রত করতে চাচ্ছে না তৃষা। যখন বলেছে পৌঁছে দিয়ে আসবে তাহলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা আছে।
” ঠিক আছে। আমি বাসায় গিয়ে আম্মুকে কথা বলতে বলবো। “
” যাক তাহলে আজ আমরা একসাথে ইফতার করছি।”
ওহি পড়া বাদ দিয়ে এতক্ষণ দুজনের কথোপকথন শুনছিলো। এ পর্যায়ে সে দুঃখী মুখ করে বলে উঠলো,
” মা আজকে আমি রোজা রাখতে পারিনি বলে কি তোমাদের সাথে ইফতার করতে পারবো না? “
ওহির প্রশ্নে দিনা ও তৃষা মুচকি হাসলো। বেচারা ওহি মলিন মুখে তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে ।
” অবশ্যই পারবি। এখন মন দিয়ে পড়াশোনা কর। আচ্ছা আমি এলাম। তুমি পড়াও।”
শেষের কথাগুলো তৃষাকে উদ্দেশ্য করে বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো দিনা। পড়াশোনার সময় দিনা এ ঘরে খুব কম আসে।
আসরের আজানের ধ্বনিতে চারদিক মুখরিত হচ্ছে। সামনেই মসজিদ হয়তো। সেদিক থেকে শব্দ বেশি শোনা যাচ্ছে। পার্কের বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে সহন ও নীলা। আজকে সহন রোজা বলে আর কফিশপে বসেনি। নীলা অবশ্য বলেছিল কিন্তু সহন কোনো প্রকার বুঝিয়ে-সুঝিয়ে না করে দিছে।
” আমার আর ভালো লাগে না সহন। তুমি সব সময় তোমার বউয়ের সাথে থাকো। ওর সাথে নিশ্চয়ই ইন্টিমেট হও? খুব আদর করো?”
সহন আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কয়েকজন নীলার এ ধরনের কথা শুনে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। মৃদুস্বরে সহন বলে,
” আস্তে কথা বলো নীলা। আর এসব কথা কেউ বলে এভাবে? তাহমির সাথে আমার কোনো কোনো সম্পর্ক নেই। আর হবেও না। “
নীলা খিলখিল করে হেসে উঠে। দুনিয়ার কোনো লাজলজ্জা যেন ওর মধ্যে নেই! তুলনামূলক আস্তে বলে,
” তা অবশ্য ঠিক। তিন-চার বছরেও আমার সাথেই ইন্টিমেট হতে পারলে না তারপর তো অল্প দিনে ওর সাথে! “
নীলার এ ধরনের কথাবার্তা সহনের বিরক্তিকর লাগছে। কথার মধ্যে কোথাও যেনো সহনকে অক্ষম বলে অপমান করলো বলে মনে হলো সহনের। সব মেয়েরা আসলে এক রকম না। কেউ প্রেমিকের স্পর্শ এড়িয়ে চলে আবার কেউ স্বেচ্ছায় উজার করে দিতে চায়। নীলা হলো তেমনই মেয়ে। কতবার যে সহনের সাথে ঘনিষ্ট হতে চেয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। নেহাৎ সহন অতটা আধুনিক নয় বলেই নিজেকে যথাসম্ভব সামলে রেখেছে।
” নীলা ফিজিক্যাল রিলেশনশিপ শুধু বিয়ের পরের জন্য। ভালোবাসলেই এসব করতে হয়? আমি কী তোমাকে না ছুঁয়ে কম ভালোবেসেছি এত বছর? এই একটা জিনিস বাদে কোনটার অভাব রেখেছি বলো? এটাও পূর্ণ করবো শীঘ্রই, বিয়ে হোক তারপর। “
” তোর মতো সেকেলে মন মানসিকতার ছেলেকে বিয়ে করার জন্য আমি বসে নেই। “
মনে মনে কথাটা বলে হাসলো নীলা। সহন ভাবল তার কথায় ভালো লেগেছে নীলার তাই ঠোঁটের কোণে হাসি।
” এজন্যই তোমাকে এতো ভালোবাসি সহন। আচ্ছা টাকাগুলো দাও। সন্ধ্যা হতে বাকি নেই বেশি।”
সহন পকেট থেকে দশ হাজার টাকার একটা বান্ডিল বের করে নীলার হাতে দেয়। নীলাকে দেওয়ার জন্যই নগদ টাকা সাথে নিয়ে এসেছে। নয়তো কার্ডে সব টাকা থাকে সহনের।
” এই নাও। “
” আচ্ছা আমি আসি এখন। আর হ্যাঁ তোমার বউয়ের থেকে দূর থেকো।”
