
✨ গল্পের নাম: বিয়ে পাগলের গল্প 4,5,6
By জেনিন ফেরদৌসী মিষ্টি
🌙 Romance
🧠 Self-help
💛 Islamic
📘 Story
সম্পূর্ণ গল্প পড়তে চান?
Click here to read the full story.বিয়ে_পাগলের_গল্প :
বৈধ_ভালবাসা
পর্ব : ৪
গল্পকার : গল্প_বুড়ি_তিলোত্তমা


পরেরদিন আমরা আম্মুর মামাবাড়ি মানে আমার হবু শ্বশুড়বাড়ির গেলাম””! সবার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে নানাজ্বীর কাছে গেলাম””। আর বুড়োটার কাছে যেতেই বুড়োটা আমাকে যা শুনালো””! শুনেই তো টাস্কি খেয়ে গেলাম'”!
বুড়োটা এসব বলে কি”‘?
!
নানাজ্বী : কি গো টাংগাইলের মিষ্টি””। আমার নাতিরে কি এমন যাদু করে মিষ্টি পড়া খাওয়াইলা”! নাতী আমার তো মিষ্টি মিষ্টি করে পাগল হইয়া গেল””!
!
নানাজ্বীর কথা শুনে মনে মনে বলি, আপনার নাতীকে মিষ্টি চমচম খাওয়াতে পারি না বলেই তো, আমার উপর এত রাগ তার”!
যাদুর কথা কি আর বলবো””!
যাদু না করেই যেভাবে শয়তান আমাদের পিছু নিয়েছে “! তাতেই ঈমান নিয়ে টিকে থাকা দায়””! আর যদি ঐ সব যাদুর পথ অবলম্বন করতাম তবে তো এত দিনে বেঈমান হয়ে যেতাম”! কারন যাদুকর বা যারা যাদু করায় তাদের উভয়ের তওবা কবুল হয় না””! আর যাদের দোয়া কবুল হয় না”! তাদের স্থান তো জাহান্নামে”””!
এসব কথা ভেবে মৃদু হাসি দিয়ে নানাজ্বীকে বললাম””’
!
আমি : নানাজ্বী আপনি কি যে বলেন””! আমি আবার কি যাদু করব””? আমার কি আর যাদু করার ক্ষমতা আছে নাকি””?
!
নানাজ্বী : হুম “”! মাইয়া মানুষের কি যে ক্ষমতা ৪৮ বছর সংসার করেই বুঝেছি””। এরা তো চোখের ইশারায় পাগল করে””!
!
আমি : নানীমা মনে হয় আপনাকে ইশারায় পাগল করছে তাই বলছেন””! কিন্তু আমি কি আর নানীমার মত সুন্দরী নাকি””?
!
নানাজ্বী : সুন্দরী না হলেই কি আর আমার নাতি ছুটি আইসা কলেজে দৌড় দেয়””! কলেজের সামনে ঘন্টা পর ঘন্টা দাড়াইয়া থাকে””। বুঝি সব বুঝি””! বুড়া হইছি বইলা বোকা ভাইবোনা আমারে “!
!
আমি : নানাজ্বী আপনাকে বোকা ভাবার দুঃসাহস আমার নাই””।
!
নানাজ্বী : বুবু আগে সত্যি করে ক তো “”। আমার নাতির সাথে তোর কি হইছে””?
!
আমি তো দেখছি মহামুশকিলে পড়লাম”! সবাই শুধু আমাকেই প্রশ্ন করে কেন””? সে সবার কাছে এসব কথা বলে বেড়ায়”! তাকে কেন জিজ্ঞেস করে না””।
যেমন নাতি তার তেমন দাদা””। আম্মুকে বলছে সে নাকি অসুস্থ “! এসে দেখছি দিব্যি সুস্থ আছে”! এরা দাদা আর নাতি মিলে আমাকে পাগল করে ছাড়বে””!
!
আমি : আমাদের কি হইয়েছে তা আপনার নাতিকে জিজ্ঞেস করেন”! আগে বলেন আপনার কি হয়েছে””? আপনি নাকি খুব অসুস্থ “”। তাই আম্মুকে তড়িঘড়ি করে আসতে বললেন””। এখন তো এসে দেখছি, আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার চেয়ে আপনি ভাল আছেন””! নানাজ্বী ব্যাপার টা কি”‘?
!
নানাজ্বীকে প্রশ্নটা করতেই তার মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট ভেসে আসছে”! নানাজ্বী দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নিয়ে নরম সুরে বললেন”””
!
নানাজ্বী : বুবুরে আমার শরীর ঠিক আছে””। আমার মনডা ভাল নাই”! নাতিডারে ২ মাস ধরে দেখি না”! আসতে বললে এক কথা কয়”! কয় কার জন্য বাড়ি যাবো বুড়ো””। আমার কি আর তোমার মত বউ আছে”নাকি “”! বউ থাকলে বাড়ি যেতাম”!
!
নানাজ্বী : এখন তুই বল ঐ শালায় কি আমারে এই কথা কইতে পারে”! আমারে তো কইয়া দিছে “! যে পর্যন্ত বিয়ের কালিমার তারিখ ঠিক হইব না”! সে পর্যন্ত সে নাকি বাড়ি আইবে না”! এইডা কোন কথা হইল ক তো তুই”? বুবু তুই একবার সাহিলরে ফোন করে আইতে ক না “”! তুই ফোন দিলেই ও আসবো”‘!
!
নানাজ্বীর কথাগুলো শুনে আমার ভিষণ রাগ হচ্ছিল সাহিলের উপর””! এতটা রাগ হচ্ছে আমি বলে বুঝাতে পারবো না””। আবার রাগটাও ভাল ভাবে করতে পারছিনা”‘! কারন যার সাথে রাগ করবো ‘”! সে তো আমার রাগের মর্ম বুঝবে না””!
!
আমি : নানাজ্বী আমি কেন ফোন দিবো””? আপনি ফোন দেন “”! আপনি ফোন দিলেই আসবে'”!
!
নানাজ্বী : না রে বুবু ও কেন জানি এইবার খুব রাগ করে বাড়ি থেকে গেছে”। তাই আমার ফোনে কাজ হবে না””। তুই একবার ফোন দে না বুবু””!
!
আমি নানাজ্বীর কথা শুনে সাহিলকে ফোন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম”! কারন সে আমার গুরুজন তার কথা তো আমি অমান্য করতে পারি না””!
আজ দেখছি সাহিলকে ফোন না দিয়ে আমার আর কোন উপায় নাই””! কারণ সে তার দায়িত্ববোধ সম্পর্কে ভুলে গিয়েছে “”! নিজের বুড়ো দাদার সাথে রাগ করে আছে””!
নানাজ্বীকে দেখে আমার এতটা কষ্ট লাগছে”! যা আমি কাউকে বলে বুঝাতে পারবো না””! সাহিল এতটা স্বার্থপর কিভাবে হতে পারে”? আমি তো তা কল্পনা করতে পারি না”””। এই প্রশ্নের উত্তর টা আমি সাহিলের কাছে চাইবো”! সে আমার কাছে উত্তর দিতে অবশ্য বাধ্য নয়””! তারপরও উত্তরটা আমি চাইবো””!
!
আমি আমার ফোন থেকে সাহিলকে রিং দিলাম”! দুইবার ফোন দিলাম রিং বাজলো কিন্তু সাহিল ফোন রিসিভ করলো না””। তাই এইবার লাস্ট কল দিলাম”! কারন মুসলীমদের যে কোন ভাল কাজে কমপক্ষে তিনবার চেষ্টা করা উচিৎ””!
লাস্টবার কল দেয়ার পর ফোন রিসিভ হল'”! কিন্তু ওপাশ থেকে কথার কোন শব্দ আসছে না”! তাই আমি নিজের থেকেই সালাম দিলাম আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ””! সালাম দেয়ার পর সালামের কোন উত্তর ও আসছে না””! তাই আমি কিছুটা বিরক্তি হয়ে বললাম””, সালাম দিলে সালামের জবাব দেয়াটা ওয়াজিব এটা নিশ্চয় জানেন আপনি”! এই কথাটা বলার পর সে আমার সালামের জবাব দিল””।
মনে হয় তার আমার সাথে কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে””। কথাগুলোকে মনে হয় প্লাশ দিয়ে ধরে টেনে টেনে আনতে হচ্ছে””। তাই আমি বিরক্ত হয়ে সাহিলকে বললাম, ঠিক আছে আপনার কথা বলতে হবে না””! আমি ফোন রাখছি “”। এই কথাটা বলতেই ওপাশ থেকে মনে হয় কথার খই ফুটছে””! সে শুধু বলেই যাচ্ছে আমাকে আর বলার কোন সুযোগ দিচ্ছে না””!
!
