(কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
মার্চ প্রায় শেষের দিকে। চৈত্রের দুপুর! চারদিকে কড়া রোদ। রোদের মধ্যে ঈশান কোণে মেঘ জমেছে। ফরিদা খান ছাদে জামাকাপড় শুকাতে দিয়েছেন। তেঁতুলের আচারের বয়াম গুলি রোদে শুকাতে দিয়েছিলেন ঘন্টাখানেক আগে। সেগুলো এদিকসেদিক ঘুরিয়ে রেখে দিয়ে ছাদ থেকে নিচে নেমে গেলেন।
দীর্ঘ দিনের চিকিৎসার ফলে ওহির বাবা সবুজ সুস্থ হয়ে উঠেছে এখন৷ তবে চাকরিতে আর জয়েন করবেনা। নিজের এলাকায় থেকেই কোনো ব্যবসায় করার চিন্তাভাবনা করেছে সে। তাই গতকালই সপরিবারে বাসায় ফিরে এসেছেন। ওহি ফেরার খবর পেয়ে তৃষাও বেশ খুশি হয়েছে। দুপুরের খাওয়াদাওয়ার পাট চুকিয়ে তাই ওহিদের বাসার দিকে রওনা দিয়েছে তৃষা। সাদা,গোলাপি মিশেল রঙের থ্রিপিসের সাথে সাদা হিজাব পরেছে সে। হাতে ছোটো একটা ব্যাগ। অন্য হাত ফাঁকা। গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছে তৃষা রাস্তার পাশে। এমন সময় একটা টয়োটা প্রিমিও এসে থামলো তৃষার সামনে। যাবে বলে প্রাইভেট গাড়ি! জানালার কাচ নেমে গেলো কিছুটা। তৃষা শান্তভাবে সেদিকে তাকাল।
” গাড়িতে উঠে বসো।”
অনিককে দেখে চমকাল তৃষা। হঠাৎ করে এলেন তাই।
“আপনি! গাড়িতে উঠবো না বাসে আসবে এখুনি। “
মেয়েটাকে সেধে লাভ হবে না বুঝে আর কিছু বলার আগেই অনিক হাত ধরে টেনে গাড়িতে উঠে বসালো তাকে । গাড়ি স্টার্ট দিয়েছে।
” কথা না শুনলে বিয়ে করবো না বুঝলে?”
তৃষা ফিক করে হেসে উঠলো।
” হু ম কি দিচ্ছেন? “
” তা বলতে পারো।”
” ঠিক আছে কথা শুনবো।”
অনিক এক হাত তৃষার হাতের উপর রেখেছে অন্য হাতে ড্রাইভ করছে।
” বাহ! কত লক্ষ্মী বউ আমার।”
” আপনি ভালো করে গাড়ি চালান। আমার ভয় করছে কিন্তু! “
” কিছু হবে না। চুপ করে বসো তুমি । আমি আছি।”
চোখে চোখ রেখে কথাটা বললো অনিক। কী জানি ছিলো সেই চাহনিতে। তৃষা চুপ করে মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো। ‘ আমি আছি’ শব্দটা যেমন ভরসা করার যোগ্য তেমনি কিছু কিছু হাত কেবল স্পর্শ করা নয় বরং ভরসার জায়গা।
রাতের আঁধারে ছেয়ে আছে গোটা শহর। বাইরে ঠান্ডা বাতাস বইছে। কালো মেঘ জমেছে। মেঘগুলো এদিকে ওদিকে সরে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বাভাস মনে হচ্ছে তাহমির কাছে। জানালা দিয়ে বাইরের আবহাওয়া দেখছিল এতক্ষণ। সহন বিছানায় শুয়ে আছে কম্বল মুড়ি দিয়ে। সোজা হয়ে শুয়ে হাঁটু উঁচু করে ভেতরে বসেই ফোন টিপছে। সবার খাওয়াদাওয়া শেষ হয়েছে আরো আগে। তাহমি এবার জানালা আঁটকে দিলো। বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাতাসের গতি ও বিদ্যুৎ চমকানি। জানালা আঁটকে বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে মশারি টানাতে যাবে তখুনি কারেন্ট চলে গেলো। বিরক্তিতে “চ” জাতীয় শব্দ বের হয়ে এলো তাহমির মুখ থেকে। ফলে সহন কম্বল সরিয়ে বাইরে তাকাল।
” এতক্ষণ যে কারেন্ট ছিলো সেটাই তো বোনাস। শালার আকাশে মেঘ দেখলেই কারেন্ট থাকে না!”