নীলা নিজে থেকেই সহনের ললাটে চুম্বন আঁকে। সহন জবাবে হাতের তালুতে ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দিলো। নীলার যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে রইলো সহন। হঠাৎ করে তাহমির কথা স্মরণ করতেই আঁতকে উঠলো সে। যদি তাহমি কোনো প্রকার জেনে যায় নীলাকে সে এভাবে চুম্বন দিলো তাহলে! না,না এসব আর করবে না। যা করার তাহমিকে ডিভোর্স দিয়ে নীলাকে বিয়ে করার পর করবে। সহন নিজে থেকে এসব করতো না। কিন্তু নীলা আনরোমান্টিক বলে রাগ করে বলেই এতটুকু আদর করা। সহন মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে ছুঁয়ে দেওয়া মানেই ভালোবাসা নয়,যেটা কেবল স্পর্শে বিরাজমান সেটা প্রেম। প্রেম আর ভালোবাসা এক নয়। এঁরা একে অপরের সমানুপাতিক বটে তবে অভিন্ন।
চলবে,
যাদের রোমান্স ভালো লাগে না এড়িয়ে যাবেন।🤐
#বন্য_প্রণয়
#পর্ব_৯
(কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
মাগরিবের আজান দিতে বেশি দেরি নেই। মিনিট পঁচিশে বাকি। আয়ান নিজে সাথে করে ওহিদের বাসার সামনে নিয়ে এসেছে বোনকে। তৃষার মা একটু দোনোমোনো করলেও আয়ানের কথায় আর না করেনি তৃষাকে,ওহিদের বাসায় আসতে। গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে দিনা। আয়ানকে দেখা মাত্রই দিনা কিছুটা মুখ আড়াল করে সহাস্যমুখে বলে,
” ভাইয়া আপনিও আসন তৃষার সাথে। একসাথে ইফতার করবেন।”
আয়ান কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো।
” ধন্যবাদ আপু। আমি বাইরে ইফতার করবো আজ। আপনারা ঘরে বসে একসাথে ইফতারি করুন বরং।”
” বেশ তাহলে আরেকদিন আসবেন অবশ্যই। “
” চেষ্টা করবো বোন। তৃষা আমি গেলাম। তোর হলে আমাকে কল দিস। “
তৃষাকে উদ্দেশ্য করে শেষের কথাগুলো বললো আয়ান। দিনা আগবাড়িয়ে বললো,
” আপনি বাসায় চলে যান ভাইয়া। আমার নিজস্ব গাড়িতেই তৃষাকে পাঠিয়ে দিবো। চিন্তা করবেন না।”
” অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার বোনের জন্য এতটা ভাবার জন্য। কিন্তু আপু তৃষাকে সাথে নিয়েই বাসায় ফিরবো আমি। মায়ের আদেশ বলতে পারেন।”
” বেশ ঠিক আছে তাহলে।”
” হ্যাঁ আসছি আমি। “
আয়ান উল্টো পথে পা বাড়াল। তৃষা ও দিনা ঢুকলো বাড়ির ভেতর। বসার ঘরে ঢুকতেই ওহিকে দেখে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটলো তৃষার। ওহি দাঁড়িয়ে আছে তার জন্যই।
” চলো খাবার টেবিলেই বসি গিয়ে। সবকিছু রেডি করে রেখেছি।”
তৃষা মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো। সবাই ডাইনিং টেবিলের দিকে এগোলো। চেয়ার টেনে বসলো তিনজন। এরমধ্যেই গলা খাঁকারি দিয়ে সেখানে উপস্থিত হলো অনিক। তৃষা বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে অনিকের দিকে। ওহি খিলখিল করে হাসছে। অনিক ভ্রু নাচিয়ে ইশারা করতেই তৃষা দৃষ্টি নত করে ফেললো। মনে মনে এতশত প্রশ্নরা তাড়া করতে লাগলো তাকে। লোকটা আজকে কীভাবে এখানে? তাহলে কি এ সপ্তাহে এখানেই থেকে গেছে? কিন্তু কেনো! আগে জানলে কখনো ইফতারের দাওয়াত কবুল করতো না তৃষা। এখন কিছু বলাও যাবে না। তৃষা চোখ বন্ধ করে কয়েকবার নিঃশ্বাস ফেললো। নাহ,ভাইয়ার কথামতো মনে করে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো তৃষা।
” আর কিছু বাকি আছে দিনা? থাকলে বল এখনও সময় আছে। আমি ঝটপট তৈরি করে আনবো। “
অনিক হাসি হাসি মুখে বোনকে জিজ্ঞেস করলো। দিনা আনন্দে আটখানা হয়ে বলে,” আরকিছুই লাগবে না। এতকিছু তো তৈরি তুমিই করলে। আমি শুধু সাহায্য করেছি। এখন ওজু করে এসে বসো আমাদের সাথে। “