সাহিল : সরি'”। সরি””! প্লিজ ফোনটা রাখবে না”! আসলে তুমি আমাকে ফোন করবে আমি এটা ভাবতেই পারিনি”! প্রথমে মনে করছি, ভুলে কল করছো”! ২য় বার কেন বা কে ফোন করছো তা ভাবতে ভাবতেই কেটে গেল'””। আর ৩য় বার ফোন রিসিভ করতেই ওপারে তোমার কন্ঠতা শুনতেই আমি যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম””! আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না তুমি আমাকে ফোন করেছো”! এই সব কিছু ঠিক আছে তো””! তুমি ভাল আছো””? বাড়ির সবাই ঠিক আছে তো””?
!
সাহিল একদমে কথাগুলো বলেই যাচ্ছে”!”মনে হচ্ছে তার মনের সব কথা আজ বলেই শেষ করবে “!”
!
আমি : ধীরে ধীরে সব প্রশ্ন করেন””! আমি এতগুলো প্রশ্নের উত্তর একসাথে কি করে দিবো”! আমি আস্তে আস্তে আপনার সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি'”। আলহামদুলিল্লাহ
আল্লহর রহমতে আমরা সবাই অনেক ভাল আছি””! আপনি কেমন আছেন”‘?
!
সাহিল : আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি””! তোমার ফোন পেয়ে এখন যেন আরও একটু বেশি ভাল আছি””! এই তুমি আমাকে ফোন করেছ আমি এখনও নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিনা'”।
!
সাহিল আমার একটা ফোন পেয়ে এতটা ইমোশনাল হয়ে পড়ছে””! ওনার কন্ঠ কেমন জানি ভারী হয়ে আসছে”! আমি ভাবছি আমি সামনে থাকলে সাহিলের মন মানসিকতা আরও কতটুকু বেশি ইমোশনাল হত””! এইসব ইমোশনালের কথা ভেবেই আমি সাহিলের সাথে দেখা করতে চাইনা “”!
কারন মানুষের আবেগের কোন বেগ নেই””! মানুষ তার আবেগকে কন্ট্রোল না করতে পেরে নানা পাপ কাজে লিপ্ত হয়””!
তাই তো বিয়ের আগে প্রেম করা বা ছেলে-মেয়েদের দেখা করাকে ইসলাম হারাম বলেছে””!
মনে মনে বলি এত খুশি হয়ে কোন লাভ নেই””
!
আমি : বিশ্বাস না হলে নিজেকে একটা চিমটি কেটে দেখেলেই পারেন””!
!
সাহিল : সত্যিই দিব নাকি””?
আহ্”””! খুব লাগছে””
!
আমি : কি হলো আপনার””?
!
সাহিল : কি আবার হবে””? তুমি তো আমাকে চিমটি কেটে দেখতে বললে”, তাই নিজের হাতে চিমটি কেটেছি””! একটু জোরে লেগেছে””চিমটি টা””!
!
আমি : আমি বললাম বলেই নিজেকে চিমটি কাটতে হবে”নাকি””?
!
সাহিল : আমি তো বউয়ের সব কথা মানি”! সরি তোমার সব কথা মানার চেষ্টা করি””!
এখন বলো তো কি কারনে এই অধমকে ফোন করা””হয়েছে”””?
!
আমি : আচ্ছা আপনি কি শুরু করছেন””? আপনি কি আমাকে একটুকুও শান্তি দিবেন না”””! আপনি বাড়ি আসেন না কেন”‘? আপনার কি আপনার বাড়ির মানুষের প্রতি কোন দায়িত্ব নাই”””? নানাজ্বী বয়স্ক মানুষ আপনাকে এতটা ভালবাসে “! আপনি ২ মাসে তার সাথে পর্যন্ত দেখা করতে আসেননি”! আমি আপনার কাছে এই ধরনের আচারণ কখনও আশা করিনি””।
!
সাহিল : ওহ্ এতক্ষণে বুঝলাম আমাকে ফোন দেয়ার কারণ’টা”! আর হ্যা দায়িত্বের কথা বললে না আমায়”! বাড়ির মানুষের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে””। তাদের কি আমার প্রতি কোন দায় দায়িত্ব নাই””?
আমি বাড়ি কেন যাবো না আমি তো দাদাকে স্পষ্ট করে বলেই দিয়েছি”!
!
আমি : আপনি ছোট বাচ্চাদের মত জেদ করছেন কেন'”?
আমার উপর রাগটা বাড়ির মানুষের উপর কেন দেখাছেন””?
!
সাহিল : আমি তোমার উপর রাগ করবো কেন”‘? তোমার উপর রাগ করার কোন অধিকার তো আমার নাই””!
!
সাহিলের কথায় স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে আমার উপর সে ভিষণ রেগে আছে””! তারপর ও আমি তার সাথে আমি অনেক কথা বললাম, ওনাকে বুঝানোর অনেক চেষ্টা করলাম”! তাকে বাড়ি এসে নানাজ্বীকে দেখে যেতে বললাম”””।
কিন্তু সে তার জেদে অটল””! তাই আমিও রাগ করে ফোন টা কেটে দিলাম””!
!
আল্লাহ তায়ালা জেদ আর রাগকে হারাম করতে বলেছেন””।
কারন মানুষের ভিতর যখন রাগের আর জেদের প্রবৃত্তি হয়”!” মানুষ তখন শয়তানের হাতে পুতুল হয়ে যায়”! শয়তান তখন মানুষকে নিজের মত করে চালায়”””! আমরা মানুষেরা যত খারাপ কাজ করি তা বেশির ভাগ রাগ থেকে আর শয়তানের কুমন্ত্রণায়”””।
তাই হাদীসে রাগকে কি করে কন্ট্রোল করা যায় তার বর্ণনা করা হয়েছে”! হাদীসে বলা হয়েছে, মানুষ যখন রাগ হয়””.। তখন সে তার রাগকে কন্ট্রোল করা জন্য, দাড়িয়ে থাকলে বসতে বলা হয়েছে””। আর বসে থাকলে শুয়ে পড়তে বলা হয়””!
আমি আমার নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করার জন্য মাটির দিকে তাকিয়ে বারবার দোয়া পড়লাম”””
আউজু বিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বনীর রজ্বীম””।
!
রাগকে কন্ট্রোল করার জন্য সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে, রাগ হলে বসে পড়ে বিসমিল্লাহ্ বলে ঠান্ডা এক গ্লাস পানি খেয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললেই রাগ পানির মত ঠান্ডা হয়ে যায়”!
!
আমি গ্লাস পানি খেয়ে নিলাম”! আমার সাহিলের উপর এই কারণে রাগ হচ্ছে””, সাহিল আমার সাথে জেদ করে বাড়ির মানুষদের সাথে এমন আচারণ করছে কেন'”? তার কারণে আমি আজ নানাজ্বীর কাছে কতটা লজ্জা পেলাম””।
আল্লাহ সে কবে যে সব কিছু বুঝবে””!
!
আমার আজ খুব কষ্ট লাগছে “”! আমি নানাজ্বীর রুম থেকে বের হয়ে সাহিলের ছোট বোন সায়লার রুমে গেলাম””!
সায়লার রুমে গিয়ে দেখি আমার সাতটা ননদ বসে আছে”! এরা সবগুলো এসে আমাকে চম্পা ভাবী বলে জড়িয়ে ধরছে “! আমার অবস্থা বড়ই নাজেহাল “”।
সাহিলদের বাড়িতে আমি একমাত্র বউ “””! কারন সাহিলের আব্বুরা তিন ভাই””। দুই চাচার তিনটা করে মেয়ে “”! সাহিলরা এক ভাই এক বোন””। ওরা মোট সাত বোন এক ভাই””!
মেঝ চাচার তিন মেয়ের নাম- সায়মা, সায়বা, সায়কা আর ছোট চাচার তিন মেয়ের নাম- সামিহা,সাবিহা সারিকা “”!
তাই ওরা সবাই আমাকে চম্পা ভাবী বলে “”! আমার অবশ্য এই নামটা একদম পছন্দ না”””।
!
আমার সাত ননদের আদর ভালবাসায় আমি তো অস্থির হয়ে গেলাম'””। আর এক এক জনের এক প্রশ্ন””!
আমার একটা বিষয় খুব ভাল লাগে ওদের সাত বোনের মধ্যে অনেক মিল””। এরা মনে হয় না কখনও ঝগড়া করে “”! ওদের এই মিল মহব্বত দেখেই মনটা ভরে যায়””। আর আমি ওদের একমাত্র ভাবী হওয়াতে আমাকে কি রেখে কি করবে আর কি বলবে ভেবে পায় না””।
!
সায়মা, সামিহা আর সায়লা এরা তিন জন ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পড়ে”! এরা তিনটাই খুব পাকনা”!
এদের কথাগুলো ঠিক এদের ভাইয়ের মত”””! এরা আমাকে একটাই প্রশ্ন করে”! এদের ভাইয়ের সাথে আমার প্রেম কেমন চলছে””!