সহন বিছানা থেকে উঠে ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে ড্রয়ার থেকে মোমবাতি বের করলো। তাহমি এগিয়ে গিয়ে দিয়াশলাই দিলো।
” এই কথাটা ঠিক বলেছিস তুই। “
” তাহলে চুমু দে! “
” কথা ঠিক বলেছিস তাতে চুমু দিবো কেন?”
তাহমির হাতে মোমবাতি। দু’জন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। মোমের আলোতে অপরূপ লাগছে দুজনের মুখশ্রী। বাইরে জোরে জোরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। জানালা খুলে গিয়ে দমকা হাওয়ায় এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে জানালার পর্দা। মোমবাতি প্রায় নিভু নিভু! সহন গিয়ে এবার ভালো করে আটকে দিলো জানালা। টেবিলের উপর মোমবাতি রেখেছে তাহমি।
” চুমু দেওয়ার কোনো কারণ লাগে না। বর চাইলেই বউ চুমু দিবে।”
তাহমিকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলো সহন। সবকিছু মিলিয়ে কেমন একটা ঘোরলাগা পরিবেশ মনে হচ্ছে তাহমির কাছে। কেনো জানি মনে হচ্ছে এই আবহাওয়ায় প্রিয় পুরুষের আহবান অগ্রাহ্য করতে পারবে না সে। শুকনো ঢোক গিলে সহনের দিকে দৃষ্টিপাত করলো সে। সহন সামনাসামনি বসে তাহমির হাত নিজের হাতের মধ্যে আগলে ধরে আছে। ডান হাত দিয়ে তাহমির বামহাতের আঙুল নিয়ে খেলছে। আর তাতেই অজানা শিহরণ বয়ে যাচ্ছে তাহমির শরীরে।
” বরকে চাইতে হবে কেনো? “
” সেটাই তো! বরকে কেনো চাইতে হবে? বউয়ের উচিত না চাইতেই বরকে চুমু খাওয়া, আদর করা। বিশেষ করে এমন রোমান্টিক ওয়েদারে তো….”
তাহমি সহনের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে থামিয়ে দিলো। এরমধ্যেই অনেক জোরে কোথাও বাজ পড়েছে। একটু আঁতকে উঠলো তাহমি। সহন কী ভেবে হুট করে জড়িয়ে নিলো বুকে। তাহমি বাঁধা দিলো না। কিংবা নড়াচড়াও করলোনা। চুপটি করে রইলো। তাহমির নীরবতা সহনকে আশকারা দিচ্ছে। অধৈর্য মন আর ধৈর্য ধরতে নারাজ তার। দু’জনার উষ্ণ নিঃশ্বাস দু’জনের ঘাড়ে আছড়ে পড়ছে। সহন পিঠে কিছুটা ব্যথা অনুভব করছে। তাহমি এতটা জোরে ধরেছে যে নখের আঁচড় লেগে যাচ্ছে। সহন মুচকি হেসে হাত দিয়ে তাহমির পিঠে স্লাইড করতে লাগলো। একটু পর নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো তাহমি। সহন হতাশ হলো ফের। মাথা নত করে বসে আছে লোকটা। তাহমি সহনের থুতনিতে হাত দিয়ে মাথা উঁচিয়ে ধরে শুধালো,
” কী হয়েছে? “
” কিছু না। ঘুমাও তুমি। “
সহনের বেচারা টাইপের মুখটা দেখে এই মুহুর্তে তাহমির জোরেসোরে হাসতে ইচ্ছে করলেও সে ইচ্ছে দমিয়ে রাখলো সে। দুজনের দৃষ্টি দুজনাতে আবদ্ধ। তাহমি থুতনি থেকে হাত সরিয়ে একটা আঙুল সহনের ঠোঁটে স্পর্শ করালো। সহন থমকে গেলো। বড়ো বড়ো চোখ দিয়ে কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে আছে তাহমির দিকে। তাহমি মিষ্টি করে একটু হাসলো। তারপর ঠোঁট থেকে আঙুল সরিয়ে নিজের মুখে পুড়ে নিলো সেই আঙুল। সহন শক খেলো! তাহমির ঠোঁটে, মুখে,চোখে কামনার অনল দেখতে পাচ্ছে সে। আর অপেক্ষা নয়। সহন এক মুহুর্ত বিলম্ব না করে সেই অনলে ঝাপ দিলো। উন্মাদের মতো ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দিলো তাহমির ওষ্ঠে। প্রণয়ের অনলে পোড়াবে আজ তাকে। বন্ধ ঘরের চারদেয়াল সাক্ষ্যি হলো দু’টি মানব-মানবীর উষ্ণ নিঃশ্বাসের শব্দে।