তৃষা দ্বিতীয় বারের মতো চমকাল। টেবিলে সাজিয়ে রাখা সব খাবারের আসলে রাঁধুনি ডাক্তার সাহেব? এবার ভালো করে টেবিলে রাখা খাবারের দিকে দৃষ্টিপাত করলো তৃষা। বুট, মুড়ি, চার রকমের শরবত, ডিম সেদ্ধ, তরমুজ, ফেলুদা, কয়েক পদের ফল, পাটিসাপটা পিঠা, খেজুর, বেগুনি, আলুর চপসহ নানান প্রকার খাবারের সমোরোহ। একজন পুরুষ মানুষ এতকিছু ধৈর্য ধরে কীভাবে রান্না করলো তা-ও রোজা রেখে সেসব ভাবছে তৃষা। দিনার কথামতো অনিক ওজু করে এসে একটা চেয়ার টেনে বসলো। ওহির পাশের চেয়ারেই। লোকটার মতিগতি বোঝা দ্বায়। এমন করে তৃষার দিকে তাকাচ্ছে মনে হয় কত ভালো সম্পর্ক দু’জনার!
মাগরিবের নামাজ শেষে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিয়েছিল তাহমি। এমন সময় ঘরে প্রবেশ করলেন সহনের মা। শ্বাশুড়িকে দেখে হুড়মুড়িয়ে উঠে বসলো মেয়েটা।
” আহা এভাবে উঠে বসলি কেনো? শুয়ে থাক। আমি বসে কথা বলছি।”
তাহমির পাশে বসে বললেন ফরিদা খান। উনাকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে। তাহমি বিষয়টা বুঝতে পেরে ভালো করে উনার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো,
” কী হয়েছে মা? তোমাকে এরকম দুশ্চিন্তাগ্রস্ত লাগছে! “
” আমার কিছু হয়নি রে তাহমি। তোর কী হবে সেসব ভাবছি। আমি বেশ বুঝতে পারছি তোদের মধ্যে কিছু ঠিকঠাক হয়নি এখনো। নিজেদের কেমন অপরাধী লাগে। আমাদের উচিত ছিলো না ওভাবে বিয়েটা দেওয়ার। তোর বিয়ে না হলে না হতো। বিয়ে ভাঙলে পরে আর বিয়ে হতোনা এমনটা তো নয়।”
হতাশাগ্রস্ত হয়ে বললেন সহনের মা। তাহমি বুক চিঁড়েও দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। যতই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করুক না কেনো দিনশেষে তো সে একজন মানুষ! প্রতিটি মানুষের ভেতরই একজন শিশু বসবাস করে। আর সেই শিশুসুলভ মন নীলার অস্তিত্ব মানতে পারে না। তবুও সবকিছু ঠিক হবে ভেবে এগিয়ে যাচ্ছে জীবন নামক পথে। বিয়ে যেভাবেই হোক কোনো স্ত্রী তার স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক মানতে পারে না।
” উঁহু এসব কেন বলছো? হ্যাঁ এটা ঠিক আমার বিয়ে পরে হতো। কিন্তু মনে করো তখন যদি তোমার ছেলের থেকেও ঝামেলার কোনো মানুষ আমার জীবনে আসতো? তোমার ছেলের তো কোনো বদঅভ্যেস নেই। শুধু একটা প্রেমিকা আছে এই যা। আসলে বিয়েটা তো মানতে পারেনি এজন্য বউ আছে এটাও মনে করছে না সহন। তাই বাইরের প্রেমিকা ছাড়তে পারছে না। একসাথে থাকতে থাকতে ঠিক বউয়ের অস্তিত্ব টের পাবে। আমি সোজা করে ফেলবো তোমার ছেলেকে।”
তাহমির কথায় কিছুটা প্রশান্তি লাভ করেন ফরিদা। তাহমির হাতে হাত রেখে বললেন,
” তুই সারাজীবন এরকমই থাকিস তাহমি। তুই আগে আমার মেয়ে, ছেলের বউ পরে। “
” ঠিক আছে আম্মাজান। এভাবেই থাকবো।”
উচ্ছসিত কন্ঠে হেসে বলে তাহমি। এমন সময় সহন চলে আসে। সন্ধ্যায় বাইরে ছিলো আজ সে। ছেলেকে দেখেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন ফরিদা।
” আমি আসছি বরং তাহমি। দেখ সহনের কিছু লাগবে কি-না। “
মা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই সহন তাহমির দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে বলে,
” পেত্নী আবার দেখবে প্রয়োজন!”