আমি সবগুলোকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলছি, বিয়ের আগে প্রেম করা হারাম”! এরা তো আরেক পাকনা “”! এরা আমাকে বলে তোমাদের তো রেজিস্ট্রি ম্যারিজ হয়েছে। আর তুমি যখন মনে কর বৈধ বিয়ে হয়নি””! তবে তোমার পালিয়ে কালিমা পড়ে বিয়ে করছো না কেন””! তবেই তো দুজন মিলে চুটিয়ে প্রেম করতে পারতে”””।
!
আমি ওদের কথা শুনে হেসে বললাম, তবে তোমাদের একটা গল্প বলি””। ওরা সবাই মিলে খুব মনোযোগী হয়ে আমার গল্প শুনছে”””! আমি ওদের বললাম,
এক লোকের বড় বড় মোছ””! সে লোকটা গ্লাসে করে মদ খাচ্ছে কিন্তু মোছকে ধরে উঁচু করে খাচ্ছে”””। এক লোক তার এভাবে মদ খাওয়া দেখে বলছে, আপনি এক কষ্ট করে মদ খাচ্ছেন কেন””? তার প্রতি উত্তরে লোকটি বলল, মোছে লাগিয়ে পান করা তো হারাম””! তাই আমি মোছ উঁচু করে মদ পান করছি””!
লোকটা হারাম পানীয় পান করছে তাতে সমস্যা নাই””। কিন্তু মোছে লাগিয়ে পান হারাম তাতে তার সমস্যা আছে””!
!
এর মানে হচ্ছে বিয়ের আগে প্রেম করা হারাম হবে বলে, হালাল প্রেম করার জন্য আমরা পালিয়ে বিয়ে করে আরেটা হারাম কাজ করবো””! কারন অভিভাবকের অমতে পালিয়ে বিয়ে করাও হারাম””!
তোমরা কি হারাম দিয়ে হারাম সম্পর্কে হালাল করতে বলছো””?
!
আমার কথা শুনে সবগুলো হা করে তাকিয়ে আছে””! আর বলছে ভাবী আজকালে যুগে এসব এত কিছু সবাই কি মানে””?
আমি ওদের বললাম কেন মানবে না””। যারা আল্লহকে ভয় করে “! তারা কখনও অবৈধ কাজকে কখনও বৈধ বলে স্বীকৃতী দিবে না'”। তারা অবশ্যই মানতে বাধ্য বিয়ের আগে প্রেম করা হারাম “””।
!
তাই যেদিন তোমাদের ভাইয়ার সাথে আমার ইসলামী শরীয়ানুযায়ী বিয়ে হবে “! তার আমি তার বৈধ স্ত্রী হয়ে যাবো”! সেদিন থেকে তোমাদের ভাইয়ার সাথে একদম চুটিয়ে প্রেম করবো””! আর এত ভালবাসবো”‘যে,ভালবাসতে বাসতে তোমাদের ভাইয়াকে ফুতুর করে দিবো””!
!
আমার কথা শুনে সবগুলো হি হি হি করে হাসছে”‘! আমি ওদের বললাম, আস্তে হাসো””। কারন মেয়েদের হাসির শব্দ বাহিরে পরপুরুষ শুনলে মেয়েদের অনেক গুণাহ হয়””!
!
পাজিগুলো আমার কথা শুনে বলে, তাদের ডিজিটাল ভাই আমাকে কি করে পছন্দ করলো আর আমি কি করে তাদের ডিজিটাল ভাইয়াকে পছন্দ করলাম””?
!
আমি উত্তরে বললাম, আল্লাহ যার জন্য যাকে নির্ধারণ করে রেখেছে””! তার সাথে তো তার জুটি বাঁধবেই””!
!
ওদের সাথে আরও অনেকক্ষণ চুটিয়ে গল্প করলাম””! তারপর আসরের আযান দিল””। আমি সবগুলোকে নিয়ে আসরের নামায পড়লাম””!
নামায পড়ে উঠতেই কে যেন হঠাৎ করে চেঁচিয়ে উঠে বললো, আমি যেন তাড়াতাড়ি নানাজ্বীর রুমে যাই””?
আমি দৌড়ে নানাজ্বী রুমে গিয়ে যা দেখলাম তা দেখার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না””

Sponsored

🛍️Carnatio Academy
nlock your potential with premium courses — now available at up to 50% off. Don't miss out!.
https://academy.carnationplus.in/
#বিয়ে_পাগলের_গল্প :
বৈধ_ভালবাসা
পর্ব : ৫
গল্পকার : গল্প_বুড়ি_তিলোত্তমা


নামায পড়ে উঠতেই কে যেন হঠাৎ করে চেঁচিয়ে উঠে বললো, আমি যেন তাড়াতাড়ি নানাজ্বী রুমে যাই””?
আমি দৌড়ে নানাজ্বী রুমে গিয়ে যা দেখলাম তা দেখার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না””
আমি তো তাকে দেখেই অবাক হয়ে দাড়িয়ে আছি”! কারন নানাজ্বীর পাশেই সাহিল বসে আছে””!
!
মাশআল্লহ””! আজ সাহিলকে অন্যরকম সুন্দর লাগছে””। নীল কালারের শার্ট, কালো প্যান্ট হাতে গোল্ডেন কালারের ঘড়ি চোখে চশমা সব মিলিয়ে সাহিলকে বেশ সুন্দর লাগছে””! ওনাকে সুন্দর লাগার অন্যতম আরেকটা কারণ হচ্ছে সাহিলের মুখের সুন্দর চাপ দাড়িগুলো””!
!
এর আগে আমি সাহিলকে যে কয়বার দেখেছি, একদম ক্লিন সেভ করা”””। আজ দাড়িওয়ালা সাহিলকে দেখতে অনেক ভাল লাগছে”””।
যে যাই বলুক না কেন, দাড়িতেই পুরুষের আসল সৌন্দর্য প্রকাশ পায়”! কারণ আল্লহর রসূল (সাঃ) বলেছেন, তোমারা দাড়িকে বাড়তে দাও আর মোছকে ছেটে রাখ””! পুরুষের দাড়ি রাখা ওয়াজিব””!
এজন্য কথায় বলে,
নারীর সৌন্দর্য পর্দাতে
পুরুষের সৌন্দর্য দাড়িতে
!
আলহামদুলিল্লাহ “”! সাহিলের এই পরিবর্তনে আমি খুব খুশি হয়েছি””! এখন অবশ্য পুরোপুরিভাবে সুন্নতি কায়দায় দাড়ি রাখেনি”!
ইংশাআল্লহ আশা করি সামনে তা হয়ে যাবে”! খুশির বিষয় অভ্যাস তো করছে””!
!
সাহিল নানাজ্বীর সাথে বসে কথা বলছে””! আমি দরজার সামনে দাড়িয়ে আছি””! সাহিল এখনও আমাকে দেখেনি””! এজন্য আমি ওড়না দিয়ে আমার মুখটা ভালভাবে পেঁচিয়ে নিলাম””! শুধু চোখ জোড়া বের করে রাখলাম””!
আমি রুমের ভিতরে প্রবেশ করার আগে সালাম দিলাম””
আল্লহ তায়ালা বলেন,
হে মুমিনগণ ! তোমরা নিজদের গৃহ ব্যতীত অন্য করো গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং সালাম না করে প্রবেশ কর না, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, সম্ভবত তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে'”! ( সূরা- নূর ২৭)
!
আলসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
সাহিল আমার কন্ঠস্বর শুনে মনে হল যেন থমকে গেল””! অবাক নয়নে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো”! সাহিলের এমন তাকানোতে আমার ভিষণ লজ্জা লাগছিল””! ভাবছি নানাজ্বী কি যে বলবে”””!
নানাজ্বী আমার সালাম শুনে খুব সুন্দর হাসি মুখে আমার সালামের লম্বা একটা জবাব দিলো””!
!
নানাজ্বী : ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্ ওয়া মাগফিরতুহ্ ওয়া জান্নাতিহ্””!
!.
নানাজ্বীর আমার সালামের জবাব দিয়ে আমাকে বসতে বললেন””। সাহিল খাটের এক পাশে বসে আছে”! আমি খাটের অপর পাশে গিয়ে বসলাম”””। সাহিল আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে নানাজ্বীকে বলছে””””
!
সাহিল : দাদা এই ভদ্র মহিলা ওনি কে””? ওনি তোমার রুমে কি করছে””?
!
নানাাজ্বী : দাদাভাই এই ভদ্র মহিলাকে তুমি চিনবা না””! এ আমার বান্ধুবী””!
!