বৃষ্টির তোপ কমেছে। কিন্তু এখনো অল্পস্বল্প বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে বটে। আয়ান ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলো রাত আড়াইটা বাজে। কিছুতেই আজ ঘুম আসছে না তার। বিকেলে একটু বেশি বকে ফেলেছিল অনিমাকে। একমাস শেষ হওয়ার পরেও অনিমার বাবার রিকোয়েস্টে আরেক মাস পড়াতে হচ্ছে। সেই জন্যও আয়ানের মেজাজ বিগড়ে থাকে। তার উপর অনিমার অদ্ভুত কান্ডকারখানা তো আছেই। ঘটনা হয়েছে কী, আয়ান যথারীতি পড়াচ্ছিল অনিমাকে। অনিমার মনোযোগ বরাবরের মতোই অন্য কোথাও ছিলো। তবুও আয়ান কিছু বলেনি আজ। এক কথা বলতে বলতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার যোগাড় বলে আরকিছুই বলবে না বলে ঠিক করেছে আয়ান। মানেমানে এই মাস শেষ হলে এই ঝামেলার হাত থেকে সে বাঁচবে। তো পড়ানো শেষ হলো। আয়ান উঠে দাঁড়াতেই অনিমা কেমন করে যেনো তার দিয়ে লাফ দিলো। সাথে সাথে ফ্লোরে শুয়ে পড়লো আয়ান। আর আয়ানের উপর অনিমা! সমস্যা সেটাও নয়। আয়ান অনিমার দিকে তাকিয়ে আছে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আর অনিমা তাকিয়ে আছে অসহায়ভাবে। পড়ে যাওয়ার ফলে দূর্ঘটনাবশতঃ দু’জনের ঠোঁট একত্র হয়ে গেছে। আয়ান বিদ্যুৎতের গতিতে উঠে দাঁড়িয়ে জোরে একটা ধমক দিলো অনিমাকে। অনিমা তখনও ফ্লোরে বসা।
” অনিমা! মিনিমাম ভদ্রতা শেখোনি তুমি? বাবা-মা এতটুকু শেখায়নি? একজন পুরুষের সাথে এতো মাখামাখি কোনো ভালো মেয়ের চরিত্র হতে পারে না। “
” স্যার আমি ইচ্ছে করে করিনি। আসলে তেলাপোকা… “
” চুপ করো। অসহ্য একটা মেয়ে। “
আয়ান অনিমাকে ওভাবে ফেলে রেখেই চলে এসেছিল। তখন অনিমাকে খেয়াল না করলেও এখন বারবার ওর ছলছল নয়নে তাকিয়ে থাকার দৃশ্যটা মনে পড়ছে। মেয়েটা মজা করে করলে নিশ্চয়ই ওর চোখ ভেজা থাকতো না? তাছাড়া ওর তো মা নেই। বাবা-মা তুলে কথা বলাটাও ঠিক হয়নি নিশ্চয়ই। কিন্তু ওই মুহুর্তে এতকিছু খেয়াল ছিলো না। রাগের মাথায় কী যে বলেছে বুঝতে পারেনি। রাগের মাথায় যে ব্যক্তি নিজের মুখের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে সেই প্রকৃত যোদ্ধা। অনিমাকে একবার সরি বলতে না পারলে শান্তি লাগবে না। কিন্তু এতরাতে কীভাবে বলবে আয়ান? নম্বর নেই কিন্তু ফেইসবুক আইডিতে এড আছে। এখন নক করা কি ঠিক হবে? নাহ এতো ভাবলে সকাল হয়ে যাবে। আয়ান তড়িঘড়ি করে মেসেঞ্জারে ঢুকে সার্চ অপশনে গিয়ে অনিমার নামটা টাইপ করতেই অনিমার আইডি শো করছে। মেয়েটা অফলাইনে। এটাই তো স্বাভাবিক। এতো রাতে নিশ্চয়ই অতটুকু মেয়ের জেগে থাকার কথা নয়? ইনবক্সে ঢুকে মেসেজ টাইপ করতে লাগলো আয়ান।
” অনিমা আমি দুঃখিত বিকেলের আচরণের জন্য। আমার আসলে মাথা ঠিক ছিলো না। তুমি প্লিজ কষ্ট পেও না!”