তাহমি কিছু বললো না। ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো সহনের দিকে। বুকে মুখ গুঁজে শুঁকতে লাগলো। সহন চুলের মুঠি ধরে তাহমিকে দূরে সরিয়ে দিয়ে ফের বললো,
” জানতাম তো কুত্তার মতো আসবি শুঁকতে। কত্ত খারাপ রে তুই! “
” ওই হুলোবেড়াল আমি খারাপ আর তুই কি দুধে ধোঁয়া তুলসীপাতা? তোর গায়ে তো গন্ধ পেলাম না কিন্তু কপালে অস্পষ্ট লিপস্টিকের দাগও কি দেখিনি?”
চকিতে কপালে হাত দিয়ে ঘষতে শুরু করলো সহন। শরীরের পারফিউমের ঘ্রাণ সরাতে নতুন একটা পারফিউম মেখে আসলো। কিন্তু কপালের কথা খেয়াল নেই! ইশ কেন যে নীলা ঠোঁটে লিপস্টিক ব্যবহার করে? তাহমির মতো লিপস্টিক না দিলে তো আজ এই ঝামেলা পোহাতে হতোনা! তাহমি ততক্ষণে সহনের কপালে চিরুনী দিয়ে ঘষতে শুরু করেছে।
” কী করছিস তাহমি? ছিঁলে যাবে তো কপাল! উহ লাগছে। “
” চোপ এক্কেবারে চুপ। তোকে আমি খু*ন করবো আজকে। আমি কিস করলে তোর অসহ্য লাগে আর ওই লীলা করলে ভাল্লাগে? “
সহন কোনোরকমে তাহমির দুই হাত ধরে আঁটকে রেখেছে। নইলে কপালের দফারফা করে দিবে।
” তাহমি এমন করিস না। তোর কি ডাক্তার লাগবে? এরকম পাগলামি কেউ করে? তোর চোখমুখ কেমন লাগছে। “
তাহমির মেজাজ এখন তুঙ্গে। মন ও মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষে যেনো অগ্নিস্ফুলিঙ্গ জ্বলছে। সহনের হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে নিজের ওড়না ভিজিয়ে আবারও সহনের কাছে ফিরে আসে। সহন বরাবরই অবাক নয়নে তার পাগলি বউয়ের কর্মকাণ্ড দেখে।
” দাঁড়া। “
তাহমি এ কথা বলেই ওড়না দিয়ে সহনের কপাল মুছে নিলো কয়েকবার। সহনের বেশ মজা লাগছে। তবে সেটা বাইরে প্রকাশ করছে না। গায়ের অর্ধ ভেজা ওড়না ফ্লোরে ফেলে সহনের হাত ধরে হেঁচকা টানে বিছানায় ফেলে তাহমি। সহন খাটের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো বলে কাজটা সহজ হলো। সহন থমকাল তাহমির পাগলামো দেখে। এ তো সাই*কো বউ!
” চুমু লাগবে? কয়টা লাগবে?”