আমি : নানাজ্বী আপনি ভদ্রলোককে বলেন, সে আমাকে চিনে না ভাল কথা””। কিন্তু চিনে না বলে আমার সালামের জবাব পর্যন্ত দিলেন না””! ভদ্র মহাশয় কি জানেন না সালামের জবাব দেয়া ওয়াজিব””।
!
সাহিল : দাদা ভদ্র মহিলাকে বলো, আমি তো মনে মনে সালামের জবাব দিয়েছি “”।
!
আমি : না না তা তো হবে না””! সালামের জবাব স্পষ্টভাবে একটু জোরে দিতে হবে””! যাতে করে যে সালাম দিয়েছে সে যেন শুনতে পায়””।
কেন না বেশি সংখ্যক লোক সালামের উত্তর না পেয়ে “”! সালাম প্রদানের প্রতি অনাগ্রহ প্রকাশ করে””!
!
নানাজ্বী : হুম বুবু হক কথা কইছো””!
এখন মানুষকে সালাম দিলে উত্তর দেয় না বলেই”! এখনকার মানুষ সালাম দিতে চায় না””!
!
দিন দিন সালামের প্রচলন কমে যাচ্ছে “”! আজকাল আবার অনেকে এমন ভাবে সালাম দেয়””! কিন্তু সালামের শব্দগুলো সঠিক ভাবে উচ্চারণ করে না””! এরা জানে না আরবী শব্দগুলো উচ্চারণ সঠিক ভাবে না হলে অর্থ ভিন্ন হয়ে যায়””!
!
আর আল্লহ তায়ালা বলেছেন, যখন তোমরা সালাম ও অভিবাদন প্রাপ্ত হয়, তবে তোমরাও তা হবে শ্রেষ্ঠতর উত্তম সম্ভাষণ কর অথবা তার মতই করে অভিবাদন দাও””! কেননা নিশ্চয় আল্লহ সর্ব বিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী”!
(সূরা নিসা- ৮৬)
!
সাহিল আমার আর নানাজ্বীর কথা শুনে সুন্দর করে আমার সালামের জবাব দিলো”! আর বললো,
!
সাহিল : এমন ডাকাত টাইপের মানুষ জীবনে দেখিনি সালামের জবাব জোর আদায় করে “”!
!
নানাজ্বী : হুম শুধু কি ডাকাত””! বড় মাপের চোর ও বটে”! শুধু চোখ দেখাইয়া আমার আর নাতির দিলডা চুরি করে নিছে””!
!
আমি : চোর না ডাকাত তা জানি না””। কিন্তু এটা জানি নিজের হক কিভাবে আদায় করতে হয়”! আর জানি নিজেকে কি করে বড় চোরদের নজর থেকে লুকিয়ে রাখা যায়””!
আমি আর নানাজ্বী মৃদু ভাবে হাসছি”‘”।
!
সাহিল : জানি তো কেউ কেউ নিজের বুঝ টা খুব ভাল করেই বুঝে””! শুধু অন্যের বেলায় অবুঝ “!
!
নানাজ্বী : না রে দাদা আমার বুবু অবুঝ না”। জ্ঞান বুদ্ধি আছে বলেই নিজেকে শরীয়াতের মাঝে আবদ্ধ রাখতে পারছে”! আজকাল কয়জন মেয়ে তা পারে”””।
!
বেচারা আমাদের দুজনের চাপে অস্থির বলেই চলে”””। কেননা আমি আর নানাজ্বী একদলে””! নানাজ্বী প্রায় সব সময় আমাকে সব বিষয়ে সাপোর্ট করে””!
কারণ নানাজ্বী তিনি একসময় মসজিদের ইমাম ছিলেন””! তাই হাদীসের কোরআনের ব্যাপারে তিনি বেশ ভাল জানা শোনা””! আমিও আলহামদুলিল্লাহ চেষ্টা করি কোরআন সুন্নাহ অনুযায়ী চলতে””!
!
আমি সাহিলের থেকে দূরে দূরে থাকি এই বিষয়টা তার খুব একটা পছন্দ না “! তা আমি বুঝতে পারি””। কিন্তু আমার তো কিছু করার নাই”! যা আল্লহ এবং তার রসূল বৈধ বলে ঘোষণা করেনি “”! তা আমি কি বৈধ ভাবতে পারি”! আমি এতক্ষণ সাহিলের সাথে যতটুকু কথা বলছি তা ও আমার জন্য ঠিক না””।
!
বেচারা সাহিল তো একা পরে গিয়েছে””। এজন্য তো সে তার মনে ক্ষোপ করার জন্য
“”ঝোঁপ বুঝে কোঁপ দিল””
!
সাহিল : আচ্ছা দাদা তুমি তো হাদীস কোরআনের বিষয়ে বেশ জানা শোনা”! তবে তুমি থাকতে আমার বিয়ের এই হাল হলো কেন””? অর্ধেক বিয়ে দিয়ে বাকী অর্ধেক ঝুলিয়ে রাখছো””! তাই তো আমার হবু বউ আমার সামনে পুরা পর্দা মেইনটেইন করছে””। কিন্তু তোমার সামনে পর্দা করছে না””!
এটা কি ঠিক “”?
!
সাহিল এতগুলো কথা নানাকে একদমে বলে দিল”! আমি কি আর বলবো”! এ ছেলে তো বিয়ে বিয়ে করে পাগল হয়ে যাচ্ছে””! আল্লাহ জানে”” নানাজ্বী যে আমাকে কি যে বলবে “”? সেই ভেবে আমার গলা শুকিয়ে আসছে””!
!
নানাজ্বী : আমি বুড়া হয়ে গেছি রে দাদাভাই “। এজন্য আমার বান্ধুবী আমার সামনে শুধু মুখটা বের করে”!
দাদাভাই তোর বিয়ের কথা বলে আমারে আর লজ্জা দিস না””। আসলে সেদিন আমি আমার দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পারি নাই'”। কিন্তু এবার কিছু একটা করবোই ইংশাআল্লহ””!
!
সাহিল : দাদা এখনও কিন্তু কোন কিছু করার সময় যায় নাই”””।
!
নানাজ্বী : হুম তা বুঝতে পারছি”! আমার নাতির আর তর সইছেনা””। বিয়ের জন্য পাগল হইয়া গিয়েছে”! যারে কয় বউ পাগল””।
!
আমি মনে মনে ভাবছি, এরা দাদা নাতি মিলে যে ভাবে বিয়ে বিয়ে প্যাঁচাল পারতেছে””! আমার এখানে না থাকাই ভাল””! এজন্য আমি নানাজ্বীর রুম থেকে চলে আসতে নিলাম””! আমাকে উঠতে দেখে সাহিল বলে উঠলো””!
!
সাহিল : দাদা তোমার নাতবউকে বল, এখানে ভালভাবে বসতে “! তা না হলে আমি কিন্তু হাত টেনে ধরবো””! তখন আমায় যেন কেউ কিছু না বলে””!
!
সাহিলের কথা শুনে আমি থমকে গেলাম””। কারন এ যে লোকের এ কাজ করতে একটুও দ্বিধাবোধ হবে না”! এজন্য আমি খাটের এক কোণায় চুপটি করে বসে রইলাম””!
সাহিলকে উদ্দেশ্য করে বললাম””
!
আমি : নানাজ্বী কেউ কি শুধু এখানে বসে বসে গল্প করবে””? তার কি নামায কালাম কিছু নাই””। আসরের ওয়াক্ত যে চলে যাচ্ছে””!
!
সাহিল : দাদা আমাকে নিয়ে কাউকে ভাবতে না করো””। আলহামদুলিল্লাহ “! আমি এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ি””। আর যথাযথ চেষ্টা করি মসজিদে জামাতের সাথে নামায পড়তে”! বাড়ি আসার সময় মসজিদে নামায পড়ে এসেছি””!
!
নানাজ্বী : আলহামদুলিল্লাহ””! দাদাভাই আমি তোর কথা শুনে খুব খুশি হলাম””! আমার মনে হচ্ছে সবি মিষ্টি পড়া খাওয়ার ফল”!
!
মাশআল্লহ ‘”! আমার হবু বর যে ইদানিং পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়া শুরু করছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ার কথাটা শুনে আমার মনে যেন এক স্বর্গীয় প্রশান্তি পাচ্ছি””! আল্লহ মনে হয় আমার দোয়া কবুল করেছেন””!
সূরা ফোরকানের ৭৪ নাম্বার আয়াতটা খু্ব কাজে দিয়েছে”””!
!
সাহিল : হুম মিষ্টি দেখেই আছোর পড়ছে””।কিন্তু মিষ্টি আর খাইতে পারলাম কই””?
!
আজ আমার এটা ভাবতেই ভাল লাগছে যে, যাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চলেছি । সে ও আমার মত পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ার চেষ্টা করছে”””!
আমি মনে মনে নিজেই সাহিলকে কথা দিচ্ছি, আমি যখন তোমার_বৈধ_আমি হব”! সেদিন থেকে আমি আপনার চক্ষু শীতল করা স্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করবো ইংশাআল্লহ”‘!