চলবে,
( প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
ঘুম ঘুম চোখে আধোঘুমে জানালার দিকে তাকাচ্ছে অনিমা। রোদের আলো এসে চোখের উপর পড়ছে। ফলে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। চোখ ঢলে উঠে বসলো মেয়েটা। গুটিগুটি পায়ে গিয়ে জানালার পর্দা টেনে দিয়ে ফের শুয়ে পড়লো। কিশোরীর মন বড্ড চঞ্চল। এদিকে ওদিকে ফিরিয়েও আর ঘুম আসলোনা। তাই ফোন হাতে নিয়ে ডাটা অন করলো অনিমা। ফেইসবুকে ঢুকে নিউজফিড স্ক্রল করতে লাগলো। কিন্তু আয়ান স্যার নামক আইডি থেকে মেসেজ আসাতে একটু চমকাল সে। মেসেঞ্জার ওপেন করে মেসেজটা দেখলো।
“অনিমা আমি দুঃখিত বিকেলের আচরণের জন্য। আমার আসলে মাথা ঠিক ছিলো না। তুমি প্লিজ কষ্ট পেও না!”
মেসেজ পড়ে ভেংচি কেটে একা একাই বলতে লাগলো মেয়েটা,
” কষ্ট পেও না! কষ্ট দিয়ে তারপর বলতেছে কষ্ট পেও না। আদিখ্যেতা কতো হুহ্। “
অনিমা কী লিখে উত্তর দিবে ভাবতে থাকে। কিশোরী মন গতকাল খারাপ থাকলেও সেই বিষয়টা রাতে ঘুমানোর সাথে সাথে ভুলে গেছে।
” ইট’স ওকে। “
এতটুকু লিখলো জবাবে। আজকে থেকে একেবারে চুপ হয়ে যাবে সে। আর বেশি কথা বলবে না। কালকের বিষয়টা ভুলে গেলেও তার রেশ কাটাতে পারেনি অনিমা।
” মামুনি! গুড মর্নিং। “
বাবার আওয়াজে নড়েচড়ে উঠলো অনিমা। নিজ হাতে দুই কাপ কফি নিয়ে রুমে প্রবেশ করলেন অনিমার বাবা। অনিমাও উঠে বসে বিছানা থেকে নামলো । ফোন বিছানায় রেখে দিলো।
” গুড মর্নিং বাবা। তুমি বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি দুই মিনিটে। “
” ওকে মাই প্রিন্সেস। আই এম ওয়েটিং ফর ইউ।”
” ওকে বাবা।”
ঠিক দুমিনিট পরেই দৌড়ে বাবার পাশে এসে বসলো অনিমা। জানালার পর্দা সরিয়ে দিয়ে বাবার পাশে বসলো সে। চোখমুখ দিয়ে পানির ফোঁটা পড়ছে। অনিমার বাবা তোয়ালে নিয়ে এসে মেয়ের চোখমুখ মুছে দিলেন। দু’জনে কফির কাপে চুমুক দিলো।
” ভালো করে এসএসসি পরীক্ষাটা দাও অনিমা। আমি চাই তোমাকে নিয়ে আমার গর্ব হোক। তুমি ছাড়া আমার আর কে আছে বলো? লোকে যেনো এটা না বলে বড়োলোকের বিগড়ে যাওয়া মেয়ে তুমি। “
” আমি মন দিয়ে পড়াশোনা করবো বাবা। “
” তুমি খুব ছোটো। পড়াশোনা করো। সামনে কী করবে সেটা তখন ভেবো। তোমার বন্ধু, বান্ধবীদের খোঁজ আমি রাখি। ওদের সাথে মিশো না। ওরা নেশা করে। মাদকের নেশা ভয়াবহ অনিমা।”
মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত অনিমার বাবা। অনিমা সেটা বেশ বুঝতে পারছে।
” আমি তেমন কিছু করবো না। তুমি এতো চিন্তা করো না বাবা। “
” বেশ। লক্ষ্মী মায়ের মতো কথা। আয়ান ছেলেটা ভালো। আমার অনুরোধে তোমাকে পড়াচ্ছে। তুমি ওর সাথে প্লিজ সহযোগিতা করো। লেখাপড়ার দিকে মন দাও।”
” আজকের পর থেকে আর দুষ্টমি করবোনা আমি। তুমি ভেবোনা এতো।”
মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কক্ষ ত্যাগ করলেন ভদ্রলোক। অনিমা ভাবুক হয়ে গেলো। সত্যি সত্যি আজ থেকে নিজেকে খোলসের মধ্যে আঁটকে রাখবে।
” আজকে আমার দুষ্ট মেয়েটাকে একটু বেশি-ই হাসিখুশি লাগছে! কাহিনী কী রে তাহমি? সহনের সাথে সবকিছু ঠিক হলো?”