তাহমি সহনের পেটের উপর উঠে বসে দুপাশে পা রেখে বসেছে। সহন তাহমিকে দেখে রীতিমতো ভয় পাচ্ছে। নেহাৎ তাহমি মেয়ে বলে সহনের এই অত্যাচারিত হওয়া কারো কাছে অন্যায় বলে মনেই হচ্ছে না। যদি সহন এগুলো তাহমির সাথে করতো তাহলে নির্ঘাত কত-শত মামলা হতো! এসব ভেবেই নিজেকে আপাতত ভীষণ অসহায় লাগছে সহনের।
” তাহমি তুই থাম প্লিজ। আমি আর কখনো নীলাকে স্পর্শ করতে দিবো না “
“এক কথা কতদিন বলবি? যে-ই আমি এরকম ঝামেলা করি তখুনি আমাকে স্বান্তনার বাণী শোনায়। “
তাহমি সহনকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিজের ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দেয় সহনের ঠোঁটে। চোখগুলো সহনের কোটর ছেড়ে বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম!
চলবে,

 

#বন্য_প্রণয়
#পর্ব_১০
(কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
তাহমি সহনকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিজের ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দেয় সহনের ঠোঁটে। চোখগুলো সহনের কোটর ছেড়ে বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম! কোথায় স্বামী কিংবা প্রেমিক তার শখের নারীর সামনে এমন করে কিস করে আর এখানে তো তার নিজস্ব নারী নিজে থেকেই তাকে পিষিয়া ফেলিতেছে! সহন দু’হাত দিয়ে তাহমিকে সরানোর চেষ্টা করলো একবার। কিন্তু তাহমি যেন বন্য প্রেমে মত্ত! স্পর্শে আদুরে নমনীয়তার বদলে আছে রাগ ও জেদের বহিঃপ্রকাশ। শীঘ্রই সহনও নিজের সমস্ত জেদ ভুলে তাহমির সাথে তালে তাল মিলিয়ে ওষ্ট পিষ্টকরণে অংশগ্রহণ করলো। এই মেয়েটা জোর করে কাছে এলেও কেনো জানি সহন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কিছুক্ষণ পরে তাহমি নিজেই সহনকে ছেড়ে দিয়ে উঠে বসলো বিছানায়। প্রলম্বিত শ্বাস ফেলে সহনের দিকে দৃষ্টিপাত করলো তাহমি। ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলছে সহন। চোখেমুখে কামুকতা স্পর্শ! এই মুহুর্তে এসে এভাবে ছেড়ে দেওয়াটা মোটেও ভালো লাগলো না সহনের। তাহমি সেটা বুঝলো বলেই অধর কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠলো তার।
” পরনারীর সংস্পর্শে আর যাবি না। তোর বউ তোর জন্য যথেষ্ট। “
সহন নিজেও শোয়া থেকে উঠে বসেছে। খারাপ লাগছে ভীষণ। মনে হচ্ছে নীলাকে ঠকাচ্ছে সে! এত বছরেও নীলা চাইলেও সহন কখনো এতটা ঘনিষ্ঠ হয়নি তার সাথে। অথচ কেনলমাত্র তাহমি জংলীপনা করলো বলেই সব মেনে নিতে হলো? সে তো চাইলেই তাহমিকে আটকে দিতে পারতো। পুরুষ মানুষ না চাইলে কোনো নারী তাকে এভাবে স্পর্শ করতে পারে না। তাহলে কি তাহমি তার স্ত্রী বলেই অবচেতন মন এসব মেনে চুপচাপ আছে? সহনের নীরবতা তাহমি একেবারে খেয়াল করে না। বিছানা থেকে নেমে সোজা ওয়াশরুমের দিকে এগোলো সে। স্বামীর সাথে অন্য কারো এতটা ঘনিষ্ঠতা সহ্য করতে পারে না কোনো স্ত্রী। তাহমিও পারছে না। শক্ত খোলসের মধ্যে নরম তাহমিকে সহনের সামনে প্রকাশ করতে চায় না বলেই নিজেকে আড়াল করলো সে। এদিকে সহন বসে বসে এতগুলো প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন এত্তগুলা কিন্তু উত্তর অজানা।