কারন স্ত্রী যদি তার স্বামীর ইসলামিক শরীয়ানুযায়ী সকল আদেশ উপদেশ মেনে চলে “”। তবে সে স্ত্রীর জন্য জান্নাতে যাবার পথ প্রশস্থ হয়ে যায়”!
!
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যখন কোন স্ত্রীলোক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে, রমযানের সিয়াম পালন করবে, নিজের লজ্জা স্থানের হেফাযত করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে””। তখন সেই নারী জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে””।
( মিশকাত- ৩২৫৪)
বেশির ভাগ স্ত্রীলোক স্বামী অবাধ্যতার কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করবে””!
!
এসব কথা ভাবতে ভাবতে ভাবনার জোয়ারে নিজেকে ডুবিয়ে দিলাম””!
!
নানাজ্বী : কি গো মিষ্টি বুবু এত কি ভাবো””? মিষ্টির গন্ধ পেয়ে আমার নাতি যে ঢাকা থেকে চলে এলো””! এখন তো আমার নাতির জন্য কিছু করা দরকার””!
!
নানাজ্বীর কথা শুনে আমার ভিষণ লজ্জা লাগছে “”! আর সাহিল ও কেমন””। এতদিন যখন আসেনি””। তবে দুটো দিন পড়ে আসলে কি এমন ক্ষতি হত””।
দুই দাদা আর নাতি মিলে আমাকে এখন পঁচাবে”!
আহারে””! কথা টা ভাবতেই আমার সাত সাতটা ননদিনী এসে হাজির”! এসেই তো ভাইকে জারি মারা শুরু করলো””! এ বাড়িতে আমার দলটা বেশ ভারী””! এরা সবাই সাহিলকে দাদাই বলে ডাকে”””।
!
সায়মা : দাদাই তুমি কখন এলে””?
!
সামিহা : দাদাই তোমার ছুটি কয়দিন”‘?
!
সারিকা : দাদাই তুমি এতদিন আসলে না কেন””?
!
সায়বা : দাদাই তুমি নিশ্চিত ভাই গন্ধ পেয়ে এসেছ”””? দাদা ঠিক বলছি না”?
!
সাবিহা : হুম আমি জানি দাদাই তুমি এজন্য আসছ না”‘?
!
সায়কা : আহারে দাদাই আমার যার জন্য আসছে “! সে তো মুখ ঢেকে আছে “! তোমার বুঝি খুব কষ্ট হচ্ছে তাইনা ভাইয়া”””?
!
সায়লা : দাদাই তুমি ভাবী আর আমাদের জন্য কি কি নিয়ে এসেছ””? যদি কিছু না আসো তবে ভাবীর সাথে তোমাকে আমরা কথা বলতে দিবো না””!
!
বেচারা সাহিল সাত রকম প্রশ্নে জর্জরিত “””। সাতবোন তো তীরের মত একের পর এক প্রশ্ন ছুড়েই যাচ্ছে””! কোনটা ছেড়ে কোনটার উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না'”। সাহিলরের অবস্থা একদম নাজেহাল “”। আমার বেশ ভাল লাগছে তার নাজেহাল অবস্থা দেখে'”।
!
সাহিল : প্লিজ”! তোরা থাম থাম””! আমার কান তো তোরা ঝালাপালা করে ছাড়বি””! বিয়ে করার আগেই দেখছি কানে কালা হয়ে যাবো””! পরে বউ যা বলবে তার উল্টোটা শুনবো””!
!
সায়কা : কানে কম শুনলে সমস্যা নাই””! কিন্তু চোখে কম দেখলে সমস্যা আছে””!
!
সাবিহা : হুম ঠিক বলছিস””! যার রূপ দেখলে চোখ ধাঁধা লেগে যাবে”! সে তো সেজন্য নিজের চেহারা ঢেকে রাখছে””!
!
সায়বা : দাদাই তোমার জন্য আমার খুব কষ্ট হয়””! ভাবীর সাথে প্রেম করার স্বপ্নটা তোমার স্বপ্নই থেকে গেল””।
!
সাহিল : হুম “”! কষ্ট আমার হয়”””। কারন তোদের মত সাত সাতটা বোন থাকতে একটা মেয়ের সাথে প্রেম করাতে পারলি না””!
সত্যিই তোদের মত বোন দিয়ে কিছুই হবে না”” তোরা সব দাদার যোগ্য নাতনি”!
!
নানাজ্বী : এই “”! এইগুলার মাঝে আমাকে টানাটানি করছিস কেন””?
!
সায়বা : দাদা তোমাকে টানবে না তো কাকে টানবে”””। তুমি এ পর্যন্ত দাদাইয়ের বিয়েটাই দিতে পারলে না”!
!
সাহিল : সায়বা তুই হচ্ছিস আমার একমাত্র বোন “”। যে আমার কথাগুলো বুঝে “”। আর সব বাকি গুলো তো আমড়া কাঠের ঢেঁকি””!
!
এই কথা বলতেই তো আর বাকি ছয়জন মিলে সাহিলের উপর মৌমাছির মত ঝেঁকে বসলো”।
আমি চুপচাপ এদের ঝগড়ার মজা নিচ্ছি “”! সাহিল এক কথা বলতেই এদের মুখে ১০টা কথা রেডি””!
অবশেষে সাহিল অসহ্য হয়ে সবগুলোকে এমন ধমক দিলো””। সাহিলের ধমকের সুরে আমি সহ সবাই কেঁপে উঠলাম””।
আর বাকিগুলো তো ভয়ে জরসর হয়ে আছে”! যাক বোনগুলো তাহলে ভাইকে দেখে একটু হলেও ভয় পায়'””।
!
মাগরিবের আযান পড়ছে””!
আমি সবগুলোকে বললাম, সন্ধ্যাবেলা শয়তান বেশি ঘোরাঘুরি করে তো””। এখন সবাই চুপ করে নামায পড়তে যাও””! আর হ্যা কেউ জানি আমার ননদের বকাবকি না করে””!
সাহিল আমাকে বললো, আমার ননদের প্রতি আমার এত টান””! কিন্তু যার জন্য এতগুলো ননদ পেলাম তার জন্য কোন টান আমার “”। এ কেমন বিচার””।
!
আমি হেসে বললাম, আসলের চেয়ে নাকি সুদের দাম বেশি হয়””!
এই বলে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসলাম”! আমি রুম থেকে বের হতেই নানাজ্বী আর সাহিল ওদের কি যেন বললো”””
সবগুলো তো খুশিতে লাফালাফি শুরু করলো””!
আমি মাগরিবের নামায পড়ে উঠতেই সব গুলো আমার রুমে এসে হাজির”! আমাকে শাড়ী পড়ানোর জন্য পীড়াপীড়ি শুরু করলো””!
আমি তো অবাক হয়ে চেয়ে আছি””! এই অবেলায় আবার শাড়ী কেন””?
Sponsored

🛍️Carnatio Academy
nlock your potential with premium courses — now available at up to 50% off. Don't miss out!.
https://academy.carnationplus.in/
#বিয়ে_পাগলের_গল্প :
বৈধ_ভালবাসা
পর্ব : ৬
গল্পকার : গল্প_বুড়ি_তিলোত্তমা


আমি মাগরিবের নামায পড়ে উঠতেই সব গুলো রুমে এসে হাজির”! ওরা আমাকে শাড়ী পড়ানোর জন্য খুব পীড়াপীড়ি শুরু করলো””!
আমি তো অবাক হয়ে চেয়ে আছি””! এই অবেলায় আবার শাড়ী কেন””?
এদের এমন আচারণের কিছুই বুঝতে পারছি না”!
!
সায়লার বিছানার উপর ছোট একটা লাগেজ দেখছি”””! লাগেজে শাড়ী কসমেটিক আরও অন্যান্য কিছু অর্ণামেন্ট ও রয়েছে””!
শাড়ীটা দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে””! শাড়ীর কালার টা হচ্ছে মেরুন লাল জমিন মধ্যে গোল্ডেন কালার পাড় আর আঁচল”””। শাড়ীটা টাংগাইলের সিল্কের জামদানী শাড়ী””!
কিন্তু আমার এটা ভেবে আজব লাগছে। হঠাৎ শাড়ী এসব কসমেটিক কি কারণে আনা হয়েছে”!
কেউ তো আমাকে কিছু বলছেও না”””।
আমি সায়লাদের জিজ্ঞেস করতে যাবো “”! তখনি আম্মু রুমে চলে আসলো'”! ওরা সবাই আম্মুকে আসতে দেখে চলে গেল””। আমি আম্মুর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি””! আম্মুর মুখে গভীর চিন্তার ছাপ”পরে আছে”” ! আমি আম্মুকে কোন কিছু প্রশ্ন করার আগেই আম্মু আমাকে বলল””!