দুপুরের জন্য রান্না চলছে হেঁসেলে। শাশুড়ী, বউমা মিলে রাঁধছে। কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ কুচো,রসুনবাটা,হলুদ,মরিচ আর অল্প পানি দিয়ে কষিয়ে নিচ্ছে তাহমি।
” হ্যাঁ মামুনি। তোমার ছেলে তো সেই কবেই সোজা হয়ে গেছে, আমি একটু নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছিলাম।”
আলু গুলো দিয়ে আবারও কষাতে ব্যস্ত হয়ে উঠলো সে। ফরিদা খান ইলিশ মাছ ভাজার জন্য কড়াইয়ে তেল দিলেন। পাশেই অন্য পাত্রে মাছগুলো নুন,হলুদ দিয়ে মাখিয়ে রাখা।
” তুই এতো দুষ্ট না জানি আমার নাতিনাতকুর কতটা দুষ্ট হয়! ছেলেটাকে আমার আর জ্বালাতন করিস না। সুখে-শান্তিতে এখন দু’জন মিলে সংসার কর। আর তাড়াতাড়ি সুখবর দেওয়ার ব্যবস্থা কর।”
” মামুনি তেল তেতে যাচ্ছে তো!”
তেল বেশি গরম হয়ে যাওয়ায় চুলো বন্ধ করে মাছগুলো তাতে ছাড়লেন ফরিদা। মেয়েটা একটু লজ্জা পেলো। সেজন্যই কথা ঘুরিয়ে ফেলেছে।
গতকাল অনিকের সাথে অনেকক্ষণ কথা হয়েছে তৃষার। অনিক আর অপেক্ষা করতে চাচ্ছে না বিয়েতে। প্রয়োজনে বিয়ে করার পরেও তৃষা বাবার বাড়ি থেকেই লেখাপড়া করবে। তবুও বিয়েটা এখুনি করতে চায় সে। এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে দুপুরের খাওয়াদাওয়া না করেই ঘুমিয়ে গেছে মেয়েটা। আমেনা এসে মেয়েকে এভাবে অসময়ে ঘুমাতে দেখে কিছুটা বিচলিত হলেন। কপালে,গলায় হাত ছুঁইয়ে দেখলেন। না! শরীর ঠিকঠাক আছে। তিনি মৃদু ধাক্কা দিলেন তৃষাকে।
” তৃষা! এই তৃষা? দুপুরে খাবি না? “
এরমধ্যেই আয়ানও তৃষার ঘরে এসে উপস্থিত হলো। খাওয়ার টেবিলে আদরের বোনটিকে না দেখে এসেছিল ডাকতে। তৃষাকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে সে-ও চমকে উঠে।
” মা তৃষার কী হয়েছে? তৃষা! এই তৃষা?”
” আরে অসময়ে ঘুমিয়ে গেছে। কিচ্ছু হয়নি। আমি গেলাম। তুই ওকে ডেকে তুলে নিয়ে খেতে আয়।”
আমেনা ছেলেকে রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। ভাই আর মায়ের হাঁক-ডাকে তৃষার ঘুম ছুটে গেছে এতক্ষণে। পিটপিট করে তাকাল আয়ানের দিকে।
” শুনেছি মানুষ বিয়ের বছর অনেক ঘুমায়। তোর কি এ বছরই বিয়ে নাকি রে?”
আয়ান সবগুলো দাঁত বের করে তৃষাকে ক্ষ্যাপানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তৃষা শান্তভাবে উঠে বসলো। চিন্তিত সুরে বললো, ” ভাইয়া অনিক বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতে চাচ্ছে। “
” সমস্যা কী? আসবে! আমি আর আপা আছি না আমরা আব্বু আর আম্মুকে বুঝিয়ে বলবো। “
” তুমি কথা বলবে উনার সাথে? “
” রাতে কথা বলিয়ে দিস বরং। এখন খেয়েদেয়ে পড়াতে যেতে হবে আমাকে।”
” ঠিক আছে। চলো তাহলে খেয়ে নিতে।”
” তুইও আয় চোখেমুখে পানি দিয়ে। চুলগুলো ভালো করে শুকিয়ে নে। ভেজা চুল নিয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছিলি!”