বারান্দা জুড়ে পিনপতন নীরবতা। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে দু’জন নরনারী। দুজনের দৃষ্টি আকাশপানে। রাতের নিস্তব্ধতা গ্রাস করেনি এখনও শহরকে। ঘড়ির কাঁটায় কেবল সাড়ে সাতটা বেজেছে। ইফতারের শেষে অনিক চলে গেছিলো ডাইনিং রুম থেকে। তখনই দিনা জানায় তৃষাকে,অনিক তাকে কিছু বলতে চায়। দোনোমোনো করতে করতে অনিকের ঘরে এসেছিল মেয়েটা। ঘরে দেখতে না পেয়ে বারান্দায় উঁকি দিতেই দেখল গম্ভীর পুরুষটি দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। সেদিন স্পষ্ট দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ওসব বলে এখন আবার কী বলতে চাচ্ছে লোকটা? সময় যেনো থমকে গেছে মনে হচ্ছে তৃষার। কয়েকশো কোটি বছর ধরে যেনো এভাবেই দু’জন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে মনে হচ্ছে। নিজে থেকে কিছু জিজ্ঞেস করতেও পারছে না মেয়েটা।
” সেদিন ওভাবে বলার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। জীবনের অনেকগুলো বছর পেরিয়ে এসেছি তো,কার মনে আমার জন্য কীরকম অনুভূতি বেশ ভালো করে বুঝতে পারি এখন। “
তৃষা চুপ করে রইলো। দু’জন দু’জনার দিকে তাকিয়ে আছে ঠিকই। অনিক ফের দৃষ্টি বাইরে ছড়িয়ে দিলো। কিন্তু তৃষা অনিকের মুখশ্রীর দিকে নিবদ্ধ। আবারও কথা বলতে শুরু করলো ডাক্তার সাহেব।
” আপনি আমার জীবনে এলে আমি ধন্য হতাম কিন্তু আমি আপনার যোগ্য নই। আমার একটা অতীত আছে। “
তৃষা অবাক হলো অনিকের কথায়। তারমানে অনিকও তাকে পছন্দ করেন? তৃষা চনমনে হয়ে উঠলো।
” তার মানে আপনাকে পাওয়া এখন আমার হাতে? “
” হ্যাঁ। আপনি চাইলে আমি আপনার হতে বাধ্য। তবে.. “
” তবে কিচ্ছু নেই। আপনার অতীত সম্পর্কে আমার জানার কোনো আগ্রহ কিংবা ইচ্ছে কিছু নেই। “
অনিক বিস্ময় তাকাল তৃষার দিকে। তৃসার ঠোঁটের কোণে মিহি হাসির রেখা।
” আবেগ দিয়ে নয় বিবেক দিয়ে ভাবুন তৃষা। আপনার বয়স কম।”
” আমার বয়স কম? আপনার তুলনায় কম তবে বোঝার মতো বয়স আমার হয়েছে। “
” কিন্তু আপনার পরিবার? তারা আমার অতীত সম্পর্কে অবগত হলে কি আমার সাথে আপনার বিয়ে দিতে সম্মতি দিবেন!”
” আমার পরিবার ঠিক আমার মতোই। “
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো অনিক। কিছুটা চিন্তা মুক্ত হয়েছে।
” তবুও আপনার অন্তত জানা উচিত। আমি ডিভোর্সি! “
” তাতে কী হয়েছে? বর্তমান শুধু আমাকে দিলেই হবে। তবে মনের মধ্যে অন্য একজন থাকলে এগোবেন না।”
” আপাতত আপনি ছাড়া মনের মাঝে আর কারোরই স্থান নেই এবং থাকবেনা। “
তৃষার ভীষণ সুখ সুখ লাগছে। ইশ মানুষটা কী সুন্দর করে কথাটা বললো!