!
আম্মু আমাকে বলছে আজ নাকি আমার আর সাহিলের শরীয়াসম্মত ভাবে বিয়ে হবে”! আম্মুর কথা শুনেই আমি অবাক হলাম”! বুকে ভিতর ধুক ধুক কাঁপুনি উঠতে শুরু করলো””! আজ আমার বিয়ে”””।
আমি কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছি না”!
কারন বিয়ে করার জন্য সবার কিছু তো মানসিক ভাবে প্রস্তুতি থাকতে”হয়””! আর আমি তো মানসিক ভাবে বিয়ের জন্য প্রস্তুত না”! কিন্তু কি আর করার “”। আল্লহ যদি আমার বিয়ের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করে থাকে “! তবে তাই আলহামদুলিল্লাহ””। কারন আল্লহ আমাদের জন্য যা করেন “”। তাতেই আমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে””!
কিন্তু ভেবে পাচ্ছি না এত তাড়াতাড়ি হুট করে আমাদের বিয়ের ডিসিশন টা কে নিলো””। তাই আমি আম্মুকে প্রশ্ন করলাম “”””
!
আমি : আম্মু তোমরা আমাদের বিয়ের ডিসিশন কখন নিলা”‘?
!
আম্মু : আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না”!
মামা (সাহিলের দাদা) আমাকে আসরের নামাযের পর বলছে তোদের বিয়ের কথা “”! আমি আর মামাকে না করতে পারিনি””! বিয়ের কথা শুনে আমি তোকে তখনি জানাবো কিন্তু তখন জানাতে পারিনি””।
!
আমি : আম্মু কেন জানাতে পারনি”””
!
আম্মু : কারন তুই মামার রুমে বসে মামা আর সাহিলের সাথে কথা বলছিলি”””। আমি ভেবেছিলাম মামা তোকে সব বলছে””। কিন্তু মামা তোকে কিছু বলেনি”‘?
!
মনে মনে বলি তোমার মামা আর মামার নাতি দুজনেই সব জানে'”। আর আমাকে কিছুই বলেনি””। বলে না যার বিয়ে তার খবর নাই পাড়া পড়শীর ঘুম নাই””!
!
আমি : না “””! আমাকে তোমার বুড়ো মামা কিছুই বলে নাই”””। তুমি নানাজ্বীকে কিছু জিজ্ঞেস করনি”””! হঠাৎ এত তাড়াহুড়ো করে বিয়ের ডিসিশন কেন”‘?
!
আম্মু : আমি জানিনা “”! মামা কেন এত তাড়াহুড়ো করছে”! তবে আমি মনে করি মামা যা করছে ঠিক করছে”! এই পদক্ষেপ আমাদের আরও আগে নেয়া উচিৎ ছিল'”! আর শোন তোকে আরেক কথা বলতে ভুলে গিয়েছি””!
!
আমি : আম্মু কি কথা বলতে ভুলে গিয়েছ””?
!
আম্মু : তোদের বিয়ে নাকি মসজিদে সম্পন্ন করা হবে””!
!
আম্মুর কাছে মসজিদে বিয়ে সম্পন্ন করার কথা শুনে আমি একটু অবাক হলাম”! মসজিদে বিয়ের সম্পন্ন করার কথা আমি শুনেছি আর হাদীসেও পড়ছি”!
কারন হয়রত ফাতিমা (রাঃ) আর হযরত আলী (রাঃ) বিবাহ মসজিদে নববীতে সম্পন্ন করা হয়েছিল”!
এই ভাবে বিবাহ করার নিয়ম থাকলেও “!বাস্তবে কিন্তু এর প্রতিফলন খুব একটা দেখা যায় না”!
এই বিয়েতে মেয়ের অভিভাবকে কোন খরচ করানো হয় না”! খুব কম খরচে বিবাহ সম্পন্ন হয়”! আর হাদীসে আছে কম খরচের বিবাহ বেশি বরকতপূর্ণ হয়””!
কারন ইসলামি সুন্নতি নিয়ম অনুযায়ী স্বল্প ব্যয়ে বিয়ে সম্পন্ন করা হবে”! এর ফলে বিবাহ করা সহজসাধ্য হয়ে যাবে”! আর যেনা বাজার হ্রাস পাবে”!
খুব সাধারণ ভাবে বিয়ে করাই ইসলামী নিয়মনুযায়ী উত্তম”।
!
আমি : আম্মু আমার কোন অভিভাবক তো এখানে উপস্থিত নাই”! তবে কি করে বিয়ে হবে””?
!
কারণ ইসলামী বিধান অনুযায়ী মেয়ের অভিভাবক ছাড়া মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয় না””! আর এজন্যই ইসলামে পালিয়ে বিয়ে করা হারাম””! মেয়ের অভিভাবক হচ্ছে পিতা, পিতা না থাকলে বড় ভাই”! আর যদি বড় ভাই না থাকে তবে চাচাদের মাঝে কেউ অভিভাবক হবে”!
আর যদি এরকম কেউ না থাকে তবে সমাজের দ্বায়িতশীল ব্যক্তি মেয়ের অভিভাবক হতে পারবে””! আমার যেহেতু বাবা বা বড়ভাই কেউ নেই “”! সে ক্ষেত্রে আমার ছোট চাচ্চু আমার অভিভাবক'”! কিন্তু চাচ্চু তো এখানে উপস্থিত নাই””!
!
আম্মু : তোর ছোট চাচাকে আমি আর তোর নানাজ্বী ফোনে সব কথা খুলে বলেছি”! সে আসতেছে “”। তোর চাচ্চু রাস্তায় আছে””!
!
আমি : চাচ্চু আসতেছে তা না হয় বুঝলাম”!’ কিন্তু নানু””? আর নানু তো আসেনি”!
আমার বিয়ে হবে আর নানু থাকবে না “!
আম্মু তা কি করে হয়””?
!
আম্মু : তোর নানুকে তুষার মোটরসাইকেল করে নিয়ে আনতে গিয়েছে”! এশার নামাযের পর তোদের বিবাহ সম্পন্ন করা হবে”! এজন্য তুই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে””। আমার তো অনেক কাজ”!
!
আম্মু তো এখন মহাব্যস্ত “””। হাজার হলেও তার একমাত্র মেয়ের বিয়ে”! তার চেয়ে বেশি ব্যস্ত সাহিলদের বাড়ির মানুষ””!
কিন্তু আমি ভাবতে পারছি না আমার বিয়েটা এতটা সাধারণভাবে সম্পন্ন করা হবে”! আলহামদুলিল্লাহ আমার নিজেকে বেশ ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে””!
কারন আল্লহ আমাদের বরকতপূর্ণ বিবাহ করার সৌভাগ্য দান করছেন””! কয়জন মানুষের এভাবে বিয়ে করার ভাগ্য হয়”! আমি এটা ভেবে পাচ্ছি না এত ভাল আইডিয়াটা কার হতে পারে”?
!
কিছুক্ষনে মাঝে নানু আর ছোট চাচ্চু এসে পরছে””। আমি ভাবছি আমাদের এমন করে হঠাৎ বিয়ের কথা শুনে সাহিলের মামা আর আমার মামা কেমন রিয়্যাক্ট করবে আল্লাহ জানে””!
এশার আযান পড়ে গিয়েছে”! আমি আযান দেয়ার সাথে সাথেই নামায টা পড়ে নিলাম”! আমার নামায পড়া শেষ হতেই চাচ্চু বাহির থেকে আমাকে ডাক দিল””!
!
আমি চাচ্চুকে সালাম দিয়ে ঘরে আসতে বললাম””! চাচ্চু আমার সালামের উত্তর দিয়ে কিছু কথা বলল””! আমি মনোযোগ দিয়ে চাচ্চুর কথা শুনলাম””! চাচ্চু আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমার এই বিয়েতে মত আছে নাকি””!
আমি লজ্জায় চুপ করে রইলাম””!
“
হাদীসে বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, বিবাহের ক্ষেত্রে মেয়েদের সম্মতি নিতে বলেছেন””। এক সাহাবী নবীজি কে জিজ্ঞেস করলেন, লজ্জায় যদি মেয়েটি কিছু না বলতে পারে”!
তখন রাসূল (সাঃ) বলেছেন, নিরবতা সম্মতির লক্ষণ”!
!
চাচ্চু আমার সম্মতি নিয়ে মসজিদে চলে গেলেন”! চাচ্চু চলে যাওয়ার পর আমার খুব হাসি পেল”! কারণ বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে”! এখন আবার আমার সম্মতি নিতে এসেছে”!
!
আমার সাত ননদ এসে আমাকে সাজানো শুরু করলো”! আমি বেশি সাজতে পছন্দ করি না”! এজন্য সুন্দর করে শাড়ী পড়ে চোখে কাজল দিলাম”, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক সাজ দিলাম আর খোঁপা করে চুলে ফুলের গাজরা দিলাম””!
!
সাহিল দেখছি বিয়ের জন্য ভাল প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে”। আমার ননদেরা এক একজন এক এক কথা বলছে'”! এরা সবগুলো বলছে দাদাই তো বিয়ে পাগল হয়ে গিয়েছে”””। আর বিয়ের পর বউ পাগল হয়ে যাবে'””।
এরা এক একটা এত পাকনা কি আর বলবো””।
মনে মনে বলি তোদের বিয়ের সময় এই সবগুলো কথার শোধ তুলবো””!
!
মসজিদে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে””। সবাই বাড়ি চলে এসেছে'”! সাহিলদের বাড়িতে লোকে ভর্তি “”। নানাজ্বী সবাইকে খেজুর দিয়ে মুখ মিষ্টি করাতে বললো””! কারন বিবাহ সম্পন্ন করার পর খেজুর দিয়ে মিষ্টি মুখ করানো সুন্নত'”।
!
কিন্তু মিষ্টি খাবার পরেও তাদের সবার মুখটা তিতা হয়েই আছে”! গ্রামের লোক এক একজনের মুখে এক এক রকমের কথা বলছে””!
কেউ বলছে কি এমন হল বিয়ে এত তাড়াহুড়া করে দিলো””!
কেউ বলছে এই রকম আজব বিয়া জীবনে দেখি নাই””!
কেউ বলছে, কই বিয়েতে বউরে তো কবুল বলতে দেখলাম না”‘!
মসজিদে বিয়ে হইলো তা বউ গেল না কেন”? তবে বিয়ে হইলো কেমনে””? ইত্যাদি ইত্যাদি
!
আমাদের বিয়ে নিয়ে মানুষের মনের মাঝে হাজার প্রশ্ন আর হাজার কৌতূহল বিরাজ করছে””! এদের কি করে বুঝাই “! হাদীস অনুযায়ী বিয়ের আসল নিয়ম এটাই”!
আমরা আসলে বিয়ে সাদীতে ইসলামী নিয়মের চেয়ে নিজেদের বানানো নিয়মগুলো বেশি জাহির করে বেড়াই তো”! এজন্য হাদীস কোরআন অনুযায়ী সহীহ কিছু দেখলেই আমাদের মাঝে নতুন নিয়ম বলে মনে হয়””।
আসলে এসব নতুন কোন নিয়ম নয়”! আসল কথা হচ্ছে আমাদের জ্ঞানের স্বল্পতা আর জানার ভুল””।
আল্লহ আমাদের সকলকেই যেন সঠিক বুঝার তৌফিক দান করেন””!
!
আজ আমার ভাবতেই ভাল লাগছে””। আজ থেকে আমি সাহিলের বৈধ স্ত্রী “! আজ ওনার কাছে যেতে আমার আর কোন বাঁধা নেই”! আজ থেকে তাকে আমার জন্য আর কোন কষ্ট পেতে হবে না””। আর কখনও অপেক্ষায় থাকতে হবে না”! আমাদের আর কোন লুকোচুরি করতে হবে না””!
আমি আমার দাম্পত্যজীবনে চেষ্টা করবো সাহিলের সব আবদার মেনে নিতে'”! আজ আমি সাহিলকে এটাই প্রমাণ করবো যে, বৈধতার মাঝে কোন ভয় থাকে না, থাকে শুধু আল্লহর রহমত আর ভালবাসা “”। আর অবৈধতায় থাকে শয়তানের ধোঁকা আর গুণাহের ভয় “”!
আমি সব সময় চেষ্টা করবো সাহিলকে সন্তুষ্ট রাখতে””।
কারণ একজন আদর্শ স্ত্রীর বৈশিষ্ট হচ্ছে সর্ব বিষয়ে তার স্বামীকে খুশি রাখা””।
!
আমি সায়লার রুমে বসে আছি””। তুষার আর চাচ্চু আমার কাছে এসে বসলো”! তুষার আজ তো বেশ খুশি আমার পার্মানেন্ট ভাবে বিয়ে হয়ে গেল”””। আর কদিন পর থেকেই ও একাই আম্মুর আদর খাবে””!
চাচ্চু এসেই আমার হাত ধরে কেঁদে দিল”! চাচ্চুর জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে “”।
কারন চাচ্চু আমাদের খুব ভালবাসে”। চাচ্চুর নিজের কোন মেয়ে নাই””। তার দুটো ছেলে””! এজন্য চাচ্চু আমাকে একটু বেশি ভালবাসতো””। কিন্তু চাচীমার জন্য তা প্রকাশ করতে পারতো না””। আজ আব্বু নেই “”! আব্বুর অবর্তমানে চাচ্চু আমার অভিভাবক হয়েছে””! কিন্তু তিনি অভিভাবক হিসেবে আমাদের প্রতি কোন দায় দায়িত্ব পালন করতে পারেনি””! আমি বুঝতে পারছি চাচ্চুর মনে নানা রকমের অনুসূচনা বিরাজ করছে””!
এজন্য আজ চাচ্চু নিজের আবেগকে আটকে রাখতে পারছেনা””। তার মনের মাঝে নানা রকমের কষ্ট বাসা বেঁধেছে”””।
!
কিন্তু চাচ্চুর সব কষ্টের মাঝেও মুখের এক কোণায় এক চিলতে সুখের হাসি দেখতে পাচ্ছি””! তা হলো সাহিলকে মেয়ের জামাই হিসেবে পেয়ে চাচ্চু খুব খুশি””! জামাই নাকি তার খুব পছন্দ হয়েছে”!
চাচ্চু আমার সাথে কথা বলে আমাকে অনেক উপদেশ দিলেন””। চাচ্চুর উপদেশের সারমর্ম একটা বিষয়ে ছিল””।
তা হল একজন বউ যথেষ্ট সংসারটাকে সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য “! আবার একজন বউ যথেষ্ট সংসারের শান্তুি নষ্ট কররা জন্য””!
!
কারন চাচীমার কারণে আমার দাদুবাড়ীতে যত অশান্তি হয়””! চাচ্চুর জন্য মাঝে মাঝে খুব মায়া হয়”! আমার বেচারা চাচ্চু বর্তমান যুগের নির্যাতিত পুরুষ””! চাচ্চু শুধু দুটো ছেলের দিকে তাকিয়ে চাচীমাকে কিছু বলে না”””। বিষ খেয়ে বিষ হজম করছে””!
সত্যি মানুষের জীবন কতটা বিচিত্র “”। আমার আব্বু বেঁচে নেই তারপরও আম্মু আজও তার জন্য কতটা ভাবে””। আর চাচ্চু বেঁচে থাকতেও চাচিমার কাছে তার কোন মূল্যায়ণ নাই””! সবি ভাগ্যের নির্মম পরিহাস “”!
!
চাচ্চু আমার আর বাড়ির সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন”! চাচ্চু চলে যাবার পর আমার বিচ্চু বাহিনী ননদগুলো এসে হাজির””! নানাজ্বী আর সায়বা মিলে সাহিলকে নিয়ে এসে আমার পাশে বসিয়ে দিল””।
!
এখন শুরু হলো স্টুপিড মার্কা কথার মেলা “”! কে কি কি বলতে পারে””! নানাজ্বী তো বলেই বসলো সাহিলকে বউ পেয়ে তাকে যেন ভুলে না যায়””! নানীমা বলল, আজকাল আর দাদীর কথা তো মনেই থাকবে না””!
সবাই কেন যে এসব ভাবে আমি বুঝতে পারি না”!
আর আমার ননদের তাদের দাদাইয়ের কাছে একটাই আবদার “”! তা হল একদিন করে এক একজনকে আমার কাছে তাদের ঘুমাতে দিতে হবে””!
!
আমি মনে মনে বলি একজন করে ঘুমালেও এক সপ্তাহ আরামছে কেটে যাবে””! বেচারা সাহিল তো এদের কথা শুনে বিরক্ত হচ্ছে”! কারন ওদের দিয়ে কোন বিশ্বাস নেই””।
!
সাহিল তো বিরক্ত হয়ে বলেই ফেলল, হুম বুঝলাম” তা আজ কে ঘুমাবি তোদের ভাবীর পাশে””। তা কি ঠিক করছিস””?
!
একথা শুনেই তো শুরু হলো ওদের মাঝে প্রতিযোগিতা “! কে ঘুমাবে আমার পাশে”
সাহিলের এই কথা শুনে তো আমার ভিষণ হাসি পাচ্ছে””! বেচারা কত কষ্টে এই বুলি টা বলল”””। আর সবাই বিষয়টাকে সিরিয়াস ভাবে নিয়ে নিলো””!
মনে মনে বলি যদি লাইগা যায়””! আমার ননদ এক একটা ওয়ান পিছ””! যদি তাদের ভাইয়ের কথায় আমার সাথে সত্যি থাকতে চায়””। তবে বেচারা সাহিল তো দুঃখে কষ্টে স্টোক করবে””!
!
ওদের চেঁচামিচি দেখে নানিমা এসে বললো,
!
নানিমা : আমার নাতবৌর কাছে কে আবার ঘুমাবে””? নাতবৌর কাছে ঘুমাইলে আমার নাতির ঘুমাবে””। তোরা ক্যান ঘুমাবি””?
!
নানাজ্বী : হুম ঠিক কইছো গিন্নী “”! নাতনিরা শোন আজ যদি তোর ভাই মিষ্টি মুখ না করতে পারে””। তবে এবার রাগে ৬ মাসের আগে আর তোদের দাদাই বাড়ি আসবে না””।
!
নানাজ্বী দেখছি ভিষণ পাজি হয়ে গিয়েছে”! সব সময় কেন যে ভাবেন তার নাতি মনে হয় শুধু আমার জন্যই ঢাকা থেকে টাংগাইল আসেন”! এখন এসব কথাগুলো এই বিচ্চু বাহিনীর মাথায় ও ঢুকিয়ে দিচ্ছে””।
!
সাবিহা : দাদা তুমি কোন মিষ্টির কথা বলছো””। রসগোল্লা নাকি চমচম””!”
!
সায়মা : না দাদা আমরা কেউ ভাবীর কাছে ঘুমাবো না” আর দাদাইকে বিনা মিষ্টি মুখে থাকতেও হবে'””! শুধু আমাদের শর্ত মানলেই হবে”!
!
সাহিল : শর্ত মানে “”। কিসের শর্ত “”? বউ আমার আমার রুম “”। আর তোদের শর্ত মেনে আমাকে আমার রুমে যেতে হবে””?
!
সামিহা : দাদাই তুমি শুধু আমাদের বাসর ঘর সাজনোর টাকা দিয়ে দিলেই হবে”। আর কোন শর্ত তোমাকে পালন করতে হবে না””!
!
সাহিল : এই তোরা কিসের টাকার কথা বললি””?
!
সায়লা : দাদাই তুমি বিয়ে করতে না করতেই কানে কালা হয়ে গেলে””! বাসর ঘর সাজানোর “৭০০০ টাকার কথা বলছি”‘”!
!
সাহিল : এই তোরা সব গুলো তো ডাকাত রে””! আমি আমার নিজের টাকা দিয়ে ফুল কিনে এনেছি””। আর তোরা ফুলগুলো কোন রকমে লাগিয়ে ৭০০০ টাকা চাইছিস”””। মগের মুল্লুক নাকি””! দাদা তুমি কি ওদের কিছু বলবা””!
!
নানাজ্বী : এই তোরা আজকের মত তোদের দাদাইকে ছাইড়া দে””। সামনে তোদের ডাবল করে দিবোনি””!
!
সায়কা : দাদা বাকির নাম ফাঁকি””!
!
সায়বা : সামনে কবে আবার ডাবল করে দিবে “”।
!
নানাজ্বী : সামনেই তোদের দাদাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান হবে””!
আজ হচ্ছে এই মাসের ৯ তারিখ””! এই মাসের ১৫ তারিখে মিষ্টির মামা আর ২০ তারিখে সাহিলের মামা আসব!
২২ তারিখে মিষ্টিদের বাড়িতে অনুষ্ঠান “! আর ২৩ তারিখে আমাদের বাসায় অনুষ্ঠান হইবো””ইংশাআল্লহ””।
তাই এবার বেচারারে ছাইড়া দে””।
!
নানাজ্বীর কথা শুনে সবগুলো খুশিতে লাফাচ্ছে””! ওদের তো ভিষণ মন খারাপ ছিল “”। একটা ভাইয়ের বিয়ে হলো তাও আবার এতটা সিম্পল ভাবে””! এখন তো বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা শুনে সবগুলোর মনে লাড্ডু ফুটছে “”!
আমার তো ভিষণ হাসি পাচ্ছে””! এক বিয়ে নিয়ে এরা আর যে কত কাহিনী করবে “। আল্লাহ জানে””!
!
সবাই অনেক কথাবার্তা বললো”! আমার তো ক্ষুধায় পেটে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে””!
আমার দু মা মানে আম্মু আর শ্বাশড়ী মা এসে আমাদের সবাইকে খেতে দিলো””! নানাজ্বী বড় একটা প্লেটে করে আমাকে আর সাহিলকে এক সাথে খাবার দিতে বললো””।
কিন্তু আমার নানু এসে বলল, আমাদের একসাথে খাবার খেতে দিলে আমরা দুজনেই খাবার খেতে লজ্জা করবো”! এজন্য নানু আম্মুকে বলল, আমাদের যেন এক প্লেটে খাবার নিয়ে দুজনকে খাইয়ে দেয়””। আম্মু নানুর কথায় দুজনকেই খাইয়ে দিচ্ছে “! আমাদের সাথে আবার তুষার যোগ হইছে”! এই ছেলেটা এতটা হিংসুটে””! আম্মু আমাকে একটু বেশি আদর করলেই তুষার আমার সাথে হিংসা করে”! কই এখন তো সাহিলের সাথে হিংসা করছিস না””।
সবাই সবাইকে খাইয়ে দিচ্ছে “! সবাই মিলে এখানে বেশ মজা করছে”!
!
আজ আমার একটুও মনে হচ্ছে না শ্বশুড়বাড়ি আছি”! মনে হচ্ছে নিজের বাড়িতে আছি””! ইস এইরকম যদি সবাই একসাথে থাকতে পারতাম”””!
!
আমার নানু আর সাহিলের দাদী এই দুজন মিলে আমাকে সাহিলের রুমে নিয়ে গেল””! এই দুজনের উপদেশ বাণী শুনতে শুনতে আমি পাগল হয়ে যাবো””। দুই নানু আমাকে রেখে চলে গেল'”!
!
আজকে এই প্রথম আমি সাহিলের রুমে আসলাম””! সাহলের রুমটা বেশ পরিপাটি”! এখন অবশ্য সাহিলের একার রুম না “! আমি ও এই রুমের সমান ভাগীদার”! আমাদের রুম টা আমার ননদেরা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে”! রুমটা সাজানো হয়েছে রজনীগন্ধার স্টিক আর গোলাপ দিয়ে “”! এজন্য রুমটা ফুলের সুন্দর স্মেলে ভরে গিয়েছে””। রুমের সব জায়গা ফুল দিয়ে সাজানো””! কিন্তু কেন জানি ওরা বিছানা টা ফুল দিয়ে সাজায়নি””! 







!
ননদের কথা বলতেই আমার ননদেরা এসে হাজির””। এরা এসে আমার সাথে ছবি তোলা শুরু করছে””। আমি ছবি তুলবো না “”! তারপর ওরা জোর করে ছবি তুলতেছে””।
ওদের শব্দ পেয়ে নানাজ্বী এসে ওদের হাতে ৩৫০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে সবগুলোকে ধমক দিয়ে রুম থেকে নিয়ে চলে গেল”!
আহারে দাদার নাতির জন্য কত চিন্তা”! এমন দাদা সবার ঘরে ঘরে থাকা দরকার”! এমন দাদা সব নাতিদের থাকলে আর নাতিদের বিয়ের চিন্তা করতে হবে না””।
!
সাহিল দরজার সামনে এসে আমাকে লম্বা একটা সালাম দিয়ে রুমে ঢুকলো””। তারপর দরজা টা লক করে দিল”! আমি সাহিলের সালামের জবাব দিলাম”! আমি কেন জানি ভয়ে কাঁপতেছি”! সাহিল আমার সামনে এসে দাড়াতেই কেন জানি ভয় টা আরও বেশি বেড়ে যাচ্ছে “! সাহিল আমার কপালে হাত রেখে তিনবার দোয়া পড়লো”! ওনি আমার কপালে হাত রাখতেই আমি বারবার কেঁপে উঠছি”! কেমন জানি এক অন্যরকম অনুভূতি অনুভব করছি”””।
তারপর দুজনে মিলে দুরাকাত শুকরানের নামায পড়লাম””!
!
আমার শাড়ী পড়ে খুব অসস্থি লাগছে””! হঠাৎ সাহিলের দিকে আমার চোখ পড়লো””! মেরুন কালারের পাজ্ঞাবীতে আমার বরটাকে মাশআল্লহ “”! খুব সুন্দর লাগছে”””। আজ দুজনকেই সুন্দর লাগছে””!
সাহিল আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো”””


চলবে,,,,,,,,,,
Sponsored

🛍️Carnatio Academy
nlock your potential with premium courses — now available at up to 50% off. Don't miss out!.
https://academy.carnationplus.in/
সম্পূর্ণ গল্প পড়তে চান?
Click here to read the full story.
Post Views: 28