তৃষা তোয়ালে দিয়ে চুলগুলো মুছছে।
” তুমি যাও আমি আসতেছি। “
” ওকে।”
ভাই চলে যাওয়ার পরে চোখেমুখে পানি দিয়ে চুলগুলো তোয়ালে পেঁচিয়ে তৃষাও ডাইনিং টেবিলের দিকে এগোলো।
আকাশে মেঘ জমেছে। দুপুরের রোদের তেজ কমে এসেছে কিছুটা। মৃদুমন্দ বাতাস বইছে বাইরে। ঘরে বসে বই পড়ছে। সহন আজকে বাসায় আসেনি দুপুরে। কাজের চাপ বেড়েছে। অবসরে বই পড়ে সময় কাটাতে পছন্দ করে মেয়েটা। সহনের সাথে ঝামেলা না হওয়ায় হাসফাস লাগে তাহমির। আজকে রাতে ফিরলে নিজে থেকেই ঝামেলা শুরু করবে বলে ঠিক করেছে সে। ফোনের রিংটোনে ধ্যান ভঙ্গ হলো তাহমির। নম্বরটা দেখেই ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠেছে তার।
” হ্যালো! “
” হ্যাঁ বল।”
” এরকম তেঁতো করে কথা বলছিস কেনো তাহমি?”
” কারণ আমি করলা,নিম গাছ।”
” সেধে সেধে ঝগড়া করবি?”
” ইচ্ছে নেই। “
” তা হঠাৎ মহারাণীর কী হলো? “
” কিছু না। এদিকে আয় তো।”
সহন ফোনের ওপাশে বসে হকচকিয়ে গেল। কীভাবে দূরে থেকে কাছে আসবে? তবুও বললো,
” আসলাম।”
” চোখ বন্ধ করে ফিল কর একটা টসটসে চুমু খেলাম তোর গালে।”
” হট কিস? “
” উঁহু। তাহলে ঠোঁটে দিতাম। “
” আর বলিস না। বাসায় ছুটে আসতে হবে এখন তাহলে। “
” থাক আসতে হবে না এখন। রাখলাম।”
তাহমি কল কেটে দিলো। ইচ্ছে করে সহনের মনে ছটফটানি ঢুকিয়ে দিলো। বেচারা সহন কাজের দিকে মন না দিয়ে, এখন বউয়ের দেওয়া টসটসে চুমু সামনে থাকলে কীভাবে খেতো সেসব ভাবতে শুরু করেছে। তাহমি এদিকে ঠোঁট টিপে হাসছে।
আধঘন্টা ধরে চুপচাপ মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা করছে অনিমা। ফলে আয়ান ভুত দেখার মতো চমকাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। এই অনিমাকে তো সে চেনে না। যা বলছে তাই করছে! না বেশি কথা বলছে আর না তো অন্যমনস্ক হচ্ছে। মেয়েটা কি খুব কষ্ট পেলো? কীভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত আয়ানের?
চলবে,
( প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
এই অনিমাকে তো সে চেনে না। যা বলছে তাই করছে! না বেশি কথা বলছে আর না তো অন্যমনস্ক হচ্ছে। মেয়েটা কি খুব কষ্ট পেলো? কীভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত আয়ানের? কথা বলবে এসব বিষয়? নাকি বলবে না! উফ এতো এতো দোটানা কেন থাকে জীবনের সব ক্ষেত্রে?
” অনিমা তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে? “
” না স্যার। “
অনিমার সহজসরল স্বীকারোক্তিতে আয়ান আরও চিন্তায় পড়ে গেল। এই মেয়ে তো এক কথার উত্তর দিতো এতগুলো বাক্য ব্যয় করে! হলো কী মেয়েটার!
” তুমি কি আমার উপর রেগে আছো?”
কৌতুহলী হয়ে ফের শুধালো আয়ান। অনিমার আবারও এক কথায় উত্তর, ” না।”
আয়ান আর কোনো প্রশ্ন না করে চুপচাপ পড়া শেষ করে। যাওয়ার আগে একবার অনিমার দিকে দৃষ্টিপাত করে, চুপচাপ বইগুলো গুছিয়ে রাখছে সে। আয়ান আনমনে নিজ গন্তব্যে ফিরতে অগ্রসর হতে শুরু করে।
” দুপুরে অমনি কল কেটে দিয়েছিলি কেনো?”
ঘরে ঢুকেই জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে তাহমিকে প্রশ্ন করলো সহন। ভরা পূর্ণিমা আজ। তাহমি সেই পূর্নিমার আলোয় নিজেকে বিলীন করতে চাচ্ছে। চাঁদের আলো গায়ে মেখে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে তার।
” ঘুমিয়ে পড়। “
তাহমির সংক্ষিপ্ত উত্তর অসহ্য লাগছে সহনের। অফিস থেকে ফিরলো তবুও তার দিকে কোনো খেয়াল নেই মেয়েটার। সহন বাইরের পোশাক নিয়েই পেছন থেকে উদরে হাত রেখে জড়িয়ে নিলো তাহমিকে। তাহমি কেঁপে উঠল কিছুটা। ঘাড়ে থুতনি রেখেছে সহন। ফলে উষ্ণ নিঃশ্বাসে তাহমিরও কেমন কেমন লাগছে।
” আই ওয়ান্ট টসটসে চুমু! “
তাহমি বাইরের দিকে তাকিয়েই বললো,
” আগে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে তারপর। “
” ঠিক আছে ম্যাম।”
তাহমির ভাল্লাগছে না। কোথাও সহন জেদ করে বলবে, না! আগে চুমু তারপর সবকিছু। কিন্তু সে ভদ্রলোকের মতো বউয়ের কথা মেনে নিলো। এভাবে কথা শুনলে ঝগড়া কীভাবে করবে? নাহ ঝামেলা চাই মানে চাই!
সহন যেনো আজকে ঝড়ের বেগে খাওয়া শেষ করে রুমে এলো। তাহমি ইচ্ছে করেই আজকে একা একা খেয়ে নিয়েছে। যাতে সহন একটু হলেও মন খারাপ করে ত্যাড়ামি করে। তাহমি এখনও একইভাবে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। সহন এসে আর কথাবার্তা না বলে কোলে তুলে নিলো তাকে। তাহমি চমকাল।
” এই! এই সহন কী করছিস? ছাড় বলছি।”
” কেন? চুমু দিবি না?”
” ধ্যাৎ! কীসব বলে সব সময়। আমি ঘুমাবো।”
বিছানায় শুইয়ে দিলো তাহমিকে। নিজেও বসলো পাশে। বোঝার চেষ্টা করছে মেয়েটার কী হয়েছে! নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাহমির দিকে।
” তুই কি ঝগড়া করতে চাইছিস? দেখ,আমি এখন খুব মুডে আছি। কোমর ব্যথার ঔষধটা কাজে লাগাতে হবে না? অহেতুক টাকা নষ্ট করার ছেলে নই আমি। “
এই রে সহন বুঝলো কীভাবে সে ঝগড়া করতে চাচ্ছে? তারমধ্য আবার দুষ্ট দুষ্ট কথা বলছে। উফ! ছেলেটা মিচকে শয়তান একটা।
” আজকে কিচ্ছু হবে না। কিচ্ছু না মানে কিছুউউউউউউ না আআআ!”
সহন জোর করার মানুষ না। তাহমি যে ইচ্ছে করে এমন করছে সেটাও সহন বুঝতে পারছে। এবার সে-ও টাইট দিবে।
” ঠিক আছে। শুভ রাত্রি। “
সহন বালিশে শুয়ে সোজা হয়ে চোখ বন্ধ করলো। তাহমি একজায়গায় শুয়ে আছে এখনও। ভাল্লাগে না! না হলো ঝগড়া আর না তো রোমান্স। তাহমিও সহনের পাশে শুয়েছে।
” সহন? এই সহন?”
বারকয়েক ডাকার পরেও সহন সাড়া না দেওয়ায় তাহমি আর ডাকল না৷ মানুষটা ঘুমিয়ে গেছে আসলেই।
মায়ের কাছে বোনের বিষয় বলেছে আয়ান। আমেনা অমত করেনি তবে তৃষার বাবার মতামত নিয়ে চিন্তিত সবাই। তবে আমেনা বুঝিয়ে বলায় তেমন আপত্তি করেননা তৃষার বাবা। তবে ছেলের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে চান। সেই অনুযায়ী পরশু অনিক আসবে তৃষাদের বাসায়। সবকিছুর মধ্যে তৃষার বড্ড অস্থির অস্থির লাগছে। অনিককে কি তৃষার বাবামায়ের পছন্দ হবে? সকাল হতেই তৃষা তাহমিকে কল করে। ফোনের রিংটোনের আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেলো তাহমির। ঘুম ঘুম চোখে ফোনটা হাতে নিয়ে না তাকিয়েই কল রিসিভ করে কানের পাশে ধরে ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললো,
” হ্যালো! “
” আপাই কেমন আছো তুমি? “
” ওহ তৃষা! কেমন আছিস তোরা?”
বোনের কথা শুনে শোয়া থেকে উঠে বসলো তাহমি। পাশে তাকিয়ে দেখলো সহন নেই পাশে।
” আমরা ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। তুমি? “
” আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। হঠাৎ এতো সকালে কল? সবকিছু ঠিক আছে তো!”
” হ্যাঁ ঠিক আছে। মা হয়তো তোমাকে কল দিয়ে বলবে কিন্তু আমিই বলছি তার আগে, কালকে ডাক্তার সাহেব আসবেন আমাদের বাড়ি। তুমি কিন্তু আজকে বিকেলেই চলে আসবা।”
” ওয়াও! গ্রেট নিউজ তৃষা। ইশ আমার ছোটো বোনটার বিয়ের কথা হচ্ছে ভাবতেই ভীষণ আনন্দ লাগছে রে। আমি তোর দুলাভাইকে বলছি।”
” আচ্ছা আপাই। রাখছি তাহলে!”
” আচ্ছা। “
তৃষার সাথে কথা বলা শেষে সারা ঘরে সহনকে খুঁজল তাহমি। ওয়াশরুমেও নেই। গেলো কোথায় এতো সকালে! মনটা কেমন খচখচ করছে। সহনকে কল দিবে ভাবতেই দেখল বালিশের পাশে ফোন রাখা। তারমানে আশেপাশে কোথাও গেছে নিশ্চিত। তাহমি ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘরে গেলো। এখন থেকে একটু সংসারে মনোযোগ দিবে। শাশুড়ীকে রান্না করতে দিবে না।
” মামুনি তুমি সরো। আজকে থেকে রান্নাবান্না আমি করবো। আমার স্কুল তো নয়টার পরে শুরু হয়। আমি একেবারে সকাল সকাল উঠে সবকিছু করে ফেলবো।”
ফরিদা খান স্বহাস্যমুখে বললেন, ” এতো কষ্ট করে তোকে রান্না কেনো করতে হবে শুনি? যতদিন গায়েগতরে শক্তি আছে আমিই করবো সবকিছু। “
” না না না! তাহলে আমি এখন খাবো না কিচ্ছু। না খেয়ে অনশন করবো।”
” ওমা! না খেয়ে কেন থাকবি? আচ্ছা শোন,আমরা মিলেমিশে রান্না করবো। কাজগুলো বরং ভাগাভাগি করে করবো। কী বলিস?”
তাহমি খিলখিল করে হেসে উঠলো। এবার ঠিক আছে।
” হ্যাঁ। তাহলে ঠিক আছে। আচ্ছা তোমার ছেলেকে দেখলে বেরোতে? “
লুচি তেলের কড়াইয়ে ছাড়তে ছাড়তে বললো তাহমি। ফরিদা আলুর খোসা ছাড়িয়ে রাখলেন বাটিতে।
” হ্যাঁ। বললো তো হাঁটতে বেরিয়েছে। “
” ওও আচ্ছা। মামুনি আমার ছোটো বোনটার বিয়ের কথাবার্তা হবে কালকে। ছেলে আসবে বাসায়, আব্বু কথা বলবে।”
” বাহ! ছেলে কী করে? “
” ডাক্তার। আমরা বিকেলে যাবো মামুনি?”
” হ্যাঁ, যাবি না কেনো? “
” তুমি এতো ভালো কেনো বলো তো? শাশুড়ীদের এতো ভালো হতে নেই। “
” আমি তাহলে দজ্জাল শাশুড়ী এখন। “
” ওই যে বউকে মেরে ফেলে বাংলা সিনেমায় সেই দজ্জাল শাশুড়ী? “
তাহমির কথায় ফরিদা হেসে উঠলো। এরমধ্যেই সহন ফিরল বাসায়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই স্ত্রী ও মায়ের হাসির শব্দ শুনে সে-ও এগিয়ে গেলো রান্নাঘরের দিকে।
” কী ব্যাপার? দু’জন এতো হাসাহাসি করছো যে!”
সহনকে দেখে তাহমির চোখদুটো শীতল হয়ে গেছে। মনটাও স্থির হয়ে গেছে।
” কিছু না। তুই ফ্রেশ হয়ে আয়, ততক্ষণে নাস্তা তৈরি হয়ে যাবে। আর শোন,অফিস থেকে ছুটির ব্যবস্থা কর। কালকে তাহমির বোনের বিয়ের কথাবার্তা হবে। সেজন্য আজকে বিকেলেই তাহমি যাবে ওর বাবার বাড়ি। তুই অফিস থেকে সরাসরি ওদের বাসায় চলে যাস বরং।”
” বাহ ভালোই তো। ঠিক আছে মা। “
সহন তাড়াতাড়ি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়। তাহমি ও ফরিদাও খাবার দ্রুত প্রস্তুত করতে হাত চালু করে কাজে মন দেয়।
চলবে,
আপনার এবং স্পাইডার প্ল্যান্টের মধ্যে গোপন বন্ধন উন্মোচন
Carnation e book