” বেশ। তাহলেই হবে। আর আমি মনে করি এসব কথা আমার পরিবারের কাউকে জানানোর প্রয়োজন নেই। যেখানে আমি সংসার করবো সেখানে আমার ইচ্ছেই চূড়ান্ত। তাছাড়া এই সমাজে ছেলেদের ডিভোর্স নিয়ে কেউ এতটা মাথা ঘামায় না ডাক্তার সাহেব। “
” ডাক্তার সাহেব! “
ফিসফিস করে বাক্যটি দু’বার আওড়াল অনিক। মেয়েটার সবকিছুই কেমন ভালো লাগে।
” কিছু বললেন? “
” উমম না তো।”
তৃষা মুচকি হাসলো। অনিক মাথা চুলকাচ্ছে।
” এতো লজ্জা? “
” লজ্জা? সেটা বুঝবেন বিয়ের পর। আপাতত আপনার গ্রাজুয়েশন শেষ হওয়ার অপেক্ষায় রইলাম। “
তৃষা লজ্জা পেয়ে স্থান ত্যাগ করলো। সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করলো অনিক। আবেগের বয়সে শখ করে ভালোবেসে বিয়ে করে ঠকে গিয়েছিল মানুষটা। এতো বছর পরে যে তার জীবনে আবারও ভালোবাসা ধরা দিবে ভাবেনি কখনো সে।
সামনে ঈদ। সেই জন্য নীলা সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও সহনের কাছে শপিং করার জন্য টাকা চেয়েছে। তাহমির গোয়েন্দাগিরির জন্য তারপর আর নীলার সাথে দেখা করেনি সহন। তবে তাহমির জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে গেছে। কীভাবে তাহমির থেকে মুক্তি পাবে সেই চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না বেচারার। তাছাড়া বাব-মা’র বিষয়ও আছে। উনারা দু’জন তো তাহমি বলতে এক ঢোক জল বেশি খান। আজকে বিকেলে তাহমির সাথে বেরোতে হবে। ঈদ উপলক্ষে এখুনি কেনাকাটা করতে বলেছেন আতাউল খান। বাবার নির্দেশমাফিক তাই বেলা সাড়ে তিনটায় বাসা থেকে বের হয়েছে দু’জন। অফ হোয়াইট কালারের শার্ট পরেছে সহন,সাথে কালো জিন্স। তাহমি হিজাব পরেছে শাড়ির ওপর,কালো রঙের শাড়ির সাথে কালো হিজাব।
” শোন আমি বেশি হাঁটাহাঁটি করতে পারবো না। যা কেনার একটা মল থেকেই কিনিস।”
সহন গাড়ি থেকে নেমেই ফরমান জাড়ি করলো। তাহমি চিরাচরিত ভাবেই ফোঁস করে উঠলো। দ্রুত পা বাড়িয়ে শপিং মলের দিকে হাঁটতে লাগলো।
” আমি যেখানে যেখানে যাবো তুইও সেখানে সেখানে যাবি। রোজা মনে হয় ও একলা রাখে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কিছু বললেই ছ্যাঁত ছ্যাঁত করে। “
সহন চুপ করে গেলো। এই মেয়ের সাথে ঝগড়া করার মতো এনার্জি কিংবা ইচ্ছে কোনোটাই নেই তার। সিড়ি দিয়ে শপিং মলে ঢোকার সময় এক যুবতীর সাথে ধাক্কা লাগলো সহনের। ফলে উনার ব্যাগটা ফ্লোরে পড়ে যাওয়ায় ভদ্রতার খাতিরে সহন ব্যাগটা তুলে দিয়ে সরি বলে আবারও হাঁটা শুরু করলো। তাহমির দিকে দৃষ্টিপাত করতেই দেখলো রণচণ্ডী রূপে তার দিকে তাকিয়ে আছে সে। বিষটা বুঝতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগলো তার। সহন পেছন ফিরে তাকিয়ে সেই যুবতীকে ডেকে বললো,
” এক্সকিউজ মি!”
মেয়েটা দাঁড়িয়ে গেলো। সহন এগিয়ে গেলো সেদিকে। তাহমি দাঁড়িয়ে আছে রাগান্বিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। মেয়েটা কিছু বোঝার আগেই সহন তার হাত থেকে ব্যাগটা আবারও ফ্লোরে ফেলে দিয়ে দ্রুত তাহমির কাছে ফিরে এলো। এতক্ষণে মুখে হাসি ফুটেছে তাহমির। অন্যদিকে যুবতী মেয়েটি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সহনের চলে যাওয়ার পথের দিকে। তাহমি শপিং মলের ভেতরে ঢুকেছে সাথে সহনও।
” শান্তি হয়েছে তোর? আল্লাহ জানে তোর হাত থেকে কীভাবে রক্ষা পাবো আমি। “
তাহমি কিছু বললো না শুধু হাসলো। সেই হাসিতে সহনের গায়ে আরো জ্বালা ধরে গেলো। নেহাৎ তাহমির পাগলামি ভয় পায় বলেই এমন কান্ড করলো সে। কে জানে রেগে গিয়ে যদি এখানে বসেই লিপ কিস করে বসতো! এরকম একটা বউ থাকলে তার আর শত্রুর দরকার হয় না। সহন রাগে,দুঃখে শপিং মলের দেয়ালের সাথে কিছুক্ষণ পরপর নিজের মাথা ঠুকছে আর হাঁটছে। আশেপাশের লোকজন সেগুলো দেখে ভীষণ মজা পাচ্ছে সাথে তাহমি নিজেও।
চলবে,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *